New Muslims APP

প্রশ্নোত্তরে ইসলামী জ্ঞান

প্রশ্নোত্তরে ইসলামী জ্ঞান

প্রশ্নোত্তরে ইসলামী জ্ঞান

প্রশ্ন: আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ। মুহতারাম সম্পাদক মাওলানা মামুনুর রশীদ ভাই! একটি বিষয় যদি মাসিক আল-হুদায় আপনার জিজ্ঞাসার জবাব এর পাতায় আলোচনা করেন, তাহলে আমরা অনেকেই উপকৃত হবো। আর তা হলো- অনেক ভাই ফেতনা সৃষ্টি করছেন, আমরা জানিনা কোনটা সঠিক? কিছু ভাই বলেন যে, যারা অমুসলিম পিতা-মাতার ঘরে জন্মগ্রহণ করে, তারা অমুসলিম হয়েই জন্মগ্রহণ করে। আবার কিছু ভাই বলেন যে, হাদীসে আছে- যে প্রত্যেক শিশুই রাসূলে কারীম (সা.)-এর কথা মোতাবেক ইসলামে রীতি-নীতির উপর জন্মগ্রহণ করে। এখানে কোনটা সঠিক? যদি হাদীসের প্রমাণসহ আল-হুদায় প্রকাশ করেন, তাহলে আমরাসহ সমাজ ফিতনা হতে মুক্তি পাবে। শফিউল্লাহ, কুয়েত সিটি,
উত্তর: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ। আপনি অডিও বার্তার মাধ্যমে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও সুন্দর প্রশ্ন করেছেন। আপনার প্রশ্নের জবাব হলো: অমুসলিমদের শিশু সন্তান এবং মুসলিমদের শিশু সন্তান জন্মের পর একই রকম নিষ্পাপ হয়ে জন্মগ্রহণ করে। যারা বলে যে, অমুসলিমদের সন্তান অমুসলিম হয়েই জন্মগ্রহণ করে, তা সঠিক নয়। বরং প্রত্যেকটি সন্তানই স্বভাবগতভাবে মুসলিম হয়েই জন্মগ্রহণ করে; রাসূলে কারীম (সা.) এরশাদ করেন।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ مَا مِنْ مَوْلُودٍ إِلاَّ يُولَدُ عَلَى الْفِطْرَةِ فَأَبَوَاهُ يُهَوِّدَانِهِ وَيُنَصِّرَانِهِ وَيُمَجِّسَانِهِ كَمَا تُنْتَجُ الْبَهِيمَةُ بَهِيمَةً جَمْعَاءَ هَلْ تُحِسُّونَ فِيهَا مِنْ جَدْعَاءَ ‏”‏ ‏.‏ ثُمَّ يَقُولُ أَبُو هُرَيْرَةَ وَاقْرَءُوا إِنْ شِئْتُمْ ‏{‏ فِطْرَةَ اللَّهِ الَّتِي فَطَرَ النَّاسَ عَلَيْهَا لاَ تَبْدِيلَ لِخَلْقِ اللَّهِ‏}‏ الآيَةَ ‏ صحيح البخاري – (৩৯৭১ – ১৪৯৬ – ৪৫৭৯- صحيح مسلم – ২৬৫৮ – ৬৬৪৮ – سنن الترمذي – ২১৩৮ – ৪৭১৪ مسند أحمد ২/২৩৩

