নুমান ইব্ন বাশীর রাদি আল্লাহু তাআলা আনহু

 

নুমান ইব্ন বাশীর রাদি আল্লাহু তাআলা আনহু

নুমান ইব্ন বাশীর রাদি আল্লাহু তাআলা আনহু

পূর্বে প্রকাশিতের পর

তাঁর ব্যাপারে উত্থাপিত সংশয়সমূহ
* ভূমিকা:
সম্মানিত সাহাবী নুমান ইব্ন বাশীর রাদি আল্লাহু আনহুর বিরুদ্ধে উত্থাপিত সংশয়সমূহের উপর দৃষ্টিদানকারী দেখতে পাবেন, এসব সংশয় একটি বিন্দুকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়েছে। আর তা হল, আলী রাদি আল্লাহু আনহু ও তাঁর পরবর্তীতে আহলে বাইতের যেসব সদস্য ছিলেন তাঁদের সাথে তাঁর শত্রুতা। যার ফলশ্রুতিতে এই শত্রুতা তা হল, নুমান রাদি আল্লাহু আনহু কর্তৃক মু’আবিয়া রাদি আল্লাহু আনহুর দলে মিলিত হওয়া, তাঁর ও তাঁর পুত্র ইয়াযিদের শাসনামলে উচ্চ পদে অধিষ্ট থাকা, আলী ইব্ন আবু তালিবের অনুসারীদের হত্যা ও তাদের উপর আক্রমণ।
এ বিষয়টি এমন নিখুঁত ও বাস্তব হয়ে গেছে যে, কেউ কেউ মনে করেন এটি পর্যালোচনা বা প্রত্যাখ্যান করা যাবে না। আর তা হল, সব সাহাবীই আহলে বাইতের শত্রু ছিলেন, তাঁরা সর্বদা তাঁদের কষ্ট প্রদান, বিপদে ফেলানোর প্রচেষ্টায় রত থাকতেন, তাদের ক্ষতিসাধনে ব্রত হতেন এবং তাঁদের থেকে উপকার পেতে শ্রম সাধনা করতেন।
আল্লাহর শপথ! এ এক বড় মিথ্যা এবং উত্তম প্রজন্ম আল্লাহর রাসূলের সাহাবীগণের উপর অপবাদ। প্রতিটি জ্ঞানবান ব্যক্তি সন্দেহাতীতভাবে অবগত যে, যদি কোন ব্যক্তি অপর কাউকে একনিষ্ঠভাবে ভালবাসে তবে সে তার প্রিয় ব্যক্তি যা যা ভালবাসে নিজেও তাই ভালবাসবে যাতে সে তার নিকটতম হতে পারে। কেননা তাতে ঐ ব্যক্তির সন্তুষ্টি ও স্বাচ্ছন্দতা বিদ্যমান।
সাহাবীগণের নিকট সবচেয়ে প্রিয় মানুষ ছিল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যাঁর জন্য তাঁরা জীবন উৎসর্গ পর্যন্ত করতে প্রস্তুত ছিলেন। তাহলে কিভাবে এটি যুক্তিসম্মত হতে পারে যে, তাঁর পরিবার-পরিজন, সন্তান-সন্তুতির জন্য সেই সাহাবীগণ সবচেয়ে বড় শত্রু হবেন?!!!
