Main Menu
أكاديمية سبيلي Sabeeli Academy

ইছালে ছাওয়াব কী

কুরআন তেলাওয়াত

কুরআন তেলাওয়াত

ইছালে ছাওয়াব ফারসী শব্দ। আরবীতে  হবে ‘ঈসালুস ছাওয়াব’। আভিধানিক অর্থ: ছাওয়াব পৌঁছে দেয়া। অনেকে বলে থাকেন ‘ছাওয়াব রেসানী।’ এ শব্দটি ফারসি ভাষার হলেও, বাংলায় বহুল ব্যবহৃত বলে সাধারণ সমাজে খুবই পরিচিত। কেউ কেউ বলেন ‘ছাওয়াব বখশে দেয়া।’ নানা প্রকাশে শব্দগুলোর অর্থ ও মর্ম একই : পুণ্য বা ছাওয়াব প্রেরণ করা।
পরিভাষায় ইছালে ছাওয়াব হল, মৃত ব্যক্তির কল্যাণের জন্য কোন নেক আমল (সৎকর্ম) বা ইবাদত-বন্দেগী করে তা উক্ত ব্যক্তির জন্য উৎসর্গ করা।

ইছালে ছাওয়াবের  প্রচলিত পদ্ধতিসমূহ

যে প্রিয়জন আমাদের ছেড়ে পরপারে চলে গেছেন, আমরা সকলেই তার জন্য এমন কিছু করতে চাই যা হবে তার জন্য কল্যাণকর ও শুভ পরিণতির বাহক। তাদের আত্মার কাছে উপহার হিসেবে পৌঁছে যাবে সে কাজের প্রতিফল ; ফলে আল্লাহ তাদের ইহকালীন পাপ মোচন করে সুখে রাখবেন তাদেরকে, ভরিয়ে দিবেন নানা সমৃদ্ধিতে। এ উদ্দেশ্যে কিছু সৎকর্ম ও ইবাদত-বন্দেগী করে তাদের জন্য আল্লাহর কাছে নিবেদন করতে আমাদের আগ্রহের কমতি নেই। এ মহৎ উদ্দেশ্য সফল করতে আমাদের উপমহাদেশের মুসলমান সমাজের লোকেরা নিজেদের বিশ্বাস, প্রথা, রেওয়াজ অনুসারে বিভিন্ন ধরনের কাজ বা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। নিম্নে এগুলোর সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হল:

১- কুলখানি

কুলখানি ফারসি শব্দ। কুল এর আভিধানিক অর্থ: পাঠ কর বা পড়। পবিত্র কুরআনের ত্রিশতম পারার যে সকল সূরার শুরুতে কুল শব্দ রয়েছে সেগুলো পাঠ করা। কিন্তু পরিভাষায় কুলখানির অর্থ একটু ভিন্ন: কোন ব্যক্তির ইন্তেকালের তিন দিনের মাথায় তার মাগফিরাত ও আত্মার শান্তি কামনা করে মীলাদ বা কুরআন খতম অথবা অন্য কিছু পাঠের মাধ্যমে দুআ-মুনাজাতের অনুষ্ঠান করা। অনুষ্ঠান শেষে অংশ গ্রহণকারীদের জন্য খাবার বা মিষ্টি মুখের ব্যবস্থা করা হয়, যাকে বলা হয় তাবারুক। কুলখানির আভিধানিক অর্থ ও পারিভাষিক বা ব্যবহারিক অর্থের মধ্যে সামঞ্জস্য এভাবে বিধান করা যেতে পারে যে, কোন এক সময় মৃত ব্যক্তিদের ইছালে ছাওয়াবের জন্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কুল বিশিষ্ট তিনটি অথবা চারটি সুরা পাঠ করা হত, অথবা সূরা ইখলাস তিনবার পাঠ করা হত ; পরবর্তীতে এ অনুষ্ঠানটিকে সম্প্রসারিত করে তাতে অন্যান্য বিষয় যোগ করা হয়েছে। তবে কুলখানি নামটি রয়ে গেছে।

