প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ফরয নামায শেষে যে সমস্ত দু’আ পাঠ করা নাবী কারীম (সা.) এর অনুসরণে সহীহ হাদীস থেকে প্রমাণিত তা নিম্নে উল্লেখ করা হলো:
- أَسْتَغْفِرُ اللهَ আসতাগফিরুল্লাহ ৩ বার পড়বে, অর্থ: আমি আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাই
- অতঃপর নিম্নের দু’আগুলি ১ বার পড়বে :
اَللَّهُمَّ أَنْتَ السَّلاَمُ وَمِنْكَ السَّلاَمُ تَبَارَكْتَ يَا ذَا الْجَلاَلِ واْلإِكْرَامِ
আল্লাহুম্মা আন্তাস সালামু ওয়ামিনকাস সালামু, তাবারাকতা ইয়া যাল জালা-লি ওয়াল ইকরাম। (মুসলিম)
অর্থ: হে আল্লাহ! তুমি শান্তি দাতা, আর তোমার কাছ থেকেই শান্তি, তুমি বরকতময়, হে মর্যাদাবান এবং কল্যাণময়!
لاَإِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ؛ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ؛
লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহু লা- শারীকালাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলা- কুল্লি শাইয়্যিনঁ কাদীর।
অর্থ: আল্লাহ ছাড়া (সত্য) কোন মা’বূদ নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই, সকল বাদশাহী ও সকল প্রশংসা তাঁরই এবং তিনি সব কিছুর উপরেই ক্ষমতাশালী। একমাত্র আল্লাহ ছাড়া দুঃখ কষ্ট দূরকরণ এবং সম্পদ প্রদানের ক্ষমতা আর কারো নেই।
اَللَّهُمَّ لاَ مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ وَلاَ مُعْطِىَ لِمَا مَنَعْتَ وَلاَ يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ
আল্লাহুম্মা লা- মা-নি‘য়া লিমা- আ‘ত্বইতা ওয়ালা- মু‘ত্বিয়া লিমা- মানা‘তা ওয়ালা- ইয়ানঁফা‘উ যাল জাদ্দি মিনকাল জাদ্দু।
অর্থ: হে আল্লাহ! তুমি যা দান করেছো, তার প্রতিরোধকারী কেউ নেই। আর তুমি যা নিষিদ্ধ করেছো তা প্রদানকারীও কেউ নেই। এবং কোন সম্মানী ব্যক্তি তার উচ্চ মর্যাদা দ্বারা তোমার দরবারে উপকৃত হতে পারবে না।
لاَإِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ؛ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِالله؛ لا إِلَهَ إلاَّ اللهُ وَلاَ نَعْبُدُ إِلاَّ إِيَّاهُ؛ لَهُ النِّعْمَةُ وَلَهُ الْفَضْلُ وَلَهُ الثَّنَاءُ الْحَسَنُ؛ لاَ إِلَهَ اِلاَّ الله * مُخْلِصِيْنَ لَهُ الدِّيْنَ وَلَوْكَرِهَ الْكَافِرُوْنَ
লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহু লা- শারীকালাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া ‘আলা- কুল্লি শাইয়্যিনঁ কাদীর। লা- হাওলা ওয়ালা- কুওয়াতা ইল্লা- বিল্লাহি, লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়ালা- না‘বুদু ইল্লা- ইয়্যা-হু, লাহুন নি‘মাতু ওয়ালাহুল ফাদলু ওয়ালাহুস সানাউল হাসানু, লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুখলিসীনা লাহুদদ্বীনা ওয়ালাউ কারিহাল কাফিরূন।
অর্থ: আল্লাহ ছাড়া (সত্য) কোন মা’বূদ নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই, সকল বাদশাহী ও সকল প্রশংসা তাঁরই এবং তিনি সব কিছুর উপরেই ক্ষমতাশালী। একমাত্র আল্লাহ ছাড়া দুঃখ কষ্ট দূরকরণ এবং সম্পদ প্রদানের ক্ষমতা আর কারো নেই। আল্লাহ ছাড়া (সত্য) কোন মা’বূদ নেই। আমরা একমাত্র তাঁরই ইবাদত করি, নিআমত সমূহ তাঁরই, অনুগ্রহও তাঁর এবং উত্তম প্রশংসা তাঁরই। আল্লাহ ছাড়া কোন (সত্য) মা’বূদ নেই। আমরা তাঁর দেয়া জীবন বিধান একমাত্র তাঁর জন্য একনিষ্ঠ ভাবে পালন করি। যদিও কাফিরদের নিকট উহা অপছন্দনীয়।
