মসজিদে প্রবেশের পূর্বেই কি মোবাইল রিংটোন বন্ধ করা জরুরি?
নামায অন্যান্য ইবাদত থেকে একটু ভিন্নতর ইবাদত। এই ইবাদত হলো সরাসরি মহান আল্লাহর সাথে কথা বলার এক চমৎকার মাধ্যম। এ কারণেই নামায অবস্থায় একাগ্রতা ও খুশু-খুযুর প্রতি যেরূপ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে অন্য কোনো ইবাদতের বেলায় তেমনটি করা হয়নি। যেমন, পবিত্র কুরআনে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেন,
قَدْ أَفْلَحَ الْمُؤْمِنُونَ ﴿১﴾ الَّذِينَ هُمْ فِي صَلَاتِهِمْ خَاشِعُونَ ﴿২﴾ ( المؤمنون : ১-২)
ঐসব ঈমানদার সফলতা লাভ করেছে, যারা স্বীয় নামাযে একাগ্রচিত্ত ও বিনয়-নম্র। (সূরা মুমিনুন: ১-২) অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন,
فَوَيْلٌ لِلْمُصَلِّينَ ﴿৪﴾ الَّذِينَ هُمْ عَنْ صَلَاتِهِمْ سَاهُونَ ﴿৫﴾ الَّذِينَ هُمْ يُرَاءُونَ ﴿৬﴾ ( الماعون :৪-৬)
যেসব নামাযি স্বীয় নামাযের ব্যাপারে অমনোযোগী এবং লোক দেখানো নামায পড়ে তাদের ধ্বংস অনিবার্য। (সূরা মাঊন: ৪-৬)
হাদীস শরীফে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যারা খুশু-খুযু অর্থাৎ আল্লাহর ভয় অন্তরে ধারণ করে একাগ্রচিত্তে বিনয়ের সাথে নামায আদায় করে তাদের জন্য আকাশের দরজা খুলে যায় এবং নামাযির জন্য আল্লাহর দরবারে সুপারিশ করে।
মোটকথা নামাযের খুশু-খুযুর প্রতি সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। তাই প্রতিটি মুসল্লির জন্য মসজিদে প্রবেশের আগেই মোবাইল একেবারে বন্ধ না করলেও রিংটোন বন্ধ করে দেওয়া আবশ্যক। কারণ, মসজিদের ভিতর রিংটোন বেজে উঠলে শুধু স্বীয় একাগ্রতাই নষ্ট হবে না, অন্য নামাযিদের একাগ্রতাও নষ্ট হবে। [মাসিক আল কাউসার, মে’০৮ সংখ্যা, পৃষ্ঠা ঃ ১৮]
মসজিদের ভিতর মোবাইলে ভাইব্রেশন দিয়ে রাখা উচিত হবে কি?
মসজিদের ভিতর মোবাইলে ভাইব্রেশন দিয়ে রাখাও ঠিক নয়। কারণ এতে অন্যের ক্ষতি না হলেও নিজের খুশু-খুযু তথা মনোযোগ নষ্ট হয়। তাছাড়া অনেক সময় দেখা যায়, কোনো কোনো মোবাইলের ভাইব্রেশনের ক্ষীণ আওয়াজ পাশ্ববর্তী লোকদের কানেও পৌঁছে। তদুপরি ভাইব্রেশন চলাকালে মোবাইলটি যদি কোনোভাবে অন্যের গা স্পর্শ করে তবে তো কোনো কথাই নেই। তখন তো অবশ্যই উভয়ের মনোযোগ নষ্ট হবে। তাই মোবাইল নিয়ে মসজিদে প্রবেশের ক্ষেত্রে সবচেয়ে উত্তম পদ্ধতি হলো, হয়তো মোবাইল একেবারে বন্ধ করে দেয়া নয়তো আওয়াজ সাইলেন্ট করে রাখা। যাতে নামায শেষ করার পর বুঝা যায়, কে কল করেছে। [মাসিক আল কাউসার, মে’০৮ সংখ্যা, পৃষ্ঠা ঃ ১৮]
মসজিদে একজনের মোবাইলে রিং বেজে উঠলে অন্যরা কী করবে?
