Main Menu

আশূরার তাৎপর্য ও রোযার ফযীলত

মাওলানা মামুনুর রশীদ (কুয়েত প্রবাসী)

আশূরা কি এবং কেনো এই দিনটি এত গুরুত্বপূর্ণ, সেই সম্পর্কে আমাদের অনেক মুসলিম ভাইদের মাঝে সঠিক এবং স্বচ্ছ কোন ধারণা নেই। আশূরা নিয়ে পত্রিকাতে বিশেষ সংখ্যা বের করা হয়, আর তাতে ঘুরে ফিরে কারবালার কাহিনীটাই প্রধান প্রতিপাদ্য বিষয় হিসেবে লক্ষ্য করা যায়। আশূরা এমন একটি দিন যেই দিনটি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও গুরুত্ব দিয়েছেন কিন্তু একটি বিষয় লক্ষ্যনীয় সেই সময় কিন্তু কারবালার ঘটনাটি ঘটে নি। অর্থাৎ, কারবালার ঘটনা আশূরার সাথে সম্পৃক্ত কোন বিষয় নয়। তাহলে প্রকৃতপক্ষে কোন ঘটনাটি আশূরার সাথে সম্পৃক্ত?

 ইসলামে বিশেষ কিছু পর্ব বা দিবস আছে। যেগুলো আল্লাহ রাব্বুল আলামীন নির্ধারণ করেছেন ইবাদত-বন্দেগী করার জন্য। এমনি একটা দিবসের নাম আশূরা। হিজরী সনের প্রথম মাস মুহাররমের দশ তারিখ। মুসলিম উম্মাহর দ্বারে কড়া নাড়ে প্রতি বছর।

এ মাসে রয়েছে এমন একটি দিন, দীর্ঘ সংগ্রাম শেষে যে দিনে নবী মুসা (আ.) এর বিজয় হয়েছিল। পতন হয়েছিল তৎকালীন সবচেয়ে শক্তিশালী জালেম সম্রাট ফেরআউন ও তার সাম্রাজ্যের। সে দিনটিই হল আশূরা; মুহাররম মাসের দশ তারিখ।

এ দিনটি আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে খুবই প্রিয়। তাই তিনি এ দিনে রোযা পালনের সওয়াব প্রদান করে থাকেন বহুগুণে।

 যেমন হাদীসে এসেছে

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ  عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ ‏‏ أَفْضَلُ الصِّيَامِ بَعْدَ رَمَضَانَ شَهْرُ اللَّهِ الْمُحَرَّمُ وَأَفْضَلُ الصَّلَاةِ بَعْدَ الْفَرِيْضَةِ صَلَاةُ اللَّيْلِ  رواه مسلم 1163

 “আবু হুরায়রাহ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেনঃ রাসূল (সা.) বলেছেনঃ রমযানের পর সর্বোত্তম রোযা হল আল্লাহর প্রিয় মুহাররম মাসের রোযা। এবং ফরজ নামাযের পর সর্বোত্তম নামায হল রাতের নামায”  (মুসলিম: ১১৬৩)

আশূরার বৈশিষ্টে: মধ্যে রয়েছে এ দিনে আল্লাহ তা’আলা তার নবী মুছা (আ.) ও তার অনুসারী ঈমানদারদের ফেরআউনের জুলুম থেকে নাজাত দিয়েছিলেন এবং ফেরআউনকে তার বাহিনীসহ সমুদ্রে ডুবিয়ে মেরেছেন।

 রাসূল (সা.) যখন মদীনায় আগমন করলেন, তিনি আশূরার দিনে ইহুদীদের রোযা পালন করতে দেখলেন। যেমন হাদীসে এসেছে

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ  عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ قَدِمَ الْمَدِينَةَ فَوَجَدَ الْيَهُودَ صِيَامًا يَوْمَ عَاشُورَاءَ فَقَالَ لَهُمْ رَسُولُ اللَّهِ  صَلَّى اللهُ  عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ ‏‏ مَا هَذَا الْيَوْمُ الَّذِي تَصُومُونَهُ ‏”‏ ‏ فَقَالُوا هَذَا يَوْمٌ عَظِيمٌ أَنْجَى اللهُ فِيهِ مُوسَى وَقَوْمَهُ وَغَرَّقَ فِرْعَوْنَ وَقَوْمَهُ فَصَامَهُ مُوسَى شُكْرًا فَنَحْنُ نَصُومُهُ ‏ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ  عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ ‏”‏ فَنَحْنُ أَحَقُّ وَأَوْلَى بِمُوسَى مِنْكُمْ ‏”‏ ‏فَصَامَهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ  عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ ‏

