শিয়াবে আবি তালিবে অনাহারে বন্দী অবস্থাতেই আল্লাহর রাসূলের স্নেহদাতা চাচা আবু তালিবের জীবনে শক্তি প্রায় নিঃশেষিত হয়ে গিয়েছিল। আরবের বড় ব্যবসায়ী ধনীর দুলাল ছিলেন তিনি। কোনদিন তাঁকে ক্ষুধার যন্ত্রণা উপলব্ধ করতে হবে তা বুঝি তিনি স্বপ্নেও কল্পনা করেননি। একদিকে তিনি ছিলেন বয়সের ভারে ভারাক্রান্ত, অপরদিকে অনাহার আর মানসিক যন্ত্রণা চরমভাবে রোগাক্রান্ত করে দিল। বন্দীদশা থেকে মুক্ত হয়েই তিনি রোগশয্যায় শায়িত হলেন। তাঁর রোগ ক্রমশ বৃদ্ধিই পাচ্ছিল। আরোগ্য হবার কোন আশাই ছিল না। শিয়াবে আবু তালিব থেকে বের হবার পরে মুসলমানদের ওপরে তেমন কোন অত্যাচার হয়নি। এই অত্যাচার না করার কারণ এটাই ছিল, ঝড়ের প্রাক্কালে সমুদ্র শান্ত থাকার মত।মক্কার ইসলাম বিরোধী গোষ্ঠী ছিল সুুযোগের অপেক্ষায়।
ইতোপূর্বেও আবু তালিব একএকবার অসুস্থ হয়েছিলেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম চাচাকে দেখতে গেলেন।আবু তালিব প্রিয় ভাতিজাকে বলেছিলেন বাবা,যে আল্লাহ তোমাকে নবী হিসেবে প্রেরণ করেছেন তাঁর কাছে কি তুমি আমার রোগ মুক্তির জন্য দোয়া করো না?
আল্লাহর রাসূল চাচার রোগ মুক্তির জন্য দোয়া করেছিলেন, আবু তালিব সুস্থ হয়ে বলেছিলেন বাবা, আল্লাহ তোমার কথা রক্ষা করেন।
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন আপনি যদি আল্লাহর কথা গ্রহণ করেন তাহলে তিনিও আপনার কথা রক্ষা করবেন।
আবু তালিবের শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে এ সংবাদ কুরাইশ গোত্রে ছড়িয়ে পড়েছিল। ইসলাম বিরোধিরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করলো, আবু তালিব জীবিত থাকতেই তাঁর মাধ্যমে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামের সাথে অপোষ করা প্রয়োজন । কেননা , ইসলাম সমস্ত গোত্রে ছড়িয়ে পড়ছে। আর যেন ইসলামের বিস্তৃতি ঘটতে না পারে এজন্যই একটা চুক্তিতে উপনিত হওয়া প্রয়োজন। আবু সুফিয়ান, উমাইয়া, উৎবা, শাইবা, আবু জেহেল ও কুরাইশদের বিখ্যাত নেতৃবৃন্দ আবু তালিবের কাছে উপস্থিত হয়ে বললো আপনাকে আমরা কতটুকু শ্রদ্ধা করি তা আপনার অজানা নয়।বর্তমানে আপনি গুরুতর অসুস্থ,আপনার জীবন সম্পর্কে আমরা শষ্কিত। আপনি জানেন সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামের সাথে আমাদের কোন বিষয় নিয়ে বিরোধ চলছে। আপনি যদি তাঁকে ডেকে আমাদের সাথে একটা আপোষ করে দেন তাহলে ভালো হত। সে আমাদের কাছ থেকে একটা অঙ্গীকার প্রহণ করুক আমরা তাঁর কাছ থেকে একটা অঙ্গীকার গ্রহণ করি। যেন আমাদের আর তাঁর ভেতরে ভবিস্যতে কোন বিরোধের সূত্রপাত না হয়।
আবু তালিব স্নেহের ভাতিজার কাছে সংবাদ প্রেরণ করার পরে আল্লাহর রাসূল এসে উপস্থিত হলেন। শ্রদ্ধেয় চাচা বললেন বাবা, যারা এখানে উপস্থিত তাঁরা সবাই তোমার পরিচিত এবং সমাজের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি এবং একটা প্রস্তাব নিয়ে এসেছেন। তাঁরা তোমার একটা কথা গ্রহণ করবে এবং তুমিও তাদের একটা কথা গ্রহণ করবে।
আল্লাহর নবী উপস্থিত ইসলাম বিরোধী নেতৃবৃন্দকে বললেন আপনারা যদি আমার একটা কথা গ্রহণ করেন তাহলে সমস্ত আরবের অধিপতি আপনারাই হবেন এবং আরবের বাইরের লোকজন আপনাদের অধীনে থাকবে।
কথাটা প্রকৃত অর্থ তাঁরা বুঝেছিল কিনা বলা যায় না কিন্তু আবু জেহেলের মনে কথাটা বোধহয় লোভের সঞ্চার করেছিল। দ্রুত সে বলেছিল বেশ সুন্দর কথা। এমন কথা একটার পরিবর্তে অনেক শোনা যায়।