পূর্বে বলা হয়েছে, মসজিদের ভিতর যেন রিংটোন না বাজে এবং কারো নামাযে কোনোরূপ বিঘ্নতা সৃষ্টি না হয় সেজন্য প্রত্যেকের উচিত মসজিদে প্রবেশের পূর্বেই মোবাইল বন্ধ করা এবং এ ব্যাপারে যথেষ্ট সতর্ক থাকা। কিন্তু এ বিষয়ে পূর্ণ সতর্কতা বজায় রাখা সত্ত্বেও কোনো কোনো সময় ভুলবশতঃ মোবাইল বন্ধ না করার কারণে তাতে রিং বেজে উঠে। আর এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তাই এক্ষেত্রে অন্যান্য মুসল্লিদের উচিত হলো, নামায শেষে তাকে এভাবে বুঝিয়ে দেওয়া যে ‘ভাই! মসজিদে ঢুকার পূর্বে অনুগ্রহপূর্বক খেয়াল করে মোবাইলটা বন্ধ করে আসলে ভালো হয়’। এরূপ বলাই নিয়ম। এভাবে বলাই সুন্নত ও ভদ্রতা। মসজিদের ভিতরে একজন মুসলমানকে সতর্ক করার জন্য এর চেয়ে বেশি বলার কোনো প্রয়োজন নেই। কিন্তু আশ্চর্যের কথা হলো, কারো দ্বারা এমন ভুল ঘটে গেলে মসজিদে অধিকাংশ সময় এমনকিছু আপত্তিকর কথা বলা হয় যা সত্যিই দুঃখজনক ও অনাকাঙ্খিত। অথচ মনে রাখা দরকার, অন্যায় বা অসৎ কাজের প্রতিকারও অবশ্যই ন্যায়সঙ্গতভাবে হতে হবে। অন্যথায় লাভের চেয়ে ক্ষতিই হবে বেশি।
আচ্ছা বলুন তো, সতর্ক থাকা সত্ত্বেও ভুলক্রমে কোনো কোনো সময় মোবাইল বন্ধ না করাটা কি অন্যায়? আমি মনে করি, এটা মোটেও অন্যায় নয়। কেননা ভুল করা বা ভুলে যাওয়া মানুষের স্বভাব। আর যদি ধরেও নিই যে, এটা অন্যায় তাই বলে কি অন্যায়ের প্রতিকার এভাবে করা যাবে যদ্বারা আরো বড় অন্যায় হয়ে যাওয়া সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়? চিন্তা করে দেখুন তো, মসজিদের ভিতর নামাযের মাঝে যে লোকটির মোবাইল বেজে উঠে, যার অসতর্কতার বিষয়টি হঠাৎ মুসল্লিদের কাছে প্রকাশ পেয়ে যায়, লজ্জায় ও অনুশোচনায় তো এমনিতেই তিনি সংকোচিত হয়ে যান, নামায শেষে তার দিকে কে কী ভাবে তাকাবে, কে কী বলবে এই চিন্তায়ই তো তার মনটা ছোট হয়ে আসে; এর উপর কোনো ভদ্রলোক যদি গোটা মসজিদ কাঁপিয়ে চিৎকার করে তাকে ধমক দিতে শুরু করেন, তাহলে ওই লোকটির অবস্থা কী দাঁড়াবে তা সহজেই অনুমান করা যায়। ভেবে দেখা দরকার, সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃতভাবে, হঠাৎ অসতর্কতার কারণে কোনো মুসলমানের প্রতি এমন আচরণ অমানবিক ও দুঃখজনক নয় কি? নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি আমাদেরকে এ শিক্ষাই দিয়ে গেছেন? না, মোটেই নয়। তিনি আমাদেরকে এমনটি কখনো শিক্ষা দেননি। বরং তিনি এরূপ ক্ষেত্রে এমন উত্তম ও কালজয়ী শিক্ষা দিয়ে গেছেন যা চিরদিন অমর -অক্ষয় হয়ে থাকবে। যেমন হাদীস শরীফে আছে:
