New Muslims APP

রোযার ত্রিশ শিক্ষা

রোযার ত্রিশ শিক্ষা

রোযার ত্রিশ শিক্ষা

১ম শিক্ষা:
১. তাকওয়া রমযানের মূল শিক্ষা:
ক. রোযা ফরয হওয়ার কারণ: আল্লাহভীতি অর্জন। (সূরা আল বাকারাহ-১৮৩) আল্লাহর ভয় থাকলে গোপনেও পাপ কাজ করা যায় না।
খ. তাকওয়ার দুনিয়াবী ফায়দা:
-সত্য-মিথ্যা চিনতে পারা
-আল্লাহর ভালবাসা লাভ
-আমল কবুল হওয়া ইত্যাদি।
গ. তাকওয়ার পরকালীন শিক্ষা: জান্নাত লাভ ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি।
২. অন্যান্য ধর্মে রোযা: অন্যান্য ধর্মের রোযা মূলত উপবাস; যাকে বলা যেতেপারে না খাওয়া বা নিয়ন্ত্রিত খাওয়া। আত্মিক পরিশুদ্ধির বিষয়টি সেখানে কমপ্রাধান্য পায়। কিন্তু ইসলামে আত্মীক পরিশুদ্ধিই গুরুত্বপূর্ণ; নিছক খাওয়াবর্জন করা নয়।

২য় শিক্ষা:
ক) রমযানের বৈশিষ্ট্য:
১. এমাসে বড় বড় শয়তানকে বেঁধে রাখা হয়
২. ক্ষুধা ও যন্ত্রণায় কাতরদের প্রতি সহানুভূতি সৃষ্টি হয়
৩. সবর ও ধৈর্যের ট্রেনিং পাওয়া যায়
৪. রোযার কারণে দেহের ও সমাজের বিভিন্ন ব্যাধি হ্রাস পায়
৫. ইফতার না করা পর্যন্ত ফেরেশতারা দোয়া করতে থাকে
খ) রোযার ফযীলত:
১. হক আদায় করে রোযা রাখলে গুনাহ মাফ হয়ে যায়
২. ইফতারের সময় দোয়া কবুল হয়
৩. রোযাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহর কাছে খুবই প্রিয়
৪. রমযান মাসে আমলের সওয়াব ১০-৭০০ গুণ। আর রোযার পুরস্কার আল্লাহ নিজে দেবেন।তাছাড়া রোযাদারের সম্মানে বেহেশতে ‘রাইয়ান’ নামক দরজা খোলা রাখা হয়।
গ) চিন্তার বিষয়: হাদীস থেকে জানা যায়, ফরয বাদ দিলে এবং হারাম কাজে জড়িতহলে রোযা রাখা শুধু ক্ষুধা,পিপাসা ও রাত্রি জাগরণের কষ্ট ছাড়া আর কিছুই নয়-অর্থাৎ তখন রোযার দ্বারা সওয়াব আশা করা যায় না।

৩য় শিক্ষা:
অন্তরের রোযা: রোযার জন্য মন-মানসিকতা, চিন্তা-ভাবনা, ধ্যান-ধারণা ওপ্রবৃত্তিকে পবিত্র ও কলুষমুক্ত হতে হবে। সৎ নিয়ত, সৎ চিন্তা, পরিকল্পনা, একনিষ্ঠতা কিংবা আন্তরিকতা হচ্ছে অন্তরের মূলকথা।

৪র্থ শিক্ষা:
পেটের রোযা: নির্দিষ্ট কিছু সময়ে হালাল খাবারই যদি বর্জন করতে হয় তাহলে,হারাম খাওয়ার তো প্রশ্নই আসে না।
হারাম খাবারের উদাহরণ:
ক. নিষিদ্ধ খাবার যেমন: শুকরের গোশত, বিভিন্ন হিংস্র প্রাণী ও পাখি, মদ ইত্যাদি অপবিত্র জিনিস।
খ) হারাম উপায়ে অর্জিত আয়। যেমন:
১. সুদ: সুদ নিষিদ্ধ। সুদ নিষিদ্ধ হওয়ার ক্ষেত্রে মহাজনী সুদ ও ব্যাংকিংসুদের মধ্যে কোন পার্থক্য করা হয়নি। উভয়ই হারাম। এ কারণে সুদী ব্যাংকে টাকারাখা বা চাকরী করাও বৈধ নয়।
২. ঘুষ: ঘুষ দেওয়া বা নেয়া উভয়ই অপরাধ। তবে যখন ন্যায়সঙ্গত ও বৈধ অধিকারটিওঘুষ ছাড়া আদায় হয় না তখন ঘুষ দেয়া যেতে পারে কিন্তু নেয়াটা সর্বাবস্থায়ইপরিত্যাজ্য- এটাই চিন্তাবিদদের অভিমত।
৩. অন্যায় পথে উপার্জন: যেমন- অশ্লীলতা বৃদ্ধিকারী পণ্য বিক্রয়।
৪. জুলুম বা অত্যাচার: যেমন- চাঁদাবাজি, ছিনতাই ইত্যাদি।
হারাম সম্পদ দিয়ে কেনা খাদ্যও হারাম। আর হারাম খাদ্য দিয়ে যে রক্তবিন্দু তৈরি হবে তার স্থান হচ্ছে জাহান্নাম।

৫ম শিক্ষা:
জিহ্বার রোযা: জিহ্বার ১৫টি দোষ বর্জন করতে হবে। যথা

১.মিথ্যা বলা ২.ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা ৩. অশ্লীল বা খারাপ কথা বলা ৪.গালি দেয়া ৫. নিন্দা করা ৬. অপবাদ দেয়া ৭. চোখলখুরী করা ৮. বিনা প্রয়োজনে গোপন কথা ফাঁস করা ৯. মুনাফিকীকরা বা দুই মুখে কথা বলা ১০. ঝগড়া-ঝাটি করা ১১. হিংসা করা ১২. বেহুদা ওঅতিরিক্ত কথা বলা ১৩. মন্দ জিনিস নিয়ে আলাপ করায় আনন্দ লাভ করা ১৪. অভিশাপদেয়া ১৫. সামনা-সামনি প্রশংসা করা।
যে ব্যক্তি জিহ্বা ও লজ্জাস্থানের হেফাজত করতে পারবে কাল কিয়ামাতের দিন রাসূল (সাঃ) তার জান্নাতের জামিনদার হবেন।

৬ষ্ঠ শিক্ষা:
কানের রোযা: (১) বাজে গান, বাজনা, মন্দ ও অশ্লীল কথা না শোনাই হলো কানেররোযা। লুকিয়ে লুকিয়ে অন্যের গোপন কথা শুনতে চেষ্টা করাও কানের রোযা নারাখার শামিল। (২) কানের খাদ্য হলো আল্লাহর যিকর, উপকারী জ্ঞান, ভাল ওয়াজনসীহত, সুন্দর কথা, ইসলামী কবিতা, গান ও নাটক ইত্যাদি। এগুলোর মাধ্যমেইসঠিক রোযা রাখা সম্ভব। (৩) খারাপ কথা শোনার চেয়ে কিছু না শোনা ভাল। আর কিছুনা শোনার চেয়ে উত্তম কথা শোনা ভাল।