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম তখন বললেন আপনারা আমার সাথে শুধু একাট কথার সাথে ঐকমত্য পোষণ করুন, যে কথাটা আমার এবং আপনাদের উভয়ের কাছে গ্রহণ যোগ্য। কথাটা হলো, এক আল্লাহ ব্যতীত আমরা আর কারো দাসত্ব করবো না। আমরা তাঁর সাথে কারো শরীক করবো না।
কথাটা শোনার সাথে সাথে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ তাচ্ছিল্যের ভঙ্গিতে হাত তালি দিল। তারপর একজন বললো তোমার এ কথা যদি আমরা গ্রহণ করি তাহলে তো তোমার সাথে আমাদের আপোষেরই প্রয়োজন হয় না। সমস্ত বিরোধের তো এখানেই ইতি ঘটে যায়।তুমি আমাদেরকে অবাক করলে।
এরপর তাঁরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করলো আমরা যে আশায় এসেছিলাম তা হবে না। অতএব চলে যাওয়া যাক, আল্লাহ আমাদের মধ্যে একটা সিদ্ধান্ত না করা পর্যন্ত আমরা আমাদের মতই চলবো।
মক্কার নেতৃবৃন্দ চলে যাবার পরে আবু তালিব প্রিয় ভাতিজাকে বললেন তুমি যা বলেছো ঠিক বলেছো। অন্যায় কিছু বলেনি।
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম তাঁর চাচার মুখে এ কথা শুনে ধারণা করলেন, চাচা বোধহয় ইসলাম কবুল করবেন।তিনি শ্রদ্ধেয় চাচাকে অনুরোধ জানালেন চাচা আপনি এ কবার কালিমা পড়–ন, আমি আখিরাতের দিন আপনার সম্পর্কে সুপারিশ করতে পারবো।
আবু তালিব বললেন আমার মৃত্যুর পরে সবাই মন্তব্য করবে যে,আমি মৃত্যুর ভয়ে ইসলাম কবুল করেছি। আমি ঐ কথাটা তোমার সন্তুষ্টির জন্য বলেছি।
এ সমস্ত ঘটনার পরে আবু তালিব ইন্তেকাল করলেন। মৃত্যুর সময় তাঁর ঠোট দুটো নড়ছিল। হযরত আব্বাস (রা) নিজের কান তাঁর মুখের কাছে নিয়ে শোনার চেষ্টা করলেন, তাঁর ভাই কি বলছেন। তারপর তিনি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামকে বললেন বাবা, তুমি যা পাঠ করতে বলেছিলে, আমার ভাই তা পাঠ করছে। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম বললেন আমি কিছুই শুনতে পাইনি। (ইবনে হিশাম)
আরেক বর্ণনায় দেখা যায়, আবু তালিবের ইন্তেকালের সময় নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম তাঁর কাছে উপস্থিত ছিলেন। কাফির নেতা আবু জেহেল, উমাইয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিল। বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম চাচার ইন্তেকালের সময় বললেন আপনি কালিমা পড়–ন, আমি আল্লাহর কাছে সাক্ষী দেব যে আপনি ইসলাম কবুল করেছিলেন।
আবু জেহেল এবং উমাইয়া দ্রুত আবু তালিবকে বললো হে আবু তালিব তুমি কি তোমার পূর্বপুরুষের ধর্ম ত্যাগ করে মৃত্যুবরণ করবে?
আবু তালিব বললেন আমি আমারপূর্বপুরুষের ধর্মেই প্রাণ ত্যাগ করবো।
এরপর তিনি ভাতিজাকে বললেন আমি ইসলাম গ্রহণ করেই মৃত্যুবরণ করতাম কিন্তু কুরাইশরা বলবে যে, আমি মৃত্যুর ভয়ে ভীত হয়ে ইসলাম গ্রহণ করেছিলাম। আল্লাহর রাসূল বললেন আপনার মুক্তির জন্য আমি আল্লাহর কাছে বলতে থাকবো,আল্লাহ যতক্ষণ আমাকে নিষেধ না করেন। (বুখারী, মুসলিম )
হযরত আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তা’ য়ালা আনহু আল্লাহর রাসূলের কাছে জানতে চাইলেন হে আল্লাহর রাসূল ! আবু তালিব আপনার জন্য শত্রু কবলিত হয়ে নির্যাতন ভোগ করেছেন। তিনি আপনাকে হেফাজত করেছেন। এর বিনিময়ে তিনি আপনার কাছ থেকে কি লাভ করেছেন ?
