Main Menu

ইসলাম সর্বদা জয়ী, কখনো পরাজিত নয়

ইসলাম সর্বদা জয়ী, কখনো পরাজিত নয়

ইসলাম সর্বদা জয়ী, কখনো পরাজিত নয়

ইসলাম সর্বদা জয়ী, কখনো পরাজিত নয়
ইসলাম কখনো পিছিয়ে যায় না। الإسلام يعلو ولا يعلى  ইসলাম সর্বদা জয়ী, কখনো পরাজিত নয়। তবে উম্মতে মুসলিমার দেখা দরকার যে, তারা নিজেদের মাঝে ইসলামকে কতটুকু ধারণ করছে। নিজেদের যাহের ও বাতেনে ইসলামের শিক্ষা ও ইসলামের নবীর উত্তম আদর্শের কতটুকু প্রতিফলিত করছে। সর্বোপরি জীবনের সকল অঙ্গনে তা কী পরিমাণে বাস্তবায়িত করছে।
ইসলাম এবং শুধু ইসলামই হল সিরাতে মুসতাকীম ও সফলতার ও সরল পথ। আর এটি উম্মতের একমাত্র রক্ষাকবচ। ইসলামপন্থীদের সম্মান ও মর্যাদা কেবল ইসলামেই নিহিত। খলীফায়ে রাশেদ ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)-এর এই  সোনালী বাণী সর্বদা সামনে থাকা চাই-
لقد كنّا أذلاء فأعزنا الله بالإسلام ، فإذا إبتغينا العزة بغيره ِ أذلنا الله
অর্থ : আমরা এক সময় অপদস্থ ছিলাম,  সুতরাং আল্লাহ তাআলা ইসলামের বদৌলতে সম্মানিত করেছেন। আমরা যদি ইসলামভিন্ন কোনো উপায়ে সম্মান কামনা করি তবে আল্লাহ আমাদেরকে লাঞ্ছিত করবেন।
এই উম্মত যদি ইসলামকে ধারণ করে থাকে, ঈমান ও তার দাবিসমূহের উপর অটল-অবিচল থাকে, ঈমানের গুণে গুণান্বিত হয়, বিশেষ করে ঈমানের গুরুত্বপূর্ণ গুণ-সত্যবাদিতা ও আমানতদারি অর্জন করে এবং কুফরি বৈশিষ্ট্যসমূহ থেকে বেঁচে থাকে, বিশেষত কুফরির ভয়াবহ অনুষঙ্গ-গুনাহ ও খেয়ানত পরিহার করে তাহলে নিঃসন্দেহে এ জাতিই সফল ও বিজয়ী। যদিও সে শত্রুর যাতাকলে পিষ্ট হোক না কেনো। কারণ পিষ্ট হওয়া আর পিছিয়ে পড়া এক বিষয় নয়। পিছিয়ে পড়া তো মূলত নিজের আদর্শকে ত্যাগ করার নাম। যে নিজের আদর্শের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকে সে সব অবস্থাতেই সফল এবং মনযিলে মকসূদের দিকে অগ্রসরমান।
وَلَا تَهِنُوا وَلَا تَحْزَنُوا وَأَنْتُمُ الْأَعْلَوْنَ إِنْ كُنْتُمْ مُؤْمِنِينَ
(তরজমা) তোমরা হীনবল হয়ো না এবং দুঃখিতও হয়ো না;  তোমরাই বিজয়ী যদি তোমরা মুমিন হও।-সূরা আলে ইমরান: ১৩৯
রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন-
عجبا لأمر المؤمن، إن أمره كله خير، وليس ذاك لأحد إلا للمؤمن، إن أصابته سراء شكر فكان خيرا له، وإن أصابته ضراء صبر فكان خيرا له.
অর্থ : মুমিনের অবস্থা বড়ই বিস্ময়কর! তার সবকিছুই কল্যাণকর। আর এটি শুধু মুমিনেরই বৈশিষ্ট্য, অন্য কারো নয়। সুখ-সচ্ছলতায় মুমিন শোকর আদায় করে ফলে তার কল্যাণ হয়। আবার দুঃখ-বিপদের সম্মুখীন হলে ধৈর্য ধারণ করে। ফলে এটিও তার জন্য কল্যাণকর হয়। (সহীহ মুসলিম, হাদীস : ২৯৯৯; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ২৮৬৯)
মুমিন আল্লাহর পথে বের হওয়ার পর যদি কোনো কষ্টের বা বিপদের সম্মুখীন হয় তবে এটি তার ব্যর্থতা নয়; বরং এটি তার মর্যাদা বৃদ্ধির উপলক্ষ। আর জীবন নিয়েই যদি সে ফিরে আসতে না পারে তবে এটি তো তার সর্বোচ্চ সফলতা। কারণ ঈমানের বিনিময়ে আল্লাহ তাআলার সাথে তার যে চুক্তি হয়েছিল  সে তা সম্পাদন করল। তার জীবনকে জীবনদাতার কাছেই  সোপর্দ করল।
