Main Menu

ওয়াক্ফ’র কি এবং কেন এর প্রয়োজনীয়তা

images
ওয়াক্ফ আরবি শব্দ। এর শাব্দিক অর্থ স্থগিত করা, আবদ্ধ করা, স্থির রাখা, নিবৃত্ত রাখা ইত্যাদি। ওয়াক্ফ ইসলামী শরিয়তের একটি বিশেষ পরিভাষা। কোনো সম্পত্তি এর মালিক নিজের মালিকানা থেকে মুক্ত করে আল্লাহর সম্পত্তি ঘোষণা করে আল্লাহর উদ্দেশ্যে জনকল্যাণ বা জনসেবার জন্য উৎসর্গ করলে সেই উৎসর্গ করার কাজটিকে ওয়াক্ফ বলা হয়। ওয়াক্ফ কোনো সম্পত্তির মালিকানা হস্তান্তর করার একটি পদ্ধতি। এই হস্তান্তর সংঘটিত হয় স্বেচ্ছায়। উপরিউক্ত এই হস্তান্তর চিরস্থায়ী ও অপরিবর্তনীয়। বিধিবদ্ধ ইসলামী আইনের ৪৯৭ ধারায় ওয়াকফের যে সংজ্ঞা সন্নিবেশিত হয়েছে তা হলো কোনো ব্যক্তি কর্তৃক নিজ সম্পত্তি আল্লাহর মালিকানায় সোপর্দ করে তা বা তা থেকে প্রাপ্ত আয় কোনো ধর্মীয় বা জনকল্যাণমূলক কাজে নিয়োগের নির্দেশ দেয়াকে ওয়াক্ফ বলে।
ইমাম আবু হানিফা রহ: তার ফতোয়ায়ে আলমগীরের ওয়াক্ফ অধ্যায়ে ওয়াকফের সংজ্ঞায় বলেছেন, ‘ওয়াক্ফকারী মূল সম্পত্তি নিজের তত্ত্বাবধানে রাখবে এবং তার লব্ধ সম্পদ বা উপকারিতাকে দরিদ্র লোকেদের মধ্যে সদকা করে দেবে।’ ইমাম ইউসুফ ও ইমাম মুহাম্মদের মতে, ‘ওয়াক্ফকারী মূল সম্পত্তিকে আল্লাহর মালিকানায় হস্তান্তরের পর নিজের কাছে রাখবে এবং তা থেকে আল্লাহর বান্দাদের উপকৃত হওয়ার সুযোগ দেবে।’
বাংলাদেশ ওয়াক্ফ আইন, ১৯৬২-তে ওয়াক্ফর সংজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে এভাবে, ‘ওয়াক্ফ বলতে ইসলাম ধর্মীয় কোনো ব্যক্তির দ্বারা স্থাবর কিংবা অস্থাবর সম্পত্তি মুসলিম আইনে স্বীকৃত যেকোনো ধার্মিক, ধর্মসম্বন্ধীয় অথবা দাতব্য উদ্দেশ্যে চিরতরে উৎসর্গ করাকে বোঝাবে।’ যে বা যারা সম্পত্তি ওয়াক্ফ করেন তাকে ওয়াকিফ বলে। আর যেসব ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের অনুকূলে ওয়াক্ফ করা হয় তাকে বা তাদেরকে বলা হয় ‘মাওকুফ আলাইহি’। যে দলিলের মাধ্যমে ওয়াক্ফ করা হয় তাকে বলা হয় ‘ওয়াক্ফনামা’।
ওয়াক্ফর ভিত্তি : কুরআন ও হাদিসে ওয়াক্ফ বিষয়ে সরাসরি কোনো দিকনির্দেশনা না থাকলেও, এই দু’টি উৎসেই এ বিষয়ে যথেষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে, যাতে মুসলমানদের সম্পত্তি ওয়াক্ফ করার জন্য উৎসাহ দেয়া হয়েছে। পবিত্র কুরআনের কয়েকটি আয়াত বিশ্বাসীদের পরোপকার খাতে তাদের সম্পদ বা সম্পত্তির একটি অংশ দান করার তাগিদ দেয়া হয়েছে। ইসলামী মনীষী ও পণ্ডিতেরা এ বিষয়ে কুরআনের যেসব আয়াতকে উল্লেখ করেন তার একটি হলো, ‘অতএব সালাত কায়েম করো এবং আল্লাহকে দাও উত্তম ঋণ। তোমরা তোমাদের নিজেদের মঙ্গলের জন্য ভালো যা কিছু অগ্রিম প্রেরণ করবে তোমরা তা পাবে আল্লাহর নিকট। উহা উৎকৃষ্টতর এবং পুরস্কার হিসেবে মহত্তর।’ (সূরা মুজাম্মিল, আয়াত : ২০)।
