প্রথম পর্ব
তাঁর আসল নাম ছিল হিন্দ, কিন্তু উম্মুল মাসাকীন ডাক নামে তিনি পরিচিত হন। কোরাইশের বনী মখযুম কবীলার সাথে তাঁর সম্পর্ক। বংশ ধারা- হিন্দ ইবনাতে আবু উমাইয়া ইবনে মুগীরা ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে মখযুম। আর মাতৃকুল থেকে বংশ ধারা হলো- হিন্দ ইবনাতে আতেকা ইবনাতে আমের ইবনে রা‘বীআহ ইবনে মারেক কেনানিয়াহ। কেউ কেউ বলেন, তার আসল নাম ছিল রামলা। কিন্তু এর কোন বিত্তি নেই। মুহাদ্দেসীনরা এ রেওয়ায়েতকে লাইসা বিশাইয়িন বা অর্থহীন হিসেবে অভিহিত করেছেন। (আল এছাবা ১ম খণ্ড পৃষ্ঠা ৮৫)
আবু উমাইয়ার নাম ছিল হুযাইফা, তাঁর পদবী ছিল যাদুর রাকেব। এ পদবীতে তিনি ছিলেন প্রসিদ্ধ। মক্কার দানশীল ব্যক্তিদের মধ্যে তাঁর বিশেষ স্থান ছিল। মাঝে মধ্যে সফরে গমন করলে গোটা কাফেলার দায়িত্ব তিনি একাই গ্রহণ করতেন। এ দানশীলতা ও বদান্যতার কারণে আবু উমাইয়া আরবদের নিকট যাদুর রাকেব উপাধীতে সমধিক পরিচিত হন। (আল এছাবা ১ম খণ্ড পৃষ্ঠা ৮৫)
তাঁর চাচাত ভাই আবু সালমা ইবনে আব্দুল আসাদের সাথে তাঁর প্রথম বিয়ে হয়। (আল এছাবা ১ম খণ্ড পৃষ্ঠা ৮৮৬) প্রথমে যারা ইসলাম গ্রহণ করেছেন, তিনি এবং তাঁর স্বামী ছিলেন তাদের অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ প্রাথমিক পর্যায়ে ইসলাম গ্রহণ করবে কি করবেন না, এ বিষয়ে মানুষ যখন দ্বিধা-দ্বন্দ্বে নিমজ্জিত ছিল, ইসলাম সম্পর্কে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া ছিল যখন ভাগ্যবান ব্যক্তিদের কাজ, তখনই তারা স্বামী-স্ত্রী উভয়ই ইসলামের অইবনেশ্বর দৌলতে ধন্য হন।
হিজরত: ইসলাম গ্রহণের মতো হিজরতেরও উভয়েই ছিলেন সহযাত্রী। প্রথমে হাবশা বা আবিসিনিয়ায় হিজরত করেন। পরে উভয়ে মদীনায় হিজরত করেন। মদীনা শরীফ হিজরতকালে উম্মে সালমা যে মর্মন্তুদ পরিস্থিতির সম্মুখীন হন, ঐতিহাসিক ইবনে আসীর তার জবানীতে তা উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আবু সালমা যখন মদীনা যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, তখন তার কাছে একটি মাত্র উট ছিল। আমি এবং আমার পুত্র সালমাকে তার পিঠে সাওয়ার করান। তিনি নিজে উটের লাগাম ধরে রওয়ানা করেন। বনু মুগীরা ছিল আমার সমগোত্রীয়। এ গোত্রের লোকেরা আমাদেরকে দেখে ফেলে এবং আবু সালমাকে বাধা দিয়ে বলে যে, আমরা আমাদের কন্যাকে এত খারাপ অবস্থায় যেতে দেবো না। আবু সালমার হাত থেকে লাগাম ছিনিয়ে নেয় এবং আমাকে সঙ্গে নিয়ে চলে যায়। ইতোমধ্যে আবু সালমার খান্দানের লোক বনু আব্দুল আসাদ এসে পৌঁছে। তারা পুত্র সালমাকে ছিনিয়ে এবং বনু মুগীরাকে জানিয়ে দেয় যে, তোমরা তোমাদের কন্যাকে