 “ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেনঃ  রাসূল (সা.) মদীনায় এসে দেখলেন যে, ইহুদীরা আশূরার দিনে রোযা পালন করছে। তিনি তাদের জিজ্ঞেস করলেন “এটা কোন দিন যে তোমরা রোযা পালন করছ? তারা বললঃ এটা এমন এক মহান দিবস যেদিন আল্লাহ মুছা (আ.) ও তার সম্প্রদায়কে নাজাত দিয়েছিলেন এবং ফেরআউনকে তার দলবলসহ ডুবিয়ে মেরেছিলেন। মুছা (আ.) শুকরিয়া হিসেবে এ দিনে রোযা পালন করেছেন। এ কারণে আমরাও রোযা পালন করে থাকি। এ কথা শুনে রাসূল (সা.) বললেনঃ “তোমাদের চেয়ে আমরা মুছা (আ.) এর অধিকতর ঘনিষ্ট ও নিকটবর্তী।” অতঃপর রাসূল (সা.) রোযা পালন করলেন ও অন্যদেরকে রোযা পালনের নির্দেশ দিলেন। (বুখারী ও মুসলিম)

রাসূলে কারীম (সা.) ইহুদীদের কথা বিশ্বাস করে রোযা পালন করেছেন এমনটি নয়। সম্ভবত আল্লাহ তা’আলা অহীর মাধ্যমে ইহুদীদের এ বক্তব্যের সত্যতা জানিয়ে ছিলেন অথবা তিনি বিশ্বস্ত সূত্রে এর সত্যতা উপলদ্ধি করেছিলেন।

এ দিনে রোযা পালনের ফযীলত;

عَنْ أَبِيْ قَتَادَةَ الْأَنْصَارِيْ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ  عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ سُئِلَ عَنْ صَوْمِ يَوْمِ عَرَفَةَ فَقَالَ:  يُكَفِّرُ السَّنَةَ الْمَاضِيَةَ وَالْبَاقِيَةَ ، وَسُئِلَ عَنْ صَوْمِ يَوْمِ عَاشُوْرَاءَ فَقَالَ: يُكَفِّرُ السَّنَةَ الْمَاضِيَةَ (رواه مسلم    2804

আবু কাতাদাহ (রা.) থেকে বর্ণিত যে, রাসূল (সা.) কে আশূরার রোযা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হল, তিনি বললেনঃ “ বিগত এক বছরের গুনাহের কাফফারা হিসেবে গৃহীত হয়।” (মুসলিম: ২৮০৪)

ইমাম বায়হাকী (রহঃ) বলেনঃ “এ হাদীসের ব্যাখ্যা হলঃ যে রোযা পালনকারীর গুনাহ রয়েছে তার গুনাহের কাফফারা হবে আর যার গুনাহ নেই আশূরার রোযা তার মর্যাদা বৃদ্ধি করবে।” (ফাযায়েলুল আওকাত: বায়হাকী)

রাসূলে কারীম (সা.) এ রোযাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে পালন করতেন: যেমন হাদীসে এসেছে;

عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ : مَا رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ  عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ يَتَحَرَّى صِيَامَ يَوْمٍ فَضَّلَهُ عَلَى غَيْرِهِ إِلَّا هَذَا الْيَوْمَ يَوْمَ عَاشُورَاءَ وَهَذَا الشَّهْرَ يَعْنِي شَهْرَ رَمَضَانَ   رواه البخاري: 1867

ইবনে আব্বাস (রা.) বলেনঃ “আমি রাসূল (সা.) কে এ রোযা ছাড়া অন্য কোন রোযাকে এত গুরুত্ব দিতে দেখিনি। আর তা হল আশূরার রোযা ও এই রমযান মাসের রোযা।” (বুখারী: ১৮৬৭)

সালফে সালেহীনগণও এ রোযাকে গুরুত্বসহ পালন করতেন: তারা সফরে থাকাকালীন সময়েও এ রোযাকে পরিত্যাগ করতেন না। যেমন ইমাম ইবনে রজব (রহ.) বর্ণনা করেছেন যে, ইবনে আব্বাস (রা.), আবু ইসহাক আস-সাবেয়ী, ইমাম যুহরী (রহ.) প্রমুখ বলতেনঃ “রমযানের রোযা কোন কারণে ছুটে গেলে অন্য সময়ে আদায় করার সুযোগ থাকে, কিন্তু আশূরার রোযা ছুটে গেলে আর রাখা যায় না।” (লাতায়েফুল মাআ‘রিফ : ইবনে রজব)