৭ম শিক্ষা:
চোখের রোযা: চোখের রোযার অর্থ হলো নিষিদ্ধ বস্তু বা বিষয়ের দিকে না তাকানো।চোখের হেফাজত খুবই গুরুত্বপূর্ণ; কারণ, চোখের হেফাজতের সাথে সাথে জিহ্বা ওলজ্জাস্থানেরও হেফাজতও অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত।
উল্লেখ্য: বাস্তবে যা দেখা বা শোনা বৈধ টিভি বা কম্পিউটারের পর্দায়ও তাদেখা বা শোনা বৈধ। বাস্তবে যা দেখা বা শোনা অবৈধ টিভি বা কম্পিউটারেরপর্দায়ও তা দেখা বা শোনা অবৈধ।

৮ম শিক্ষা:
রোযা রাখুন সুস্থ থাকুন: আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রোযা রাখলে নিম্নোক্ত উপকার হয়- ১. জৈব বিষ (Toxin) ধ্বংসহয় ২. শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে ৩. ওজন ও মেদভুঁড়ি কমে (অর্ধ সাপ্তাহিকরোযা ও আইয়ামে বীযের রোযার তাৎপর্য: সপ্তাহে ২টি অর্থাৎ সোম ও বৃহস্পতিবারও মাসে ৩টি অর্থাৎ চন্দ্রমাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে নফল রোযা রাখা অত্যন্তউপকারী) ৪. হজম ও পরিপাক যন্ত্রগুলো বিশ্রাম লাভ করে এবং সঞ্জীবনী শক্তিলাভ করে ৫. কিডনীতে পাথর সৃষ্টিতে বাধা দেয় ৬. চর্মরোগ থেকে মুক্তি পাওয়াযায় ৭. বাত রোগের চিকিৎসা হয় ৮. রক্তে কোলেষ্টেরল কমায় ৯. রক্ত স্বল্পতা ওরক্তশূণ্যতা দূর হয় ১০. কঠোর স্নায়ু ব্যাথার উপশম হয় ১১. ডায়াবেটিস রোগনিয়ন্ত্রণে আসে ১২. রোযা সকল Infection এবং টিউমারের জন্য প্রতিরোধক ১৩. হায়াত বাড়ে ও বার্ধক্য দেরিতে আসে ১৪. পুরুষ হরমোন বৃদ্ধি পায় ১৫. দাঁত ওমাড়ির উপকার হয় ১৬. পেপটিক আলসার হ্রাস পায় ১৭. তারাবীর নামায মেরুদণ্ডের flexibility বাড়ায় ১৮. মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হয় ১৯. যৌনরোগ থেকে বাঁচাযায় ২০. স্নায়ুতন্ত্র শান্ত থাকে ইত্যাদি।

৯ম শিক্ষা:
রমযানে রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর কিছু চরিত্র ও অভ্যাস: ১. রাসূল (সাঃ) এ মাসেসর্বাধিক কুরআন অধ্যয়ন করতেন। সাহাবায়ে কেরামও বুঝে-শুনেই কুরআন তিলাওয়াতকরেছেন। আমাদেরও উচিত বুঝে-শুনে কুরআন তিলাওয়াত করা, শুধু Reading নয়।সেজন্য বোধগম্য ভাষায় কুরআনের তাফসীর পড়া উচিত। ২. দিনে দাওয়াত ও তাবলীগ, ওয়াজ নসীহত, শিক্ষাদান ও ফতোয়া (বা আইন) এর কাজে ব্যস্ত থাকতেন। লোকদেরকেসৎ উপদেশ দেয়া এবং তাদের পরিশুদ্ধির জন্য সময় ব্যয় করতেন। এছাড়া আল্লাহরদ্বীন কায়েম করার জন্য জিহাদ ছিল তাঁর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। ৩. এ মাসেরাসূল (সাঃ) খুব বেশি দান করতেন ৪. রাতকে তিনি নামাযসহ অন্যান্য ইবাদাতেরজন্য নির্দিষ্ট করতেন ৫. রমযানে দূরবর্তী স্থানে সফর করলে তিনি রোযা ভেঙ্গেফেলতেন ৬. তিনি রমযানের শেষ দশকে ইতিকাফ করেছেন ৭. ঈদের দিন গরীব-দুঃখীর খুশিনিশ্চিত করার জন্য তিনি যাকাতুল ফিতর আদায় করতেন।..

১০ম শিক্ষা:
তারাবীর নামায: রাসূলুল্লাহ (সাঃ) নিজে তারাবী পড়েছেন এবং অন্যদেরকেও পড়তে উৎসাহিত করেছেন।
তারাবীর অর্থ: তারাবী শব্দের অর্থ হচ্ছে বিশ্রাম করা। প্রতি চার রাকাতদীর্ঘ নামাযের পর বিশ্রাম নিতে হয় বলে একে বিশ্রামের নামায বলে।
রাকাত সংখ্যা: তারাবীর নামাযের রাকাত সংখ্যার ব্যাপারে সর্বনিম্ন ৮ রাকাত থেকে সর্বোচ্চ ৩৬ রাকাত পর্যন্ত বিভিন্ন মত রয়েছে। তবে ৮ রাকাতের মতটিবেশ শক্ত। হযরত উমর (রা.) ৮ রাকাত পড়তেন।  তারাবীর নামাযের রাকাত সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক করা ঠিক নয়। কে বেশি রাকাত পড়ল এটির চেয়ে মুখ্য বিষয় হলো কার আন্তরিকতা বেশি।
খতমে তারাবী না সূরা তারাবী: সাধারণভাবে,সূরা তারাবীর চেয়ে খতমে তারাবী পড়াভাল। তবে তিলাওয়াত হতে হবে ধীরে ধীরে; তারতীলের সাথে। নতুবা খতমে তারাবীরনামে গড় গড় করে অতি দ্রুত কুরআর পড়ার চেয়ে ধীরে ধীরে পড়ে সূরা তারাবী পড়াভাল।

১১ তম শিক্ষা:
সেহরী: শেষ রাতের সেহরী খাওয়ার মধ্যে বরকত আছে। (বুখারী ও মুসলিম) আলসেমীর কারণে তা পরিত্যাগ করা উচিত নয়।
সেহরী খাওয়ার সময়: আজকাল বিভিন্ন ক্যালেণ্ডারের মাধ্যমে সহজেই সেহরী খাওয়ার শেষ সময় জানা যায়। সতর্কতার জন্য সেই সময়ের আগেই খাওয়া শেষ করা ভাল। তবেঅনেক লোক সময়ের ব্যাপারে সতর্কতার নামে মাত্রাতিরিক্ত কড়াকড়ি শুরু করেছে।রাসূল (সাঃ) বলেছেন, “যদি তোমাদের কারোর সেহরী খাওয়ার সময় আজানের আওয়াজকানে আসে,সে যেন আহার ছেড়ে না দেয় এবং পেট ভরে পানাহার করে নেয়।” (আবুদাউদ,আবু হুরায়রা রা.)