একদিন এক গ্রাম্য লোক মসজিদের ভিতর নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সামনে পেশাব করতে শুরু করল। এমতাবস্থায় বারণ করার জন্য উপস্থিত সাহাবায়ে কেরাম দৌড়ে ছুটলেন। কিন্তু নবীজি তাদেরকে থামিয়ে দিয়ে বললেন, তাকে তার কাজ শেষ করতে দাও। যখন পেশাব করা শেষ হলো নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুন্দরভাবে বুঝিয়ে দিলেন। বললেন, এটা নামাযের জায়গা। ইবাদত-বন্দেগীর জায়গা, পেশাবের জায়গা নয়। অবশেষে মসজিদের যে জায়গায় সে পেশাব করেছে তা পবিত্র করে নেওয়ার জন্য সাহাবিদের নির্দেশ দিলেন।
মোটকথা অসতর্কতার দরুণ মসজিদের ভিতর কারো মোবাইলে রিং বেজে উঠলে আশেপাশের মুসল্লিদের করণীয় হলো,
প্রথমত: ধৈর্যধারণ করা এবং পরে সঠিক মাসআলা জানা থাকলে সুযোগমতো সুন্দরভাবে তার সম্মানের প্রতি লক্ষ্য রেখে (কোনো আলেমের বরাত দিয়ে) মাসআলা বলে দেওয়া। তা না করে তাৎক্ষণিকভাবে হৈচৈ করে বকাঝকা শুরু করে দেওয়া কোনোভাবেই ঠিক নয়, শরিয়তও এমন কাজ সমর্থন করে না। কেননা এভাবে হৈচৈ করার দ্বারা একদিকে যেমন মসজিদের আদব চরমভাবে লঙ্ঘিত হয়, তেমনি একজন মুসলমানকেও অন্যায়ভাবে কষ্ট দেওয়া হয়। তাই সবাইকে এরূপ অন্যায় থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন। আমীন।
মোবাইল ফোন ও নামায
নামাযরত অবস্থায় রিং বেজে উঠলে কী করবেন?
নামায ভঙ্গের যেসব কারণ আছে তন্মধ্যে একটি হলো আমলে কাসীর। আমলে কাসীর বলা হয়, নামাযি ব্যক্তির এমন কোনো কাজে লিপ্ত হয়ে যাওয়া যা অন্য কেউ দেখলে মনে করবে সে নামাযে নেই। আর নামাযি ব্যক্তির প্রতি অন্য ব্যক্তির এরূপ ধারণা তখনই সৃষ্টি হয় যখন সে দু’হাত ব্যবহার করে কোনো কাজ করে। এক হাত নামাযে ব্যস্ত রেখে অন্য হাত দিয়ে কাজ করলে এমন ধারণা মোটেও সৃষ্টি হয় না। এ কারণেই ফিকাহবিদগণ নামাযের মধ্যে প্রয়োজনে একহাত ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছেন। তারা বলেছেন নামাযরত অবস্থায় টুপি উঠানো, জামার হাতা নামানো, সিজদার স্থানের কঙ্কর সরানো, শরীর চুলকানো এবং এ জাতীয় অন্যান্য কাজ করার জন্য এক হাত ব্যবহার করা যাবে। কোনো অবস্থাতেই দু’হাত ব্যবহার করা যাবে না।
উপরিউক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে একথা বলা যায় যে, নামাযের মধ্যে রিং বেজে উঠলে দুু’হাত ব্যবহার না করে এক হাতের সাহায্যে মোবাইল পকেটে রেখেই যে কোনো বাটন চেপে রিং বন্ধ করে দিবেন। আর পকেট থেকে মোবাইল বের করার প্রয়োজন হলেও একহাত দ্বারাই করবেন। মোবাইল বের করে পকেটের কাছে রেখে, না দেখে দ্রুত বন্ধ করে আবার পকেটে রেখে দিবেন।
দুু’হাত ব্যবহার ব্যতীত রিং বন্ধ করা সম্ভব না হলে…
যদি কখনো এমন অবস্থা হয় যে, দু’হাত ব্যবহার ব্যতীত মোবাইল বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না তখন আপনি কী করবেন? তখন কি নিজের নামায নষ্ট করে মোবাইল বন্ধ করবেন? নাকি মুসল্লিদের নামাযে বিঘ্নতা ঘটলেও নিজের নামাযকে রক্ষার জন্য রিং বন্ধ করা থেকে বিরত থাকবেন?