উপরিউক্ত আয়াতে মহান আল্লাহ পাক ঈমানদারদের তিনটি নির্দিষ্ট বিধানের প্রতি নির্দেশনা দিয়েছেন। এগুলো হলো সালাত, জাকাত ও আল্লাহর প্রতি করজে হাসানা। তৃতীয় বিধানটি আল্লাহর উদ্দেশে দান করা বোঝায় এবং এটিই ওয়াক্ফকে নির্দেশ করে। কোনো ঋণ সাধারণভাবে প্রকৃতির দিক থেকে সম্পদ বোঝায়, যা ভবিষ্যতে পরিশোধ করতে হয়। এ ক্ষেত্রে আল্লাহকে ঋণ দেয়ার কথা বলা হয়েছে, যা তিনি যথানিয়মে দাতা বা বান্দার কাছে ফেরত দেবেন। এখানে উল্লেখ্য, শরিয়তে সালাত ও জাকাতকে বাধ্যতামূলক হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আর ওয়াক্ফকে স্বেচ্ছাপ্রদ বা ইচ্ছাধীন করা হয়েছে, যদিও ওয়াকফের ব্যাপারে সবাইকে তাগিদ দেয়া হয়েছে। অন্য দিকে জাকাত প্রদানের বেলায় যেমন এর পরিমাণ নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে, ওয়াকফের বেলায় তার সীমা-পরিসীমা নির্ধারণ করা হয়নি, বরং এটাকে উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। ইসলামে অর্থব্যবস্থাপনার দু’টি অতি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হচ্ছে জাকাত ও ওয়াক্ফ। এই দু’টি বিধান মুসলিম উম্মাহর অর্থনৈতিক মুক্তি বৃদ্ধির জন্য খুবই জরুরি। এ বিষয়ে ঈমানদারদের উদ্বুদ্ধ করে তাই কুরআনে বলা হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা যা উপার্জন করো এবং আমি যা ভূমি থেকে তোমাদের জন্য উৎপাদন করে দিই তা থেকে যা উৎকৃষ্ট তা ব্যয় করো।’ (সূরা আল-বারাকা, আয়াত : ২৬৭)।
কোনো ব্যক্তির সম্পদের একটি অংশ দান বা ওয়াক্ফ হিসেবে প্রদানের বিষয়টি উপরিউক্ত এই আয়াত থেকে স্পষ্টভাবে অনুধাবন করা যায়। কুরআনের আরো একটি আয়াতে ওয়াকফের ব্যাপারে ইঙ্গিত রয়েছে। সেটি হলো, ‘তোমরা যা ভালোবাসো তা থেকে ব্যয় না করা পর্যন্ত তোমরা কখনো পুণ্য লাভ করবে না। তোমরা যা কিছু ব্যয় করো আল্লাহ অবশ্যই সে সম্পর্কে সবিশেষ অবহিত।’ (সূরা আলে-ইমরান, আয়াত : ৯২)। কুরআনের এই আয়াত যখন নাজিল হয়, তখন আল্লাহর রাসূলের সাহাবি হজরত আবু তালহা রা: তার সম্পদ থেকে কিছু ওয়াক্ফ হিসেবে দান করতে চাইলেন। এই অভিপ্রায় তিনি মহানবী সা:-এর কাছে ব্যক্ত করলেন। আবু তালহা রা: বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহ বলেছেন, তুমি কখনো পুণ্য লাভ করতে পারবে না, যতক্ষণ না তুমি যা ভালোবাসো তা থেকে ব্যয় করো। আমি আমার প্রিয় খেজুরের বাগান ‘বাইরারাহ’ আল্লাহর উদ্দেশে দান করতে চাই, যাতে আল্লাহর কাছ থেকে তার প্রতিদান পুরস্কার পেতে পারি। অতএব আপনি এই বাগানটি আল্লাহর নির্দেশ মতো ব্যবহার করতে পারেন।’