তাই তারা সফরে থাকা অবস্থায়ও আশূরার রোযা আদায় করতেন। নেক কাজে অগ্রণী হওয়ার ব্যাপারে এই ছিল আমাদের পূর্বসূরী ওলামায়ে কেরামের আদর্শ।

এই হাদীসগুলোর আলোকে আমরা একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারি, আর তা হল, আশূরা’র মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হলো ফেরাউনের বিরুদ্ধে মূসা আলাইহিস সাল্লামের বিজয়। এই দিন (১০ই মহররম) আল্লাহ তাআলা নাস্তিক ফেরাউনের বিরুদ্ধে মূসা আলাইহিস সালামকে বিজয় দান করেছিলেন। যে ঘটনার বিবরণ আমরা মহাগ্রন্থ আল কুরআনে পাই, যেমন:

وَقَالَ فِرْعَوْنُ يَا هَامَانُ ابْنِ لِي صَرْحًا لَّعَلِّي أَبْلُغُ الْأَسْبَابَ ﴿٣٦﴾ أَسْبَابَ السَّمَاوَاتِ فَأَطَّلِعَ إِلَىٰ إِلَـٰهِ مُوسَىٰ وَإِنِّي لَأَظُنُّهُ كَاذِبًا ۚ وَكَذَٰلِكَ زُيِّنَ لِفِرْعَوْنَ سُوءُ عَمَلِهِ وَصُدَّ عَنِ السَّبِيلِ ۚ وَمَا كَيْدُ فِرْعَوْنَ إِلَّا فِي تَبَابٍ ﴿٣٧﴾

ফেরাউন বলল, হে হামান, তুমি আমার জন্যে একটি সুউচ্চ প্রাসাদ নির্মাণ কর, হয়তো আমি পৌঁছে যেতে পারব। আকাশের পথে, অতঃপর উঁকি মেরে দেখব মূসার আল্লাহকে। বস্তুতঃ আমি তো তাকে মিথ্যাবাদীই মনে করি। এভাবেই ফেরাউনের কাছে সুশোভিত করা হয়েছিল তার মন্দ কর্মকে এবং সোজা পথ থেকে তাকে বিরত রাখা হয়েছিল। ফেরাউনের চক্রান্ত ব্যর্থ হওয়ারই ছিল। (সূরা গাফের: ৩৬-৩৭)

كَدَأْبِ آلِ فِرْعَوْنَ وَالَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ ۚ كَذَّبُوا بِآيَاتِنَا فَأَخَذَهُمُ اللهُ بِذُنُوبِهِمْ ۗ وَاللهُ شَدِيدُ الْعِقَابِ ﴿١١﴾

 “ফেরাউনের সম্প্রদায় এবং তাদের পূর্ববর্তীদের ধারা অনুযায়ীই তারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে। ফলে তাদের পাপের কারণে আল্লাহ তাদেরকে পাকড়াও করেছেন আর আল্লাহর আযাব অতি কঠিন।” (সূরা আলে ইমরান: ১১)

নাস্তিক ফেরাউন দাম্ভিকতার সাথে বলেছিল:

 قَالَ فِرْعَوْنُ وَمَا رَبُّ الْعَالَمِينَ ﴿٢٣﴾

“ফেরাউন বলল, বিশ্বজগতের পালনকর্তা আবার কি?” (সূরা আশ শুয়ারা: ২৩)

যার উত্তরে মূসা আলাইহিস সালাম বলেছিলেনঃ

  قَالَ رَبُّ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا ۖ إِن كُنتُم مُّوقِنِينَ ﴿٢٤﴾

“মুসা বলল, তিনি নভোমন্ডল, ভূমন্ডল ও এতদুভয়ের মর্ধবর্তী সবকিছুর পালনকর্তা যদি তোমরা বিশ্বাসী হও” (সূরা আশ শুয়ারা: ২৪)

ফেরাউনও এক সময় আল্লাহকে বিশ্বাস করেছিলো: 