শরীয়তের উজর ছাড়া কোন ফরয ইবাদত শুরু করার পর ছেড়ে দেওয়া জায়েয নাই। কুয়েত ফিকাহ বিশ্বকোষে বলা হয়েছে; কোন ফরয বা ওয়াজিব আমল শুরু করার পর শরীয়তের গ্রহণযোগ্য কারণ ছাড়া বন্ধ করা জায়েয নাই। এতে ইবাদতে সঙ্গে মজাক করা হয়। আল্লাহ নিজেও তা নিষেধ করেছেন। তিনি বলেন: তোমরা নিজেদের আমল ধ্বংস করো না। সূরা মুহাম্মাদ: ৩৩)
নামাযের মধ্যে রিং বেজে উঠলে যার মোবাইল তার নামাযেই কেবল বিঘ্নতা ঘটে না বরং আশেপাশের অন্যান্য মুসল্লিদের নামাযেও বিঘ্নতা ঘটে। এক্ষেত্রে একহাত দ্বারা রিং বন্ধ করা সম্ভব না হলে নামায দুই হাত দিয়ে হলেও মোবাইল বন্ধ করতে হবে। এমতাবস্থায় তার নামায ভাঙ্গবে কি না? উপরের আলোচনায় বুঝা যায় যে, তার নামায ভঙ্গ হবে না। কেননা কোন ফরয কিংবা ওয়াজিব আমল শুরু করার পর তা ধ্বংস করতে নিষেধ করা হয়েছে। আবার কেউ কেউ বলেছেন, যদি তার মোবাইল বন্ধ করতে এত সময় ব্যয় করে বাহিরের লোক দেখে মনে করবে যে, লোকটি নামাযে নেই। তখন আমলে কাসীর গণ্য করে নামাযকে বাতিল বলেছেন।
রিং বন্ধ করতে সিজদা থেকে উঠা যাবে কি?
জামাতে নামায পড়ার সময় সিজদারত অবস্থায় রিং বেজে উঠলে কেউ কেউ সিজদা থেকে উঠে বসার প্রায় কাছাকাছি গিয়ে পকেট থেকে মোবাইল বের করে রিং বন্ধ করে থাকে। অথচ তখনো ইমাম মুসল্লি সকলেই সিজদাতেই থাকে। এভাবে রিং বন্ধ করার দ্বারা তিন তাসবীহ পরিমাণ সময় ব্যয় না হলেও নামায ভেঙ্গে যাবে। কারণ যেখানে দুই হাতের ব্যবহারকেই নামায ভঙ্গের কারণ বলা হয়েছে সেখানে গোটা দেহকে নামাযের অবস্থা থেকে সরিয়ে নিয়ে আসা নিঃসন্দেহে নামায ভঙ্গের কারণ হবে। তাছাড়া এ অবস্থায় কেউ তাকে দেখলে সে নামাযে নেই বলেই মনে করবে। যা আমলে কাসীরের অন্তর্ভুক্ত। আর একথা পূর্বেই আলোচিত হয়েছে যে, আমলে কাসীর নামায ভঙ্গের অন্যতম কারণ। [আল বাহর্রু রায়েক, খ- ঃ ২, পৃষ্ঠা ঃ ১১-১২ # খুলাসাতুল ফাতওয়া, খ- ঃ ১ পৃষ্ঠা ঃ ১২৯ # ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া, খ- ঃ ১, পৃষ্ঠা ঃ ১০৫ # শরহে নববী, খ- ঃ ১, পৃষ্ঠা ঃ ২০৫ # রদ্দুল মুহতার, খ- ঃ ১, পৃষ্ঠা ঃ ৬২৪, ২৬৪, ২৬৫]
একই নামাযে কতবার রিং বন্ধ করা যাবে?