১২ নং শিক্ষা:
ইফতার: সূর্যাস্তের পর পরই ইফতার করা সুন্নাত। ইফতারে দেরি না করা উত্তম।
ইফতারের চিকিৎসাগত দিক: দ্রুত ইফতার শরীরের ফিজিওলজিক্যাল ও মনস্তাত্বিকশক্তি বৃদ্ধি করে এবং হজমশক্তির পরিকল্পিত উন্নয়নে সহায়তা করে। ইফতারে বেশিদেরি করলে অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়ার ঝুঁকি থাকে।
ইফতারের খাবার: মহানবী (সাঃ) বলেছেন, “তোমরা খেজুর দিয়ে ইফতার করো,কেননাতাতে বরকত আছে। যদি খেজুর না থাকে তাহলে পানি দিয়ে ইফতার করো।”..
রাসূল (সাঃ)-এর ইফতারীর বৈজ্ঞানিক রহস্য: সুগারসমৃদ্ধ খাবার (যেমন খেজুর)শরীরে অপেক্ষাকৃত দ্রুত মিশে যায়।.. আর পানিও তেমনি খুবই উপকারী। তবে,পানিযদি ফলের রস কিংবা শরবত আকারে হয় সেটাও ভাল।
ইফতারে অপচয়: রাসূল (সাঃ) বলেছেন: তিন ব্যক্তির খাবারের কোন হিসেব নেয়া হবেনা, ইনশাআল্লাহ, যদি তা হালাল ও পবিত্র হয়। তারা হচ্ছেন, ১. রোযাদার ২.সেহরীর খাবার গ্রহণকারী এবং ৩.আল্লাহর পথের মুজাহিদ। (বাযযার,আব্দুল্লাহবিন আব্বাস রা
ইসলামে সর্বাবস্থায় অপচয় হারাম। চাই তা ইফতার হোক, বিয়ে হোক বা মেহমানদারীহোক। অনেকে রমযান মাসে বেশি ঘুমায়। এটাও নিঃসন্দেহে সময়ের অপচয়।
অন্যকে ইফতার করানোর ফযীলত: রাসূল (সাঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি কোন রোযাদারকেইফতার করায় তার জন্য রয়েছে ঐ রোযাদারের সমান সওয়াব। তবে ঐ রোযাদারের সওয়াবথেকে কোন কিছু ঘাটতি হবে না।” (তিরমিযী)
ইফতারের দোয়া: “হে আল্লাহ! আমি কেবলমাত্র তোমার জন্যই রোযা রেখেছি এবং কেবলমাত্র তোমার প্রদত্ত রিযক দ্বারাই ইফতার করছি।”(আবু দাউদ)
ইফতারের পরের দোয়া: পিপাসা দূর হয়েছে, খাদ্যনালী সিক্ত হয়েছে এবং পারিশ্রমিক অর্জিত হয়েছে, ইনশাআল্লাহ। (আবু দাউদ)

১৩ নং শিক্ষা:
দোয়া: দোয়া অত্যন্ত উত্তম একটি ইবাদাত।
দোয়া কবুলের পথে বাধাসমূহ:
ক. ফরয-ওয়াজিব লংঘন করা এবং হারাম কাজ করা
খ. হারাম খাবার খাওয়া ও হারাম সম্পদ দিয়ে কেনা পোশাক পরিধান করা
গ. শিরক ও বিদআতে জড়িত হওয়া
ঘ. গাফেল ও উদাস মনে দোয়া করা
ঙ. সৎ কাজের আদেশ না করা ও অসৎ কাজে বাধা না দেওয়া ইত্যাদি।
বিলম্বে দোয়া কবুল: কোন কোন দোয়া দ্রুত কবুল হয়,কোনটি আবার দেরিতে কবুল হয়।আর কোন কোন দোয়া এ দুনিয়ায় কবুল হয় না এবং এর ফল আখিরাতে পাওয়া যায়। তাই, কোন দোয়াই প্রকৃতপক্ষে ফলহীন নয়। মানুষ চায় দোয়া সঙ্গে সঙ্গে কবুল হোক।কিন্তু আখিরাতের কঠিন হিসেবের দিনে মনে হবে, দুনিয়াতে যদি একটি দোয়াও কবুলনা হতো তাহলেই হয়ত এই কঠিন হিসেবের দিনে তা কাজে লাগতো।
দোয়ার আদব: ক.দোয়ার শুরুতে,মাঝে ও শেষে আল্লাহর প্রশংসা করা খ.রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর উপর দরূদ ও সালাম পাঠ করা গ.দোয়া কবুলের জন্য অধিক সম্ভাবনাময়সময়ে দোয়া করা ঘ.সুনির্দিষ্ট বিষয়ে,কিবলামুখী হয়ে ও পবিত্রতা অর্জন করেদোয়া করা ঙ.আল্লাহর সুন্দর সুন্দর নাম পাঠ করা চ.অনুনয় বিনয় সহকারে দোয়াকরা ছ.দুহাত উপরে তুলে দোয়া করা জ.নিম্ন স্বরে দোয়া করা ঝ.দোয়া ছন্দমিলানোর চেষ্টা না করা ঞ.আগ্রহ ও ভয় সহকারে দোয়া করা ট.অধিক উত্তম দোয়ারশব্দাবলী তিনবার উচ্চারণ করা ঠ.আল্লাহর যিকর দ্বারা দোয়া শুরু করা এবংপ্রথমেই কিছু না চাওয়া ড.তাওবা করা ইত্যাদি।
দোয়ার উপকারিতা: (ক) এটাই ইবাদাতের মূল লক্ষ্য (খ) এতে সওয়াব ও কল্যাণ জমা হয় (গ) বান্দা শিরক থেকে মুক্ত হয়।
১৪ নং শিক্ষা:
কদরের রাত: কদর শব্দের দুইটি অর্থ আছে। একটি হচ্ছে ভাগ্য বা তাকদীর।দ্বিতীয় অর্থ হচ্ছে, মর্যাদা ও সম্মানের রাত। এ রাতের ইবাদাতকে হাজার (অগণিত) মাসের চেয়েও উত্তম বলা হয়েছে।
কদর রাতের ফযীলত: রাসূল (সাঃ) বলেছেন, “যে কদরের রাতে ঈমান ও সওয়াবের নিয়তেনামায পড়ে,তার অতীতের সকল গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়।” (বুখারী ও মুসলিম,আবুহুরায়রা রাকদরের রাত লাভ করার জন্য মহানবী (সাঃ) কঠোর পরিশ্রম করেছেন এবং এক মিনিট সময়ও যেন নষ্ট না হয় সে ব্যাপারে অত্যন্ত সতর্ক ছিলেন।
কদরের রাতের করণীয়: সকল ফরয ও ওয়াজিব অবশ্যই পালন করতে হবে। অন্যান্যসুন্নাত, নফল ও মুস্তাহাবগুলোও আমল করা প্রয়োজন। বিশেষ করে জামায়াতে নামাযেযত্নবান থাকা প্রয়োজন। পরিবার-পরিজনকেও (ইবাদাতের জন্য) রাতে জাগানোপ্রয়োজন। এ রাতে আল্লাহর ক্ষমা ও দয়া পাবার জন্য চার শ্রেণীর অন্তর্ভুক্তহওয়া যাবে না। যথা: ১. মদ পানকারী ২. মাতা-পিতার সাথে সম্পর্ক ছিন্নকারী ৩. হিংসুক-নিন্দুক এবং ৪. আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী।
সময় ও দেশ ভেদে কদরের রাত্রি: বিভিন্ন দেশে ভৌগলিক পার্থক্যের কারণেলাইলাতুল কদর বিভিন্ন সময়ে উপনীত হতে পারে এবং মুসলমানরা নির্দ্বিধায় এরফযীলত ও মর্যাদা লাভ করতে পারেন।
কদরের রাত নির্ধারণ: এ রাতটি নির্ধারিত করে দেয়া হয়নি। তবে এ রাত সন্ধানেরমযান মাসের শেষ দশকের বিজোর রাত্রিগুলোকে ভালভাবে কাজে লাগানোর ব্যাপারেশক্ত অভিমত রয়েছে।