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন আবু তালিব তাঁর পায়ের টাখনু পর্যন্ত দোযখে অবস্থান করছে এবং আগুনের উত্তাপ মাথা পর্যন্ত পৌঁছে যায়। আমি না থাকলে তাকে দোযখের সর্বশেষ অবস্থানে নিক্ষেপ করা হত। (বুখারী)
তবে অনেক দাবি করেন যে, আবু তালিব মুসলমান হয়ে ইন্তেকাল করেছেন কিন্তু এ দাবীর পেছনে দৃঢ় কোন প্রমাণ নেই। এসম্পর্কে তাঁরা যে সমস্ত হাদীস পেশ করেছেন, সেসব হাদীসের বর্ণনাকারীদের সম্পর্কে বলা হয়েছে, তাঁরা কেউ আবু তালিবের ইন্তেকালের সময় উপস্থিত ছিলেন না। উপস্থিত ছিলেন আবু তালিবের ভাই হযরত আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু। আবু তালিবের ইন্তেকালের পরে তিনি ইসলাম কবুল করেছিলেন। যদিও তাঁর স্ত্রী প্রথম দিকেই ইসলাম কবুল করেছিলেন। হযরত আব্বাস আবু তালিবের ঠোঁট নাড়া দেখে অনুমান করেছিলেন যে, তিনি কালিমা পাঠ করছেন। তিনি স্পষ্ট কিছুই শোনেননি। তিনি যদি জানতেন যে, আবু তালিব ইসলাম কবুল করেই ইন্তেকাল করেছেন, তাহলে তিনি মৃত্যু যবনিকার ওপারে আবু তালিবের অবস্থা সম্পর্কে আল্লাহর রাসূলে কাছে জানতে চাইতেন না এবং আল্লাহর নবীও অমন জবাব দিতেন না। এ কারণে অধিকাংশ ইসলামী চিন্তাবিদদের অভিমত হচ্ছে, আবু তালিব ইসলাম গ্রহণ না করেই ইন্তেকাল করেছেন।
¯েœহদাতা চাচা আবু তালিব আর এই নশ্বর ধরাধামে নেই বিশ্বমানবতার মহান মুক্তির দুত নবী করীর সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামরে মন মানসিক শোকাচ্ছন্ন।এই মর্মান্তিক শোকের সাগর পাড়ি না দিতেই শোকের আরেকটি তীব্র শরাঘাত বিদ্ধ হলো করুণার মূর্ত প্রতীক আল্লাহর রাসূলের বুকে। সার্বিক অবস্থায় উদ্দীপনা দানকারিণী ও সান্ত¡না দায়িনী জীবন সঙ্গিনী প্রিয়তমা খাদিজার পৃথিবীর জীবন নিঃশেষ হয়ে এলো। তিনি আল্লাহর রাসূলের পৃথিবীর জীবন থেকে চিরবিদায় গ্রহণ করে প্রিয় বন্ধু আল্লাহর নিকট চলে গেলেন। আল্লাহর হাবীবকে চরম সষ্কট মুহূর্তে মানুষের মধ্য থেকে সান্ত¡না দেয়ার মতো আর কেউ অবশিষ্ট রইলো না। তাঁর দুর্দিনের সাথী খাদিজা এই পৃথিবী ছেড়ে বিদায় গ্রহণ করলেন। অবরোধ থেকে মুক্তি লাভের পরই বোধহয় বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম অনুমান করতে পেরেছিলেন, তাঁর মমতাময়ী খাদিজা আর তাঁর কাছে থাকবে না। যে নারীর শরীরে অভাবের আঁচড় কোনদিন স্পর্শ করেনি, সেই নারী তাঁকে স্বামী হিসেবে কবুল করার পরে কতদিনই না অনাহারে থেকেছেন। হযরত খাদিজা রাদিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহা তাঁর সমস্ত ধন সম্পদ ইসলাম প্রতিষ্ঠার কাজে ব্যয় করেছিলেন। এ কারণে কোন কোন ভক্ত বলে তাকেন, মা খাদিজা রাদিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহার ধন দৌলত না থাকলে ইসলাম এতদূর পৌঁছাতো কিনা আল্লাহই ভালো জানেন। তবে এ কথা অবশ্যই সত্য যে, মাহন আল্লাহ তাঁর নবীর কার্যক্রম যে সামনের দিকেই এগিয়ে নিতেন এতে কোন সন্দেহ নেই।