অনেক সময় দেখা যায়, নামাযরত অবস্থায় একবার রিংটোন বন্ধ করার পর আবার বাজতে থাকে। এমনকি দ্বিতীয়বার বন্ধ করার পর তৃতীয়বারও বাজতে থাকে। কোনো কোনো সময় এই সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পায়। প্রশ্ন হলো, নামাযে থেকে এভাবে কতবার রিংটোন বন্ধ করা যাবে?
হ্যাঁ, অনেক মোবাইল ব্যবহারকারীকেই এই সমস্যায় পড়তে দেখা যায়। এক্ষেত্রে শরিয়তের বিধান হলো, তিনবার বিশুদ্ধভাবে ‘সুবহানা রাব্বিয়াল আযীম’ বা ‘সুবহানা রাব্বিয়াল আলা’ বলা যায় এ পরিমাণ সময়ের ভিতর দুইবার পর্যন্ত উপরে বর্ণিত নিয়মে রিংটোন বন্ধ করা যাবে। দুইবারের বেশি বন্ধ করা যাবে না। যদি কেউ দুইবারের বেশি বন্ধ করে তবে তার নামায নষ্ট হয়ে যাবে।
তবে একবার বা দুইবার বন্ধ করার পর তিন তাসবীহ পরিমাণ বিলম্বে আবার রিং বেজে উঠলে তখন বন্ধ করা যাবে এবং এতে নামাযও নষ্ট হবে না। মোটকথা তিন তাসবীহ বলা যায় এতটুকু সময়ের মধ্যে তিনবার রিং বন্ধের জন্য (দুই হাত তো নয়ই) একহাতও ব্যবহার করা যাবে না। কেউ করলে তার নামায নষ্ট হয়ে যাবে। [খুলাসাতুল ফাতওয়া, খ- ঃ ১ পৃষ্ঠা ঃ ১২৯ # রদ্দুল মুহতার, খ- ঃ ১, পৃষ্ঠা ঃ ৬২৫ # আহসানুল ফাতাওয়া, খ- ঃ ৩, পৃষ্ঠা ঃ ৪১৮-৪১৯]
স্ক্রীনে প্রাণীর ছবি সেভ করা মোবাইল সামনে রেখে নামায পড়া
কেউ যদি স্ক্রীনে প্রাণীর ছবি সেভ করা মোবাইল সামনে রেখে নামায পড়ে তাহলে তার নামায শুদ্ধ হবে কিনা তা একটু ব্যাখ্যা সাপেক্ষ বিষয়। কারণ সেভ করা প্রাণীর ছবিটি দু’ধরনের হতে পারে।
১. অতি ছোট আকারের ছবি যা মাটিতে রাখা অবস্থায় দাঁড়িয়ে স্পষ্ট দেখা যায় না। নাক, কান, চোখ, কপাল ইত্যাদি পৃথকভাবে বুঝা যায় না। এ ধরনের ছবি সম্বলিত মোবাইল সেট সামনে রেখে নামায আদায় করলে নামাযের কোনো ক্ষতি হবে না।
২. ছবিটি যদি বড় হয় এবং মাটিতে রাখা অবস্থায় দাঁড়িয়ে স্পষ্ট দেখা যায় অথবা অস্পষ্ট দেখা গেলেও কল আসার কারণে কিংবা অন্য কোনো কারণে স্ক্রীনে আলো জ্বলে উঠার দরুণ ছবিটি স্পষ্ট হয়ে উঠে তবে নামায মাকরূহে তাহরীমি হবে। হ্যাঁ, পূর্ণ নামাযে যে কোনোভাবে একবারও যদি অস্পষ্ট ছবিটি স্পষ্ট না হয়ে উঠে তাহলে নামাযের কোনো ক্ষতি হবে না। [ইমদাদুল ফাতওয়া, খ- ঃ ৪ পৃষ্ঠা ঃ ১৬৭ ফতোয়ায়ে শামী, খ- ঃ ৯, পৃষ্ঠা ঃ ৫২০ # ফতহুল কাদীর, খ- ঃ ১, পৃষ্ঠা ঃ ৪২৭ # আল বাহর্রু রায়েক, খ- ঃ ২, পৃষ্ঠা ঃ ৪৮-৫০ # ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া, খ- ঃ ১, পৃষ্ঠা ঃ ১০৭]