বিশ্বাস করাটা মানুষের স্বভাবজাত একটা বিষয়। বিশ্বাস ব্যতীত সে বেচেঁই থাকতে পারবে না। যেমনঃ সে মানুষকে মানুষ বলে বিশ্বাস করে, গরুকে গরু হিসেবে বিশ্বাস করে, গাড়িকে গাড়ি হিসেবে বিশ্বাস করে অর্থাৎ মানুষকে বিশ্বাস করতেই হবে যদি সে বিশ্বাস না করে তাহলে সে মানুষই নয়। ফেরাউনও এর ব্যতিক্রম ছিল না, যদিও সে দাম্ভিক, অহংকারী ছিল কিন্তু একদম ভিতরে সে আল্লাহ অস্বীকার করতে পারে নি। যার প্রমাণ আমরা পাই নিম্নোক্ত আয়াত থেকেঃ

وَجَاوَزْنَا بِبَنِي إِسْرَائِيلَ الْبَحْرَ فَأَتْبَعَهُمْ فِرْعَوْنُ وَجُنُودُهُ بَغْيًا وَعَدْوًا ۖ حَتَّىٰ إِذَا أَدْرَكَهُ الْغَرَقُ قَالَ آمَنتُ أَنَّهُ لَا إِلَـٰهَ إِلَّا الَّذِي آمَنَتْ بِهِ بَنُو إِسْرَائِيلَ وَأَنَا مِنَ الْمُسْلِمِينَ ﴿٩٠﴾

 “আর বনী ইসরাঈলকে আমি পার করে দিয়েছি নদী। তারপর তাদের পশ্চাদ্ধাবন করেছে ফেরাউন ও তার সেনাবাহিনী, দুরাচার ও বাড়াবাড়ির উদ্দেশ্যে। এমনকি যখন তারা ডুবতে আরম্ভ করল, তখন বলল, এবার বিশ্বাস করে নিচ্ছি যে, কোন মা’বুদ নেই তাঁকে ছাড়া, যাঁর উপর ঈমান এনেছে বনী ইসরাঈলরা। বস্তুতঃ আমিও তাঁরই অনুগতদের অন্তর্ভুক্ত” (সূরা ইউনুস: ৯০)

  দাম্ভিক, অহংকারী ফেরাউনের এই আকুতি তখন আর গ্রহণ করা হয়নি, কারণ এর আগে তাকে অনেক সুযোগ দেওয়া হয়েছিল কিন্তু সে দাম্ভিকতার সাথে শুধু অস্বীকরই করে নি, বরং যারা তাকে সত্যের দাওয়াত দিয়েছিল তাদের হত্যা করার জন্যও সে প্রচেষ্টা চালিয়েছিল।

 ফেরাউনের এই কথার জবাবে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেনঃ

 آلْآنَ وَقَدْ عَصَيْتَ قَبْلُ وَكُنتَ مِنَ الْمُفْسِدِينَ

“এখন একথা বলছ! অথচ তুমি ইতোপূর্বে না-ফরমানী করেছিলে। এবং পথভ্রষ্টদেরই অন্তর্ভুক্ত ছিলে”। (সূরা ইউনুস: ৯১)

  আল্লাহ তা‘আলা ফেরাউনের মৃতদেহকে সংরক্ষণ করে রেখেছেন যাতে করে যারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে অবিশ্বাস করে তাদের জন্য নিদর্শন হয়ে থাকে।

فَالْيَوْمَ نُنَجِّيكَ بِبَدَنِكَ لِتَكُونَ لِمَنْ خَلْفَكَ آيَةً ۚ وَإِنَّ كَثِيرًا مِّنَ النَّاسِ عَنْ آيَاتِنَا لَغَافِلُونَ ﴿٩٢﴾

“আজ আমি তোমাকে (অর্থাৎ) তোমার দেহকেই বাচিঁয়ে রাখব, যাতে করে তুমি (তোমার এ দেহ) পরবর্তী (প্রজন্মের লোকদের) জন্যে একটা নিদর্শন হয়ে থাকতে পারে; অবশ্য অধিকাংশ মানুষই আমার (এসব) নিদর্শনসমূহ থেকে সম্পূর্ণ (অজ্ঞ ও) বেখবর। (সূরা ইউনুস: ৯২)