এ এমন এক বৈপরিত্য বিবেক, যুক্তি বা ইতিহাস যাকে গ্রাহ্য করে না।
এ বিষয়ে আমরা আলোচনা দীর্ঘায়িত করব না, তাতে আমরা আমাদের মূল বিষয় তথা নুমান ইব্ন বাশীর রাদি আল্লাহু আনহুর বিরুদ্ধে উত্থাপিত সংশয় থেকে দূরে সরে যাব।
আশাকরি সম্মানিত পাঠক তার ধৈর্য ও সময়ের কিছুটা আমাদেরকে দান করবেন, যাতে আমরা এই মহান সাহাবীর ব্যাপারে উত্থাপিত বিভিন্ন অভিযোগের চুলচেরা বিশ্লেষণ করে তা প্রত্যাখ্যান করতে পারি এবং এই সাহাবীসহ অন্যান্য সাহাবীর ব্যাপারে কিভাবে বিকৃতি, মিথ্যা, প্রতারণার প্রচলন করা হয়েছে তা দেখাতে পারি।
আমরা ঐ সত্তার সাহায্য প্রার্থনা করছি যিনি ঐ ব্যক্তিকে অপদস্থ করেন না যে তাঁর আশ্রয়ে আশ্রয় নেয়।
 
প্রথম সংশয়:-
নুমান আলী রাদি আল্লাহু আনহুর বিরুদ্ধে সংঘাত উস্কিয়ে দেন
নুমান ইবন বাশীর রাদি আল্লাহু আনহু সেই ব্যক্তি যিনি উসমান রাদি আল্লাহু আনহুর জামা মদীনা থেকে বহন করে সিরিয়ায় নিয়ে যান। অতঃপর মু’আবিয়া রাদি আল্লাহু আনহু সিরিয়াবাসীকে উত্তেজিত করার জন্য মিম্বরে উঠে উক্ত জামা প্রদর্শন করেন।
ইতিহাস গ্রন্থাবলিতে উল্লেখিত হয়েছে, উম্মে হাবিবা রাদি আল্লাহু আনহা উসমান রাদি আল্লাহু আনহুর রক্তমাখা জামা নুমান ইব্ন বাশীরের মাধ্যমে তাঁর ভাই মু’আবিয়া রাদি আল্লাহু আনহুর কাছে প্রেরণ করেন।
এ থেকে উদ্দেশ্য নুমান রাদি আল্লাহু আনহু আমীরুল মুমিনীন আলী রাদি আল্লাহু আনহুর বিরুদ্ধে বিশৃংখলা সৃষ্টিতে শরীক ছিলেন।
উত্তর:-
১. নিঃসন্দেহে ইলমী আমানতদারিতার দাবি হল কোন বিষয়ে আলোচনা করতে হলে উদ্ধৃতির সম্পূর্ণ অংশ উপস্থাপন করতে হবে। পাঠকের উদ্দেশ্যে নিজের ইচ্ছামত পূর্বাপর আলোচনা বাদ দিয়ে লেজকাটা আকৃতিতে উপস্থাপন করা যাবে না। কেননা এ অবস্থা নিরপেক্ষ তথা ভারসাম্যপূর্ণ অন্তরে প্রভাব ফেলে এবং বাস্তব অবস্থার যথাযথ প্রতিফলন হয় না।
উপরোক্ত উদ্বৃতিটি এ জাতীয় একটি দৃষ্টান্ত। উসমান রাদি আল্লাহু আনহুর হত্যা পরবর্তী পরিস্থিতির বর্ণনা সম্বলিত এ আলোচনায় পাঠক শুধুমাত্র এ উদ্বৃতিটি পড়লে সন্দেহাতীতভাবে একটি ফলাফল বের করবে এবং যার উপর প্রতিটি জ্ঞানবান ব্যক্তিই একমত হবেন। আর তা হল, নুমান ইব্ন বাশীর রাদি আল্লাহু আনহু তাদেরই একজন যারা আলী রাদি আল্লাহু আনহুর বিরুদ্ধে ফিতনা সৃষ্টি করেছিলেন। কিন্তু যখন নিরপেক্ষ ও কট্টরতা বিবর্জিত হয়ে সম্পূর্ণ ঘটনা অধ্যয়ন করবেন তখন দেখবেন প্রকৃত ঘটনা সম্পূর্ণ বিপরীত।
যে পাঠক আমীরুল মুমিনীন উসমান রাদি আল্লাহু আনহুর হত্যার ইতিহাস পুরাপুরি অধ্যয়ন করবেন তিনি এমন কিছু বিষয় পাবেন যা শরীরকে শিহরিত করে, চোখে পানির ধারা প্রবাহিত করে ও বিবেককে হতবিহ্বল করে দেয়। অতএব এ বিষয়টি এত সহজ ও সাধারণ একটি বিষয় নয় যে, আমীরুল মুমিনীন নিহত হলেন সাথে সাথে সব কিছুই শেষ হয়ে গেল। বরং ঘটনাটির সাথে অনেক আবেগ, অনুভূতি, সমাজের কল্যাণ-অকল্যাণ, হত্যার পূর্ব থেকে একগুয়ে মতামত, ফেতনা ছড়ানো ইত্যাদি জড়িত।
