তার নাম সুমাইয়্যা, খাবাতের কন্যা। তিনি ছিলেন মশহুর সাহাবী হযরত আম্মার ইবনে ইয়াসের এর মাতা। তার বংশ ধারা সম্পর্কে এর চেয়ে বেশি কিছু জানা যায় না। তিনি ছিলেন আবূ হোযাইফা ইবনে মুগীরা মাখযুমীর দাসী। আবূ হোযাইফার বন্ধু ইয়াসের ইবনে আমের আবাসীর সাথে তার বিয়ে হয়। হযরত আম্মারের জন্ম হলে আবূ হোযাইফা তাকে আজাদ করে দেন। যারা ইসলামের জন্য সকল দুঃখ-কষ্ট অকাতরে বরণ করে নেন, হযরত সুমাইয়্যা ছিলেন তাদের একজন। ঐতিহাসিক ইবনে আসীর এবং হাফেয ইবনে হাজার বর্ণনা করেন যে, ইসলাম গ্রহণকারীদের মধ্যে হযরত সুমাইয়্যা ছিলেন ৭ম। তিনি ছিলেন প্রথম মহিলা, যাকে সত্যের জন্য নানা প্রকার নির্যাতন সইতে হয়েছে। তিনি অত্যন্ত ধৈর্য ও সংযমের সাথে আল্লাহ্র পথে শহীদ হন। কেবল ইসলাম গ্রহণের কারণে মুশরেকরা তাকে লোহার পোশাক পরিধান করিয়ে মক্কার উত্তপ্ত বালুর মধ্যে দাঁড় করিয়ে রাখতো। কিন্তু তার স্থিরতা ও দৃঢ়তায় এতটুকু দুর্বলতাও দেখা যায়নি। হযরত (সাঃ) সে পথ দিয়ে গমনকালে হযরত আম্মার এবং মাতা-পিতাকে এ অবস্থায় দেখে বলতেন, ধৈর্য ধারণ কর ইয়াসর এর পরিবার, তোমাদের জন্য রয়েছে জান্নাত। তার দিন অতিবাহিত হতো এ অমানুষিক নির্যাতনের মধ্যে দিয়েই, রাত্রে কিছুটা পানি পেতেন। একদিন রাত্রে গৃহে এলে আবূ জেহেল গালী দিতে দিতে তার প্রতি বর্শা নিক্ষেপ করে। এতেই তার মৃত্যু হয়। অসহায় মায়ের করুণ মৃত্যুতে হযরত আম্মার অত্যন্ত ব্যথিত হন। তিনি নবীজীর দরবারে হাযির হয়ে আরয করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! এখন যুলুম-নির্যাতন তো চরমে পৌঁছেছে। তিনি ধৈর্যের দীক্ষা দিয়ে বললেন ঃاللهم لاتعّذب احدا من ال ياسر بالنار. অর্থঃ প্রভু হে! ইয়াসের পরিবারের কাউকে তুমি দোযখের শাস্তি দেবে না। হযরত সুমাইয়্যা ছিলেন অনেক দুর্বল এবং বয়স্কা। অনেক বয়সে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। তার শাহাদাতের পর বদর যুদ্ধে আবূ জেহেল মারা পড়লে হযরত (সাঃ) হযরত আম্মারকে বলেন ঃ قد قتل الله قاتل امك. অর্থঃ আল্লাহ্ তা’আলা তোমার মায়ের হত্যাকারীকে হত্যা করেছেন। হযরত সুমাইয়্যা হিজরতের পূর্বে শহীদ হয়েছেন। তাই তিনি যে ইসলামে প্রথম শহীদ ছিলেন, এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ থাকতে পারে না।