সালামের আদবসমূহ

imagesCAIZA0LV
১- যখন তুমি তোমার কোনো ভাইয়ের সাথে সাক্ষাৎ করবে, তখন তাকে আগে সালাম দেবে। কারণ, আল্লাহর দরবারে সর্ব উত্তম ব্যক্তি সে যে মানুষকে আগে সালাম দেয় ।
২- প্রতিটি মুসলিম ভাই তুমি চেন বা না চেন সবাইকে সালাম দেবে। কারণ, বুখারি, মুসলিমসহ বিভিন্ন হাদিসের কিতাবে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ আমাদের জানিয়ে দেন যে, এটি উত্তম আমলসমূহ হতে একটি অন্যতম আমল।
এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তিকে শুধু চেনা-জানা থাকার কারণে সালাম দেয়াকে, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ কিয়ামতের আলামত হিসেবে আখ্যায়িত করেন ।
আব্দুল্লাহ ইবন ওমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু’ বাজারে বেচা-কেনার জন্য নয়, শুধু মানুষকে সালাম দেয়ার উদ্দেশ্যে যেতেন। বর্ণনায় ইমাম মালেক মুয়াত্তাতে বিশুদ্ধ সনদে।
যখন তোমার কোনো মুসলিম ভাই তোমাকে সালাম দেয়, তখন তুমি তাকে সমপরিমাণ কথা দ্বারা উত্তর দাও অথবা তার চেয়ে উত্তম কথা দ্বারা উত্তর দাও। আর তোমার উত্তর দেয়া যেন হয়, হাসি-খুশি ও হাস্যজ্জল চেহারার সাথে। আর তোমার উত্তর যেন সে শুনতে পায়। কারণ, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ এটিকে সদকা বলে আখ্যায়িত করেছেন, তিনি বলেন,
«ابتسامتك في وجه أخيك صدقة»
তোমার ভাইয়ের সাথে মুচকি হাসি দিয়ে সাক্ষাৎ করা, সদকা । রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ আরও বলেন,
«أكمل المؤمنين إيمانًا أحسنهم خلقًا»
“ঈমানের দিক দিয়ে পরিপূর্ণ মুমিন সে ব্যক্তি যে চরিত্রের দিক দিয়ে সুন্দর” । রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ আরও বলেন,
«لا تحقرن من المعروف شيئًا ولو أن تلقى أخاك بوجه طلق»
“তোমারা কোন ভালো কাজকে খাট করে দেখ না, এমনকি তোমার ভাইয়ের সাথে হাসি মুখে সাক্ষাত করাকে” ।
চার- মনে রাখবে “أهلا وسهلا” ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সালামের উত্তর দেয়া জায়েয নেই। তবে যদি সালাম দেয়া ও উত্তর দেয়ার পর এ শব্দগুলো বলে, তাতে কোনো ক্ষতি নেই।
পাঁচ- আর যখন তুমি কোন গাড়ীতে অথবা তোমার মধ্যে এবং তোমার অপর ভাইয়ের মাঝে কিছু দূরত্ব থাকে, অথবা কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকে, তাহলে তুমি মুখে সালাম দেবে এবং হাতে ইশারা দুটিই করবে। যাতে সে বুঝতে পারে, তুমি তাকে সালাম দিচ্ছ।
ছয়- যখন দল বড় হয় অথবা তোমার সালাম শোনা যায় না, তাহলে তুমি তিনবার সালাম দেবে।
সাত- যখন তুমি কারো সাথে সাক্ষাৎ করতে যাবে, তখন তার দরজার একেবারে সামনে দাঁড়াবে না। দরজার ডান পাশে অথবা বাম পাশে দাঁড়াবে। তারপর তুমি সালাম দেবে এবং অনুমতি চাইবে। যদি তোমাকে অনুমতি দেয় তবে তুমি প্রবেশ করবে, অন্যথায় ফেরত আসবে। তোমার ভাইয়ের বিষয়ে তোমার অন্তরে কোনো প্রকার সংকীর্ণতা যেন না থাকে।
আট- যখন তোমাকে জিজ্ঞাসা করে, তুমি কে? তখন তুমি তোমার নাম উল্লেখ করবে, শুধু ‘আমি’ বলে উত্তর দেবে না।