নুমান রাদি আল্লাহু আনহুর ব্যাপারে যা ঘটেছে তা অনেক বড়। যা ছোট-বড় সকল সাহাবীকে তা কষ্ট দিয়েছে। অনেকেই তাকে বেদনা ক্লিষ্ট করেছে। বিশেষত: নিম্নশ্রেণীর সাধারণ মানুষ যাদের মধ্যে তাকওয়া ও খোদাভীতির কোন লক্ষণ দেখা যায়নি তাদের আচরণ। এমনকি যারা স্পর্ধা দেখিয়ে ও অপরাধ সাধনের মাধ্যমে জান্নাতের শুভসংবাদপ্রাপ্ত এক ব্যক্তি ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দুই মেয়ের জামাতাকে হত্যার মত জঘন্য কাজ করেছিল তারও এ প্ররোচনায় শরীক হয়েছিল।
তাছাড়া যে কাজটি সাহাবীগণের উপর আরও কষ্টকর হয়ে দেখা দিয়েছিল যে কারণে তা হল, উসমান রাদি আল্লাহু আনহু তাঁর হত্যাকারীদের নিবৃত্ত করতে সাহাবীগণকে নিষেধ করেছিলেন এবং তিনি ছাড়া অন্য কেউ যেন নিহত না হন সে ব্যাপারে তাঁদেরকে দৃঢ় করেছিলেন। এ প্রসংগে অসংখ্য স্পষ্ট বর্ণনা এসেছে।
নুমান রাদি আল্লাহু আনহু তাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন যারা উসমান রাদি আল্লাহু আনহুর কাছে এসে তার প্রতিপক্ষকে প্রতিহত করার আবেদন ও তাঁর অনুমতি প্রার্থনা করেন। কিন্তু উসমান রাদি আল্লাহু আনহু তাঁদের সে আবেদন নাকচ করে দেন। এর পিছনে যে কারণ ছিল, তাহল তিনি চাননি তাঁর কারণে মুসলমানদের মধ্যে রক্তপাত ছড়িয়ে পড়–ক। 
আমাদের মতে, যারা এ পদ্ধতিতে সে সময়ের ঘটনা প্রবাহ অধ্যয়ন করবেন অতঃপর উপরে বর্ণিত কথাগুলো পড়বেন তারা নুমান ইব্ন বাশীরের সে সময়ের ভূমিকায় বিস্মৃত হবেন না। কেননা তিনি তাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন যাঁরা উসমান রাদি আল্লাহু আনহুর রক্তের বিনিময় তথা তার কিসাস প্রত্যাশা করেছিলেন। বরং এ বিষয়ে সে সময়ে সাহাবীগণ ঐকমত্য হয়েছিলেন যাঁদের শিরনামে ছিলেন আমীরুল মুমিনীন আলী রাদি আল্লাহু আনহু।
কিন্তু উসমান রাদি আল্লাহু আনহুর হত্যার প্রতিশোধ ও তার কিসাস বিষয়ে সাহাবীগণের মধ্যে মতভেদের কারণ ছিল। কেননা উসমান রাদি আল্লাহু আনহু নিজেই বিষয়টি নিয়ে কোন কিছু না করার নির্দেশনা প্রদান করার মাধ্যমে সমস্ত সাহাবীর নিকট নিস্পত্তি করে গিয়েছিলেন।
এ কারণে এই গুরুতর বিষয়ে সাহাবীগণের দৃষ্টিভঙ্গির ভিন্নতা দেখা দিয়েছিল। এ বিষয়ে তাই তালহা, যুবাইর, উম্মুল মুমিনিন আয়িশা, মুআবিয়া রাদি আল্লাহু আনহুসহ অন্যান্য সম্মানিত সাহাবীর দৃষ্টিভঙ্গি আলী রাদি আল্লাহু আনহুর দৃষ্টিভঙ্গির বিপরীত হয়ে দাড়িয়েছিল। অর্থাৎ তাঁদের একেক জনের দৃষ্টিভঙ্গি একেক রকম হয়েছিল। আল্লাহ সকলকে ক্ষমা করবেন।
অতএব নুমান ইব্ন বাশীর রাদি আল্লাহু আনহু সে সময়ে যে ভূমিকা রেখেছিলেন তা শুধুমাত্র উসমান রাদি আল্লাহু আনহুর হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণের আন্দোলনে তার অংশগ্রহণের আশায় ছিল। বিধায় তিনি উক্ত ভূমিকা রেখেছিলেন।