স্বামীর সাথে যেতে না দিলে আমরাও আমাদের শিশুকে তোমাদের কন্যার সাথে কিছুতেই যেতে দেবো না। এখন আমি আমার স্বামী এবং পুত্র সন্তান তিনজনই একে অপর থেকে বিচ্ছন্ন। শোকে দুঃখে আমার অবস্থা কাহিল। যেহেতু হিজরতের হুকুম হয়েছিল, তাই আবু সালমা মদীনায় চলে যান। আমি একা রয়ে যাই। বনু মগীরার এক ব্যক্তি, যিনি ছিলেন আমার বন্ধু, আমার এ অস্থিরতা দেখে দয়া পরবশ হয়ে তার বংশের লোকদেরকে একত্রিত করে বললেন, আপনারা এ অসহায়াকে কেন ছেড়ে দিচ্ছেন না? একে তো আপনারা স্বামী এবং সন্তান থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছেন। তার এ কথাগুলো বেশ কাজ করেছে। শেষ পর্যন্ত তাদের মনে দয়ার উদ্রেক হয়। তারা আমাকে অনুমতি দিয়ে বলে যে, তোমার ইচ্ছে হলে স্বামীর কাছে যেতে পার। এটা শোনে বনু আব্দুল আসাদের লোকেরাও সন্তান আমার কাছে ফেরত দেয়। এবার আমি উটের পৃষ্ঠে হাওদা বেঁধে পুত্র সালমাকে বুকে নিয়ে সওয়ার হই। আমি ছিলাম সম্পূর্ণ একা। এ অবস্থায় পয়গম পৌঁছি। সেখানে ওসমান ইবনে তালহা ইবনে আবু তালহার সাথে সাক্ষাৎ হয়। তিনি আমার অবস্থা জানতে পেরে জিজ্ঞেস করেন, তোমার সাথে কেউ আছে? আমি বললাম, না আমি একা, আর আমার এ শিশু সন্তান। তিনি আমার উটের লাগাম ধরে টেনে নিয়ে যান। আল্লাহ সাক্ষী, তালহার চেয়ে শরীফ লোক আমি আরবে পাইনি। মনযিল এলে আমার অবতরণ দরকার হলে তিনি গাছের আড়ালে চলে যেতেন। রওয়ানা করার সময় হলে তিনি উট নিয়ে আসতেন। আমি ভালোভাবে বসলে তিনি উটের লাগাম ধরে আগে আগে গমন করতেন। গোটা পথ এভাবে কাটে। মদীনা পৌঁছে বনু আমর ইবনে আওফ এর জনপদ কুবা অতিক্রমকালে উসমান ইবনে আবু তালহা জানান যে, তোমার স্বামী এ গ্রামে আছেন। আবু সালমা এখানে অবস্থান করেছিলেন। আমি আল্লাহর উপর ভরসা করে এই মহল্লায় অবতরণ করি। আল্লাহর মেহেরবানীতে স্বামীর সাক্ষাৎ হয়। আমাকে আবু সালমার সন্ধান দিয়ে উসমান ইবনে আবু তালহা মক্কা ফিরে যান। (উসুদুল গাবাহ পৃষ্ঠা: ৫৮৮-৫৮৯)
হযরত উম্মে সালমা এ মহানুভবতার কথা কখনো বিস্মৃত হননি। তিনি প্রায় বলতেন: ما رأيت صاحبا قط أكرم من عثمان بن طلحة
আমি কখনো ওসমান বিন তালহার চেয়ে শরীফ সাথী কাউকে দেখিনি। নির্যাতনের যুগে মুসলমানরা যখন চতুর্দিক থেকে লক্ষ্য বস্তুতে পরিণত হয়েছিলেন, তখন তাদের অস্থিরতার কোন কূল-কিনারা ছিল না। হিজরতকালে তাঁকে যে বিপদাপাদ সইতে হয়েছে, তা কেবল তার পক্ষেই সম্ভব ছিল। তার মন থেকে সে অনুভূতি বিদূরিত হয়নি। হিজরত সম্পর্কে আলোচনাকালে তিনি গর্ব করে বলতেন, ইসলামের জন্য আবু সালমার খান্দানকে যে কষ্ট স্বীকার করতে হয়েছে, তা আহলে বায়তের আর কাউকে সইতে হয়েছে বলে আমার জানা নেই। (উসুদুল গাবাহ পৃষ্ঠা: ৫৮৮-৫৮৯)