   নিদর্শন দেখে মানুষ বুঝতে পারে আসল ঘটনা কি। যেমনঃ একটি খোলা মাঠে গরুর গোবর দেখে একদম অশিক্ষিত মানুষও বিশ্বাস করে এই মাঠে গরু ঘাস খেতে আসে। মহান আল্লাহ তাআলা নিদর্শনসমূহের বর্ণনা দিয়ে খুব সহজ করে মানুষকে বুঝিয়েছেন। আল্লাহ তা‘আলার সৃষ্টির নিদর্শন দেখে আল্লাহর অস্তিত্ব অস্বীকার করার উপায় নেই। ফেরাউনের বিরুদ্ধে মূসা আলাইহিস সালামের বিজয়কে আল্লাহ তাআলা একটি নিদর্শন হিসেবে রেখে দিয়েছেন যাতে করে মানুষ এ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে। অবশ্য অধিকাংশ মানুষই আমার (এসব) নিদর্শনসমূহ থেকে সম্পূর্ণ (অজ্ঞ ও) বেখবর। আজ আমাদের দিকে লক্ষ্য করলেই একথার তাৎপর্য একদম পরিস্কার ও স্পষ্ট হয়ে উঠে।

আশূরার প্রকৃত তাৎপর্য হলো আল্লাহতে অবিশ্বাসী নাস্তিকদের পরাজয় আর আল্লাহতে বিশ্বাসীদের বিজয়ের দিন অর্থাৎ সংক্ষিপ্ত আকারে বললে- বলা যায় ‘আশূরা হচ্ছে বিশ্বাসীদের বিজয় দিবস’। অথচ আশূরার এই প্রকৃত তাৎপর্য থেকে আমরা সম্পূর্ণ (অজ্ঞ ও) বেখবর হয়ে রয়েছি। আশূরার এই ঘটনা থেকে প্রায় তিন হাজার বছর পর কারবালার ঘটনা সংগঠিত হয়েছিল। কিন্তু না জানার কারণে আশূরার সময় আমরা কারবালার ঘটনা বিশ্লেষণ করতে লেগে যাই। অথচ এই দিনটি যে বিশ্বাসীদের বিজয় দিবস আর নাস্তিকদের পতন দিবস সে সম্পর্কে আমাদের কোন বোধদয়ই হয় না।

    “মূসা আলাইহিস সালাম এই ঘটনার কৃতজ্ঞতা স্বরূপ রোযা রাখতেন” আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তারা সাহাবীদের বললেন, “মূসা আলাইহিস সালামের বিজয় উৎযাপনের অধিকার ইহুদীদের চেয়ে তোমাদের (মুসলিমদের) বেশি, তাই এই দিনে রোযা রাখ”।

  আশূরার এই প্রকৃত ঘটনা মুসলমানদেরকে আরো শক্তিশালী করবে, তাদের বিশ্বাসকে আরো বাড়িয়ে দিবে আর আল্লাহকে অবিশ্বাসকারীরা নিদর্শন থেকে শিক্ষা নিবে। তবে আশূরাকে কারবালার ঘটনা দিয়ে যেভাবে শোক পালন করা হয় আর কিছু গোষ্ঠী যেভাবে মাতম করে যা সুস্পষ্ট বিদআত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, তাঁর সাহাবীরা এভাবে আশূরা পালন করেন নি। আর যে কোন শোক তিনদিনের বেশি পালনের অনুমতি ইসলামী শরীয়া দেয় নি। অর্থাৎ যেদিন মারা যাবে সেদিন থেকে নিয়ে তিনদিন শোক পালন করা কিন্তু এই তিন দিনের মধ্যেও শোকে মাতম করে জামা-কাপড় ছিড়ে ফেলা, রক্ত বের করা ইসলাম শিক্ষা দেয় নি।

আশূরার  রোযার ব্যাপারে ইহুদীদের বিরোধিতা করার নির্দেশ

যে সকল বিষয়ে কোন শরয়ী হুকুম অবতীর্ণ হয়নি, মদীনায় আসার পর সে সকল বিষয়ে রাসূল (সা.) ইহুদীদের অনুরূপ আমল করা পছন্দ করতেন। যেমন তিনি মসজিদুল আকসাকে কিবলা হিসেবে গ্রহণ করলেন। উদ্দেশ্য ছিল ইহুদীরা যেন ইসলামকে নিজেদের ধর্মের মতই মনে করে, ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে ইসলাম গ্রহণ করে। পরে যখন সত্য ধর্ম ইসলাম গ্রহণের পরিবর্তে ইহুদীদের অবাধ্যতা, হিংসা, কপটতা, বিশ্বাসঘাতকতা, বর্ণবাদী নীতি ও চরম সাম্প্রদায়িকতা প্রকাশ পেল, তখন সকল ব্যাপারে তাদের বিরোধিতা করার নির্দেশ দেয়া হল, এবং ধর্মীয় ও সংস্কৃতির ব্যাপারে তাদের সাথে সাদৃশ্যতাপূর্ণ সকল আমল ও আচরণ করতে নিষেধ করা হল।

