হিজরতের পর আনসারদের ঘরে ইসলামের প্রথম সন্তান
নুমান ইব্ন বাশীর রাদি আল্লাহু আনহুর জীবনী
মহান আল্লাহ যিনি সর্বাধিক সত্যবাদি তিনি তাঁর অবতীর্ণ কিতাবে আনসারদের প্রসঙ্গে বলেন:
“যারা মুহাজিরদের আগমনের পূর্বে মদীনায় বসবাস করেছিল এবং বিশ্বাস স্থাপন করেছিল, তারা মুহাজিরদের ভালবাসে, মুহাজিরদেরকে যা দেয়া হয়েছে, তজ্জন্যে তারা অন্তরে ঈর্ষাপোষণ করে না এবং নিজেরা অভাবগ্রস্ত হলেও তাদেরকে অগ্রাধিকার দান করে। যারা মনের কার্পণ্য থেকে মুক্ত, তারাই সফলকাম।” (সুরা আল-হাশর: ৯)
মানবতার নেতা আবুল কাসেম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “আনসারদের ভালবাসা ঈমানের চিহ্ন, আর আনসারদের ঘৃণা করা নিফাকের চিহ্ন।” (বুখারী, কিতাবুল ঈমান, বাবু আলামাতুল ঈমান হুব্বুল আনসার, ১/৭৮; মুসলিম, কিতাবুল ঈমান, বাবুদ দলীল আলা আন্না হুব্বুল আনসার মিনাল ঈমান, ২/৫৫।)
হ্যাঁ…… তাঁদের এ উচ্চ মর্যাদা, এ সম্মান কেন হবে না, অথচ তাঁরা ইসলাম ও ইসলামের রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহায্য, সহযোগিতা, ত্যাগ, জান ও মালের কুরবানীর চরম পরাকাষ্ঠা দেখিয়েছিলেন।
এ কারণে উমর ও আলী রাদি আল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত হয়েছে। (এখানের ভাষ্য আলী রাদি আল্লাহু আনহুর), যখন আনসারদের মর্যাদা উল্লেখ করা হত তখন তিনি বলতেন, আমি আল্লাহর শপথ করে বলছি, মুমিন ছাড়া তাঁদেরকে কেউ ভালবাসে না, মুনাফিক ছাড়া কেউ তাঁদেরকে ঘৃণা করে না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেকে গোটা আরবের সামনে উপস্থাপন করেছিলেন। কিন্তু তারা তাঁকে গ্রহণের অস্বীকৃতি জানিয়ে ফিরিয়ে দিয়েছিল। তিনি তাদের থেকে তাঁর আহবানের কোন সাড়া পাননি। কিন্তু আনসাররা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ডাকে সাড়া দিয়েছিলেন, দ্বীনকে সাহায্য করেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সহযোগিতা করেছেন, তাঁরা আমাদেরকে নিয়ে পরস্পর প্রতিযোগিতা করেছেন, আমাদের বিষয়ে নিজেরা লটারী পর্যন্ত করেছেন নিজেদের জান ও মাল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে উৎসর্গ করেছেন। (ইব্ন ফারা, নুযহাতুল আনসার ফী ফাদাঈলিল আনসার, পৃষ্ঠা-২২৭)
তাঁরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাহায্যকারী। অতএব তাঁদের প্রতি ভালবাসা পোষণকারীগণ মুমিন ও ঘৃণাকারীরা মুনাফিক হবে না কেন?
এ কারণে আনসারদের আলোচনার মধ্যে আলাদা একটি স্বাদ রয়েছে। আর তা বিষের প্রতিষেধক খাঁটি মধুর স্বাদ।
এ পরিসরে ঐসব সম্মানিত ব্যক্তি যাদের প্রতি ভালবাসা, তাঁদের থেকে কষ্টদায়ক বিষয় অপসারণ এবং তাদের সম্মান, মর্যাদা, বৈশিষ্ট্য ও অগণিত কৃতিত্ব প্রচার-প্রসারের মাধ্যমে আমরা আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করি তাঁদেরই একজনের আলোচনা উপস্থাপিত হবে।
নিশ্চয় তিনি……….