২-ফাতেহা পাঠ

‘ফাতেহা পাঠ’ এর অর্থ, বলা যায়, সর্বপরিচিত : সূরা ফাতেহা পাঠ করা। তবে, পরিভাষায় মৃত ব্যক্তির কবরে উপস্থিত হয়ে তার জন্য সূরা ফাতেহা বা সংক্ষিপ্ত দুআ-প্রার্থনা করা। যেমন, আমরা প্রায়ই খবরে শুনে থাকি, প্রেসিডেন্ট অমুক নেতার কবরে যেয়ে ফাতেহা পাঠ করেছেন ; এটাকে ফাতেহা-খানিও বলা হয়। এ থেকে ফাতেহা ইয়াযদাহম ( রবিউস্সানী মাসের এগার তারিখে আব্দুল কাদির জীলানী (রহ.) এর ওফাত দিবস পালন) ও ফাতেহা দোয়াযদাহম (ফাতেহা দোয়াযদাহম : ১২ই রবিউল আউয়াল তারিখে নবী কারিম (সা.) এর মৃত্যু দিবস পালন) এর উৎপত্তি। ফাতেহার আরেকটি প্রচলিত রূপ আছে। তাহল কোন অলী বা বুযুর্গের ছাওয়াব রেসানীর উদ্দেশ্যে খানা পাকানোর পর তাতে দুআ-দরূদ বা সুরা-কালাম পড়ে ফুঁক দেয়া ও তারপর তা বিতরণ করা।
আমি এক অনুষ্ঠানে দেখেছি আয়োজকরা কয়েকটি ডেগে খিচুড়ি পাক সেরে বসে আছেন। শত শত লোক লাইনে দাড়িয়ে আছে খিচুড়ী পাওয়ার জন্য। দুপুর গড়িয়ে বিকাল এসে যাচ্ছে। লোকজন অস্থির হয়ে যেন ধৈর্য হারিয়ে ফেলছে। কিন্তু বিতরণ করা হচ্ছে না। বিতরণ না করার কারণ জিজ্ঞেস করে জানা গেল এ খিচুড়ি রান্নার উপর ফাতেহা পাঠ করা হয়নি এখনো। এর উপর ফাতেহা পাঠ না করলে তা খাওয়া হালাল হবে না কারো জন্য। অনেক অপেক্ষার পর কাক্সিক্ষত পীর সাহেব আসলেন। এক গামলা খিচুড়ি তার সামনে আনা হল। তিনি কিছু একটা পাঠ করে তাতে ফুঁক দিলেন। গামলার এ খিচুড়ি আটটি ডেগে বন্টন করে মিশিয়ে দেয়া হল। ব্যস! এই ফাতেহার কারণে এখন তা সকলের জন্য হালাল হয়ে গেল।

৩-চেহলাম

চেহলাম ফারসি শব্দ। এর শাব্দিক অর্থ চল্লিশতম। অনেকে চেহলামকে চল্লিশা বলেন। পরিভাষায় চেহলাম বলা হয় মৃত ব্যক্তির মৃত্যুর চল্লিশ দিন পর তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মীলাদ, কুরআন খতম, দুআ-মুনাজাত ইত্যাদির অনুষ্ঠান করা। অনুষ্ঠান শেষে অংশ গ্রহণকারীদের জন্য ভোজের ব্যবস্থা থাকে।

