ভূমিকা
ইসলাম হল মধ্যপন্থার ধর্ম। কোন কিছুতে বাড়াবাড়ি নেই এখানে।
সৃষ্টিকর্তা মহান রাব্বুল আলামীন আল্লাহ তাআলার ইবাদত-বন্দেগী করার জন্য মানবের সৃষ্টি। ধরাপৃষ্ঠে তাদের আগমন এ উদ্দেশ্যেই। কিন্তু এ ইবাদত করতে যেয়ে আমাদের অনেকে এর নির্ধারিত সীমা ছাড়িয়ে যাই। ভারসাম্য রাখতে পারি না। নিজের শরীর-স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল রাখি না। ভুলে যাই পরিবার-পরিজন ও অন্যান্য মানুষদের প্রতি আমার দায়িত্ব- কর্তব্য। আমার ইবাদত-বন্দেগী দেখে অন্যরা মনে করে এ যদি হয় ইসলাম, তাহলে আমরা অনেক ভাল আছি। আমাদের ভাগ্য ভাল আমাদের জীবনে ইসলাম আসেনি। (নাউযুবিল্লাহ)
এ বিষয়টি কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে আলোচনা করা হচ্ছে।
আল্লাহ তাআলা বলেন:
طه ﴿١﴾ مَا أَنْزَلْنَا عَلَيْكَ الْقُرْآنَ لِتَشْقَىٰ ﴿٢﴾ سورة طه
ত্বা-হা। আমি তোমার উপর কুরআন এ জন্য নাযিল করিনি যে তুমি দুঃখ-কষ্ট ভোগ করবে। (সূরা ত্বা-হা: ১-২)
মহান আল্লাহ অন্যত্র বলেন:
يُرِيدُ اللَّـهُ بِكُمُ الْيُسْرَ وَلَا يُرِيدُ بِكُمُ الْعُسْرَ البقرة: ١٨٥
আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ চান এবং কঠিন চান না। (সূরা আল বাকারা, আয়াত: ১৮৫)
আয়াত দু’টো থেকে শিক্ষা ও মাসায়েল:
এক. আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কুরআন নাযিল করেছেন, ইসলামকে ধর্ম হিসাবে মনোনীত করেছেন তার অনুসারীদের থেকে দুঃখ কষ্ট দুর করার জন্য। তাদের দুর্ভোগ বা কষ্টে নিপতিত করার জন্য নয়।
দুই. আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তার ধর্ম পালনকে কঠিন করতে চান না। তিনি সহজ করতে চান। কাজেই মানুষের উচিত হবে এমন কোন কাজ ও কথা না বলা যাতে ধর্মকে কঠিন মনে হয়। বা অন্য ধর্মের মানুষের কাছে কঠিনভাবে উপস্থাপিত হয়।
তিন. দ্বিতীয় আয়াতটি যদিও নাযিল হয়েছে সফরে রোযা না রাখার অনুমতি সম্পর্কে তবুও এর শিক্ষা সাধারণভাবে সর্বক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আল্লাহ তাআলা বলেন:
وَمَا جَعَلَ عَلَيْكُمْ فِي الدِّينِ مِنْ حَرَجٍ ۚ الحج: ٧٨
ধর্মের ব্যাপারে তিনি তোমাদের উপর কোন কঠোরতা আরোপ করেননি। (সূরা আল-হজ্জ, আয়াত: ৭৮)
مَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيَجْعَلَ عَلَيْكُمْ مِنْ حَرَجٍ *المائدة: ٦
আল্লাহ তোমাদের উপর কোন সমস্যা সৃষ্টি করতে চান না। (সূরা আল মায়েদা, আয়াত ৬)
চার. ইসলাম মধ্যপন্থার ধর্ম। কোন ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি করা যাবে না, তেমনি ছাড়াছাড়িও করা যায় না। এটাকে বলা হয়, ইফরাত ও তাফরীত। উভয়টাই পরিত্যাজ্য। আর এ মধ্যপন্থার নির্দেশ প্রতিটি ক্ষেত্রেই। যেমন আল্লাহ তাআলা তার প্রিয় বান্দাদের গুণাবলি উল্লেখ করতে যেয়ে বলেছেন :
وَالَّذِينَ إِذَا أَنْفَقُوا لَمْ يُسْرِفُوا وَلَمْ يَقْتُرُوا وَكَانَ بَيْنَ ذَٰلِكَ قَوَامًا الفرقان: ٦٧
আর তারা যখন ব্যয় করে তখন অপব্যয় করে না এবং কার্পণ্যও করে না। বরং মাঝামাঝি অবস্থানে থাকে। (সূরা আল ফুরকান, আয়াত: ৬৭)
এমনিভাবে এ মধ্যপন্থা জীবনের সর্বক্ষেত্রে অনুসরণ করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে আল্লাহ ও তার রাসূলের পক্ষ থেকে।
হাদীস
عن عائشةَ رضي اللَّهُ عنها أَن النبي صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم دخَلَ عليْها وعِنْدها امْرأَةٌ قال : منْ هَذِهِ ؟ قالت : هَذِهِ فُلانَة تَذْكُرُ مِنْ صَلاتِهَا قالَ : مَهُ عليكُمْ بِما تُطِيقُون ، فَوَاللَّه لا يَمَلُّ اللَّهُ حتَّى تَمَلُّوا وكَانَ أَحَبُّ الدِّينِ إِلَيْهِ ما داوَمَ صَاحِبُهُ علَيْهِ : متفقٌ عليه .