১৫ নং শিক্ষা:
ইতিকাফ: ইতিকাফের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে,কোন জিনিসকে আঁকড়ে ধরা এবং এর উপরনিজ সত্তা ও আত্মাকে আটকে রাখা। আর পারিভাষিক অর্থ হচ্ছে,আল্লাহর নৈকট্যলাভের উদ্দেশ্যে কোন ব্যক্তির মসজিদে বাস ও অবস্থান করা। সকল সময় ইতিকাফজায়েয,তবে রমযান মাসে উত্তম এবং রমযান মাসের শেষ দশকে কদরের উদ্দেশ্যে তাসর্বোত্তম।
ইতিকাফের হিকমত: ইতিকাফের উদ্দেশ্য হলো সৃষ্টির সাথে মূল সম্পর্ক ছিন্ন করা এবং স্রষ্টার সাথে সম্পর্ক কায়েম করা।
ইতিকাফের ফযীলত: রাসূল (সাঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি রমযানে ১০ দিন ইতিকাফ করে,তা দুই হজ্জ ও দুই উমরার সওয়াবের সমান।” (বায়হাকী)
ইতিকাফের হুকুম: ইতিকাফ সুন্নাত।
ইতিকাফের শর্ত: ১.মুসলমান হওয়া ২.পাগল না হওয়া ৩.বালেগ হওয়া ৪.নিয়ত করা৫.ফরজ গোসলসহ হায়েজ-নিফাস থেকে পবিত্র হওয়া ৬.মসজিদে ইতিকাফ করা (মহিলারাঘরেও করতে পারে) ৭.রোযা রাখা (রোযা রাখার এ শর্তটি ইতিকাফের ব্যাপারেপ্রযোজ্য কিনা সে বিষয়ে মতভেদ আছে)
ইতিকাফের মুস্তাহাব বিষয়: অর্থ ও ব্যাখ্যাসহ তাফসীর পড়া, দ্বীনি ইলম অর্জন করা, মসজিদের একটি অংশে অবস্থান করা ইত্যাদি।
ইতিকাফকারীর জন্য যা যাকরা জায়েয: খুব বেশি প্রয়োজন হলে মসজিদের বাইরেযাওয়া (আবু দাউদ), পানাহার ও ঘুমানো, প্রয়োজনীয় (জায়েয) কথা বলা, ভাল কাপড়পরা, সুগন্ধী মাখা ইত্যাদি।
ইতিকাফকারীর জন্য যা করা মাকরুহ: ১.বেচাকেনা ২.যে কথায় গুনাহ হয় ৩.চুপ থাকাকে ইবাদাত মনে করে কোন কথা না বলা ইত্যাদি।
যেসব কাজ দ্বারা ইতিকাফ ভঙ্গ হয়: ১.বিনা কাজে স্বেচ্ছায় অল্প সময়ের জন্যহলেও মসজিদ থেকে বের হওয়া ২.সহবাস করা ৩.পাগল হওয়া ৪.স্ত্রীলোকেরহায়েজ-নিফাস হওয়া ৫.দ্বীনত্যাগী (মুর্তাদ) হওয়া ইত্যাদি।
ইতিকাফে প্রবেশ ও তা শেষ হওয়ার সময়কাল: উদাহরণ- কেউ রমযানের শেষ ১০ দিন ইতিকাফ করতে চাইলে সূর্যাস্তের আগে মসজিদে প্রবেশ করবে এবং রমযানের সবশেষদিন সূর্যাস্তের পর মসজিদ থেকে বের হয়ে আসবে।
বিবিধ বিষয়: মহিলাদের ইতিকাফের বিষয়ে কেউ কেউ বলেছেন, ঘরে ইতিকাফ করাইউত্তম। আবার কেউ কেউ বলেছেন, মসজিদে নিরাপদ হলে সেখানেও ইতিকাফ করা যায়।

১৬ নং শিক্ষা:
রমযান কুরআনের মাস: আল্লাহ বলেন, “রমযান মাসে কুরআন নাযিল করা হয়েছে। এতেরয়েছে মানুষের জন্য হিদায়াত এবং পথ চলার নির্দেশিকা ও সত্য-মিথ্যা পার্থক্যকরার সুস্পষ্ট দলীল প্রমাণ।”(সূরা বাকারাহ-১৮৫) “তারা কি কুরআন নিয়েচিন্তা-গবেষণা করে না,নাকি তাদের অন্তরে তালা লেগে আছে?” (সূরামুহাম্মাদ-২৪)
যেভাবে কুরআন পড়া উচিত: কুরআন বুঝে-শুনে পড়া দরকার। কুরআন খুব ভালো করেবুঝতে হলে আরবি ভাষা শেখা প্রয়োজন। আরবি শেখা না থাকলেও কুরআন বুঝে পড়ারচেষ্টা করা উচিত। বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত তাফসীরগুলো এক্ষেত্রে সহায়ক। কুরআনঅধ্যয়নের সময় করণীয় কয়েকটি কাজ নিম্নরূপ-ক.স্থান ও শরীরের পবিত্রতাসহআন্তরিকতা ও বিসমিল্লাহ সহ পড়া খ.মনকে চিন্তামুক্ত করা এবং কেবলমাত্রকুরআনের প্রতি মনোযোগী হওয়া গ.কুরআনের আয়াতগুলোর গভীর অর্থ বুঝার আপ্রাণচেষ্টা করা ঘ.জীবনের উপর আয়াতগুলোর বাস্তব প্রভাব কি তা জানা ঙ.কুরআনেরআয়াতের শিক্ষা অনুযায়ী নিজের করণীয় স্থির করা ও তা সম্পাদিত করতেসংকল্পবদ্ধ হওয়া ইত্যাদি।

১৭ নং শিক্ষা:
রমযান তাওবা-ইস্তিগফারের মাস: তাওবার পর্যায়গুলো হলো- ১. গুনাহর স্বীকৃতি ২. লজ্জিত হওয়া ৩. মাফ চাওয়া ৪. পুনরায় সেই গুনাহ না করার ওয়াদা করা ৫. সকলপর্যায়ে পূর্ণ আন্তরিক হওয়া ৬. ওয়াদার উপর টিকে থাকার জন্য আল্লাহর সাহায্যকামনা করা ৭. গুনাহের সাথে কারোর অধিকার জড়িত থাকলে তার অধিকার ফিরিয়ে দেয়াইত্যাদি। তাই,খালেসভাবে তাওবার পাশাপাশি প্রতিনিয়ত আল্লাহর কাছে মাফ চাওয়াউচিত।
গুনাহও কল্যাণকর হতে পারে যদি নেক কাজ করা হয়: গুনাহ ও ত্রুটি তখন কল্যাণকরহবে,যখন তা মানুষকে অধিক অধিক সওয়াবের কাজ এবং তাওবা-ইস্তিগফারের জন্যউদ্বুদ্ধ করে। এজন্য কোন গুনাহ সংঘটিত হয়ে গেলে তাওবার সাথে সাথে আরো কিছুনেক কাজ করা কর্তব্য।
মানুষ গুনাহ না করলে আল্লাহ অন্য জাতি সৃষ্টি করবেন: আমাদের ঈমান ও তাকওয়াযত বেশিই হোক না কেন, গুনাহ থেকে বাঁচা সম্ভব হয় না। রাসূল (সাঃ) বলেন, “তোমরা গুনাহ না করলে আল্লাহ তোমাদের পরিবর্তে অন্য একটি সম্প্রদায় সৃষ্টিকরবেন,যারা গুনাহ করে আল্লাহর কাছে মাফ চাইবে এবং তিনি তাদেরকে মাফ করবেন।”