- অতঃপর “سبحان الله” সুবহানাল্লাহ ৩৩ বার, “ الحمد لله” আলহামদুলিল্লাহ ৩৩ বার, “الله أكبر” আল্লাহু আকবার ৩৩ বার পড়বে। এই মোট ৯৯ বার আর একশত পূর্ণ করতে নিম্নের দু’আটি পড়বে।
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ؛ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ
লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহু লা- শারীকালাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলা- কুল্লি শাইয়্যিনঁ কাদীর।
অর্থ: আল্লাহ ছাড়া (সত্য) কোন মা’বূদ নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই। সকল বাদশাহী ও সকল প্রশংসা তাঁরই জন্য। তিনিই সব কিছুর উপরে ক্ষমতাশালী।
- অতঃপর আয়াতুল কুরসী পাঠ করবে :
اللَّـهُ لَا إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ ۚ لَا تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلَا نَوْمٌ ۚ لَّهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ ۗ مَن ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِندَهُ إِلَّا بِإِذْنِهِ ۚ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ ۖ وَلَا يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِّنْ عِلْمِهِ إِلَّا بِمَا شَاءَ ۚ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ ۖ وَلَا يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا ۚ وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ ﴿٢٥٥﴾
উচ্চারণ: আল্লা-হু লা- ইলাহা ইল্লা-হুওয়াল হাইয়্যূল কাইয়্যূমু লা- তা’খুযুহু সিনাতুঁও ওয়ালা নাউম। লাহূ মা-ফিসসামা-ওয়া-তি ওয়ামা- ফিল আরদ্বি। মানঁ যাল্লাযী ইয়াশফা‘উ ‘ইনদাহূ ইল্লা- বিইযনিহী। ইয়া‘লামু মা বাইনা আইদীহিম ওয়ামা খালফাহুম। ওয়ালা- ইয়ুহীতূনা বিশাইইম মিন্ ইলমিহী ইল্লা বিমা- শা-আ। ওয়াসি‘আ কুরসিয়্যুহুস সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদ্ব। ওয়ালা- ইয়াউদুহূ হিফযুহুমা ওয়াহুয়াল ‘আলিয়্যুল ‘আযীম।
অর্থ: আল্লাহ তিনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তিনি চিরঞ্জীব, সবকিছুর ধারক, তাকে তন্দ্রা এবং নিদ্রা স্পর্শ করতে পারে না। আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবই তাঁর। কে আছে এমন যে, তাঁর অনুমতি ব্যতীত তাঁর কাছে সুপারিশ করবে? তাদের সম্মুখে ও পশ্চাতে যা কিছু আছে তা তিনি অবগত আছেন। যতটুকু তিনি ইচ্ছে করেন ততটুকু ছাড়া তারা তাঁর জ্ঞানের কিছুই আয়ত্ত করতে পারে না। তাঁর কুরসী সমস্ত আকাশ ও পৃথিবীময় পরিবেষ্টন করে আছে। আর সেগুলোকে রক্ষণা-বেক্ষণ তাঁকে ক্লান্ত করে না। তিনি মহান শ্রেষ্ঠ। (সূরা বাকারা)
- মাগরিব ও ফজর নামাযের পর পূর্বের দু’আগুলোসহ নিম্নের দু’আটি দশ বার পড়বে।
لاَإِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ؛ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ يُحْيِ وَيُمِيْتُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ.
লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহু লা- শারীকালাহু, লাহুল মুলক ওয়ালাহুল হামদু ইউহঈ ওয়াইউমীতু ওয়াহুয়া ‘আলা- কুল্লি শাইয়্যিনঁ কাদীর।
অর্থ: আল্লাহ ছাড়া (সত্য) কোন মা’বূদ নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই। সকল বাদশাহী ও সকল প্রশংসা তাঁরই জন্য। তিনিই জীবিত করেন ও মৃত্যু দান করেন। তিনিই সব কিছুর উপরে ক্ষমতাশালী।
- ফজর নামাযের সালাম ফিরানোর পর এই দোয়াটি একবার পাঠ করবে:
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ عِلْمًا نَافِعًا وَرِزْقًا طَيِّبًا وَعَمَلا مُتَقَبَّلا
আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসয়ালুকা ইলমান নাফিয়ান ওয়া রিযকানঁ ত্বইয়্যিবানঁ ওয়াআমালাম মুতাকাব্বালান।
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট উপকারী জ্ঞান, পবিত্র রিযিক ও গৃহীত আমল কামনা করছি।
- অতঃপর সূরা ইখলাস, সূরা নাছ এবং সূরা ফালাক্ক পাঠ করবে।
بِسْمِ اللَّـهِ الرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ- قُلْ هُوَ اللَّـهُ أَحَدٌ ﴿١﴾ اللَّـهُ الصَّمَدُ ﴿٢﴾ لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ ﴿٣﴾وَلَمْ يَكُن لَّهُ كُفُوًا أَحَدٌ ﴿٤﴾ الإخلاص
বিসমিল্লা-হির রাহমানির রাহীম – ক্বুল হুওয়াল্লা-হু আহাদ। আল্লা-হুস্ সামাদ। লাম ইয়ালিদ ওয়ালাম ইঊলাদ। ওয়া লাম ইয়াকুল্লাহু কুফুওয়ান আহাদ।
অর্থ: ১. বল, তিনিই আল্লাহ, এক-অদ্বিতীয়। ২. আল্লাহ কারো মুখাপেক্ষী নন, সকলেই তাঁর মুখাপেক্ষী। ৩. তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাঁকেও জন্ম দেয়া হয়নি। আর তাঁর কোন সমকক্ষও নেই।
بِسْمِ اللَّـهِ الرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ- قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ ﴿١﴾ مِن شَرِّ مَا خَلَقَ ﴿٢﴾ وَمِن شَرِّ غَاسِقٍ إِذَا وَقَبَ ﴿٣﴾ وَمِن شَرِّ النَّفَّاثَاتِ فِي الْعُقَدِ ﴿٤﴾ وَمِن شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ ﴿٥﴾ الفلق
বিসমিল্লা-হির রাহমানির রাহীম – ক্বুল আ‘উযু বিরব্বিল ফালাক্ব। মিনঁ শাররি মা- খালাক্ব। ওয়া মিনঁ শাররি গা-সিক্বিন ইযা- ওয়াক্বাব। ওয়ামিনঁ শাররিনঁ নাফফা-সা-তি ফিল ‘উক্বাদ। ওয়ামিনঁ শাররি হা-সিদিন ইযা- হাসাদ।
অর্থ: ১. বল, আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি ঊষার রবের কাছে ২. তিনি যা সৃষ্টি করেছেন তার অনিষ্ট থেকে ৩. আর রাতের অন্ধকারের অনিষ্ট থেকে যখন তা গভীর হয় ৪. আর গিরায় ফুঁ-দানকারী নারীদের অনিষ্ট থেকে ৫. আর হিংসুকের অনিষ্ট থেকে যখন সে হিংসা করে।
بِسْمِ اللَّـهِ الرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ- قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ ﴿١﴾ مَلِكِ النَّاسِ ﴿٢﴾ إِلَـٰهِ النَّاسِ ﴿٣﴾مِن شَرِّ الْوَسْوَاسِ الْخَنَّاسِ ﴿٤﴾ الَّذِي يُوَسْوِسُ فِي صُدُورِ النَّاسِ﴿٥﴾ مِنَ الْجِنَّةِ وَالنَّاسِ ﴿٦﴾
বিসমিল্লা-হির রাহমানির রাহীম – (ক্বুল ‘আউযু বিরাব্বিন্না-স। মালিকিন্না-সি, ইলা-হিন্নাসি, মিনঁ শাররিল ওয়াসওয়া-সিল খান্না-স, আল্লাযি ইউওয়াসউইসু ফী সুদূরিন না-সি, মিনাল জিন্নাতি ওয়ান্না-স।)।
অর্থ: ১.বল আমি আশ্রয় চাই মানুষের রব ২. মানুষের অধিপতি ৩. মানুষের ইলাহ-এর কাছে ৪. কুমন্ত্রণাদাতার অনিষ্ট থেকে, যে দ্রুত আত্মগোপন করে। ৫. যে মানুষের মনে কুমন্ত্রণা দেয় ৬. জিন ও মানুষ থেকে।
- জোহর আছর ও ইশার পর একবার এবং মাগরিব ও ফজর নামাযের পরে এই সূরা তিনটি তিনবার করে পুনরাবৃত্তি করবে।