আবু হুরাইরাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ প্রতিটি নবজাতক স্বভাবজাত ইসলাম নিয়ে জন্মলাভ করে। অতঃপর তার বাবা-মা তাকে ইয়াহুদী বানিয়ে দেয়, খ্রিস্টান বানিয়ে দেয় এবং আগুনপূজারী বানিয়ে দেয়, যেমন চতুষ্পদ প্রাণী পূর্ণাঙ্গ চতুষ্পদ বাচ্চা জন্ম দেয় তোমরা কি তাতে কোন অঙ্গ কর্তিত বাচ্চা উপলব্ধি করেছো? তারপর আবু হুরাইরাহ (রাযিঃ) বললেন, ইচ্ছা করলে তোমরা এ আয়াতটি পাঠ করতে পার, “আল্লাহর ফিতরাতে যার উপর তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহর সৃষ্টির কোন পরিবর্তন নেই। – (সূরা আর রূমঃ ৩০)। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬৫১৪, ইসলামিক সেন্টার ৬৫৬৫)
এই কাঠামো কেউ চাইলেই পরিবর্তন করতে পারবে না। যেমন আল্লাহ তায়ালা সূরা আর রূমের ৩০ নম্বর আয়াতে ঘোষণা করেন;
আল্লাহ তৈরি সৃষ্টি কাঠামো পরিবর্তন করা যেতে পারে না। এটিই পুরোপুরি সঠিক ও যথার্থ দ্বীন। কিন্তু অধিকাংশ লোক জানে না।
অর্থাৎ সমগ্র মানব জাতিকে এ প্রকৃতির ওপর সৃষ্টি করা হয়েছে যে, এক আল্লাহ ছাড়া তাদের আর কোন স্রষ্টা , রব, মাবুদ ও আনুগত্য গ্রহণকারী নেই। এ প্রকৃতির ওপর তোমাদের প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাওয়া উচিত। যদি স্বেচ্ছাচারীভাবে চলার নীতি অবলম্বন করো তাহলে প্রকৃতির বিরুদ্ধাচরণ করবে। আর যদি অন্যের বন্দেগীর শিকল নিজের গলায় পরে নাও তাহলেও নিজের প্রকৃতির বিরুদ্ধে কাজ করবে। এ বিষয়টি নবী (সা.) বহু হাদীসে সুস্পষ্ট করে বর্ণনা করেছেন। যেমনঃ
“মাতৃগর্ভ থেকে জন্মলাভকারী প্রত্যেকটি শিশু আসলে মানবিক প্রকৃতির ওপরই জন্ম লাভ করে। তাঁরপর তাঁর মা-বাপই তাকে পরবর্তীকালে ইহুদী, খৃষ্টান ও অগ্নিপূজারী হিসেবে গড়ে তোলে।” (বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, মুসনাদে আহমদ)
এর দৃষ্টান্ত হচ্ছে, যেমন প্রত্যেকটি পশুর পেট থেকে পুরোপুরি নিখুঁত ও সুস্থ পশুই বের হয়ে আসে। কোন একটা বাচ্চাও কান কাটা অবস্থায় বের হয়ে আসে না। পরে মুশরিকরা নিজেদের জাহিলী কুসংস্কারের কারণে তাঁর কান কেটে দেয়।
মুসনাদে আহমাদ ও নাসায়ীতে আর একটি হাদীস আছে, তাতে বলা হয়েছেঃ এক যুদ্ধে মুসলমানরা শত্রুদের শিশু সন্তানদেরকেও হত্যা করে। নবী (সা.) এর কাছে এ খবর পৌঁছে যায়। তিনি ভীষণ অসন্তুষ্ট হন এবং বলেন; লোকদের কি হয়ে গেছে, আজ তারা সীমা ছাড়িয়ে গেছে এবং শিশুদেরকেও হত্যা করেছে? “একজন জিজ্ঞেস করলো, এরা কি মুশরিকদের সন্তান ছিল না। জবাবে তিনি বলেনঃ তোমাদের সর্বোত্ততম লোকেরা তো মুশরিকদেরই আওলাদ। তাঁরপর বলেনঃ “প্রত্যেক প্রাণসত্তা প্রকৃতির ওপর জন্ম নেয়, এমনকি যখন কথা বলতে শেখে তখন তাঁর বাপ- মা তাকে ইহুদী খ্রিস্টানে পরিণত করে।”