২. এই বর্ণনাটি ইমাম তাবারী তার ইতিহাসে বর্ণনা করে বলেন, সাবরী আমার কাছে এই মর্মে লেখেন যে, শুয়াইব সাইফ থেকে তিনি মুহাম্মদ ও তালহা থেকে …. বর্ণনা করেন:
প্রিয় পাঠক! আপনার খিদমাতে বর্ণনাটির ব্যক্তিবর্গ সম্পর্কে কিছু কথা উপস্থাপন করছি:
ক. শুয়াইব: তিনি ইব্ন ইবরাহীম কুফী:
ইব্ন হাজার বলেন: তার থেকে সাইফের বর্ণনা বিষয়ে ধ্রুমজাল বিদ্যমান রয়েছে। 
ইব্ন আদী বলেন, এই শুয়াইব ইব্ন ইবরাহীম থেকে কিছু হাদীসও বর্ণিত রয়েছে। কিন্ত সে এ বিষয়ে পরিচিত নয়, তার বর্ণিত হাদীস ও বর্ণনার সংখ্যা বেশি নয়। তার মধ্যে অনেক রয়েছে মুনকার, কেননা তার বর্ণনার মধ্যে এমনও রয়েছে যা সাল্ফ সালেহীনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়।
খ. সাইফ: তার নাম ইব্ন আমর আদ্ দাব্বী।
তার সম্পর্কে আবু হাতেম বলেন, তার হাদীস মাতরুক, তার বর্ণনা ওয়াকিদীর বর্ণনার মত। 
ইব্ন মুঈন বলেন, সে দুর্বল বর্ণনাকারী।
ইব্ন আদী বলেন, সাইফ ইব্ন উমরের উল্লেখিত বর্ণনা ছাড়া আরও অনেক বর্ণনা রয়েছে। তার কিছূ হাদীস খুবই বিখ্যাত, তবে সাধারণত দুর্বল যা গ্রহণযোগ্য নয়। তার বর্ণনা এমন দুর্বল যা সত্যের কাছাকাছি।
নাসাঈ ও দারুকুতনী বলেন, দুর্বল।
ইবনে হাব্বান বলেন, শুদ্ধ বর্ণনা সংক্রান্ত বিষয়ে দুর্বল বর্ণনা করেছেন।
দার কুতনী বলেন, মাতরুক বর্ণনাকারী।
হাকেম বলেন, সে নাস্তিকতায় অভিযুক্ত। 
যাহাবী বলেন: পরিচিত বর্ণনাকারী। 
গ. তালহা: তিনি ছিলেন, ইব্ন আলাম হানফী, আবু হায়সাম কুফী, যিনি শাআবী থেকে বর্ণনা করেছেন।
আবু হাতিম বলেন, শায়খ ছিলেন।
বুখারী তারীখুল কাবীর গ্রন্থে তার নাম উল্লেখ করেছেন কিন্তু তার সম্পর্কে কোন জারহ ওয়া তাদীল উল্লেখ করেননি। 
ঘ. মুহাম্মদ: তিনি মূলত ইব্ন আব্দুল্লাহ ইব্ন আওয়াদ ইব্ন নুঅইরা। তার কোন জীবনী পাওয়া যায়নি।
এই হল উক্ত বর্ণনার বর্ণনাকারী ব্যক্তিবর্গের অবস্থা। পূর্বোক্ত আলোচনা থেকে প্রমাণিত হয়, তাদের বর্ণনার উপর নির্ভর করা যায় না।
যদি বলা হয় সাইফ ইব্ন উমর ইতিহাসের ক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য যেমনটি বলেছেন জাহাবী ও ইব্ন হাজর, কিন্তু হাদীসের ক্ষেত্রে তিনি মাতরুক।
তার জবাব:-
সাইফ অনেক অজ্ঞাত ব্যক্তি থেকে বর্ণনা করেছেন, একইভাবে অনেক অজ্ঞাত ব্যক্তি তার থেকে বর্ণনা করেছেন। এটিই তার বর্ণনায় বড় সন্দেহের বিষয়, তাই তা ইতিহাসের বর্ণনা হলেও।
জ্ঞাত থাকা আবশ্যক যে, সাহাবীগণের ইতিহাস ও তাদের মধ্যে যে ফিতনা সংঘটিত হয়েছে তা এ জাতীয় বিকৃত সনদ সম্বলিত বর্ণনা থেকে গ্রহণ করা অসম্ভব। বরং সনদ অবশ্যই উচ্চ পর্যায়ের সহীহ হতে হবে। এটি প্রথম কথা।
দ্বিতীয়ত যারা নিজেদেরকে আহলে বাইত ও সাহাবীগণের প্রেমিক প্রমাণের জন্য এ জাতীয় বর্ণনা উল্লেখ করেন তাদেরকে আমরা দেখতে পাই, তারা এ সংক্রান্ত অন্যান্য ইতিহাসভিত্তিক বর্ণনা থেকে মুক্ত হয়ে যায় যদি সেসব বর্ণনা তাদের দল বা বিশ্বাসের বিরোধী হয়!!