৪-মাটিয়াল

মাটিয়াল শব্দের প্রচলন গ্রামাঞ্চলে বহুল প্রচলিত। মৃত ব্যক্তির দাফন-কাফন বা মাটি দিতে যারা অংশ গ্রহণ করে, তাদের উদ্দেশ্যে ভোজ আয়োজন করাকে বলা হয় মাটিয়াল খাওয়ানো। গ্রামে দেখেছি, মৃত ব্যক্তির যখন দাফন সম্পন্ন হয়, তখন একজন ঘোষণা করে যে, অমুক তারিখ অমুক সময় মাটিয়াল খাবার হবে, আপনাদের দাওয়াত রইল। অনেক সময় দেখেছি, ঘোষণা না এলে অংশ গ্রহণকারীদের মধ্য থেকেই প্রশ্ন আসে যে, মাটিয়াল কবে হবে? গ্রাম্য সংস্কৃতিতে এ অনুষ্ঠান করার জন্য একটা সামাজিক দায়বদ্ধতা আছে। এটা দাফন ও জানাযায় অংশ নেয়ার জন্য এক ধরনের পারিশ্রমিক বলা চলে।

৫-মীলাদ

মীলাদ আরবী মাওলিদ শব্দ থেকে উদ্ভুত। মাওলিদ অর্থ হল কোন ব্যক্তির বিশেষ করে নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্মকাল, জন্মস্থান এবং জন্মোৎসব। জন্ম অর্থেও মীলাদ শব্দের ব্যবহার হয়। এই উপমহাদেশে মাওলিদ শব্দের পরিবর্তে মেলুদ বা মৌলুদ শরীফ আখ্যা প্রচলিত আছে। কিন্তু অধুনা মীলাদ শব্দটি বাংলাদেশে ব্যবহৃত হয়।
সাধারণত ১২ রবিউল আওয়াল তারিখে নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্ম দিন উপলক্ষে এই উৎসব উদযাপিত হয়। তবে যে কোন ব্যক্তির জন্মদিন, নতুন ব্যবসায়ের সুত্রপাত, গৃহ নির্মাণ সমাপ্তি, মৃত্যু বার্ষিকী ইত্যাদি উপলক্ষে বছরের যে কোন সময় মীলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হতে দেখা যায়।
মিসরে ফাতেমী আমলের মাঝামাঝিকালে এবং শেষের দিকে মাওলিদুন-নবী অনুষ্ঠানের কিছু আভাষ পরিলক্ষিত হয়। তবে মাওলিদের আদি উৎস সম্পর্কে মুসলিম গ্রন্থাকারগণ যে ঐকমত্য প্রদান করেন তা থেকে প্রতীয়মান হয় যে মাওলিদ অনুষ্ঠান সর্বপ্রথম সালাহ-আল-দীনের ভগ্নিপতি আল মালিক আবু সাঈদ মুজাফফর আদ-দীন কোকবুরী (মৃত ৬৩০ হিজরী) কর্তৃক প্রবর্তিত হয়।
৬০৪ হিজরী অর্থ্যাৎ ১২০৭ খৃষ্টাব্দে ইরাকের মুসেল শহরের কাছে আরবালা নামক স্থানে ১২ রবিউল আওয়াল তারিখে নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্মদিন উপলক্ষে পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম বারের মত আনুষ্ঠানিকভাবে মীলাদ শরীফ অনুষ্ঠিত হয়। বিখ্যাত ঐতিহাসিক ইবনে খাল্লিকান এই মীলাদ বা মাওলিদ অনুষ্ঠানের বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন। অন্যান্য লেখকগণও একই ধরনের বিবরণই দিয়ে আসছেন। জালালুদ্দীন সুয়ূতী (মৃত ৯১১ হিজরী) এ সম্পর্কে একটি গ্রন্থ রচনা করেছেন। যার নাম হুসনিল মাকসিদ ফী আমালিল মাওলিদ।