আবু তালহা রা:-এর এই কথা শুনে আল্লাহর রাসূল সা: বললেন, ‘সাবাস, তোমার এই সম্পদ খুবই মূল্যবান। আমি তোমার কথা শুনলাম। আমি বলি, তুমি এই সম্পদ তোমার আত্মীয়দের মধ্যে বণ্টন করে দাও।’ আবু তালহা রা: মহানবী সা:-এর নির্দেশ মতো ‘বাইরারাহ’ বাগানটি তার আত্মীয়স্বজনের মধ্যে বিলিয়ে দিলেন। ওয়াকফের এই রকম আরো উদারহরণ মহানবী সা:-এর জীবন থেকে আমরা অবগত হতে পারি। মহানবী সা:-এর একটি হাদিস থেকে একটি উদাহরণ দেয়া যেতে পারে, যেখানে তিনি হজরত উমর রা:-কে খাইবারে তার একটি মূল্যবান সম্পত্তি ওয়াক্ফ করার উপদেশ দিয়েছিলেন। হাদিসটি হলো ইবনে উমর রা: থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উমর ইবনে খাত্তাব রা:-এর খাইবারে কিছু জমি ছিল। এ বিষয়ে তিনি মহানবী সা:-এর কাছে গেলেন পরামর্শ করার জন্য। উমর রা: বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল সা:, ‘খাইবারে আমার কিছু জিম আছে, যা আমার সব জমির চেয়ে উত্তম। এই জমির বিষয়ে আপনার পরামর্শ কী?’ আল্লাহর রাসূল সা: বললেন, ‘তুমি এটাকে পরোপকারের জন্য ছেড়ে দাও এবং এর ফল পরোপকারের জন্য দান করো।’ উমর রা: জমিটি এই শর্তে ওয়াক্ফ করলেন যে, এটি কেউ বিক্রি করতে পারবে না বা অন্য কাউকে উপহার হিসেবে দিতে পারবে না এবং এটি কেউ উত্তরাধিকার হিসেবেও পাবে না। তবে এর থেকে যা উৎপাদন হবে তা গরিব, আত্মীয়স্বজনের মধ্যে দান করা হবে, দাস মুক্তির জন্য তা থেকে ব্যয় করা যাবে, আল্লাহর কাজে ব্যবহার করা যাবে, মুসাফিরের জন্য ব্যয় করা যাবে এবং যারা এর দায়িত্বশীল হিসেবে থাকবে তারা ভালো উদ্দেশ্যে এই সম্পদের ফল ভোগ করতে পারবে, তবে ভবিষ্যতের জন্য জমা না করে অন্যদেরও খাওয়াতে পারবে।’
ওপরে বর্ণিত হাদিস থেকে এই ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, মহানবী সা: হজরত উমর রা:-কে তার জমি ওয়াক্ফ করার কথা বলেছেন। এই হাদিসে আরেকটি মজার বিষয় লক্ষ করা যায়। সেটি হলো ওয়াক্ফ করার ক্ষেত্রে কতগুলো শর্ত আরোপ করা। এটা সাধারণ ওয়াক্ফ নয়, যেখানে সম্পদ যেকোনো খাতে ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে উমর রা: তার ওয়াক্ফ সম্পত্তিতে কতগুলো নির্দিষ্ট শ্রেণীর লোকের কথা উল্লেখ করেছেন। হজরত উমর রা: যখন এই শর্তগুলো দিলেন তখন মহানবী সা: নীরব থেকে তাতে অনুমোদন দিলেন।
এ রকম আরো একটি ওয়াক্ফ’র ঘটনা রয়েছে হজরত উসমান রা:-এর জীবনে। আল্লাহর নবী মুহাম্মদ সা:-এর জীবদ্দশায় রুমা নামক একটি কুয়া কিনে ওয়াক্ফ করেন হজরত উসমান রা:। মহানবী সা:-এর আহ্বানে সাড়া দিয়ে উসমান রা: এক ইহুদি মালিক থেকে বেশি দামে প্রথমে রুমা কুয়ার অর্ধেক কিনে তা মদিনার মুসলমানদের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করে দেন। তার পরও কুয়া থেকে পানি পেতে মুসলমানেরা ইহুদিদের বৈষম্যের শিকার হন। তখন উসমান রা: পুরো কুয়াটাই কিনে নেন এবং তা ওয়াক্ফ করে দেন।