হযরত খাদিজা রাদিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহা রমজান মাসের এগার তারিখ ইন্তেকাল করেছিলেন। কোন কোন বর্ণনাকারী বলেছেন, আবু তালিবের পূর্বে হযরত খাদিজা ইন্তেকাল করেছিলেন। তবে অধিকাংশ বর্ণকারীর মতে আবু তালিবের মৃত্যুর কয়েক দিন পরেই হযরত খাদিজা রাদিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহা ইন্তেকাল করেছিলেন ।ইন্তেকালের সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম মদীনায় হিজরত করার তিন বছর পূর্বে তিনি তাঁর পরম প্রিয় দু’জন ব্যক্তিত্বকে চিরদিনের মতই হারিয়ে ছিলেন। এই দু’জন যে তাঁর জন্য কি ছিলেন,তাঁদের যে কি অবদান, তাঁদের ত্যাগের যে কি মহিমা তা বর্ণনা করার ভাষা করোরই নেই। সে সময়ে বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামকে এই পৃথিবীর মানুষের মধ্যে সান্ত¡না দেয়ার মত কেউ ছিল না। হযরত খাদিজা রাদিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহাকে দাফন করা হয়েছিল জিহুন নামক স্থানে। তখন পর্যন্ত জানাযার নামাযের আদেশ অবতীর্ণ হয়নি বিধায় তাঁর জানাযা নামায আদায় করা হয়নি। আল্লাহর রাসূল স্বয়ং কবরে অবতরণ করে প্রিয় সঙ্গিনীকে অন্তিম শয়নে শায়িত করেছিলেন।
নেই বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামকে নান্ত¡না দান করার মত কোন মানুষ আর নেই ।বড় একা হয়ে গেলেন তিনি। মা হারা ছোট মেয়ে ফাতিমার করুণ মুখের দিকে তাকলে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামের বুকের ভেতরটা মর্মন্ত্রণায় হাহাকার করে উঠেতো। কাফিরদের হাতে অত্যাচার সহ্য করে তিনি বাড়িতে আসতেন।হযরত খাদিজা রাদিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহার মমতাপূর্ণ সান্ত¡নায় তিনি কাফিরদের অত্যাচারের সব ব্যথা বেদনা মুহূর্তে ভুলে যেতেন। তাঁর কাছ থেকে তিনি উৎসাহ উদ্দীপনা লাভ করতেন। তিনি নতুন উদ্যোমে তাঁর কার্যক্রমে গতি সঞ্চার করতেন। এখন আর তাকে কে দেবে সান্ত¡না! আবু তালিবের মত পরম মমতায় কে বলবে, বাবা, কোন চালিয়ে যাও, আমি আছি তোমার সাথে। একথা বলার আর কেউ রইলো না। আর মক্কার কাফিররা অতীতের যে কোন তুলনায় বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামের ওপরে নির্যাতনের রোলার চালিয়েছিল এই দু’জন মানুষের অবর্তমানে। একারণে ইতিহাস এই বছরকে শোক দুঃখের বছর হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এমনই এক চরম মুহূর্তে দু’জন প্রিয় ব্যক্তিত্ব নবীকে ছেড়ে চলে গেলেন, যে মুহূর্তে ইসলামী আন্দোলন নেতা কর্মীদের ওপর ইতিহাসের নির্মম নিষ্ঠর নির্যাতন মক্কার ইসলামী আন্দোলন বিরোধী গোষ্ঠী চালিয়ে যাচ্ছ্ েহাতে গোনা কয়েকজন লোক, তাঁদের অবস্থাও অত্যন্ত শোচনীয়। নির্যাতনে দেহ মন ভেঙ্গে পড়ার মত অবস্থা।কে কাকে কে সান্তনা যোগায়। আল্লাহর রাসূলের মাতৃহারা অবোধ শিশুগুলো পিতার এই দূরাবস্থা দর্শনে অত্যন্ত ব্যাকুল। তিনি চরম বিপদের মুখে একমাত্র আল্লাহর ওপরে নির্ভর করে অসীম ধৈর্য ও সাহস নিয়ে আন্দালনের রক্তঝরা ময়দানে দূঢ়পদে অবস্থান গ্রহণ করলেন।