¬- পবিত্র ভূমিতে প্রিয় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হিজরাতের পর আনসারদের ঘরে ইসলামের প্রথম সন্তান।
– যাঁর পিতা-মাতা, মামা সকলেই ছিলেন সাহাবী, কতই না সম্মানিত বংশ!
– যিনি শিশুবেলায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের তাহনীকের (শিশুর মুখে খেজুর চিবিয়ে দেয়া) সম্মানার্জন করেছিলেন, কী সৌভাগ্য তাঁর!
– মহান আল্লাহ তাঁকে মুখস্ত ও বিচক্ষণতার শক্তি দিয়েছিলেন। এ কারণে তিনি উপস্থিত বাকপটুতা, অধিক মুখস্তশক্তি ও প্রচ- অনুধাবন শক্তিতে প্রসিদ্ধ ছিলেন।
– যিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বড় অংকের হাদীস বর্ণনা করেছেন, যার অধিকাংশই আহকাম সংক্রান্ত হাদীস।
– যিনি ছিলেন বদান্য, দানশীল, অধিকদাতা।
– যিনি বিভিন্ন উচ্চ পদমর্যাদায় আসীন হন, তিনি কুফা ও হেমসের আমীর ছিলেন।
আর তিনি হলেন, নুমান ইব্ন বাশীর আল-আনসারী রাদি আল্লাহু আনহু।
তাঁর নাম ও বংশ:
তিনি ছিলেন, নুমান ইব্ন বাশীর ইব্ন সায়াদ ইব্ন সা’লাবা আনসারী, বনী কাব ইব্ন হারেস ইব্ন খাযরাজ।
তাঁর মাতা উমরাহ বিন্ত রাওয়াহা, যিনি আব্দুল্লাহ ইব্ন রাওয়াহার বোন ছিলেন।
তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ইন্তিকালের আট বৎসর মতান্তরে ছয় বৎসর পূর্বে জন্মগ্রহণ করেন। প্রথম মতটি অধিকতর শুদ্ধ। কেননা অধিকাংশের মতে তিনি ও আব্দুল্লাহ ইব্ন যুবাইর ২য় হিজরীর রবিউস সানী মাসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মদীনায় হিজরাতের চব্বিশ মাসের মাথায় জন্মগ্রহণ করেন। (আল-ইস্তিআব: ১/৪৭১; তাবাকাত ইব্ন সায়াদ: ৬/৫৩।)
তিনিই হিজরাতের পর আনসারদের ঘরে প্রথম সন্তান। তিনি আবু আব্দুল্লাহ উপনামে ভূষিত। (উসদুল গাবাহ: ৫/২৯২।) তাঁর জন্মের পর তাঁর মা তাঁকে নিয়ে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবারে উপস্থিত হলে তিনি তাঁর মুখে খেজুর চিবিয়ে দেন ও সুসংবাদ দেন যে, তিনি প্রশংসিত জীবনযাপন করবেন, শহীদ হবেন এবং জান্নাতে প্রবেশ করবেন।
তাঁর পিতা বাশীর ইব্ন সায়াদ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে বদরযুদ্ধে অংশ নেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ইন্তিকালের পর তিনিই সর্বপ্রথম আবু বকর সিদ্দীক রাদি আল্লাহু আনহুর খিলাফাতের উপর বাইয়াত গ্রহণ করেন।
পূর্বোক্ত আলোচনা থেকে এটিই প্রতীয়মান হয় যে, নুমান ইব্ন বাশীর রাদি আল্লাহু আনহু এক পবিত্র পরিবেশে বড় হয়েছিলেন যা তাঁর জীবনে বড় ধরণের প্রভাব ফেলেছিল। প্রিয় পাঠক! ঐ ব্যক্তির ব্যাপারে আপনার ধারণা কী যিনি তাওহীদ ও ঈমানের গৃহে জন্মগ্রহণ করে সেখানেই লালিত-পালিত হয়েছেন, যাঁর পিতা-মাতা উভয়েই সম্মানিত সাহাবী?!
