Main Menu
أكاديمية سبيلي Sabeeli Academy

একজন মুসলমানের চারিত্রিক প্রথম পাঁচটি গুণাবলী

 একজন মুসলমানের চারিত্রিক প্রথম পাঁচটি গুণাবলী

একজন মুসলমানের চারিত্রিক প্রথম পাঁচটি গুণাবলী

১. সত্যবাদিতাঃ
আল্লাহ্ তা’আলা এবং তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে সকল ইসলামী চরিত্রের আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন, তার অন্যতম হচ্ছে সত্যবাদিতার চরিত্র। আল্লাহ্ তা’আলা বলেনঃ
يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ اتَّقُواْ اللّهَ وَكُونُواْ مَعَ الصَّادِقِينَ
(হে ঈমানদারগণ আল্লাহ্কে ভয় কর এবং তোমরা সত্যবাদীদের সাথী হও।)) [সূরা আত্-তাওবাহঃ ১১৯]
রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেনঃ ((তোমরা সত্যবাদিতা গ্রহণ কর, কেননা সত্যবাদিতা পূণ্যের পথ দেখায় আর পূণ্য জান্নাতের পথ দেখায়, একজন লোক সর্বদা সত্য বলতে থাকে এবং সত্যবাদিতার প্রতি অনুরাগী হয়,ফলে আল্লাহ্র নিকট সে সত্যবাদী হিসাবে লিপিবদ্ধ হয়ে যায়।)) [মুসলিম]
২. আমানতদারিতাঃ
মুসলমানদের যে সমস্ত ইসলামী চরিত্রের নির্দেশ দেয়া হয়েছে তার মধ্যে আরেকটি হচ্ছে আমানত সমূহ তার অধিকারীদের নিকট আদায় করে দেয়া। আল্লাহ্ তা’আলা বলেনঃ
إِنَّ اللّهَ يَأْمُرُكُمْ أَن تُؤدُّواْ الأَمَانَاتِ إِلَى أَهْلِهَا
(নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছেন আমানতসমূহ তার হকদারদের নিকট আদায় করে দিতে।)) [সূরা আন্-নিসাঃ ৫৮]
রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সমপ্রদায়ের নিকট ‘আল আমীন’ উপাধী লাভ করেছিলেন, তারা তাঁর নিকট তাদের সম্পদ আমানত রাখতো। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর অনুসারীদের মুশরিকরা কঠোরভাবে নির্যাতন শুরু করার পর যখন আল্লাহ্ তাকে মক্কা হতে মদীনা হিজরত করার অনুমতি দিলেন তিনি আমানতের সমস্ত মাল তার অধিকারীদের নিকট ফিরিয়ে দেয়া ব্যতীত হিজরত করেননি, অথচ তারা সকলেই কাফের ছিল। কিন্তু ইসলাম তো আমানত তার অধিকারীদের নিকট ফিরিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছে যদিও তারা কাফের হয়।
৩. অঙ্গীকার পূর্ণ করাঃ  ইসলামী মহান চরিত্রের অন্যতম হচ্ছে অঙ্গীকার পূর্ণ করা। আল্লাহ্ তা’আলা বলেনঃ
وَأَوْفُواْ بِالْعَهْدِ إِنَّ الْعَهْدَ كَانَ مَسْؤُولاً
(আর তোমরা অঙ্গিকার পূর্ণ কর, কেননা অঙ্গিকার সম্বন্ধে জিজ্ঞাসিত হবে।)) [সূরা আল-ইসরাঃ ৩৪]আল্লাহ্ তা’আলা আরো বলেনঃ
الَّذِينَ يُوفُونَ بِعَهْدِ اللّهِ وَلاَ يِنقُضُونَ الْمِيثَاقَ
(যারা অঙ্গিকার পূর্ণ করে এবং প্রদত্ত প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করে না।)) [সূরা রাআদঃ ২০] আর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকরা নেফাকের বৈশিষ্ট্যের মধ্যে গণ্য করেছেন।
৪. বিনয়ঃ
ইসলামী চরিত্রের আরেকটি হচ্ছে একজন মুসলমান তার মুসলিম অপর ভাইদের সাথে ধনী হোক বা গরীব হোক বিনয়ী হবে। আল্লাহ্ তা’আলা বলেনঃ
وَاخْفِضْ جَنَاحَكَ لِلْمُؤْمِنِينَ
(তুমি তোমার পার্শ্বদেশকে মুমিনদের জন্য অবনত করে দাও।)) [সূরা আল-হিজরঃ ৮৮]
রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেনঃ
(আল্লাহ্ তা’আলা আমার নিকট ওহী করেছেন যে, তোমরা বিনয়ী হও, যাতে একজন অপরজনের উপর গর্ব না করে, একজন অপর জনের উপর সীমালংঘন না করে।)) [মুসলিম]
৫. মাতা-পিতার প্রতি সদ্ব্যবহারঃ
মাতা-পিতার প্রতি সদ্ব্যবহার উত্তম চরিত্রের অন্যতম। আর এটা তাদের হক মহান হওয়ার কারণে, যে হক আল্লাহ্ হকের পর। আল্লাহ্ তা’আলা বলেনঃ
وَاعْبُدُواْ اللّهَ وَلاَ تُشْرِكُواْ بِهِ شَيْئاً وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَاناً
(আর তোমরা আল্লাহ্ ইবাদত কর, তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক করো না এবং মাতা-পিতার প্রতি সদ্ব্যবহার কর।)) [সূরা আন্-নিসাঃ ৩৬]
আল্লাহ্ তা’আলা তাদের আনুগত্য, তাদের প্রতি দয়া ও বিনয় এবং তাদের জন্য দো’আ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ্ বলেনঃ
وَاخْفِضْ لَهُمَا جَنَاحَ الذُّلِّ مِنَ الرَّحْمَةِ وَقُل رَّبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرًا
(তাদের উভয়ের জন্য তোমার দয়াবনতির ডানা অবনত করে দাও এবং বল, হে আমার রব তাদের প্রতি আপনি করুণা করুন তারা যেভাবে আমাকে ছোট বেলায় লালন-পালন করেছে।)) [সূরা আল-ইসরাঃ ২৪]

এক ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে জিজ্ঞেস করলঃ ((হে আল্লাহ্ রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার উত্তম সাহচর্যের সব চেয়ে বেশী অধিকারী ব্যক্তি কে ? তিনি বললেনঃ তোমার মা। অতঃপর জিজ্ঞেস করল তারপর কে? তিনি উত্তর দিলেনঃ তোমার মা। অতঃপর জিজ্ঞেস করল তার পর কে? তিনি উত্তর দিলেন তোমার মা। অতঃপর জিজ্ঞেস করল তার পর কে? উত্তর দিলেনঃ তোমার পিতা।)) [বুখারী ও মুসলিম]

Related Post