১৮ নং শিক্ষা:
রমযান ইখলাসের মাস: নেক কাজ কবুল হওয়ার শর্ত হলো,ইখলাস। ইখলাস অর্থহচ্ছে,একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি ও পরকালের মুক্তির উদ্দেশ্যে নেক কাজ করা।সাময়িক ও জাগতিক স্বার্থে কিংবা কোন ব্যক্তি,গোষ্ঠী, দল, সম্প্রদায়, সংস্থা ও কোন নেক লোকের সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে কোন নেক কাজ করাইখলাসের পরিপন্থী।

১৯ নং শিক্ষা:
রমযান দয়ার মাস: এ মাসে উপবাসরত মুসলমানরা অভাবী লোকদের দুঃখ সরাসরি অনুভবকরতে পারে। তাই রোযাদারকে হতে হবে সর্বাধিক দয়ালু। মানুষের অন্তরে দয়া নাথাকার কারণ হলো- ক.অতিরিক্ত গুনাহ ও নাফরমানীর কারণে অন্তরে মরীচা পড়াখ.অতিরিক্ত ভোগ-বিলাসের কারণে অন্তর শক্ত হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।
রমযান দান-সদকার মাস: নবী করীম (সাঃ) রমযানে সবচেয়ে বেশি দান করতেন।দান-সদকার মধ্যে সদকায়ে জারিয়াহ উত্তম। সদকায়ে জারিয়া হলো যার ফলাফল দীর্ঘসময় পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। সদকায়ে জারিয়ার সওয়াব মুমিনগণ মৃত্যুর পরও পেতেথাকে। দান করার বড় লাভ হলো এর দ্বারা গুনাহ মাফ হয়,আল্লাহর কাছে মর্যাদাবাড়ে এবং এর দ্বারা বরকত নাযিল হয়। তাছাড়া দান করলে হাশরের ময়দানে ছায়া লাভকরার আশা করা যায়।

২০ নং শিক্ষা:
রমযান ধৈর্য ও সংগ্রামের মাস: যার ধৈর্য বেশি,তার পারিবারিক ও সামাজিকজীবনে শান্তি বেশি। বিশেষ করে আল্লাহর পথে আহ্বান (দাওয়াতে দ্বীন) ওআল্লাহর পথে সংগ্রাম (জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ) এর কষ্ট সহ্য করার জন্যধৈর্যের ভীষণ প্রয়োজন। রমযান মাসের দীর্ঘ প্রশিক্ষণ দ্বারা সে ধৈর্য ও সংযমসৃষ্টি হতে পারে।

২১ নং শিক্ষা:
রমযান কঠোর শ্রম ও প্রশিক্ষণের মাস: লেখাপড়া, রুজী-রোজগার, কৃষিকাজ, চাকরী, ব্যবসা-বাণিজ্য, সৎকাজে আদেশ ও মন্দ কাজের প্রতিরোধ, দাওয়াতে দ্বীন, দ্বীনি আন্দোলনসহ সকল ইসলামী দায়িত্ব পালনে কঠোর পরিশ্রমের প্রয়োজন। রোযাপরিশ্রম করার এই ট্রেনিং দেয়। ভোরে সেহরী, দিনে পাঁচবার নামায, অতঃপররুজী-রোজগার/পড়াশুনা, বিভিন্ন ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও দ্বীনি দায়িত্ব পালনশেষে সন্ধ্যায় ইফতার। ঠিকমত ইফতার করতে না করতেই মাগরিবের নামায পড়া লাগে।কিছুক্ষণ পরই ইশার নামায। ইশার পরই আবার দীর্ঘ তারাবীর নামায। পরে আবার সেইমধ্যরাতের সেহরী খেতে ওঠা। এভাবে কাটে কঠোর পরিশ্রমের দীর্ঘ এক মাস; যাধৈর্য অবলম্বনের অব্যর্থ ট্রেনিং।

২২ নং শিক্ষা:
রমযান দাওয়াতে দ্বীনের মাস: দাওয়াত দিতে হবে অমুসলিম ও মুসলিম সকল মানুষকে।দাওয়াত দিতে হবে কুরআনের দিকে। পূর্ণাঙ্গ ইসলামের দাওয়াত দিতে হবে।সর্বাগ্রে মৌলিক বিষয়ের দিকে দাওয়াত দিতে হবে।
দাওয়াতের শর্ত: ১. ইখলাস (শুধু আল্লাহকে খুশি করার ইচ্ছা) সম্পন্ন হওয়া ২. যেবিষয়ে দাওয়াত দেওয়া হবে সে বিষয়ে আগে নিজে সাধ্যমতো আমল করা ৩. নম্র ভাবপ্রকাশ করে দাওয়াত দেয়া ৪. পর্যায়ক্রমে দাওয়াত দান (প্রথমে বেশিগুরুত্বপূর্ণ ও পরে কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের দাওয়াত দিতে হবে) ৫. কৌশলঅবলম্বন করা (স্থান, কাল, পাত্র, ব্যক্তির বিশ্বাস বা মন-মানসিকতা অনুযায়ীদাওয়াত দেয়া) ৬. সুন্দরভাবে বক্তব্য উপস্থাপন করা ৭. তথ্য ও যুক্তি সহকারেইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব ও অন্য মতবাদের অসারতা প্রমাণ করা ৮. কট্টরবিরোধীদেরক্ষেত্রে ভিন্ন পন্থা অবলম্বন (তাদের পেছনে বেশি কাঠ-খড় পোড়ানো উচিত নয়।বরং এ সময়টা অন্য সত্য-সন্ধানী লোকের পেছনে ব্যয় করলে লাভ বেশি।.. তবে কোনসময় যদি বিরুদ্ধবাদী লোকটিকে কোন ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করা যায়, তাহলে সেআহ্বানকারীর খুব নিকটতর হবে বলে আশা করা যায়।)
দাওয়াতের সম্ভাব্য পদ্ধতি: ১. কাউকে ব্যক্তিগতভাবে দাওয়াত দেয়া: তাকেকালিমার মূল অর্থ ও তাৎপর্য বুঝানো.. ২. গ্রুপভিত্তিক দাওয়াতী কাজ করা: কখনওকখনও এটি অধিক ফলদায়ক হয়ে থাকে। ৩.সভা, বৈঠক ও জনসভার মাধ্যমে দাওয়াত: আমজনতার মাঝে এ পদ্ধতিটি বেশি উপযোগী ৪. শিক্ষক সহজেই ছাত্রকে দাওয়াত দিতেপারে ৫. দাওয়াতী চিঠি, বই-প্রকাশ, পত্র-পত্রিকা, ক্যাসেট, সিডি ইত্যাদিবিতরণের মাধ্যমে দাওয়াত..
দাওয়াতের ফলাফল/ উপকারিতা: ১.দাওয়াত গ্রহণকারী ব্যক্তিও দাওয়াতপ্রদানকারীতে পরিণত হয় ২.দাওয়াত দানকারীর মধ্যে নেতৃত্বের যোগ্যতা সৃষ্টিহয় ৩. নবীদের দাওয়াতী উত্তরাধিকার লাভ করা যায় ৪.সাগরের মাছসহ অন্যান্যসৃষ্টি গুনাহ মাফের জন্য দোয়া করে ৫. দ্বিগুন সওয়াব পাওয়া যায়: যাকে দাওয়াতদেয়া হয়, তার আমলেরও সওয়াব পাওয়া যায়।