তাঁর মর্যাদা:
নুমান রাদি আল্লাহু আনহু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পেয়েছেন ছোট বেলায়। তবে সে সময় নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা বলতেন তিনি তা অনুধাবন করতে পারতেন। তাঁকে অদম্য মেধা, বুঝশক্তি ও বিচক্ষণতা দেয়া হয়েছিল, এজন্য তিনি উপস্থিত বাকপটুতা, অধিক মুখস্তশক্তি, প্রচ- অনুধাবনের যোগ্যতাসম্পন্ন ছিলেন। তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে অনেক হাদীস শুনেছেন এবং হাদীস বর্ণনা করেছেন যা বিশ্বস্ত ও ন্যায়পরায়ণ বর্ণনাকারীরা আমাদের পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছেন। তাঁর থেকে যেসব হাদীস বর্ণিত হয়েছে তার অধিকাংশই আহকাম সংক্রান্ত। উদাহরণস্বরূপ নিুে কয়েকটি হাদীস উল্লেখ করা হল, তবে এগুলোর মধ্যে তাঁর বর্ণিত হাদীস সীমিত নয়:
– কোন কিছু প্রদানের ক্ষেত্রে সন্তানদের মধ্যে সমতা বিধান করা। (বুখারী, কিতাবুল হিবা, বাবুল হিবা লিল্ আওলাদ, হাদীস নং-২৫৮৬; মুসলিম, কিতাবুল ফারায়েজ, বাবু কারাহিয়্যাতি তাফদীলি বাদুল আওলাদ ফীল হিবা, হাদীস নং-১৬২৩।)
– “হালাল সুস্পষ্ট ও হারাম সুস্পষ্ট” এ হাদীসটি। আলিমগণের মতে এটির উপর ইসলামী আইনের ভিত্তি স্থাপিত। (বুখারী কিতাবুল ঈমান, বাবু মান ইসতাবরাআ মিন দ্বীনীহি, হাদীস নং-৫২; মুসলিম, কিতাবুল মুসাকাত, বাবু আখজুল হালাল ওয়া তরকুস্ শুবহাত, হাদীস নং-১৫৯৯।)
নুমান রাদি আল্লাহু আনহুর উচ্চ মর্যাদার কারণে খলীফাগণের নিকট তিনি বিশ্বস্ত ছিলেন। তাঁরা তাঁকে উচ্চ পদমর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেন। মুআবিয়া রাদি আল্লাহু আনহু তাঁকে কুফার আমীর নিযুক্ত করেন। এরপর ইয়াযিদ ইব্ন মুআবিয়া তাঁকে হেমসের আমীর নিযুক্ত করেন।
ইয়াযিদের মৃত্যুর পর নুমান রাদি আল্লাহু আনহু আব্দুল্লাহ ইব্ন যুবাইর রাদি আল্লাহু আনহুর খিলাফাতের উপর বাইয়াত হওয়ার আহ্বান জানালে হেমসবাসী বিক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে। পরবর্তীতে তিনি সেখান থেকে পালিয়ে যান।
তিনি নবী পরিবারের সদস্যগণকে মদীনায় প্রবর্তনের ব্যবস্থা করেন এবং ইয়াযিদ ইব্ন মুআবিয়াকে তাদের প্রতি সদয় হওয়ার অনুরোধ করেন। ফলে ইয়াযিদ তাদের প্রতি কোমল ও দয়াপরবশ হন এবং তাঁদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন। (তারীখে তাবারী: ৫/৪৬২; আল-কামিল ফীত্ তারীখ: ৩/৫৩৮)