রাসূলের স্ত্রীদের মধ্যে উম্মে সালমা ছিলেন, কোন কোন গুণে অনন্যা। হিজরতের একটি বিষয়ে তিনি ছিলেন বিশেষ বৈশিষ্ট্যের অধিকারিণী। তিনি ছিলেন প্রথম পর্দানশীল স্ত্রী, যিনি শুরুতে মক্কা থেকে মদীনায় হিজরত করেন। (আল এছাবা ২য় খণ্ড পৃষ্ঠা ৮৮৮)
হযরত উম্মে সালমা ছিলেন অত্যন্ত মর্যাদাবান স্ত্রী। তাঁর পিতা আবু উমাইয়া ছিলেন কোরাইশের অত্যন্ত মর্যাদাবান এবং পরিচিত ব্যক্তিত্ব। হিজরতকালে তিনি যখন কুবা পৌঁছেন, তখন লোকেরা তাঁর সম্পর্কে জানতে চায়। পিতার নাম শুনে অনেকের বিশ্বাস হয়নি। কারণ শরীফ নারীরা সে যমানায়ও এমনিভাবে একা বেরুতেন ন। হযরত উম্মে সালমার অন্তরে ছিল ইসলামের প্রগাঢ় দরদ। আল্লাহর নির্দেশ মেনে চলা তিনি ফরয মনে করতেন। তাই তিনি অন্য কিছুর কথা ভাবতেন না। তিনি চুপচাপ থাকতেন। কিছু লোক যখন হজ্জ করার জন্য মক্কা রওয়ানা হন, তিনি তাঁর পরিবারে একখানা চিঠি পাঠান, তখন তাঁর শরাফত এবং পারিবারিক ঐতিহ্য সম্পর্কে সকলের বিশ্বাস জন্মে। (উসুদুল গাবাহ পৃষ্ঠা: ৫৮৮-৫৮৯)
হিজরতকালে বিপদাপদের কথা তখনো তার অন্তর থেকে মুছে যায়নি, আর স্বামীকে নিয়ে বেশি দিন কাটাবার সুযোগও তিনি লাভ করেননি। আবু সালমাকে এমন সময় জিহাদের উদ্দেশ্যে ওহোদ যুদ্ধে অংশ নিতে হয়। (তাবাকাত ৮ম খণ্ড পৃষ্ঠা: ৬০ ) জিহাদের ময়দানে আবু সালমা হাতমীর তীর তাঁর বাহুতে বিদ্ধ হয়। (তাবাকাত ৮ম খণ্ড পৃষ্ঠা: ৬০) একমাস চিকিৎসার পর তিনি সুস্থ হন। এর দু’বৎসর ১১ মাস পর নবীজীর নির্দেশে তাকে কতন এলাকায় প্রেরণ করা হয়। সেখানে তিনি ২৯ দিন কাটান। (আল এছাবা ২য় খণ্ড পৃষ্ঠা ৮৮৬) হিজরী ৪ সালের সফর মাসের ৮/৯ তারিখে মদীনা ফিরে আসেন। এবারের আঘাত ছিল তীব্র। এ আঘাতে আর সেরে উঠতে পারেননি। একই বছর জুমাদাল উখরার ৯ তারিখে তিনি ইন্তেকাল করেন। (যুরকানী ৩য় খণ্ড পৃষ্ঠা: ২৭৫) ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিঊন।
হযরত উম্মে সালমা নবীজীকে স্বমীর মৃত্যু সংবাদ জানাতে আসেন। মৃত্যু সংবাদ শুনে নবীজী নিজে তার গৃহে গমন করেন। গোটা গৃহে ছিল শোকের কালো ছায়া। হযরত উম্মে সালমা বার বার বলতেন, অসহায় অবস্থায় কেমন মৃত্যু হয়েছে হায়। নবীজী তাকে ধৈয ধারনের দীক্ষা দেন এবং বলেন, তার মাগফেরাতের জন্য দোয়া করো এবং বলো : , হে আল্লাহ আমাকে তার চেয়ে উত্তম উত্তরাধিকারী দাও এরপর নবীজী আবু সালমার মৃতদেহ দেখতে যান এবং অতি গুরুত্বের সাথে তাঁর জানাযার নামায পড়ার। এ জানাযার নামাযে তিনি ৯টি তাকবীর বলেন। তাকে জিজ্ঞেস করা হয়, ইয়া রাসুলাল্লাহ আপনার ভুল হয়নি তো?হযরত বললেন, ইনি হাজার তাকবীরের যোগ্য ছিলেন। ইন্তিকালের পর তার চোখ খোলা ছিল। নবীজী নিজ হাতে তার চোখ মুছে দেন এবং তার জন্য মাগফেরাতের দোয়া করেন।