অন্য একটি হাদীসে ইমাম আহমাদ (রা.) ঈযায ইবনে হিমার আল মুজাশি’য়ী থেকে উদ্ধৃত করেছেন। তাতে বলা হয়েছে, একদিন নবী (সা.) নিজের ভাষণের মাঝখানে বলেনঃ “আমার রব বলেন, আমার সমস্ত বান্দাদেরকে আমি একনিষ্ঠ সত্যপথাশ্রয়ী করে সৃষ্টি করেছিলাম, তাঁরপর শয়তানরা এসে তাদেরকে দ্বীন থেকে বিপথগামী করে এবং তাদের জন্য আমি যা কিছু হালাল করে দিয়েছিলাম সেগুলোকে হারাম করে নেয় এবং তাদেরকে হুকুম দেয়, আমার সাথে এ জিনিসগুলোকে শরীক গণ্য করো , যেগুলোকে শরীক করার জন্য আমি কোন প্রমাণ অবতীর্ণ করিনি।”
আল্লাহ মানুষকে নিজের বান্দায় পরিণত করেছেন। কেউ চাইলেও এ কাঠামোয় কোন পরিবর্তন সাধন করতে পারে না। মানুষ বান্দা থেকে অ- বান্দা হতে পারে না এবং আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে ইলাহ বানিয়ে নিলেও প্রকৃতপক্ষে সে মানুষের ইলাহ হতে পারে না। মানুষ নিজের জন্য যতগুলো উপাস্য তৈরি করে নিক না কেন, মানুষ যে, এক আল্লাহ ছাড়া আর কারো বান্দা নয় এ বাস্তব সত্যটি অকাট্য ও অবিচল রয়ে গেছে। মানুষ নিজের মূর্খতা ও অজ্ঞতাঁর কারণে যাকে ইচ্ছা আল্লাহর গুণাবলী ও ক্ষমতার ধারক গণ্য করতে পারে এবং যাকে চায় তাকে নিজের ভাগ্য ভাঙা- গড়ার মালিক মনে করতে পারে। কিন্তু প্রকৃত ও বাস্তব সত্য এটিই যে, সার্বভৌম কর্তৃত্বের গুণাবলীর অধিকারী একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কেউ নয়। কেউ তাঁর মতো ক্ষমতাঁর অধিকারী নয় এবং মানুষের ভাগ্য ভাঙা-গড়ার শক্তিও আল্লাহ ছাড়া কারো নেই।
এ আয়াতটির আর একটি অনুবাদ এও হতে পারেঃ “আল্লাহর তৈরি কাঠামোয় পরিবর্তন করা যাবে না।” অর্থাৎ আল্লাহ যে প্রকৃতির ওপর মানুষকে সৃষ্টি করেছেন তাকে বিকৃত করা ও ভেঙ্গে ফেলা উচিত নয়।
এখন আসি যদি অমুসলিমদের সন্তান শিশু অবস্থায় মারা যায়, তাহলে তারা কি জান্নাতে প্রবেশ করবে? এর উত্তর হলো: অমুসলিমদের সন্তানরা যদি বালেগ হবার পূর্বেই শিশু অবস্থায় মারা যায়, সে ক্ষেত্রে তাদের জান্নাত-জাহান্নাম বিষয়ে কুরআন – হাদীসে সুস্পষ্ট নির্দেশনা আসেনি। তবে ইসলামি চিন্তাবিদগণের মধ্যে এ ব্যাপারে কিছু মতপার্থক্য থাকলেও এ শিশুরা যে আসলে বেহেশতি হবে, এ ব্যাপারে বলিষ্ঠ মত রয়েছে। এ মতের চিন্তাবিদগণের মতে অমুসলিমদের না বালেগ অবস্থায় মৃত শিশু সন্তানরা জান্নাতের হুর এবং গিলমান হবে। (আল্লাহ ভালো জানেন)
প্রশ্ন: বর্তমান যুগে আহলে কিতাবদের জবাইকৃত পশু খাওয়া যাবে কি?