উদাহরণ স্বরূপ:
আমীনী তার “আল-গাদীর” গ্রন্থে, হারমযানের হত্যার কারণে উবায়দুল্লাহ ইব্ন উমর ইব্ন খাত্তাব রাদি আল্লাহু আনহুকে হত্যা করা থেকে উসমান রাদি আল্লাহু আনহুর বিরত থাকা সংক্রান্ত বর্ণনা উল্লেখ করেছেন। এটি তারীখে তাবারীতেও এসেছে। 
অতঃপর আমিনী মন্তব্য করতে যেয়ে বলেন, এর সনদে শুয়াইব ইব্ন ইবরাহীম কুফী রয়েছেন যিনি অজ্ঞাত বর্ণনাকারী। ইব্ন আদী বলেন, পরিচিত নয়, জাহাবী বলেন, বর্ণনাটি তার থেকে সাইফ লিখেছেন, এ সম্পর্কে অজ্ঞতা বর্তমান।
এ বর্ণনার সূত্রে সাইফ ইব্ন উমর তামীমী রয়েছে যিনি জাল, মাতরুক ও সাকিত হাদীসের বর্ণনাকারী…….।
একইভাবে রিশহারীর ‘মাওসুআতে ইমাম আলী’ গ্রন্থে ইয়াহুদী আব্দুল্লাহ ইব্ন সাবা সম্পর্কিত আলোচনা দেখুন। 
তাছাড়া জাফর সুবহানীর “আল-আদওয়া” গ্রন্থে। 
এসব গ্রন্থে দৃষ্টিপাত করলে সম্মানিত পাঠক দেখতে পাবেন, অভিযুক্ত বর্ণনাকারী তারাই যাদের সম্পর্কে ইতিপূর্বে নুমান ইব্ন বাশীর রাদি আল্লাহু আনহুর বর্ণনায় আলোচিত হয়েছে।
উপসংহার: স্বাধীন বিবেক ও জ্ঞানের মানদণ্ডে কি এটি সমর্থনযোগ্য যে, একই পথে একই বর্ণনাসূত্রে বর্ণিত দুটি বর্ণনার ক্ষেত্রে যেটি তাদের পক্ষের সেটি তারা বিশ্বাস করবে যে, বর্ণনাটি উচ্চাঙ্গের বিশুদ্ধ ও গৃহীত আর যেটি তাদের বিপক্ষের সেটি প্রত্যাখ্যান করবে ও সে সম্পর্কে বিভিন্ন অভিযোগ পেশ করবে?
৩. নূরুদ্দীন তাসতারী তার ‘ইহকাকুল হক’ গ্রন্থে  উল্লেখ করেছেন, সিরিয়ায় মুআবিয়া রাদি আল্লাহু আনহুর নিকট উসমান রাদি আল্লাহু আনহুর রক্তমাখা জামা বহন করে নিয়ে যান মারওয়ান ইব্ন হাকাম ও নাঈলা বিন্ত ফারাফাসাহ, যিনি উসমান রাদি আল্লাহু আনহুর স্ত্রী ছিলেন। এ বর্ণনাটি পূর্বের বর্ণনার বিপরীত! প্রকৃতপক্ষে কে তাঁর জামা বহন করে নিয়ে যান?!
অতএব এ পরিসরে বর্ণনার বৈপরিত্য ও তা সাব্যস্ত না হওয়াই প্রমাণিত হল। (চলবে)

Related Post