ওয়াক্ফ’র গুরুত্ব : ইসলামের সোনালি যুগে এবং তার পরবর্তী ইসলামী শাসনামলে ওয়াক্ফ সমাজে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। ওয়াক্ফ দান ও পরোপকারের একটি উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। রাসূল সা:-এর বিভিন্ন হাদিসে মানবতার প্রতি সাহায্য ও দান করার যে উৎসাহ দেয়া হয়েছে, সেখানে ওয়াক্ফকেও গুরুত্ব দেয়ার ইঙ্গিত রয়েছে। মহানবী সা: তার এক হাদিসে বলেছেন, ‘মানুষ যখন মার যায়, তখন সাথে সাথে তার আমল বন্ধ হয়ে যায়। তবে তিনটি বিষয় ছাড়া। সেগুলো হলো : ১. সাদকায়ে জারিয়াহ বা এমন দান যা যুগের পর যুগ মানুষের উপকারে লাগবে, ২. এমন প্রয়োজনীয় জ্ঞান যা থেকে মানুষ জানতে পারবে এবং উপকৃত হবে, ৩. এমন নেক সন্তান যে তার মৃত বাবা-মায়ের জন্য দোয়া করবে।’ এসব ভালো কাজের ফলাফলের শেষ নেই এবং তা অব্যাহতভাবে চলতে থাকবে। আর ওয়াক্ফ হলো তার একটি।
মুসলিমসমাজে ওয়াক্ফ’র গুরুত্ব অপরিসীম। ধর্মীয় কারণেও ওয়াক্ফ’র বিশেষ গুরুত্বপূর্ণশাখা, কারণ এটা একজন মুসলমানের ধর্মীয় জীবন ও আর্থসামাজিক জীবনকে একত্র করে থাকে। ধর্মীয় কারণ ছাড়াও ওয়াক্ফ’র রয়েছে আর্থসামাজিক গুরুত্ব। সমাজের অগণিত মানুষ, বিশেষ করে দরিদ্র ও অসহায় মানুষের কল্যাণ সাধনে ওয়াক্ফ বড় একটি উপায়। মুসলিমসমাজে দারিদ্র্য বিমোচনে এটি একটি হাতিয়ার হিসেবে বিবেচিত।
যেসব বস্তু ওয়াক্ফ করা জায়েজ : সাধারণত যেকোনো সম্পত্তিই ওয়াক্ফ করা যায়। ওয়াক্ফ’র বিষয়বস্তু স্থাবর অথবা অস্থাবর হতে পারে। সেটা ভূসম্পত্তি হতে পারে, ইন্ডাস্ট্রি হতে পারে, কোম্পানির শেয়ার হতে পারে, চাষাবাদের পশু ও যন্ত্রপাতি হতে পারে, এমনকি নগদ টাকাও হতে পারে। তবে ওয়াক্ফ করার সময় শর্ত হলো, ১. ওয়াক্ফকৃত সম্পত্তিতে ওয়াকিফের পূর্ণ অধিকার বা মালিকানা থাকতে হবে। ২. ওই সম্পত্তি দৃশ্যমান হতে হবে, ৩. ওই সম্পত্তি এমনভাবে ব্যবহারযোগ্য হতে হবে, যাতে তা নিঃশেষ না হয়। যে সম্পত্তি বিভাজনযোগ্য নয় অথবা বিভাজন করলে তার উপযোগিতা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে সে ক্ষেত্রে অবিভাজ্য অংশের ওয়াক্ফ করা বৈধ। কিন্তু বিভাজনযোগ্য হলে বিভক্ত না করা পর্যন্ত ওয়াক্ফ বৈধ নয়।