হওয়ার পর তাঁর দারিদ্র ও অসহায়তার বিষয় বিবেচরা করে হযরত আবু বকর(রাঃ) তাকে বিবাহ করার প্রস্তাব দেন।কিন্তু তিনি এতে সম্মত হননি। এক বণনায় দেখা যায়, হযরত ওমর (রাঃ) তাকে বিবাহ করার প্রস্তাব করেন। কিন্তু আল-এছহাব গ্রন্থের রচয়িতা হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানীর মতে হযরত উমর নিজের জন্য এ প্রস্তাব দেননি, বরং তার মাধ্যমে নবীজী (সঃ)তাকে বিয়ে করার প্রস্তাব পাঠান। আবু সালমার আত্মত্যাগ ও কুরবানী এবং উম্মে সালমার অসহয়ত্ব রাসুলে খোদার অন্তরে দাগ কেটে ছিল, তাকে করেছিল বিচলিত। তিনি আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী হযরত উমরের মাধ্যমে প্রস্তাব পাঠান। হযরত উম্মে সালমার পক্ষে এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা সম্ভব ছিল না। প্রথমে তিনি নানা অজুহাত দেখিয়ে টাল-বাহানা করেন। কিন্তু নবীজী সব শত মেনে নিলে তিনি সম্মতি তেন। স্বীয় পুত্র উমরকে বলেন, চলো রাসুলে খোদার সাথে আমাকে বিবাহ দাও। হিজরী úন্ন হয়। এমনি করে হযরত আবু সালমার মৃত্যুর হ্রদয় বিদারক ঘটনারই পরিসমাপ্তি হয়নি, বরং তার জীবন চিরন্তন শান্তিতে ভরে উঠে।
আহমদ ইবনে ইসহাক হাযরামী যিয়াদ ইবনে মারইয়ামের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ইকদা উম্মে সালমা স্বামী আবু সালমাকে বলেন, আমি জানি কোন নারীর স্বামী জান্নাতবাসী হলে তার স্ত্রী যদি দ্বিতীয় বিবাহ না করে তাহলে আল্লাহ তা’আলা স্বামীর সাথে স্ত্রীকেও জান্নাত নছীব করেন। পুরুষেরও ঠিক একই অবস্তা। তাহলে এসো, আমরা প্রতিজ্ঞা করি যে, আমার পর তুমি বিয়ে করবে না, আর তোমার পর আমিও বিয়ে করবো না। আবু সালমা জবাবে বললেন, তুমি কি আমার আনুগত্য করবে? উম্মে সালমা বললেন , তোমার আনুগত্য ছাড়া আমি আর কিসে আনন্দ লাভ করবো? আবু সালমা বলেন, তাহলে আমার মৃত্যুর পর তুমি বিয়ে করবে। এরপর তিনি দোয়া করেন, হে আল্লাহ! আমার মৃত্যুর পর উম্মে সালমাকে উত্তম স¦ামী তাকে দান কর। হযরত উম্মে সালমা বলেন, আবু সালমার মৃত্যুর পর আমি ভাবছিলাম কে হবে আবু সালমার চেয়ে উত্তম। এর কিছুদিন পর সবীজীর সাথে আমার বিয়ে হয়।
উপরোক্ত বর্ণনা থেকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সুসম্পর্কের সাথে সাথে এ কথাও জানা যায় যে, সে সময়ে ইসলামের সত্যিকার শিক্ষার প্রভাব কত সুদূরপ্রসারী, কত গভীর ছিল। একজন স্বামী তার সকল আবেগ –অনুভূতি দমন করে স্ত্রীকে দ্বিতীয় বিয়ের অনুমতি দিচ্ছে- এটা কি সে সত্য যুগের পুত-পবিত্র দৃষ্টান্ত নয়?