নয়- যখন কোনো ব্যক্তি তোমার নিকট তোমার কোনো ভাইয়ের পক্ষ হতে সালাম দেয়, তখন তার উত্তরে (عليك وعليه السلام ورحمة الله وبركاته). বলবে।
দশ- যদি কোনো ব্যক্তি ঘুমে থাকে, তখন সেখানে এমনভাবে সালাম দেবে, যাতে জাগ্রত লোকজন শুনতে পায় এবং ঘুমন্ত ব্যক্তির ঘুমের কোনো ক্ষতি না হয়।
এগার- সালাম দেয়ার সময় “عليك السلام” বলবে না। কারণ, এটি মৃত লোকদের সম্ভাষণ।
বার- আরোহী ব্যক্তি পায়ে হাটা ব্যক্তিকে সালাম দেবে। আর পায়ে হাটা ব্যক্তি বসে থাকা ব্যক্তিকে সালাম দেবে। ছোটরা বড়দেরকে সালাম দেবে। আর অল্প ব্যক্তি বেশি ব্যক্তিকে সালাম দেবে।
তের- যখন তুমি মসজিদে প্রবেশ করবে অথবা কোনো মজলিসে উপস্থিত হবে, তখন সালাম দাও। আর যখন তুমি মজলিস থেকে বের হবে, তখনও সালাম দাও। কারণ, প্রথমটি পরেরটি তুলনায় অধিক হক্বদার নয়।
যখন তোমার ও তোমার ভাইয়ের মাঝে গাছ, পাহাড়, দেয়াল ইত্যাদির কারণে দূরত্ব সৃষ্টি হয়, তারপর আবার সাক্ষাৎ হয়, তখন তাকে পুনরায় সালাম দেবে। কারণ, এটিই সুন্নত।
চৌদ্দ- ইয়াহূদী, খৃষ্টান ও কোনো কাফেরকে প্রথমে সালাম দেবে না। যদি তারা সালাম দেয়, তাদের সালামের উত্তরে ‘তুমি ও তোমার উপর’ শুধু এ কথা বলবে। আর তাদের তুমি সংকীর্ণ রাস্তায় হাঁটতে বাধ্য করবে।
পনের- এমন কোনো মজলিস হয় যেখানে মুসলিম ও অমুসলিম যেমন ইয়াহূদী খৃষ্টান ও মুশরিক সবাই আছে, তখন তাদের সালাম দেবে, তবে সালাম দ্বারা মুসলিমদের নিয়ত করবে।
ষোল- আর যখন ঘরে প্রবেশ করবে, তখন তুমি তোমার পরিবার পরিজনকে সালাম দেবে। এতে তুমি নিজেও বরকতময় হবে এবং তোমার পরিবারও বরকতময় হবে।
সতের- বাচ্চাদের সালাম দেবে। কারণ, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ বাচ্চাদের সালাম দিতেন।
আঠার- যখন একাধিক লোকের জামাত কোনো জামাতের নিকট দিয়ে অতিক্রম করে, তখন তাদের মধ্য হতে যে কোন একজন অতিক্রমকারীর সালাম অন্যদের জন্য যথেষ্ট হবে। অনুরূপভাবে যে কোনো একজনের উত্তর দেয়া অন্যদের জন্য যথেষ্ট হবে। আর বাকীদের জন্য উত্তর দেয়া জরুরি নয়, তবে সুন্নত হিসেবে অবশিষ্ট থাকবে।
উনিশ-যে ব্যক্তি সালাম দেয়ার পূর্বে কথা বলা শুরু করে, তুমি তার কথার উত্তর দেবে না।
বিশ- যখন কোনো ব্যক্তি বলে, অমুকের নিকট আমার সালাম পৌছিয়ে দাও, তাহলে তা আমানত, অবশ্যই তার নিকট পৌছাতে হবে। তবে যদি ভুলে যায় সেটা ভিন্ন কথা।
একুশ- যারা গুনাহে লিপ্ত গুনাহ থেকে ফিরে না আসা পর্যন্ত তাদের তাদের সালাম দেয়া যাবে না। তবে যদি তুমি মনে কর তোমার সালামের কারণে তার গুনাহ কমবে, গুনাহ থেকে ফিরে আসবে বা তুমি তাকে নসিহত করার ইচ্ছা কর, তখন সালাম দেবে।
বাইশ- পেশাব করা অবস্থায় সালামের উত্তর দেবে না।
তেইশ- হে মুসলিম ভাইয়েরা! একে অপরের সাথে দেখা সাক্ষাৎ হলে আমাদের সমাজে প্রচলিত বিভিন্ন কথা থেকে তোমরা বেচে থাক। যেমন- গুড মর্নিং, সুপ্রভাত ইত্যাদি। মনে রাখবে, তোমার দ্বীন ও ভাষাকে অবলম্বন করা, তোমার জন্য সম্মান ও আত্ম-মর্যাদা। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর দ্বীনকে বাদ দিয়ে অন্য কিছুতে ইজ্জত তালাশ করবে, আল্লাহ তাকে অপমান-অপদস্থ করবেন।