তাই রাসূল (সা.) সংকল্প করলেন, আশূরার দিনে তিনি ইহুদীদের মত আর একটি করে রোযা পালন করবেন না। বরং এ রোযার সাথে মুহাররম মাসের নবম তারিখে একটি রোযা বাড়িয়ে রাখার মাধ্যমে ইহুদীদের ধর্ম ও সংস্কৃতির বিরোধিতা করবেন। এর প্রমাণ হিসেবে বহু হাদীস এসেছে।

رَوَى عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قال : حِينَ صَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ  عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ يَوْمَ عَاشُورَاءَ وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّهُ يَوْمٌ تُعَظِّمُهُ الْيَهُودُ وَالنَّصَارَى فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ  عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ فَإِذَا كَانَ الْعَامُ الْمُقْبِلُ إِنْ شَاءَ اللَّهُ صُمْنَا الْيَوْمَ التَّاسِعَ قَالَ فَلَمْ يَأْتِ الْعَامُ الْمُقْبِلُ حَتَّى تُوُفِّيَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ  عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ . رواه مسلم 1916

 ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, যখন রাসূল (সা.) আশূরার রোযা পালন করলেন ও অন্যকে পালন করার নির্দেশ দিলেন, তখন সাহাবায়ে কেরাম (রা.) বললেনঃ “এটা তো এমন এক দিন যাকে ইহুদী ও খ্রিস্টানরা সম্মান করে থাকে।” তখন রাসূল (সা.) বললেনঃ “আগামী বছর আসলে ইনশা-আল্লাহ আমরা নবম তারিখে রোযা পালন করব।” ইবনে আব্বাস (রা.) বলেনঃ “পরবর্তী বছর আসার পূর্বেই রাসূল (সা.) ইন্তেকাল করলেন।” (মুসলিম: ১৯১৬)

আশূরার রোযা কোনটি?

হাকাম ইবনুল আ‘ওয়াজ নামে এক ব্যক্তি ইবনে আব্বাস (রা.) কে আশূরার রোযা সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি উত্তরে বলেনঃ “যখন মুহাররম মাসের চাঁদ দেখবে তখন থেকে হিসেব করবে এবং নবম তারিখের সকাল থেকে রোযা পালন করবে।” (মুসলিম ও তিরমিযী)

ইবনে আব্বাস (রা.) এর এ উত্তর থেকে এ ধরনের বিভ্রান্তি সৃষ্টির আশংকা নেই যে, আশূরার রোযা আসলে কোন দিন; নবম না দশম তারিখে?

ইবনুল কায়্যিম (রহঃ) বলেন ঃ “কেউ যদি আশূরা সম্পর্কিত ইবনে আব্বাস (রা.) এর বর্ণনাসমূহ একত্র করে পড়ে দেখে, তা হলে তার সামনে কোন বিভ্রান্তি বা অস্পষ্টতা থাকবে না, এবং সে ইবনে আব্বাস (রা.) এর ইলম ও প্রজ্ঞার গভীরতা উপলদ্ধি করতে পারবে। বর্ণিত হাদীসে প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন নি যে আশূরা নবম তারিখে। তিনি শুধু নবম তারিখে রোযা আরম্ভ করতে বলেছেন। (যাদুল মাআ‘দ)

হাদীসে এসেছে

عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ  عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ :صُومُوا يَوْمَ عَاشُورَاءَ ، وَخَالِفُوا فِيهِ الْيَهُودَ ، صُومُوا قَبْلَهُ يَوْمًا أَوْ بَعْدَهُ يَوْمًا ) رواه أحمد  2155

ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন যে, রাসূল (সা.) বলেছেনঃ “তোমরা আশূরা দিবসে রোযা পালন কর ও এ ক্ষেত্রে ইহুদীদের বিরোধিতা কর। তাই তোমরা আশূরার একদিন পূর্বে অথবা একদিন পরে  রোযা পালন করবে। (আহমদ: ২১৫৫)

এ হাদীসে কয়েকটি বিষয় স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়ঃ

(১) রাসূল (সা.) আশূরার দিনে রোযা পালন করতে বলেছেন। তাই আশূরার দিনকে বাদ দিয়ে রোযা পালন করলে তা আশূরার রোযা হবে না।