তাঁর গুণাবলি:
মহান প্রতিপালক নুমান ইব্ন বাশীর রাদি আল্লাহু আনহুকে উত্তম আচরণ ও মহান চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য দান করেছিলেন। যা তাঁর উত্তম স্বভাব, খোদাভীতির প্রতি নিদের্শনা প্রদান করে।
তিনি ছিলেন দাতা, বদান্য ও দানশীল, কমোল হৃদয় ও নরম প্রবৃত্তির অধিকারী, সুবক্তা, হৃদয়স্পর্শী নসিহতকারী, কল্যাণ, নিরাপত্তা, স্বাচ্ছন্দতার প্রেমিক, ফিতনা-ফাসাদ, দলাদলী, বিশৃঙ্খলা, বিভক্তি অপছন্দকারী।
বর্ণিত আছে, আশা হামদান একদা নুমান রাদি আল্লাহু আনহুর দরবারে গেলে তিনি বললেন, কী জিনিস তোমাকে আমার কাছে নিয়ে এসেছে হে আবু মিসবাহ? তিনি বললেন, আমি এসেছি যাতে তুমি আমার সাথে ভাল ব্যবহার কর, আমার আত্মীয়তা রক্ষা কর ও আমার ঋণ পরিশোধের ব্যবস্থা কর। বর্ণনাকারী বলেন, নুমান মাথা নিচু করে থাকলেন এরপর মাথা উঁচু করে বললেন, আল্লাহর শপথ! কিছুই নেই। অতঃপর বললেন, ওহ! মনে হল তাঁর কিছু একটা স্মরণ হয়েছে। অতঃপর তিনি মিম্বরে আরোহণ করলেন। তখন তাদের রাজকোষে বিশ হাজার দিনার ছিল এবং বললেন, হে হেমসবাসী! তোমাদের কাছে তোমাদের এক চাচাত ভাই কুরআন ও সম্মানের দেশ থেকে আগমন করেছেন। যিনি তোমাদেরকে পিছনের আরহী করার অনুরোধ করছে (অর্থাৎ ঋণ পরিশোধের জন্য সাহায্য চাচ্ছেন) এ ব্যাপারে তোমাদের মতামত কী? তারা বলল, আল্লাহ আমাদের আমীরের কল্যাণ করুন। আপনি তাঁর বিষয়ে ফয়সালা করুন। তখন তিনি বিষয়টি তাদের উপর ছেড়ে দিলেন। তারা বলল, আমরা তাঁর ব্যাপারে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, আমরা প্রত্যেকে তার জন্য দুই দিনার করে বায়তুলমালে জমা দিব। এভাবে তাঁর জন্য চল্লিশ হাজার দিনার জমা পড়ল, তিনি তা গ্রহণ করলেন অতঃপর আবৃত্তি করলেন:
প্রয়োজনগুলো জড়সড় হতে দেখিনি
নুমানের কাছে ছাড়া যাকে আমি ইব্ন বাশীর ডাকি
যখন তিনি শুধুমাত্র মুখে বললেন
যা জনগণের কাছে প্রবঞ্চনার রাশি হল না।
আমি নুমানের কৃতজ্ঞ না হয়ে কিভাবে অকৃতজ্ঞ হব
যে কৃতজ্ঞতার পোষণ করে না তার মধ্যে কোন কল্যাণ নেই। (তারীখু দামিশক: ৬৫/৯৫)