উত্তর: ইসলাম জবাই ও বিবাহের ব্যাপারে কাফেরদের দুই ভাগে বিভক্ত করেছে। ১। আহলে কিতাব, ২। সাধারণ কাফির ও মুশরিক। সাধারণ কাফের মুশরিকদের জবাইকৃত পশু হারাম এবং তাদের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করা বৈধ নয়। পক্ষান্তরে আহলে কিতাবদের মহিলাদেরকে বিয়ে করা বৈধ এবং তাদের পুরুষ মহিলার জবাইকৃত জন্তু হালাল। ইমাম আবু হানীফা (রহ.)-এর মতে আহলে কিতাবদের যে কোনো শ্রেণীই হোক না কেনো, মুসলিম অধ্যুষিত রাষ্ট্রে হোক বা অমুসলিম অধ্যুষিত রাষ্ট্র থাক আরব হোক বা অনারব, আয়ত্তাধীন পশু হোক কিংবা আয়ত্তহীন পশু শিকার করে জবাই করুক, সর্বাবস্থায় কিতাবীদের জবাই করা পশু হালাল। (হিদায়া মাআল ফাতহ: ৭/৪৮৮)
কিন্তু এ কথা অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে যে, সে যেন বাস্তবিকই আহলে কিতাব হয়। আহলে কিতাব বলতে ঐ সকল লোক উদ্দেশ্য, যারা অন্ততপক্ষে কুরআন অবতীর্ণ হওয়ার যুগের ইয়াহুদী-নাসারাদের যেসকল আকীদা পোষণ করতো, সেসকল আকীদা পোষণ করে থাকে। সেগুলোর প্রবক্তা হয়ে থাকে। তাওরাতের উপর বিশ্বাস স্থান করে থাকে। আল্লাহ তায়ালার অস্তিত্ব, নবুওয়ারত, অহী, ফিরিশতাগণের প্রতি ঈমান রাখে। আল্লাহর অস্বীকারকারী নয়। যারা এসব বিষয়ে প্রবক্ত হবে না, বরং আল্লাহ, অহী, নবুওয়াতকে বিদ্রূপ করে এবং শুধুমাত্র বংশগতভাবে ইয়াহুদী বা খ্রিস্টান হয়, অথবা তারা তাদের ধর্মীয় গৃহে নিজেদের নাম ইয়াহুদী বা খ্রিস্টান লিখিয়েছে, তারা মূলত আহলে কিতাবের অন্তর্ভুক্ত নয়। এ জন্যই হযরত আলী (রা.) বলেন: যারা শুধু নামে ইয়াহুদী বা খ্রিস্টান তাদের জবাইকৃত পশু হালাল নয়, এবং এই শ্রেণীর নারীদের বিয়ে করাও জায়েয নয়।
এখানে আরেকটি বিষয় পরিস্কার হওয়া দরকার, তা হলো: আহলে কিতাবদের জবাই করার সময় বিসমিল্লাহ বলা জরুরি কি না? এ ব্যাপারে ওলামাদের দ্বিমত রয়েছে। হানাফী ও হাম্বলীদের মতে যদি ইচ্ছাকৃতভাবে বিসমিল্লাহ ছেড়ে দেয়, তাহলে তাদের জবাইকৃত জন্তু হারাম। মালেকী ও শাফেঈদের মতে জবাই করার সময় তারা যদি গায়রুল্লাহর নাম না নেয়, তবে বিসমিল্লাহ না বললেও তাদের জবাই কৃত জন্তু হালাল হবে। (শরহে মুহাযযাব: ৯/৭৮, শরহে সাগীর: ২/১৫৮)
কাজেই বর্তমান যুগের যেসকল ইয়াহুদী বা খ্রিস্টানদের সম্পর্কে জানা যাবে যে, সে আল্লাহদ্রোহী ও নাস্তিক এবং ধর্ম অস্বীকারকারী নয় এবং আল্লাহ ও নবুওয়াতে বিশ্বাসী, তবে হানাফীদের মতে তাদের জবাইকৃত পশু পূর্বোক্ত ঐ শর্তের সাথে হালাল। অর্থাৎ ইচ্ছাকৃতভাবে তারা বিসমিল্লাহ ছেড়ে দিবে না। আর শাফেঈ ও মালেকীদের মতে বিসমিল্লাহ না বললেও জবাইকৃত পশু হালাল। এতদসত্ত্বেও আজকাল যেখানে মুসলমানগণের জবাইকৃত পশু সহজেই হস্তগত হয় এবং আহলে কিতাবদের জবাইকৃত পশু সম্পর্কে কোন উপযুক্ত সত্যায়ন ও সমর্থন বিদ্যমান না থাকে, সেখানে উত্তম হলো আহলে কিতাবদের জবাইকৃত পশু খাওয়া থেকে বিরত থাকা।
প্রশ্ন: জবাইয়ের সময় যদি গর্দান পৃথক হয়ে যায়, তা খাওয়া যাবে কি না?