(২) আশূরার রোযা পালনের ক্ষেত্রে ইহুদীদের বিরোধিতা করতে হবে। তাই ইহুদীদের মত দশম তারিখে একটি মাত্র রোযা পালন করা যাবে না।

(৩) আশূরার একদিন পূর্বে রোযা পালন করতে হবে।

(৪) যদি আশূরার পূর্বের দিন রোযা পালন করা কোন কারণে সম্ভব না হয় তাহলে আশূরা ও তার পরের দিন  রোযা পালন করতে হবে।

অতএব আশূরার দিন বাদ দিয়ে আশূরার একদিন পূর্বে ও একদিন পরে রোযা পালন করা ঠিক হবে না। তেমনি আশূরার দিনসহ একদিন আগে ও একদিন পরে মোট তিনটি রোযা পালন করাও ঠিক হবে না।

ইহুদীদের ধর্মীয় আচারের বিরোধিতা করার জন্য এ পদ্ধতিতে  রোযা পালন করা হবে ।

 যেমন হাদীসে এসেছে;

كَمَا جَاءَ فِيْ حَدِيْثِ أَبِيْ مُوْسَى رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: كَانَ يَوْمُ عَاشُورَاءَ تَعُدُّهُ الْيَهُودُ عِيدًا وَفِيْ رِوَايَةِ مُسْلِمٍ: “كَانَ يَوْمُ عَاشُوْرَاءَ تُعَظِّمُهُ الْيًهُوْدُ وَتَتَّخِذُهُ عِيْداً”. وَفِيْ رِوَايَةِ لَهُ أَيْضًا: “كَانَ أَهْلُ خَيْبَرَ (اليهود) يَتَّخِذُوْنَهُ عِيْداً، وَيُلْبِسُونَ نِسَاءَهُمْ فِيهِ حُلِيَّهُمْ وَشَارَتَهُمْ ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ  عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ: ” فَصُومُوهُ أَنْتُمْ ” ” (رواه البخاري).

আবু মুছা (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেনঃ খায়বর অঞ্চলের ইহুদীরা আশূরার দিনে রোযা পালন করত ও ঈদ উদযাপন করত। এ দিনে তাদের মেয়েরা অলংকারাদি পরিধান করত ও তারা উত্তম পোশাকে সজ্জিত হত। রাসূল (সা.) বললেনঃ “তাহলে তোমরা সেদিনে রোযা পালন করবে।” (বুখারী ও মুসলিম)

এ হাদীস দ্বারা কয়েকটি বিষয় জানা যায়ঃ

(১) অঞ্চল ও গোত্র ভেদে ইহুদীদের ধর্মীয় আচরণের বিভিন্নতা। মদীনার ইহুদীরা শুধু রোযা পালন করত আর খায়বারের ইহুদীরা রোযা পালন ও উৎসব পালন করত।

(২) যেহেতু এ দিনে ইহুদীরা ঈদ পালন করত। আর রোযা হল ঈদের বিরোধী। তাই রোযা পালন করে তাদের ঈদের বিরোধিতা করার নির্দেশ দিলেন আল্লাহ, রাসূল (সা.) কে।

(৩) রোযা ও ঈদ পরস্পরের বিরোধী। তাই তা একই দিনে একত্র হতে পারে না।

(৪) আল্লাহর রাসূল (সা.) এর এ বাণীটি ইসলামের শেষ দিকের। কারণ খায়বর বিজয় ও হাদীসের বর্ণনাকারী আবু মুছা আল-আশ‘আরীর রাসূলের সঙ্গ লাভ তাঁর জীবনের শেষ দিকের ঘটনা। যদিও আবু মুছা (রা.) ইসলাম গ্রহণ করেন মক্কী জীবনে।

ইবনে রজব (রহঃ) বলেনঃ “এ হাদীস দ্বারা স্পষ্টভাবে বুঝা গেল এ দিনকে উৎসবের দিন হিসেবে গ্রহণ করতে নিষেধ করা হয়েছে। আর কাফির মুশরিকদের ঈদের সাথে সংহতি প্রকাশ না করে ঐদিনে রোযা পালন করে তাদের উৎসবের বিরোধিতা করতে বলা হয়েছে।” (লাতায়েফুল মাআ’রিফ)

কারবালার ঘটনার সাথে আশূরার কি সম্পর্ক?