مِنَ الْمُؤْمِنِينَ رِجَالٌ صَدَقُوا مَا عَاهَدُوا اللَّهَ عَلَيْهِ فَمِنْهُمْ مَنْ قَضَى نَحْبَهُ وَمِنْهُمْ مَنْ يَنْتَظِرُ وَمَا بَدَّلُوا تَبْدِيلًا
অর্থ: মুমিনদের মধ্যে কতক আল্লাহর সাথে তাদের কৃত অঙ্গীকার পূর্ণ করেছে, তাদের কেউ কেউ শাহাদাত বরণ করেছে এবং কেউ কেউ প্রতীক্ষায় আছে। তারা তাদের অঙ্গীকারে  কোনো পরিবর্তন করেনি। (সূরা আহযাব: ২৩)
সৎ কাজে আদেশ আর অসৎ কাজে নিষেধ করা হল ‘সাবীলুল্লাহ’র এক গুরুত্বপূর্ণ শাখা। কেউ যদি ইখলাস ও নিষ্ঠার সঙ্গে এ পথে বের হয় এবং আল্লাহর বিধানসমূহ মেনে চলে তবে সে আল্লাহর পথেই আছে। এ অবস্থায় তার মৃত্যু হলে তা হবে শাহাদাতের মৃত্যু। আর যদি তাকে হত্যা করা হয় তবে সে হবে শহীদ।
হাদীস শরীফে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
سيد الشهداء حمزة بن عبد المطلب ، ورجل قال إلى إمام جائر فأمره ونهاه فقتله ” ” قال الحاكم :صحيح الإسناد، وكذاصححه السيوطي والالباني
অর্থ : কিয়ামতের দিন হামযা ইবনে আবদুল মুত্তালিব হবেন শহীদগণের সর্দার। আর ঐ ব্যক্তি, যে  কোনো জালিম বাদশাহর সামনে উপস্থিত হয় এবং তাকে সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ করে, যার ফলে তাকে হত্যা করা হয়। (মুসতাদরাকে হাকেম)
আল্লাহর পথে শাহাদাত বরণকারীর অবস্থা যেন খুবাইব ইবনে আদী রা.-এর মতোই হয়ে থাকে-
ولست أبالي حين أقتل مسلما ـــــ على أي شق كان لله مصرعي
وذلك في ذات الإله وإن يشأ ـــــ يبارك على أوصال شلو ممزع.
অর্থ : মুসলিম অবস্থায় যদি নিহত হই তবে আর কোনো পরোয়া নেই/ যে পার্শ্বদেশেই হোক না কেন, আল্লাহর জন্যই আমার এ ভূমিশয্যা। এ তো শুধু মাবুদের সন্তুষ্টির জন্য, তিনি যদি চান তবে/ আমার ছিন্নভিন্ন প্রতিটি অঙ্গে তিনি বরকত দান করবেন।
মোটকথা, কোনো অবস্থার কারণে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হওয়া মুমিনের শান নয়। কারণ অবস্থার পরিবর্তন হতে থাকে। মুমিন কখনো আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয় না। তার দায়িত্ব হল, ঈমান, উত্তম গুণাবলি ও তাকওয়া অবলম্বন করা। যদি সে এসবের উপর অটল-অবিচল থাকে তবে সে সফলকাম।
এজন্য আমাদের কর্তব্য, আমল ও পদক্ষেপসমূহ যাচাই করা। এসবের মধ্যে শরীয়ত ও সুন্নাহর খেলাফ কিছু থাকলে তা সংশোধন করা। সম্মিলিত ব্যবস্থাপনাগত বিষয়গুলোতে পরামর্শ, দূরদর্শিতা, প্রজ্ঞা এবং আমীরের আনুগত্যের নীতি দৃঢ়ভাবে ধারণ করা ও নিজের চেষ্টা-প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা। তাহলে নিঃসন্দেহে আমরা দুনিয়া ও আখিরাত-উভয় জগতেই সফল ও জয়ী হব, বাহ্যিক অবস্থা যতই েেশাচনীয় ও হতাশাপূর্ণ হোক না কেন।
رنگ لاتى ہے حنا پس جانے كے بعد ـ اسلام زندہ ہوتا ہے ہر كربلا كے بعد.
অর্থ: পিষ্ট হওয়ার পরই  মেহেদী রং ধারণ করে/ইসলাম জীবিত হয় প্রতি কারবালার পরে।
তাই কারবালার অবস্থা থেকে ভীত হওয়া যাবে না; বরং হিম্মত আরো বহুগুণে বৃদ্ধি পেতে হবে। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে হিম্মত ও দৃঢ়তা এবং ইত্তিবায়ে সুন্নাহর নিষ্ঠাপূর্ণ  প্রেরণা দান করুন। আমীন।

Related Post