নবীজী উম্মে সালমাকে দু’টি আটা পেষার চাককী, পানি রাখার জন্য দু’টি মশক এবং চামড়ার বালিশ (খোরমার ছাল ভর্তি) দান করেন। এসব জিনিষই দেয়া হয়েছে অন্যান্য স্ত্রীদেরকেও।
ঈর্ষা স্ববাবের দাবি, পরশ্রীকাতরতার র্পযায়ে না পৌঁছলে এটা নিন্দনীয় নয়। হযরত উম্মে সালমা যখন নবীজীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন, তখন হযরত আয়েশা তার রূপ-সৌন্দর্যের কথা শুনে ঈর্ষান্বতা হন এবং তাকে দেখতে আসেন। যেহেতু তার মনে সুন্দর ধারণা জাগলো যে, যতটুকু বলা হয়, উম্মে সালমা তার চেয়ে অনেক বেশী সুন্দরী। এ সর্ম্পকে তিনি হযরত হাফসার সাথেও আলোচনা করেন। তিনি বুঝলেন যে, মানুষ অতিরঞ্জিত করে। ঈর্ষার কারণে এটা ঘটেছে। অতঃপর হযরত হাফসাও তাকে দেখতে যান এবং দেখে তারও একই প্রতিক্রিয়া হয়। এবার হযরত আয়েশা গভীরভাবে দেখে স্বীকার করেন যে, সত্যিই হাফসা ঠিক বলেছে। যাই হোক, এ বর্ণনা দ্বারা হযরত উম্মে সালমার সৌন্দর্য প্রমাণিত হয়। এ জন্য হযরত আয়েশাকে নৈতিক দিক থেকে দায়ী করা যায় না।
তার লজ্জাশীলতা এবং আত্মমর্যাদার কথা ইতোপূর্বে আলোচিত হয়েছে। বিয়ের পর প্রথম প্রথম এ অবস্থা ছিল যে, নবীজী আগমন করলে তিনি কোলের শিশুকে দুধ খাওয়াতেন। নবীজী এটা দেখে ফিরে যেতেন। হযরত আম্মার ইবনে ইয়াসের ছিলেন তার দুধ-ভাই। তিনি এটা শুনে অসন্তুষ্ট হন এবং দুধের শিশুকে তার গৃহে নিয়ে যান। ধীরে ধীরে এ অবস্থার পরিবর্তন হয় এবং অন্যান্য স্ত্রীদের মত তিনিও স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে অভ্যস্ত হন। এবং আন্তরিকতার সম্পর্ক এত বৃদ্ধি পায় যে হযরত আয়েশার মতোই তার সাথে সম্পর্ক রয়েছে এ কথা বলা যায়। (চলবে…)
মূল: নিয়াজ ফতেহপুরী। অনুবাদ: গোলাম সোবহান সিদ্দিকী