আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন-
وَلَا تَقْفُ مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ ۚ إِنَّ السَّمْعَ وَالْبَصَرَ وَالْفُؤَادَ كُلُّ أُولَـٰئِكَ كَانَ عَنْهُ مَسْئُولًا ﴿٣٦﴾
যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তার পিছনে পড়ো না। নিশ্চয় কান, চক্ষু ও অন্তঃকরণ এদের প্রত্যেকটিই জিজ্ঞাসিত হবে। (সূরা বনী ইসরাইল: ৩৬)
عَنْ أَبي مُوسَى رضي الله عنه قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَيُّ المُسْلمِينَ أَفْضَلُ ؟ قَالَ: مَنْ سَلِمَ المُسْلِمُونَ مِنْ لِسَانِهِ وَيَدِهِগ্ধ. متفق عَلَيْهِ
২/১৫২০। আবূ মুসা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘হে আল্লাহর রাসূল! সর্বোত্তম মুসলিম কে?’ তিনি বললেন, “যার জিহ্বা ও হাত থেকে মুসলিমরা নিরাপদ থাকে।” ( সহীহুল বুখারী ১১, মুসলিম ৪২, তিরমিযী ২৫০৪, ২৬২৮, নাসায়ী ৪৯৯৯)
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه، سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ إِنَّ الْعَبْدَ لَيَتَكَلَّمُ بِالْكَلِمَةِ مَا يَتَبَيَّنُ فِيهَا، يَزِلُّ بِهَا فِي النَّارِ أَبْعَدَ مِمَّا بَيْنَ الْمَشْرِقِ ”.
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছেন যে, নিশ্চয় বান্দা পরিণাম চিন্তা ব্যতিরেকেই এমন কথা বলে যে কথার কারণে সে ঢুকে যাবে জাহান্নামের এমন গভীরে যার দূরত্ব পূর্ব (পশ্চিম) এর দূরত্বের চেয়েও বেশি। [মুসলিম: ৫৩/৬, হাঃ ২৯৮৮ আধুনিক প্রকাশনী- ৬০২৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০৩৩)
عَنْ سُفْيَانَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الثَّقَفِيِّ رضي الله عنه ، قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ حَدِّثْنِي بِأَمْرٍ أَعْتَصِمُ بِهِ . قَالَ ” قُلْ رَبِّيَ اللَّهُ ثُمَّ اسْتَقِمْ ” . قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا أَخْوَفُ مَا تَخَافُ عَلَىَّ فَأَخَذَ بِلِسَانِ نَفْسِهِ ثُمَّ قَالَ ” هَذَا ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
সুফিয়ান ইবনু আবদুল্লাহ আস-সাকাফী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে এমন একটি কথা বলুন, যা আমি ধারণ করতে পারি। তিনি বললেনঃ তুমি বল, আল্লাহই আমার রব (প্রভু) তারপর এতে সুদৃঢ় থাক। তিনি (বর্ণনাকারী) বলেন, আমি আবার বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার দৃষ্টিতে আমার জন্য সর্বাধিক আশংকাজনক বস্তু কোনটি? তিনি স্বীয় জিহ্বা ধরে বললেনঃ এই যে, এটি।
(তিরমিযী ২৪১০, সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩৯৭২), মুসলিম ৩৮)
عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ رضي الله عنه ، قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا النَّجَاةُ قَالَ “ أَمْسِكْ عَلَيْكَ لِسَانَكَ وَلْيَسَعْكَ بَيْتُكَ وَابْكِ عَلَى خَطِيئَتِكَ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
উকবা ইবনু আমির (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! মুক্তির উপায় কি? তিনি বললেনঃ তুমি তোমার রসনা সংযত রাখ, তোমার বাসস্থান যেন তোমার জন্য প্রশস্ত হয় (অর্থাৎ তুমি তোমার বাড়িতে অবস্থান কর) এবং তোমার গুনাহের জন্য ক্রন্দন কর। (তিরমিযী: ২৪০৬, সহীহ, সহীহাহ ৮৮৮)
যবান সংযত রাখার মধ্যে বড় কল্যাণ রয়েছে, দুনিয়া আখেরাতে মুক্তি নিহিত এই জিহ্বাকে নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই। রাসূল (সা.) তাঁর উম্মতকে উৎসাহ দিয়েছেন- তিনি বলেছেন;
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو رضي الله عنه ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَنْ صَمَتَ نَجَا ”
‘আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে লোক নীরব থাকলো, সে নাজাত (মুক্তি) পেলো। (তিরমিযী: ২৫০১)
ফায়দা বা শিক্ষা
১। ইসলামের সৌন্দর্যের মধ্যে একটি বিষয় হলো- নিজ মুসলমান ভাই হতে জিহ্বাকে নিয়ন্ত্রণ রাখা।
২। জিহ্বাকে সংযত রাখা নাজাত বা মুক্তির মাধ্যম।
৩। অসংযত কথার কারণে ব্যক্তিকে জাহান্নামে যেতে হবে।
মহান আল্লাহ আমাদের সকলকে যবান সংযত রেখে জান্নাতী আমল করার তাওফীক দান করুন। আমীন