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার ঘরে প্রবেশ করলেন তখন একজন মহিলা তাঁর ঘরে বসা ছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, মেয়েটি কে? আয়েশা বললেন, অমুক মেয়ে। সে তার নামাজ সম্পর্কে আলোচনা করছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, রাখো! তোমরা যা সামর্থ রাখো সেটা তোমাদের দায়িত্বে। আল্লাহ তাআলার শপথ! তোমরা ক্লান্ত হলেও আল্লাহ তাআলা ক্লান্ত হন না। আর তার নিকট অধিক পছন্দনীয় দ্বীন (ইবাদত-বন্দেগী) ছিল, সম্পাদনকারী যা নিয়মিতভাবে সম্পাদন করে। (বুখারী ও মুসলিম)
এই হাদীস থেকে শিক্ষা ও মাসায়েল :
এক. ইবাদত-বন্দেগী করতে হবে যার যার সামর্থের মধ্যে থেকে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সামর্থের বাইরে কোন কিছু করার জন্য আদেশ দেন না।
দুই. মানুষ ইবাদত-বন্দেগী অধিক পরিমাণে করতে করতে অনেক সময় ক্লান্ত হয়ে পড়ে। জীবনের অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজ-কর্ম ব্যহত হয়। এ রকম করতে নিষেধ করা হয়েছে।
তিন. মানুষ ইবাদত-বন্দেগী করতে করতে ক্লান্ত হয়ে যেতে পারে। কিন্তু আল্লাহ তাআলা বান্দাদের ইবাদতের বিনিময় প্রদানে কখনো ক্লান্ত হবেন না।
চার. এক দিন বা একটি রাত সম্পূর্ণ জাগ্রত থেকে শত শত রাকাত নামাজ আদায় করার চেয়ে প্রতিদিন, প্রতি সপ্তাহে বা প্রতি মাসে নিয়মিতভাবে অল্প আদায় করা উত্তম। সকল ইবাদত বন্দেগীর ক্ষেত্রে এ কথা প্রযোজ্য।
পাঁচ. যদি ঘরে কোন অপরিচিত নারী বা পুরুষ আসে তবে গৃহকর্তার উচিত হবে তার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা: সে কে? কি বলে? কেন এসেছে? ইত্যাদি। এটা পরিবারের প্রতি যত্নবান হওয়ার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। কারণ,ঘরে সাধারণত শিশু ও মেয়েরা বেশি থাকে। অপরিচিত কোন লোক এসে তাদের কোন বিষয়ে বিভ্রান্ত করতেই পারে। পরিবারের কর্তা যদি এটার খোঁজ খবর রাখেন তাহলে অনেক অনাকাঙ্খিত বিষয় এড়িয়ে যাওয়া যায়। আমাদের প্রিয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রিসালাতের বিশাল দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি পরিবারের প্রতি দায়িত্ব-কর্তব্য পূর্ণভাবে পালন করেছেন। তাই আমরা এ হাদীসে দেখলাম,একজন মেয়ে ঘরে আসল,নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার পরিচয় জিজ্ঞেস করলেন। আর আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা তার সম্পর্কে বর্ণনা দিলেন।
হাদীস
وعن أَنسٍ رضي اللَّه عنه قال : جاءَ ثَلاثةُ رهْطِ إِلَى بُيُوتِ أَزْواجِ النَّبِيِّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم يسْأَلُونَ عنْ عِبَادَةِ النَّبِيِّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم ، فَلَمَّا أُخبِروا كأَنَّهُمْ تَقَالَّوْها وقالُوا : أَين نَحْنُ مِنْ النَّبِيِّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم قَدْ غُفِر لَهُ ما تَقَدَّم مِنْ ذَنْبِهِ وما تَأَخَّرَ . قالَ أَحَدُهُمْ : أَمَّا أَنَا فأُصلِّي الليل أَبداً ، وقال الآخَرُ : وَأَنا أَصُومُ الدَّهْرَ أبداً ولا أُفْطِرُ ، وقالَ الآخرُ : وأَنا اعْتَزِلُ النِّساءَ فلا أَتَزوَّجُ أَبداً، فَجاءَ رسول اللَّه صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم إلَيْهمْ فقال : ্র أَنْتُمُ الَّذِينَ قُلْتُمْ كذا وكذَا ؟، أَما واللَّهِ إِنِّي لأَخْشَاكُمْ للَّهِ وَأَتْقَاكُم له لكِني أَصُومُ وَأُفْطِرُ ، وَأُصلِّي وَأَرْقُد، وَأَتَزَوّجُ النِّسَاءَ، فمنْ رغِب عن سُنَّتِي فَلَيسَ مِنِّى: متفقٌ عليه.
আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, তিনজন লোক নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রীদের ঘরে আসল। তারা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ইবাদত-বন্দেগী সম্পর্কে জানতে চাইল। যখন তাদেরকে এ সম্পর্কে জানানো হল, তখন তারা যেন এটাকে অপ্রতুল মনে করল। আর বলল, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোথায় আর আমরা কোথায়? তাঁর আগের পরের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে। তাদের একজন বলল, আমি সম্পূর্ণ রাত নামাজ পড়তে থাকব। আরেকজন বলল, আমি সারা জীবন রোযা রাখব। কখনো রোযা ছাড়ব না। আরেকজন বলল, আমি মেয়েদের থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখব, কখনো বিয়ে করব না। ইতোমধ্যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের কাছে আসলেন। আর বললেন, তোমরা তো এ রকম সে রকম কথা বলেছ। আল্লাহর কসম! তোমাদের চেয়ে আমি আল্লাহকে বেশী ভয় করি। তাঁর সম্পর্কে বেশী তাকওয়া (সতর্কতা) অবলম্বন করি। কিন্তু আমি রোযা রাখি আবার রোযা ছেড়ে দেই। আমি নামায পড়ি আবার নিদ্রা যাই। আর বিয়ে শাদীও করি। যে আমার আদর্শ (সুন্নাত) থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় সে আমার দলভুক্ত নয়। (বুখারী ও মুসলিম)
হাদীস থেকে শিক্ষা ও মাসায়েল :
এক. সাহাবীগণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ইবাদত-বন্দেগীর ধরণ, পদ্ধতি ও পরিমাণ সম্পর্কে জানতে আগ্রহী ছিলেন। আমাদেরও জানার জন্য চেষ্টা করা উচিত। তাদের জানার উদ্দেশ্য ছিল রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সুন্নাহর অনুসরণ।
দুই. ইসলামে কোন ধরনের বৈরাগ্যবাদের স্থান নেই। খাওয়া-দাওয়া, ঘুম-নিদ্রা, বিয়ে-শাদী, পরিবার পরিজন ইত্যাদি সবকিছু নিয়েই ইসলামী জীবন। এগুলো বাদ দিয়ে বা এগুলোকে অবজ্ঞা করে যদি কেউ শুধু ইবাদত-বন্দেগী করে ইসলাম পালন করতে চায় সে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উম্মতভুক্ত বলে গণ্য হবে না।
তিন. দুনিয়ার সকল কাজ-কর্ম,অন্যের অধিকার আদায় করার সাথে সাথে সাধ্য সামর্থানুযায়ী ইবাদত-বন্দেগী সম্পাদন করার নাম হল মধ্যপন্থা অবলম্বন। এটাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আদর্শ। তাই দুনিয়াদারী ছেড়ে ইবাদত-বন্দেগীতে লিপ্ত হওয়া বা ইবাদত-বন্দেগী বাদ দিয়ে দুনিয়ারীতে লিপ্ত হয়ে যাওয়া কখনো মধ্যপন্থা বলে গণ্য হবে না। দু’টোই চরমপন্থা।
চার. নিজেদের প্রতি বাড়াবড়ি করার অনেক দৃষ্টান্ত রয়েছে যে, সেগুলো সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বোঝাই বাড়িয়েছে। যেমন দেখুন, আল কুরআনে সূরা বাকারার ৬৭ আয়াত থেকে ৭১ আয়াত পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা বনী ইসরাইলের একটি বাড়াবাড়ির বিষয় আলোচনা করেছেন। তাদের বলা হল একটি গাভী জবেহ করতে। কিন্তু তারা প্রশ্ন করতে থাকল, গাভীটি কি ধরনের হবে ? তার রং কি রকম হবে? তার বয়স কত হবে ইত্যাদি। পরিণামে তাদের এ বাড়াবাড়ির ফলটা তাদেরই ভোগ করতে হল কঠিন ভাবে।
হাদীস
وعن ابن مسعودٍ رضي اللَّه عنه أن النبيَّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم قال : هَلَكَ الْمُتَنَطِّعُونَ : قالَهَا ثلاثاً ، رواه مسلم .
ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: অযথা কঠোরতা অবলম্বনকারীরা ধ্বংস হয়ে গেছে। তিনি এ কথাটি তিন বার বলেছেন। (মুসলিম)
হাদীস থেকে শিক্ষা ও মাসায়েল :
এক. ইবাদত-বন্দেগীতে কঠোরতা অবলম্বন, এমনিভাবে ইসলামী বিধি-বিধানের মধ্যে নিজেদের খেয়াল-খুশীমত কঠোরতা ও চরমপন্থার প্রবর্তন হল ধ্বংসের কারণ। যারা এগুলোতে লিপ্ত হবে তারা নিজেদের ধ্বংস ডেকে আনবে।
দুই. এ বিষয়টি এতটা ঘৃণিত যে, এতে যারা লিপ্ত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের বিরুদ্ধে বদদুআ করেছেন।
তিন. এ জন্য সকল ইসলামী বিধি বিধানের ব্যাখ্যা ও ইবাদত-বন্দেগীর ক্ষেত্রে কুরআন ও সহীহ হাদীসের অনুসরণ করা উচিত। যুক্তি-কিয়াস ও কুরআন-সুন্নাহ পরিপন্থী তাকলীদ বর্জন করা দরকার। কারণ এগুলো মানুষকে কখনো কঠোরতা আবার কখনো সীমাহীন উদারতার দিকে ধাবিত করে।
চার. ইসলামে মধ্যমপন্থার মানদন্ড হল,আল-কুরআন ও সহীহ হাদীস।
পাঁচ. এ হাদীসটির প্রেক্ষাপট হল,সাহাবীদের একটি দল রমযান মাসে সফর অবস্থায় অত্যন্ত কষ্ট করে সিয়াম পালন করে যাচ্ছিল। অথচ আল্লাহ তাদের রোযা না রাখারও অনুমতি দিয়েছিলেন। তাদের সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদীসে বর্ণিত উক্তিটি করেন।
বিষয়টি অন্য হাদীসে এভাবে এসেছে :
أن رسول الله صلى الله عليه وسلم خرج عام الفتح إلى مكة في رمضان . فصام حتى بلغ كراع الغميم . فصام الناس . ثم دعا بقدح من ماء فرفعه . حتى نظر الناس إليه . ثم شرب . فقيل له بعد ذلك : إن بعض الناس قد صام . فقال : ” أولئك العصاة . أولئك العصاة
রমযান মাসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা অভিযানে বের হলেন। তিনি রোযা অবস্থায় কারা আল গামীমে পৌঁছলেন। তার সাথের সাহাবীগণও রোযা রেখেছিল। তিনি একটি পানির পাত্র এনে তা উঁচু করে ধরলেন – যাতে লোকেরা দেখতে পায় – অতঃপর তা থেকে পান করে রোযা ভেঙ্গে ফেললেন। এরপর তাকে বলা হল, এখনো অনেকে রোযা রেখে দিয়েছে। তিনি বললেন: তারাই অবাধ্য। তারাই অবাধ্য। (বর্ণনায় : মুসলিম: 1114)
এ হাদীসে আমরা দেখলাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রোযা ভেঙ্গে ফেলার অনুমতি দেয়ার পরও যারা রোযা ধরে রেখেছিল, তাদের তিনি অবাধ্য বলে আখ্যায়িত করেছেন। কিন্তু কেন? তারা তো ভাল কাজই করেছিল। রোযা রাখার জন্য কষ্ট করে যাচ্ছিল। কারণ, এটা ছিল একটি কঠোরতা। একটি বাড়াবাড়ি। এটা কখনো মধ্যপন্থা ছিল না।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে সকল কাজের পাশাপাশি ইবাদত বন্দেগীতেও মধ্যপন্থা অবলম্বন করার তাওফীক দান করুন। আমীন