আরবালাতে অবস্থানকালে কোকবুরীর প্রস্তাবক্রমে ইবনে দিহয়া তার ‘কিতাবুত-তানবীর ফী মাওলিদিস সিরাজ’ রচনা করেন। … তবে সর্বযুগেই মুসলিম সমাজে আরবালাতে অনুষ্ঠিত এ মাওলিদের বিরোধিতা দেখা যায়। প্রতিপক্ষের মতে এই উৎসব একটি বিদ‘আত অর্থাৎ ধর্মে নব উদ্ভাবিত প্রথা এবং সুন্নাতের পরিপন্থী। কিন্তু বহু মুসলিম রাষ্ট্রে বিশেষ করে এই উপমহাদেশে জনগণের ধর্মীয় জীবনে মীলাদ সুপ্রতিষ্ঠিত আসন লাভ করায় এই অনুষ্ঠান অনেক আলেমের সমর্থন লাভ করে। তারা এই বিদআতকে নীতিগতভাবে ‘বিদআতে হাসানা’ রূপে স্বীকৃতি দেন। তাদের অভিমত মীলাদ সাধারণ্যে প্রচার লাভ করার ফলে কতগুলি সৎকাজ আনুসঙ্গিকভাবে সম্পন্ন হয়। যেমন পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্ম উপলক্ষে আনন্দ প্রকাশ, তাঁর উদ্দেশ্যে দরূদ ও সালাম পেশ, দান-খয়রাত ও দরিদ্রজনকে আহার্য দান। অবশ্য মীলাদের বিরুদ্ধে অবস্থানকারীদের অভিমত অনুযায়ী মীলাদ সামা’ সূফীগনের নৃত্য (তুরস্ক) এবং ভাবোচ্ছাসমূলক অনৈসলামিক কার্যকলাপের জন্য এ অনুষ্ঠান পরিত্যাজ্য। তারা এ কথাও বলেন যে, এক শ্রেণীর লোক মীলাদকে ব্যবসারূপে  গ্রহণ করে এবং এমন অলৌকিক কল্প-কাহিনী বর্ণনা করে যাতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রকৃত সীরাত অলীক ও অবাস্তব কাহিনীর আড়ালে পড়ে যায়। মীলাদ সম্পর্কে যে কথাগুলো এতক্ষণ বলা হল তা আমার কথা নয়।  সম্পূর্ণটাই বাংলাপিডিয়া থেকে নেয়া।
প্রচলিত অর্থে মীলাদ বলতে এমন অনুষ্ঠানকে বুঝায়, যেখানে কিছু মানুষ একত্রিত হয়ে কুরআনের অংশ বিশেষ পাঠ, নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি দরূদ ও সালাম পেশ, তাঁর উদ্দেশ্যে কিছু কবিতার পঙ্ক্তি আবৃত্তি, দুআ-মুনাজাত ও মিষ্টি বিতরণ করা হয়। এর নির্দিষ্ট কোন রূপ বা নিয়ম-কানুন নেই। অঞ্চলভেদে এর অনুষ্ঠান  বিভিন্নরূপে দেখা যায়। এ যে শুধু মৃত ব্যক্তির জন্য করা হয়, তা নয় ; বরং কখনো কোন দোকান, বাড়িঘর উদ্বোধনসহ বিভিন্ন উপলক্ষে মীলাদ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আশ্চর্যের ব্যাপার হল, মীলাদের অর্থ জন্ম হলেও কারো জন্মদিনে এর আয়োজন খুব একটা নজরে পড়ে না ; বরং মৃত্যু দিবসেই এর আয়োজন চোখে পড়ে বেশি। তবে কারো জন্ম দিনে মীলাদ পড়তে হবে, এ দাবি কিন্তু আমরা করছি না। এ মীলাদ মাহফিল সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় ইছালে ছাওয়াব তথা মৃতের কল্যাণের জন্য উৎসর্গিত অনুষ্ঠান আকারে।