নগদ অর্থ ওয়াক্ফ করা প্রসঙ্গে : অন্যান্য স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির মতো নগদ অর্থের ওয়াক্ফ’র ক্ষেত্রে একই বিধান প্রযোজ্য। ওয়াক্ফকৃত নগদ টাকার ওপর ওয়াক্ফকৃত ব্যক্তির আর কোনো মালিকানা থাকে না এবং ওই অর্থের মাধ্যমে অর্জিত মুনাফা বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করা হয়। সাধারণত ব্যাংকের মাধ্যমে অথবা কোনো ওয়াক্ফ ট্রাস্ট ফান্ডের মাধ্যমে এই ওয়াক্ফ করা যায়। যেমন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের ওয়াক্ফ হিসাব রয়েছে। মুদারাবা ক্যাশ ওয়াক্ফ হিসাব অর্থ জমাকারী গ্রাহক এবং ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের মধ্যে সম্পাদিত ওয়াক্ফ চুক্তি ইসলামী শরিয়াভিত্তিক একটি মুদারাবা চুক্তি। মুদারাবা ওয়াক্ফ জমা চিরস্থায়ী দান হিসেবে গ্রহণ করা হয় এবং এই হিসাব খোলার পরে আর বন্ধ করা যায় না। ওয়াকিফের পক্ষে ব্যাংক ওয়াক্ফকৃত ফান্ড ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করে। ওয়াকিফ তার স্থিরকৃত সমুদয় অর্থ এককালীন ক্যাশ জমা দিয়ে ওয়াক্ফ হিসাব খুলতে পারেন অথবা তিনি ন্যূনতম ১০ হাজার টাকা জমা দিয়ে ওয়াক্ফ হিসাব শুরু করতে পারেন। পরবর্তী পর্যায়ে এক হাজার টাকা বা তার গুণিতক জমা দিতে পারবেন। ইসলামী ব্যাংকের ক্যাশ ওয়াক্ফ যে কেউ অর্থ দিতে পারেন। এটা শরিয়া কমিটির তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়। শরিয়া কমিটির নির্দেশনার আলোকে ব্যাংক ওই অর্থ থেকে অর্জিত মুনাফা জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করে থাকে।
শেষ কথা : দারিদ্র্য বিমোচন ও সম্পদের সুষ্ঠু বণ্টনের ক্ষেত্রে যদিও ওয়াক্ফর ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে, আমাদের দেশে মুসলিমসমাজে বর্তমানে ওয়াক্ফ’র ধারণা তেমন পরিচিত নয় এবং মানুষের কাছে এ বিষয়ে তেমন কোনো সচেতনতাও লক্ষ করা যাচ্ছে না। তাই মানুষের মাঝে ওয়াক্ফর সচেতনেতা সৃষ্টির জন্য প্রয়োজন একটি ওয়াক্ফ আন্দোলন। সমাজের ধনী লোকেরা যদি ওয়াক্ফ করতে উৎসাহী হন, তবে তা দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য এক অনন্য মাধ্যম হতে পারে। ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড এই লক্ষ্যে কাজ যাচ্ছে। ইসলামী ব্যাংকের ক্যাশ ওয়াকফের একটি উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত। ক্যাশ ওয়াক্ফ হিসাবের মাধ্যমে ওয়াক্ফকৃত টাকার বিপরীতে অর্জিত আয় দ্বারা ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডে সমাজের বিভিন্ন স্তরের অভাবী মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। আসুন, আমরা সবাই মিলে ওয়াক্ফর মতো অতীব সাওয়াবের কাজে সম্পৃক্ত হই এবং এর মাধ্যমে সমাজের অসহায়, দরিদ্র ও অধঃপতিত মানুষের অবস্থার পরিবর্তন করে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলি।=সমাপ্ত

Related Post