উত্তর: যদি প্রাণীকে এভাবে জবাই করা হয় যে, গর্দানই পৃথক হয়ে যায়, যদি ইচ্ছাকৃত এমন করা হয়, তবে তা এ কর্ম মাকরূহ হবে। তবে জবাইকৃত পশু হালাল। ফাতাওয়ায়ে আলমগীরিতে আছে- যদি উট গাভী বা বকরীর গর্দানে আঘাত করে তা পৃথককরে দেয় এবং এরূপ করার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে থাকে, তবে যদি গলার দিক দিয়ে আঘাত করে থাকে তাহলে জবাইকৃত পশু খাওয়া যাবে। কিন্তু জবাইয়ের এই পন্থা ভুল হয়েছে। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া: ৫/২৮৮)
প্রশ্ন: পাশ্চাত্য দেশসমূহ হতে আমদানীকৃত গোশত খাওয়ার বিধান কি?
উত্তর: মুসলিম দেশসমূহের কারিগরি অক্ষমতা পাশ্চাত্য দেশগুলোর উন্নতির সুযোগ এ পর্যন্ত পৌঁছিয়েছে যে, আমরা খাদ্যেও স্বাবলম্বী নই, ইউরোপ ও খ্রিস্টান অধ্যুষিত দেশসমূহ অধিকাংশ মুসলিম রাষ্ট্রে জবাইকৃত গোশত সাপ্লাই করে থাকে। প্রাণীগুলোকে শরঈ তরিকায় জবাই করা হয়েছে কি না? এ তথ্য অনুসন্ধানের জন্য মুসলিম দেশসমূহের পক্ষ থেকে পরিদর্শক নির্দিষ্ট রয়েছে। তারা পুরো ব্যবস্থাপনা তত্ত্বাবধান করে থাকে এবং জবাইকৃত জন্তুর প্যাকেটে শরঈ তরিকায় জবাই করা হয়েছে এর সীল মোহর লাগিয়ে দেয়।
নীতিগতভাবে এগুলো খাওয়া হালাল ও বৈধ আছে। কারণ, এ সকল ব্যাপারে ইসলামী আইনবিদগণ অমুসলিমদের এমন অবহিতকরণেরও নির্ভরযোগ্য মেনেছেন, যাতে মিথ্যা প্রতিপন্ন করার সুস্পষ্ট কোন কারণ বিদ্যমান না থাকে। ফাতাওয়ায়ে আলমগীরিতে আছে-
যে ব্যক্তি নিজের অগ্নিপূজক চাকর বা খাদেমকে গোশত কেনার জন্য পাঠিয়েছে, সে গোশত ক্রয় করে এসে বললো, আমি ইয়াহুদী বা খ্রিস্টান বা মুসলমান থেকে ক্রয় করেছি। তবে তা খাওয়ার অবকাশ রয়েছে। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া: ৫/৩০৯)
হ্যাঁ যদি অন্য আলামতও গ্রহণযোগ্য ও সঙ্গত কারণে এ ধারণা প্রবল হয়ে যায় যে, এটা শুধু এমনিতেই লিখে দেওয়া হয়েছে, সত্যিকারার্থে শরঈ পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়নি। তবে তা খাওয়া বৈধ হবে না। ইসলামী আইনবিদগণের নিম্নোক্ত বক্তব্য দ্বারা এ ব্যাপারে সমর্থন পাওয়া যায়-
কেউ গোশত করে যখন নিজের আয়ত্বে নিয়ে নিলো, তখন কোন নির্ভরযোগ্য মুসলমান তাকে অবহিত করলো যে, তাতে শুকরের গোশত মিশ্রিত করা হয়েছে, তবে তার জন্য সেটা ভক্ষণ করার অবকাশ নেই। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া: ৫/৩০৯)

Leave a Reply


This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.