মুসাফাহা
হে মুসলিম ভাই! যে সব ইসলামী শিষ্টাচারসমূহ পালনের উপর আল্লাহ্ তা‘আলা তার বান্দাদের অধিক ও বড় ধরনের প্রতিদান দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা থেকে একটি হল, মুসাফাহ করা। মুসাফাহা দ্বারা আল্লাহ তা’আল তার বান্দাদের গুনাহ সমূহ ক্ষমা করে দেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ এরশাদ করেন-
«إن المؤمن إذا لقي المؤمن فسلم عليه وأخذ بيده فصافحه تناثرت خطاياهما كما يتناثر ورق الشجر».
“যখন কোন মুমিন বান্দা তার অপর মুমিন ভাইয়ে সাথে সাক্ষাত হওয়ার পর তাকে সালাম দেয় এবং তার হাত ধরে তার সাথে মুসাফাহা করে, তখন তার গুনাহগুলো এমন ভাবে ঝরে পড়ে যেমনি-ভাবে গাছের পাতাসমূহ ঝরে পড়ে” ।
মুসাফাহার বিধানটি সর্ব প্রথম ইয়ামনের অধিবাসীরাই চালু করেন। প্রমাণ: রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ বলেন,
«قد أقبل عليكم أهل اليمن» وهم أول من جاء بالمصافحة
“ইয়ামনের অধিবাসীদের আগমন ঘটেছে।” তারাই সর্বপ্রথম মুসাফাহার বিধান চালু করছে” । আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু’ কে জিজ্ঞাসা করা হল,
أكانت المصافحة في أصحاب رسول الله ؟ فقال: «نعم».
“রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ এর সাহাবীদের মধ্যে মুসাফাহার বিধান ছিল? তিনি বললেন, হ্যা ছিল” ।
হে মুসলিম ভাই! তোমরা মুসাফাহার সুন্নতটিকে গুরুত্ব সহকারে আমল করতে চেষ্টা করবে। কারণ, অধিকাংশ মানুষ বর্তমানে এ সুন্নত হতে বিমুখ। তুমি তোমার মুসলিম ভাইদের সাথে সাক্ষাত হলে মুসাফাহা কর। আর মুসাফাহা করার সময় তুমি হাসি-খুশি ও হাস্যোজ্জ্বল থাকবে। কারণ, হাসি মুখ ও খুশি থাকা তোমার অন্তরে তার প্রতি যে মহব্বত ও ভালোবাসা আছে তা প্রকাশ করে। আর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ তোমার অপর ভাইয়ের সাথে হাসি মুখে সাক্ষাত করাকে সদকা বলে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন,
«ابتسامتك في وجه أخيك صدقة»
“তোমার ভাইয়ের সাথে মুচকি হাসি দিয়ে সাক্ষাৎ করা, সদকা” । রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ আরও বলেন,
«وأكمل المؤمنين إيمانًا أحسنهم خلقًا»
“ঈমানের দিক দিয়ে পরিপূর্ণ মুমিন সে ব্যক্তি, যে চরিত্রের দিক দিয়ে সুন্দর” ।
রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ এরশাদ করেন,
«وإذا أتى أخوك من سفر فعانقه»
“যখন তোমার কোন ভাই সফর থেকে ফিরে আসে তখন তুমি তার সাথে কোলাকুলি কর” ।
তোমরা চুমু দেয়ার অভ্যাস পরিহার কর। কারণ, মুখ দিয়ে মুখে চুমু দেয়া একমাত্র স্বামীর জন্য তার স্ত্রীকে ছাড়া আর কারও জন্য জায়েয নেই। তবে বাচ্চাদেরকে আদর করে তাদের মুখে চুমু দেয়া তাদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করার জন্য জায়েয আছে। প্রমাণ:
«أن النبي  قبل أحد أبناء علي رضي الله عنه وعنده رجل قال أتقبلون صبيانكم يا رسول الله قال: نعم، قال: الرجل إن عندي عشرة من الولد لم أقبل أحدًا منهم فقال  أو أملك لك من الله شيئًا أن نزع الرحمة من قلبك».
রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু’ এর সন্তানদের এক লোকের সামনে চুমু দেন। এ দৃশ্য দেখে লোকটি বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি বাচ্চাদের চুমু দেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তখন লোকটি বলল, আমার দশটি বাচ্চা আছে, আমি তাদের কাউকে কোন দিনও আদর করে চুমু দেই নি। তার কথা শোনে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ বললেন, “আল্লাহ যদি তোমার অন্তর থেকে দয়াকে ছিনিয়ে নিয়ে থাকেন, তবে আমি কিছুই করতে পারব না।”
হে মুসলিম ভাইয়েরা! তোমরা শুধু মুসাফাহা করবে আর কিছু নয়। কারণ, মুসাফাহা করাই সুন্নত। তোমরা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ঈদের সময়ে তোমাদের ভাইদের সাথে মুসাফাহা করবে। আর যখন দেখবে তোমার কোন ভাই সফর থেকে ফিরে আসছে, তখন তার সাথে মু‘আনাকা-কোলাকুলি করবে।
পুরুষের জন্য সে সব নারীদের সাথে মুসাফাহা করা হারাম, যাদের সাথে দেখা দেয়া হারাম। যেমন, ফুফাতো বোন, খালাতো বোন, মামাতো বোন ইত্যাদি। এ বিষয়টি মা‘কাল ইব্‌ন ইয়াসার ও আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা এর হাদিসে আলোচনা করা হয়েছে। হাদিসটি ইমাম বুখারি ও ইমাম তিরমিযী বর্ণনা করেন-
“আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু’ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, না, আল্লাহর কসম করে বলছি, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ কোনো দিন কোনো মেয়ে লোকের হাত স্পর্শ করেন নি। তবে তিনি মহিলাদের কথা দ্বারা বাইয়াত করতেন। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা’ আরও বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ কখনো কোনো মেয়ে লোকের হাত স্পর্শ করেন নি। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ এর কবজি কখনো কোনো মেয়ে লোকের কবজির সাথে লাগে নি। তিনি যখন মহিলাদের থেকে প্রতিশ্রুতি নিতেন তখন বলতেন, আমি তোমাদের কথা দ্বারা বাইয়াত করে নিলাম”। বর্ণনায় বুখারি ও মুসলিম।
রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ বলেন,
«أني لا أصافح النساء إنما قولي لامرأة واحدة كقولي لمائة امرأة»
আমি নারীদের সাথে মুসাফাহা করব না, একজন নারীকে আমি যে কথা বলব, একশ নারীর জন্যও সে কথাই থাকবে। বর্ণনায় আহমদ, হাদিসটি বিশুদ্ধ।
মহান আল্লাহ যিনি আরশের অধিপতি তার নিকট আমাদের প্রার্থনা তিনি যেন, আমাদেরকে ও তোমাদেরকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করে যারা কথা শ্রবণ করে এবং সুন্দর কথার অনুসরণ করে। নিশ্চয় আল্লাহ্ তা‘আলা মহামান্য পরম করুণাময় ও দয়ালু।
নোট: এ পুস্তিকাটিতে যে সব বিষয়গুলো আলোচনা করা হয়েছে, সবই কুরআন ও হাদিস থেকে নেয়া হয়ে। কুরআনও হাদিসের বাহিলে কোন কিছু বলা হয়নি ।

Related Post