২৩ নং শিক্ষা:
রমযান সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ প্রতিরোধের মাস: কথায় আছে, “চোরে না শোনেধর্মের কাহিনী”। তাই শুধু বয়ান বা মিষ্টি কথা দিয়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রেইঅপশক্তির প্রতিরোধ হয় না। এর জন্য শক্তি (ইসলামের বিজয়) প্রয়োজন।
সামষ্টিক পর্যায়ে যারা সৎ কাজে আদেশ ও অসৎ কাজে বাধাদানের দায়িত্ব পালনকরবে তারা হলো ১.পরিবার প্রধান ২.মসজিদের ইমাম ৩. কোন সামাজিক প্রতিষ্ঠানেরপ্রধান ৪. কোন কমিটি বা সংস্থার প্রধান, প্রেসিডেন্ট ও চেয়ারম্যান৫.অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান ৬.কোন রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান ৭.সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান এবং বিভিন্ন বিভাগের প্রশাসনিক প্রধান ওমন্ত্রীবর্গ ৮.সকল সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের উপদেষ্টাবৃন্দ। (সাধারণ জনতা; যারা নেতৃত্বস্থানীয় নয়, তাদের দায়িত্ব হলো নিজে ইসলামের পথে চলা ওনেতৃত্বস্থানীয় লোকদের ইসলামসম্মত নির্দেশসমূহ মেনে চলা।)
সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের প্রতিরোধ না করার পরিণাম: রাসূলুল্লাহ (সাঃ)বলেছেন, আমার প্রাণ যার হাতে সেই আল্লাহর শপথ করে বলছি, হয় তোমরা সৎ কাজেআদেশ ও অসৎ কাজে প্রতিরোধ করবে, না হয় শীঘ্রই আল্লাহ তোমাদের উপর নিজ আযাবপাঠাবেন। এরপর তোমরা তার কাছে দোয়া করবে কিন্তু তিনি তোমাদের দোয়া কবুলকরবেন না। (তিরমিযী, হুজায়ফা বিন ইয়ামান রা
সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের প্রতিরোধের ফযীলত: কুরআন থেকে জানা যায় এ কাজটিইমুসলমানদের শ্রেষ্ঠত্বের কারণ। আর হাদীস থেকে জানা যায়, দান না করেও একাজের দ্বারা দান-সদকার মতো বিশাল সওয়াব লাভ করা যায়।

২৪ নং শিক্ষা:
রমযান জিহাদ ও বিজয়ের মাস: কুরআনের আদেশ-নিষেধ তথা ইসলামী জীবন-ব্যবস্থাকায়েমের জন্য এই রমযানেই গুরুত্বপূর্ণ জিহাদগুলো অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই মাসেএমন একটি জিহাদও নেই যাতে মুসলমানরা পরাজিত হয়েছিল। রাসূল (সাঃ)-এরজীবদ্দশাতেই রমযানে দুটো গুরুত্বপূর্ণ জিহাদ সংঘটিত হয়। প্রথমটি বদরেরযুদ্ধ ও দ্বিতীয়টি মক্কা বিজয়।
রমযান ও মুসলিম জাহানের সংকট: আজ মুসলমানগণ নানা সমস্যার সম্মুখীন।সমস্যাগুলো আদর্শিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও ভৌগোলিক।মুসলমানদের মগজে ইসলামী অর্থনীতির পরিবর্তে সমাজতান্ত্রিক তথা কুফরীঅর্থনীতি ঢুকে পড়েছে। অর্থ আয়-ব্যয়ে ইসলামের বিধি-নিষেধ পরিত্যাগ করে আজতথাকথিত মুসলমানরা পুঁজিবাদের স্বেচ্ছাচারিতায় অভ্যস্ত। ধর্মনিরপেক্ষতারনামে রাষ্ট্রব্যবস্থা থেকে কুরআন-সুন্নাহর আইনকে নির্বাসনে পাঠিয়ে একেমসজিদ-মাদ্রাসায় তালাবদ্ধ করে বৃহত্তর পরিসরে আল্লাহ ও রাসূলের উপর ১৪৪ধারা জারি করেও মুসলমানরা নিজেদের ১০০% মুসলমান (আত্মসমর্পনকারী) ভাবছে। ধর্মনিরপেক্ষতার চেয়েও মারাত্মক হলো মুসলমানদের মধ্যে বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ। অপসংস্কৃতি ছড়াচ্ছে মূলত গান-বাদ্য, অশ্লীল ছবি, পত্র-পত্রিকা, প্রেম কাহিনী, নভেল, নাটক, সিনেমা, রেডিও, টেলিভিশন এবং বিকৃতবুদ্ধিজীবীদের দ্বারা। তাছাড়া বিশ্বব্যাপী ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধেভৌগোলিক আগ্রাসনও মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। রমযানের রহমত, মাগফিরাত ওনাজাত পেতে হলে এগুলো বন্ধ করতেই হবে।