তিনি সুবক্তা ছিলেন। সাম্মাক ইব্ন হারব থেকে বর্ণিত, মুআবিয়া নুমান ইব্ন বাশীরকে কুফার শাসনকর্তা হিসেবে নিযুক্ত করেন। আল্লাহর শপথ! আমি দুনিয়াবাসীর যতজনকে বাগ্মী দেখেছি তাদের মধ্যে তিনি ছিলেন সর্বাধিক উত্তম বক্তা। ( তাবাকাত ইব্ন সায়াদ: ৬/৫৪; দ্র: তারীখে দামিশ্ক: ৬৫/৯৫)
তাঁর ওয়াজ ও নসিহাতের মধ্যে রয়েছে, “মুসিবতের সময় খারাপ কাজ করাই প্রকৃত ধ্বংস।” (তারীখে দামিশক: ৬৫/৯৬; দ্র: আল-বিদায়াহ ওয়ান্ নিহায়াহ: ৮/২৪৫।)
তিনি আরও বলতেন, শয়তানের কিছু ফাঁদ ও জাল রয়েছে। তার ফাঁদ হল, আল্লাহর নিয়ামত নিয়ে ঔদ্ধত্য, আল্লাহর দান নিয়ে অহমিকা, আল্লাহর বান্দাদের উপর অহংকার ও আল্লাহর সত্তা নয় এমন বিষয়ে প্রবৃত্তির অনুসরণ করা। (তারীখে দামিশক: ৬৫/৯৫; দ্রষ্টব্য: তাহজীবুল কামাল: ১০/৩০৬)
তাঁর ওফাত:
ইতিপূর্বে বর্ণিত হয়েছে নুমান ইব্ন বাশীর রাদি আল্লাহু আনহু মুআবিয়া রাদি আল্লাহু আনহুর আমলে কুফার এবং ইয়াযিদ ইব্ন মুআবিয়ার আমলে হেমসের শাসনকর্তা ছিলেন। ইয়াযিদের মৃত্যুর পর নুমান আব্দুল্লাহ ইব্ন যুবাইয়ের বাইয়াত গ্রহণের আহবান জানান। অতঃপর যখন মারওয়ান ইব্ন হাকামের জন্য খিলাফাত সাব্যস্ত হয়ে যায় তখন নুমান হেমস থেকে পলায়ন করেন। মারওয়ানের সহযোগীরা তার পিছু নেয় এবং তাঁকে হত্যা করে।
বলা হয়েছে, তাঁকে হত্যা করে খালিদ ইব্ন খুল্লী আল-কিলায়ী আল-মাযনী। যেখানে তাঁকে হত্যা করা হয় ঐ গ্রামটির নাম বাইরাইন, কেউ কেউ বলেন, সালমিয়াহ। এটি ছিল ৬৪ হিজরীর ঘটনা, কেউ কেউ বলেন ৬৫ হিজরী।
তাঁর মৃত্যুতে তাঁর মেয়ে হামীদা বিলাপ করেন এই বলে:
আফসোস মুযাইনা গোত্র ও তার সন্তানের জন্য তোমাকে হত্যার জন্য তারাই যথেষ্ট।
বনী উমাইয়ার সকলেই তাঁদের মধ্যে আর কেউ অবশিষ্ট নেই।
তোমার হত্যার সংবাদ এল এক রোগাক্রান্ত কুকুরওয়ালার মারফত।
তারা তার মস্তক নিয়ে খেলা করছে যাদের চারিপাশে ঘুরঘুর করছে বিরোধীরা।
তাদের একবার কাঁদা উচিৎ তাদের কাঁদা উচিৎ উচ্চস্বরে।
তোমার জন্য কাদা উচিৎ সাতগুণ আর্তনাদ করে করে। (তারীখে দামিশক: ৬৫/৮৯)
তাঁর থেকে অনেকেই হাদীস বর্ণনা করেছেন। তার মধ্যে হামীদ ইব্ন আব্দুর রহমান ইব্ন আউফ ও তাঁর ছেলে মুহাম্মদ প্রমুখ। (তাঁর জীবনী দ্রষ্টব্য: তাবাকাতে ইব্ন সায়াদ: ৬/৩৮৭; আল-ইস্তিআব: ১/৪৭১; উসদুল গাবাহ: ৫/২৯২; আল-ইসবাহ: পৃ. ১৩২৮; তাহজীবুল কামাল: ১০/৩০৬; তারীখুল ইসলাম: ৩/৪১; তারীখে দামিশক: ৬৫/৮৬ ইত্যাদি) (চলবে)