বর্তমানে আমরা দেখছি প্রায় সর্ব মহল থেকে আশূরার মূল বিষয় বলে কারবালার ঘটনাকেই বুঝানো হচ্ছে। কিন্তু কুরআন ও সুন্নাহর দৃষ্টিকোণ থেকে এটা সঠিক নয়।

ইসলামের আগমনের পূর্বে আশূরা ছিল। যেমন আমরা হাদীস দ্বারা জানতে পেরেছি। তখন মক্কার মুশরিকরা যেমন আশূরার সওম পালন করত তেমনি ইহুদীরা মুছা আ. এর বিজয়ের স্মরণে আশূরার সওম পালন করত।

শরীয়তের মানদণ্ডে আশূরার প্রচলিত আমলসমূহ

মুসলিম জনসাধারণের দিকে তাকালে আপনি দেখবেন যে, তারা এ আশূরাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ধরনের কাজ-কর্মে লিপ্ত হয়ে পড়ে। এবং এ কাজগুলো তারা আশূরার আমল মনে করেই করে থাকে। যেমন আশূরার রাত্রি জাগরণ, বিভিন্ন প্রকার উন্নত খাবারের ব্যবস্থা, পশু জবেহ, আনন্দ-ফূর্তির প্রকাশ, আবার কারবালায় ইমাম হুসাইন (রা.) এর শাহাদাতের স্মরণে মাযারের প্রতিকৃতি বানিয়ে তা নিয়ে মাতম ও তাযিয়া মিছিল বের করা, মাহফিল ও আলোচনা সভা ইত্যাদি।

এগুলো বিভ্রান্ত শিয়া ও রাফেজীদের কাজ হলেও দুঃখজনকভাবে আমাদের সাধারণ মুসলিম জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। আর শিয়া সম্প্রদায়রা আশূরাকে কেন্দ্র যা করছে, তার সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক নাই। তাই একজন প্রকৃত মুসলমানের দায়িত্ব হলো সুন্নাত বিরোধী সকল কর্মকাণ্ড পরিত্যাগ করা। তাই আমাদের জেনে নিতে হবে কোনটা আশূরা সম্পর্কিত আমল আর কোনটা ভেজাল বা বিদ‘আত।

যদি আমাদের আমলগুলো শরীয়ত সম্মত হয় তা হলে তা দ্বারা আমরা আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য ও সওয়াব লাভ করতে পারব। আর যদি আমলগুলো শরীয়ত সমর্থিত না হয়, বিদ’আত হয়, তাহলে তা পালন করার কারণে আমরা গুনাহগার হবো। আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের পরিবর্তে তার থেকে দূরে সরে পড়বো।

আমাদের সর্বদা ভাল করে মনে রাখতে হবে যে, যে কোন আমল আল্লাহ তায়ালার কাছে কবুল হওয়ার জন্য দুটো শর্ত রয়েছে।

একটি হল : আমলটি আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য করতে হবে।

দ্বিতীয়টি হল : আমলটি অবশ্যই আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর নির্দেশিত পদ্ধতিতে হতে হবে।

আশূরার দিনে বর্জনীয় কাজসমূহ

আশূরার দিনে রোযা ও তওবা ইস্তেগফার ছাড়া যেহেতু অন্য কোনো আমল পাওয়া যায় না তাই আমাদের দেশে আশূরার দিনে যে সমস্ত রেওয়াজ রুসম রয়েছে যেমন- মিলাদ মাহফিল করা, খিচুড়ি পাকানো, বিশেষত শিয়াদের আবিষ্কৃত কু-প্রথা ও বিদআতগুলো যেমন তাজিয়া (মাজারের সাদৃশ্য করে হযরত হুসাইন (রা.) এর নকল কবর তৈরী করা), ঢাক ঢোল ও বাদ্যযন্ত্র বাজানো, হায় হাসান হায় হুসাইন বলে মাতম করা, ছুরি মেরে নিজের বুক পিঠ থেকে রক্ত বের করে বুক চাপড়ানো, শোকের পোশাক পরা ইত্যাদি অবশ্যই বর্জনীয়। এ সব করা যেমন হারাম তেমনি এ সব অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করাও হারাম। আল্লাহ তাআলা নিজ দয়ায় আমাদেরকে আশূরার পবিত্রতা ও তাৎপর্য থেকে উপকৃত হওয়ার এবং তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনে দিনটি অতিবাহিত করার তাওফীক দান করুন। আমীন।

Related Post