২৫ নং শিক্ষা:
রমযান ও নারী: (১) নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই পর্দা ফরয। কিন্তু পর্দারবিষষগুলো পুরুষের চেয়ে নারীদের সাথেই বেশি সংশ্লিষ্ট। তাই এ মাসে পর্দারঅনুশীলন করতে হবে। নারীরাই সাধারণত পুরুষের পর্দা লংঘনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। (২) মা হবেন পরিবারের আদর্শ শিক্ষিকা। তিনি ব্যক্তিগতভাবে আল্লাহরআদেশ-নিষেধ মেনে চলবেন। বিশেষ করে নিজ কন্যা সন্তানকে হায়েজ সংক্রান্তবিধান শিক্ষা দেবেন। নতুবা তারা বড় ভুল করে বসতে পারে। (৩) অন্যান্য বোনদেরকুরআন শিখানো ও ইসলাম বুঝানোর কাজ করা উচিত। দ্বিনী জ্ঞানার্জনেরসুবিধার্তে পারিবারিক লাইব্রেরী গড়ে তোলা খুবই উপকারী। (৪) নারীদের মধ্যেঅনেক সময় বেহুদা আলোচনা ও গল্পের প্রচলন বেশি। তাই কম কথা, ভাল আলোচনা ওগঠনমূলক পরামর্শের মধ্যে নিজেদেরকে সীমিত রাখা উচিত। (৫) নারীরা পুরুষের বেশধারণ করা নিষিদ্ধ।.. নারীরা কোন পর-পুরুষের সাথে একা একা অবস্থান করতেপারবে না কিংবা তার সাথে কোথাও যাওয়া আসা করতে পারবে না। কারণ সেক্ষেত্রে ঐদু’জনের সাথে তৃতীয়জন হয় শয়তান। (তিরমিযী, আহমদ) (৬) নারীরা সুব্যবস্থাথাকলে তারাবীর নামাযেও যেতে পারেন। প্রায়ই দেখা যায়, পুরুষেরা যখন তারবীরনামাযে যায় তখন মেয়েরা টেলিভিশন বা স্যাটেলাইট চ্যানেলের সামনে বসে সময়নষ্ট করে। এটা ঠিক নয়। (৭) নারীরা রান্নার সময় কুরআনের আয়াত পাঠ ও যিকরআযকার করতে পারেন। হায়েজ-নিফাস হলেও যিকর-আযকার, তাসবীহ-তাহলীল করা যায়।মনে রাখতে হবে, ভুঁড়িভোজ, বেশি আইটেম, সেহরীর বিচিত্র খাবার রমযানের মূলশিক্ষা-বিরোধী। রান্নাঘরেই যদি সময় চলে যায়, তাহলে এ মাসের ফায়দা কিভাবেলাভ করা যাবে? তাই, বেশি রান্নাবান্না কমিয়ে ইবাদাত বাড়িয়ে দিতে হবে।
রমযান ও শিশু: (১) শিশুর ভাল-মন্দ নির্ভর করে তার উপযুক্ত শিক্ষা ওপারিবারিক পরিবেশের উপর। (২) সন্তানের শিক্ষককেও ভাল ও আদর্শ চরিত্রবান হতেহবে। (৩) রমযান মাসে শিশুদেরও রোযা রাখার অভ্যাস করানো উচিত। (৪) নিজসন্তানদেরকে কোন কিছু দান করার সময় সমতা বজায় রাখা ওয়াজিব। ছেলেদের প্রতিবেশি গুরুত্ব দেয়া আর মেয়েদেরকে অবহেলা করা ইসলামের দৃষ্টিতে মহা অন্যায়। (৫) শিশুদেরকে ভাল কাজের জন্য পুরস্কৃত করা উচিত। (৬) তাদের সাথে কোন ওয়াদাকরলে তা পূরণ করতে হবে। নচেৎ তারা ওয়াদাভঙ্গ করা শিখবে। (৭) সন্তানদের অসৎসঙ্গী-সাথীর সাহচর্য থেকে দূরে রাখতে হবে। (৮) তারা যেন বিজাতীয় পোশাক নাপরে ও বিজাতীয় সংস্কৃতির নাগপাশে আটকে না পড়ে সেদিকে যত্নবান থাকতে হবে।
রাসূল (সাঃ) সন্তানদেরকে সাঁতার, তীর নিক্ষেপ ও অশ্বারোহনের শিক্ষার আদেশদিয়ে বলেছেন: ‘তোমরা সন্তানদেরকে এ সকল জিনিস শিক্ষা দাও।’(আল হাদীস)লেখা-পড়া শেখাতে হবে জ্ঞানার্জনের জন্য, সাঁতার শারীরিক মজবুতীর জন্য এবংতীর (বা এ জাতীয় বস্তু) নিক্ষেপ জিহাদের জন্য। মহানবী (সাঃ) আরও বলেছেন, ‘তোমরা সন্তানকে আদর করো ও সুন্দর আদব-কায়দা শিক্ষা দাও।’ তিনি শিশুরকান্না শুনলে নামাযের মতো গুরুত্বপূর্ণ আমলও তাড়াতাড়ি শেষ করতেন। হযরত উমর (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, ‘পিতার উপর সন্তানের অধিকার কি?’ তিনি বললেন, ‘সন্তানের উত্তম মা নির্বাচন, উত্তম নাম রাখা ও তাকে কুরআন শিক্ষা দেয়া।’

২৬ নং শিক্ষা:
রমযান নেক কাজের মওসুম: নেক কাজের সর্বোত্তম মওসুম হলো রমযান।
উল্লেখযোগ্য কিছু নফল ইবাদাত: ১. নফল নামায: ফরয নামাযেরত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো নফল নামায দ্বারা পূরণ হয়। ২. আল্লাহর জিকির: কখনআল্লাহর কি নির্দেশ তা স্মরণ করে পালন করা শ্রেষ্ঠ যিকর। তাছাড়া দৈনন্দিনদোয়াসমূহ পাঠেও অভ্যস্ত হওয়া উচিত। ৩. রোগীর সেবা: রোগী দেখতে যাওয়াও তারসেবা করা অত্যন্ত সওয়াবের কাজ। রোগী দেখার পর তার আরোগ্যের জন্য দোয়া করাদরকার। ৪.কবর যিয়ারত: এর লাভ হলো এর দ্বারা সওয়াবের পাশাপাশি মৃত্যুর কথাস্মরণ হয়। ফলে আমল বৃদ্ধি পায়। ৫.ইফতার করানো: এতে রোযাদারের সওয়াবটাও লাভকরা যায়। কিন্তু রোযাদারের সওয়াবের ঘাটতি হয় না। ৬.বিবিধ: বান্দার হকপ্রাপ্তিতে সহযোগিতা করা, সমাজকল্যাণমূলক কাজ করা ইত্যাদি।
রাসূলুল্লাহর (সাঃ) অনুসরণ: সর্বশেষ নবী আমাদের জন্য আদর্শের একমাত্রমাপকাঠি। সর্ববিষয়ে তাঁর অনুসরণ করতে হবে। তাঁর বিপরীতে অন্য কারোর অনুসরণকরা ঈমাননাশক। রাসূল (সাঃ)-কে অনুসরণের ব্যাপারে সাহাবাগণ সর্বোত্তম।
আত্মীয়তার সম্পর্ক ঠিক রাখা: রাসূল (সাঃ) বলেছেন, ‘আত্মীয়তার সমপর্কছিন্নকারী বেহেশতে প্রবেশ করতে পারবে না।’ (বুখারী ও মুসলিম) কাজেইআত্মীয়দের হক পূর্ণরূপে আদায় করতে হবে।
দ্বীনি জ্ঞানার্জন: প্রয়োজন পরিমাণ দ্বীনি জ্ঞানার্জন করা ফরয।জ্ঞানার্জনের লক্ষ্যে সরাসরি কুরআন ও হাদীস বুঝে বুঝে অধ্যয়ন ও হৃদয়ঙ্গমকরা অপরিহার্য। অন্য মাধ্যম থেকে জ্ঞান অর্জন করা কুরআন ও হাদীস থেকে জ্ঞানঅর্জন করার মতো ঝুঁকিহীন নয়।
জামায়াতে নামায পড়া: পুরুষদের জন্য বিনা ওযরে একা একা নামায পড়লে বিশালসওয়াব থেকে বঞ্চিত হতে হয় এবং জামায়াতে শামিল না হওয়ার কারণে গুনাহগার হতেহয়।
বিদ‘আত থেকে দূরে থাকা: দ্বীনের নির্দেশ নয় এমন কাজকে সওয়াবের নিয়তে (ইবাদাত মনে করে) সম্পাদন করাই বিদআত। (যেমনঃ প্রচলিত মিলাদ, কদমবুসী, তাবিজকে ভাগ্যনির্ধারক মনে করা, মাজারপূজা, রাষ্ট্রসংশোধনের প্রচেষ্টাকেদুনিয়াদারী কাজ মনে করা ইত্যাদি) ঈমান রক্ষার্থে সকল বিদআত থেকে বেঁচেথাকতে হবে।
দ্বীন প্রতিষ্ঠা করা: সবকিছুকে ইসলামের আলোকে ঢেলে সাজনোর প্রচেষ্টা করা (অর্থাৎ দ্বীন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা) সর্বোত্তম ইবাদাত। দ্বীন প্রতিষ্ঠারএ কাজটি শুধু ফরযই নয় বরং সবচেয়ে বড় ফরয; (সূরা আশ শূরা-১৩ দ্রষ্টব্য)কারণ অন্যান্য সকল ফরয এই ফরযের অংশ মাত্র। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ব্যক্তিগত জীবনে দ্বীন প্রতিষ্ঠার অংশ হলো নামায। আবার রাষ্ট্রীয় জীবনেদ্বীন প্রতিষ্ঠার অংশ হলো ইসলামী শিক্ষাব্যবস্থা (যা নিজ বৈশিষ্ট্যেইচরিত্রনির্ভর ও কর্মমুখী) চালু করা। দ্বীন প্রতিষ্ঠার মতো গুরুত্বপূর্ণ ফরযকাজে অবহেলা দেখা দিলে অন্যান্য সকল ইবাদাতের সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায়।