বাংলাপিডিয়াতে মীলাদের যে ইতিহাস উল্লেখ করা হয়েছে তা যে সঠিক সে ব্যাপারে ঐতিহাসিক ও উলামায়ে কেরামের মধ্যে কোন মতভেদ নেই। বাংলাপিডিয়ার এ বিবরণ থেকে আমরা কয়েকটি বিষয় অবগত হলাম : এক. ইসলামে মীলাদ একটি নতুন আবিস্কার। কারণ রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বা তাঁর সাহাবায়ে কেরাম অথবা তাদের পরে ইসলামের অনুসরণীয় যুগে এর অস্তিত্ব ছিল না। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ইন্তেকালের প্রায় ৫৯৪ বছর পর এর প্রচলন শুরু হয়। অতএব তা ইসলামে অনুমোদিত হওয়ার প্রশ্নই আসে না। কেননা, ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান আবিস্কার-উদ্ভাবনের বিষয় নয়। বরং, কুরআন-সুন্নাহ ও সাহাবাদের আচরণে তার উপস্থিতি অপরিহার্য। দুই. মীলাদ মাহফিলের প্রচলনের পর থেকে একদল উলামায়ে কেরাম এর বিরোধিতা করে আসছেন। উম্মতে মুসলিমার উলামাগণ কখনো মীলাদের স্বপক্ষে একমত হন নি। তিন. যে সকল আলেম ওলামা মীলাদকে সমর্থন করেন তারাও স্বীকার করেন যে মীলাদ বিদআত ক্রিয়া বা ধর্মে নব-আবিস্কার। অবশ্য তাদের বক্তব্য এটা বিদআতে হাসানা বা সুন্দর বিদআত। ইসলামে বিদআতে হাসানাহ বলে কিছু আছে কি না, এবং এটা গ্রহণযোগ্য কিনা তা একটু পরে আলোচনা করছি। চার. যে ব্যক্তি মীলাদের প্রচলন করেন তিনি কোন ইমাম বা আলেম ছিলেন না। তিনি ছিলেন একজন বাদশা। তবে তিনি ন্যায়পরায়ণ ছিলেন না। অনুসরণযোগ্য হওয়ার প্রশ্নতো অনেক দূরে। তার সম্পর্কে ঐতিহাসিক ইবনে খাল্লিকান বলেন, ‘সে ছিল এক অপচয়ী বাদশা। প্রজাদের বাইতুল মাল থেকে লক্ষ-লক্ষ টাকা আত্মসাত করে তা দিয়ে মীলাদের আয়োজন করত।’ তার সম্পর্কে ইমাম শামসুদ্দীন আজ যাহাবী রহ. বলেন : “সে প্রতি বছর মিলাদুন্নবীর নামে তিন লক্ষ দিনার খরচ করত।’’
মিশরে মীলাদ সম্প্রসারিত হয় সূফীদের মাধ্যমে। এই মিলাদের আঙ্গিক তুর্কী রীতি-নীতির আতিশয্য দ্বারা বিশেষভাবে প্রভাবিত হয়। প্রায় সব যুগেই মীলাদকে একটি বিদআত অনুষ্ঠান বিবেচনা করেই হক্কানী আলেমদের পক্ষ হতে এর বিরোধিতা করা হয়েছে। হিজরী ৯৯৪ মোতাবেক ১৫৮৮ খৃষ্টাব্দে উসমানী সাম্রাজ্যের সুলতান তৃতীয় মুরাদ মীলাদকে এই উপমহাদেশে এবং তুরস্কে নব আঙ্গিকে প্রবর্তন করেন।
চলমান আলোচ্য বিষয় মীলাদ নয়। তবে ইছালে ছাওয়াবের একটি প্রচলিত বড় পদ্ধতি হিসেবে এখানে অতিসংক্ষেপে তার আলোচনা করা হল। এ সম্পর্কে আরো জানতে হলে হাকীমুল উম্মত আশ্রাফ আলী থানবী রহ. সংকলিত ‘ইসলাহুর রুসুম’ এবং তাঁরই সংকলিত আরেকটি বই ‘শরীয়তের দৃষ্টিতে ঈদে মীলাদুন্নবী’, মুফতী ইবরাহীম খান সংকলিত ‘শরীয়ত ও প্রচলিত কুসংস্কার’ পাঠ করা যেতে পারে। এ ছাড়া এ বিষয়ে হক্কানী উলামায়ে কেরাম কর্তৃক সংকলিত বহু বই-পুস্তক রয়েছে। (চলবে)

Related Post