দ্বিতীয় সারণি
শ্রেষ্ঠ মানব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কন্যাগণ
“শ্রেষ্ঠ মানবের কন্যাগণ” শীর্ষক এই চিত্রটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কন্যাগণের জীবন-চরিত উপস্থাপন করছে। তাঁরা সকলেই ছিলেন মুমিন নারী ও হিজরাতকারীনী। তাঁদের মাতা ছিলেন বিশ্ব নারীকূলের সর্দার খাদীজা
বিন্ত খুয়াইলিদ রাদি আল্লাহু আনহা।
তাঁদের সকলের বড় ছিলেন যয়নাব রাদি আল্লাহু আনহা: তিনি নবুওয়াতের ১০ বৎসর পূর্বে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁকে তাঁর খালাত ভাই আবুল আস্ ইব্ন রবি‘ বিবাহ করেন। যিনি আবদ মান্নাফ বংশোদ্ভূত (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পিতৃব্য সন্তান) ছিলেন। তাদের ঘরে আলী (শিশু কালে মারা যায়) এবং উমামা জন্মগ্রহণ করেন। উমামাকে তাঁর খালা ফাতিমা রাদি আল্লাহু আনহার ইন্তিকালের পর আলী ইব্ন আবু তালিব রাদি আল্লাহু আনহু বিবাহ করেন।
অতঃপর বিশ্ব নারীকূল শিরোমণি ফুটন্ত দুই ফুল হাসান-হুসাইনের মা ফাতিমা রাদি আল্লাহু আনহা যিনি যাহরা উপাধিতে ভূষিত: তিনি নবুওয়াতের ১ বৎসর পূর্বে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কনিষ্ঠ ও সর্বাধিক মর্যাদাবান কন্যা। ২য় হিজরীতে খলীফা রাশিদ ও ন্যায়পরায়ণ ইমাম আলী ইব্ন আবু তালিব রাদি আল্লাহু আনহুর সাথে তাঁর বিবাহ হয় এবং তিনি ১১ হিজরীতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ইন্তিকালের মাত্র ছয় মাস পর ইন্তিকাল করেন।
দুই হিজরাতের অধিকারীনী রুকাইয়া রাদি আল্লাহু আনহা: তিনি নবুওয়াতের ৭ বৎসর পূর্বে জন্মগ্রহণ করেন। আবু লাহাবের ছেলের সাথে তালাক হওয়ার পর উসমান ইব্ন আফফান রাদি আল্লাহু আনহুর সাথে তাঁর বিবাহ হয় এবং স্বামী উসমান রাদি আল্লাহু আনহুর সাথে হাবশায় হিজরাত করেন। তাঁদের ঘরে আব্দুল্লাহর (শিশুকালে মারা যায়) জন্ম হয়। অতঃপর তিনি তাঁর সাথে মদীনায় হিজরাত করেন এবং বদর যুদ্ধের অর্ন্তবর্তী সময়ে ইন্তিকাল করেন।
উম্মে কুলসূম রাদি আল্লাহু আনহা: তিনি নবুওয়াতের পূর্বে রুকাইয়া রাদি আল্লাহু আনহার জন্মের পর জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মদীনায় হিজরাত করেন। বোন রুকাইয়ার ইন্তিকালের পর উসমান ইব্ন আফফান রাদি আল্লাহু আনহুর সাথে তাঁর বিবাহ হয়। তাঁর কোন সন্তান হয়নি। তিনি ৯ম হিজরীতে ইন্তিকাল করেন।
ফাতিমাতুয যাহরা ছাড়া তাঁদের সকলেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবদ্দশায় ইন্তিকাল করেন। আর ফাতিমা রাদি আল্লাহু আনহা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ইন্তিকালের ছয় মাস পর ইন্তিকাল করেন। প্রাচীন ঐতিহাসিক বর্ণনাসমূহ একমত যে, তাঁরা সকলেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কন্যা ছিলেন। কুরআনে বর্ণিত আল্লাহর বাণী “আপনার কন্যাগণ” দ্বারা তাঁদের দিকেই ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ তাদেরকে বহুবচনের শব্দ ব্যবহার করে উল্লেখ করা হয়েছে। এ দ্বারা বুঝা যায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কন্যা একজন নয়। এ কথার উপর সুন্নাহর প্রমাণ ও পূর্ববর্তী আলিমগণের ঐকমত্য রয়েছে। এ পরিসরে প্রিয় পাঠকের খিদমাতে আমরা ২৭টি তথ্যগ্রন্থের উল্লেখ করছি যা এ বিষয়ে সঠিক নির্দেশনা প্রদান করবে। এ থেকে আরও জানা যাবে যে, যারা ফাতিমা রাদি আল্লাহু আনহাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের একমাত্র কন্যা ও অন্যদেরকে পালিত কন্যা বলেন তাদের দাবির কোন ভিত্তি নেই।