Originally posted 2013-05-19 14:27:05.
অনেকের ধারনার যার যার ধর্ম সেই সেই পালন করলে প্রত্যেক জাতির লোকই পরকালে মুক্তি পাবে। কিন্তু এ ধারণা কি ঠিক? এর সঠিক জবাব পেতে হলে আপনাকে গভীরভাবে চিন্তা করে দেখতে হবে। আল্লাহর নিকট মানুষের পরিচয় কি জাতি হিসেবে না-কি মানুষ হিসেবে? প্রকৃত পক্ষে আল্লাহর নিকট মানুষের পরিচয় মানুষ হিসেবেই? লক্ষ্য করলে দেখা যায়, আল্লাহর প্রত্যেকটি ব্যবস্থা প্রত্যেক মানুষের জন্য একইভাবে কার্যকর রয়েছে। যেমন দেখুন, খাদ্যের ব্যাপারে প্রত্যেকটি খাদ্যবস্তুই প্রত্যেক জাতির লোকদের জন্য একই প্রকার ফল দেয়। ঠিক তেমনই রোগ চিকিৎসার বেলায়ও প্রত্যেক জাতির লোকের একই রোগে একই ঔষধ প্রয়োজন হয়। আমরা এরূপ কখনও দেখি না যে, মুসলমানদের কলেরায় সালাইন, হিন্দুদের কলেরায় কুইনাইন, খ্রীষ্টানদের কলেরায় এটেভীন, বৌদ্ধদের কলেরায় স্যাফাক্রিন, নাস্তিকদের কলেরায় নোভালজীন। এ ধরনের কোন ব্যবস্থা যেমন পার্থিব জীবনে নেই, টিক তেমনই পরকালীন জীবনেও বিভিন্ন জাতির মুক্তির জন্য বিভিন্ন প্রকার কোন ব্যবস্থা নেই। যে কোন জাতির লোকের একই রোগে যেমন একই ঔষধ প্রয়োজন হয়, ঠিক তেমনই পরপারের জীবনেও একই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে প্রত্যেকের মুক্তি আসবে এইটাই যুক্তি। একই রাষ্ট্রে যেমন এমন কোন আইন থাকতে পারে না যে, কেউ চুরি করলে তাকে মুক্তি দেয়া হবে আর কেউ চুরি করলে তাকে শাস্তি দেয়া হবে। ঠিক তেমন ই আল্লাহর আইনও এমন হতে পারে না যে, কেউ দেবতার পূজা করলে তাকে মুক্তি দেয়া হবে এবং কেউ তা করলে তাকে শাস্তি দেয়া হবে বা তাকে জাহান্নামে যেতে হবে। অর্থাৎ যুক্তি হচ্ছে এই যে, একই আল্লাহর আইন তার সৃষ্ট প্রত্যেকটি মানুষের জন্য একই প্রকার হতে হবে। অর্থাৎ পরকালে মুক্তির জন্য হরিদাস বাবুর জন্য যদি দূর্গাপূজার দরকার হয়, তবে আবদুল্লাহ সাহেবের জন্যও তা দরকার হবে এবং দরকার হবে তা পোপ পলের জন্যও। আর যদি ইসলামী বিধান মেনে চলার প্রয়োজন হয় পরকালের মুক্তির জন্য তবে তা প্রয়োজন হবে প্রত্যেকের জন্যই। এটাই যুক্তি, এটাই বিবেকের সাক্ষ্য। এছাড়া বিবেক আরও সাক্ষ্য দেবে যে, এন্ড্রিন যেমন সব জাতের মানুষের জন্যই বিষ ঠিক তেমন ই পরকালের জীবনের জন্য যা বিষবৎ বা যা হবে জাহান্নামের কারণ তা প্রত্যেক জাতির লোকদের জন্যই হবে জাহান্নামের কারণ।
এখন প্রশ্ন তা হলে মুক্তির সঠিক পথ কোনটি? এবার আসুন যুক্তির কষ্টি পাথরে যাচাই করে দেখি যে কোন পথটা আল্লাহর দেয়া। যুক্তিতে যেটাই আল্লাহর দেয়া সঠিক পথ হিসেবে ধরা পড়বে আসুন আমর সেইটাকেই গ্রহণ করার জন্য মনে মনে প্রস্তুত হয়ে যাই। কারণ মৃত্যুর হাত থেকে যখন বাঁচার কোন পথ নেই; মরতে যখন হবেই আর মরার পরে যখন সম্পূর্ণ একা হয়ে যেতে হবে এবং সেখানে যেহেতু কোন গোঁড়ামী কাজে লাগবে না আর যেহেতু সে জীবনের সুখ-শান্তিও আমরা চাই; তাই যার যার নিজের স্বার্থেই আসুন আমরা সব ধরণের গোড়ামী দূর করে নিরপেক্ষ ভাবে যাচাই বাছাই করে দেখি যে, ধর্ম আসলে কোনটা আল্লাহর দেয়া আর কোনটা মানুষের তৈরী।