তার নাম উমামা, পিতা আবুল আছ ইবনে রাবী’ ইবনে আবদুল উযযা। মাতা হযরত যয়নব ইবনেতে রাসূলাল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়াসাল্লাম। নানা রাসূল (সা.)-এর জীবদ্দশায় তার জন্ম হয়েছে। বয়স হলে বিয়ে সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করা হয়। এদিকে হযরত ফাতিমার তখন ইন্তিকাল হয়েছে। হযরত ফাতিমা (রা.) হযরত আলী (রা.) কে ওছিয়ত করে যান, তার ইন্তিকালের পর উমামাকে বিয়ে করার জন্য। স্ত্রীর ওছিয়ত অনুযায়ী হযরত আলী (রা.) হযরত উমামাকে বিয়ে করেন। হযরত যুবাইর ইবনুল আওয়াম তার বিয়ের ব্যবস্থা করেন। কারণ হযরত আবূল আছ তাকেই ওছিয়ত করেছিলেন হযরত উমামাকে বিয়ে করার জন্য। হিজরী ৪০ সালে হযরত আলী (রা.) শাহাদাতবরণ করেন। হযরত মুআবিয়া যাতে হযরত উমামাকে বিয়ে না করেন এজন্য শাহাদাতের আগে তিনি মুগীরা ইবনে নওফলকে ওছিয়ত করে যান হযরত উমামাকে বিয়ে করার জন্য। এই ওছিয়ত অনুযায়ী হযরত আলীর শাহাদাত লাভের পর ইদ্দত শেষে মুগীরা ইবনে নওফল-এর সাথে তার বিয়ে হয়।
হযরত আলীর আশঙ্কা সত্য পরিণত হয়। অর্থাৎ মুআবিয়া মারওয়ানকে চিঠি লিখেন যে উমামার কাছে বিয়ের পয়গাম পাঠাও এবং এ উপলক্ষে এক হাজার দীনার ব্যয় কর। কিন্তু হযরত উমামা এ সম্পর্কে জানতে পেরে মুগীরা ইবনে নওফেলকে অবহিত করেন। মুগীরা ইমাম হাসান এর অনুমতি নিয়ে তখনই বিয়ে করার ব্যবস্থা করেন।
হযরত উমামা নবীজীর অতি প্রিয় পাত্রী ছিলেন। এমন কি নামাযের সময়ও তাকে দূরে রাখতেন না। নামায পড়ার সময় কাঁধে বসিয়ে নিতেন। তিনি এভাবে নামায শেষ করতেন। এটা ছিল অতি ভালোবাসার দাবি। একবার কোথাও থেকে একটা মূল্যবান হার উপহার আসে। নবীজী গৃহে ফিরে বললেন, আহলে বাইতের মধ্যে আমার সবচেয়ে প্রিয় যে, তাকে আমি হারটি দেবো। নবীজীর স্ত্রীরা ভাবলেন, এটি বুঝি হযরত আয়েশার ভাগ্যে জুটবে। কিন্তু রাসূলে কারীম (সা.) হযরত উমামাকে ডেকে হারটি তার গলায় পরিয়ে দেন। অন্য বর্ণনায় দেখা যায়, হার নয়, বরং এ ছিল স্বর্ণের আংটি। হাবশায় বাদশাহ্ নাজাশী রাসূলে কারীম (সা.)-এর দরবারে উপহার হিসেবে এটি পাঠান। রাসূল (সা.) হযরত উমামাকে তা-ই দান করেন। মুগীরা ইবনে নওফেল-এর ঔরসে এক পুত্র সন্তান ইয়াহইয়া জন্ম গ্রহণ করে। তদুনযায়ী তিনি আবূ ইয়াহইয়া কুনিয়াত ধারণ করেন। হযরত উমামার শেষ জীবন মুগীরা ইবনে নওফেল-এর সাথে কাটে। মুগীরার গৃহেই তাঁর ইন্তিকাল হয়।