২৭ নং শিক্ষা:
যাকাতুল ফিতর /সাদাকাতুল ফিতর/ ফিতরাহ: এটি আদায় করা ওয়াজিব (মতান্তরে সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ)।
যাকাতুল ফিতর ওয়াজিব হওয়ার কারণ: সাদাকাতুল ফিতরের দুটি উদ্দেশ্য। যথাঃ ১. রোযাদারের ত্রুটি-বিচ্যুতি ও গুনাহের দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠার জন্য কিছুআর্থিক ইবাদাত করে রোযাকে পূর্ণাঙ্গ করা ২. কিছু লোক আনন্দ-উৎসব করবে আরকিছু লোক বঞ্চিত হবে- এমন যেন না হয় তার ব্যবস্থা করা।
কাদের উপর সাদাকাতুল ফিতর ওয়াজিব: মুসলমান নারী-পুরুষ, ছোট-বড় ও শিশুদেরউপর সাদাকাতুল ফিতর ওয়াজিব। স্ত্রী ও শিশুদের সাদাকাতুল ফিতর স্বামী কিংবাপিতার উপর ফরয। সাদাকাতুল ফিতর অপেক্ষাকৃত বেশি গরীব-মিসকীনকে দিতে হয়।
সাদাকাতুল ফিতর আদায় করার সময়: ঈদের দিন ভোর বেলায় তা আদায় করা উত্তম এবং বিলম্ব না করা উচিত।
সাদাকাতুল ফিতরের পরিমাণ: সাদাকাতুল ফিতরের পরিমাণ প্রধান খাদ্যশস্যের এক সা’ (প্রায় সাড়ে তিন সের বা ২ কেজি ১৭৬ গ্রাম)

২৮ নং শিক্ষা:
ঈদুল ফিতরের উপহার: (১) গোসলের পর যেমন শরীরে ময়লা থাকে না, তেমনি হক আদায়করে রমযানের রোযা রাখার পরও বান্দার আমলনামায় কোন গুনাহ থাকে না। তবে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: সেই ব্যক্তি আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত হোক যেরমযান পাওয়া সত্ত্বেও তার গুনাহ মাফ হয়নি।’ (হাকিম) (২) রমযান মাসের নেক আমলকবুল হওয়ার লক্ষণ হলো পরবর্তীতে তা অব্যাহত রাখা।
ঈদুল ফিতরের অর্থ: ‘ঈদ’ শব্দের অর্থ ১.ফিরে আসা ২.আদত-অভ্যাস। আর ‘ফিতর’ মানে রোযা ভাঙ্গা। অতএব ঈদুল ফিতর মানে রোযা ভাঙ্গার ঈদ।
অন্যান্য জাতির জাতীয় উৎসব: (১) মুসলমানদের ঈদ হচ্ছে ইবাদাত। এটি আগা-গোড়াভাল ও কল্যাণকর। এতে অপচয়, অশালীনতা, নগ্নতা ও বেহায়াপনা নেই। নৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে তা সম্পূর্ণ ত্রুটিমুক্ত। (২) হিন্দু সমাজের বিভিন্ন পূজায় মূর্তির সামনে যে ভোগ বা খাবার আগুনে ঘিঢেলে জ্বালানো হয় তা নিঃসন্দেহে বিরাট অপচয়। (৩) পাশ্চাত্য খৃস্টান সমাজ২৫শে ডিসেম্বর বড় দিন এবং ৩১ ডিসেম্বর রাতে নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে যেপাশবিক অনাচারে লিপ্ত হয় তা ইতিহাসের সকল যৌন কেলেংকারীকে হার মানায়। (৪) বিভিন্ন জাতির ধর্মীয় উৎসবে নীতি-নৈতিকতা এবং পবিত্রতার নাম গন্ধও নেই।সেখানে অর্থের অপচয়, শ্লীলতা ও নারীর সতীত্বহানি, অর্থহীন কাজ এবংচরিত্রহীনতার পুঁতিগন্ধময় পরিবেশ বিরাজমান।
ঈদের দিনে করণীয়: ১. আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা ২. রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর উপরদরূদ পাঠ করা ৩. তাকবীর বলা (আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহাইল্লাল্লাহু, ওয়াল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ) ৪. ঈদেররাতে ইবাদাত করা (এটি বিশাল সওয়াবের কাজ) ৫. ঈদের দিন ভোরে ঈদের নামাযের আগেফিতরা আদায় করা ৬. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কাপড়-চোপড় পরা (নতুন কাপড় পরতেই হবে-এ ধারণা ভুল) ৭. ঈদ উপলক্ষ্যে ভালো ও শিক্ষামূলক আলোচনা, নাটক ও ফিল্ম, ইসলামী গান ইত্যাদির আয়োজন করা যেতে পারে। তবে ইসলামবিরোধী কিছু করা যাবেনা।

২৯ নং শিক্ষা:
একই দিনে মুসলিম বিশ্বে ঈদ উদযাপন করা: রাসূল (সাঃ) বলেছেন, “তোমরা চাঁদদেখে রোযা রাখ এবং চাঁদ দেখে ইফতার করো।” কাজেই ভৌগলিক কারণে বিভিন্ন দেশেবিভিন্ন দিনে ঈদ হতেই পারে।
রোযা ও হজ্জের স্বার্থে মহিলাদের ঋতু বিলম্বিত করা: রোযার মাসে রোযা পূর্ণকরা এবং সুষ্ঠুভাবে হজ্জ পালনের উদ্দেশ্যে ওষুধ সেবন করে মহিলাদের ঋতুবিলম্বিত করা জায়েয, এতে কোন দোষ নেই। কিন্তু তা জরুরীও নয়। তবে অনেকেরমতে, স্বাভাবিক অবস্থা অব্যাহত রাখা এবং ঋতু বিলম্বিত না করাই উত্তম।
রমযানে চিকিৎসা: (১) ইবনে হাজম এর মতে,রমযানে মূলত খাওয়া ও পান করা নিষিদ্ধ।শরীরের অন্যান্য প্রবেশ পথে ওষুধ ব্যবহার করার নাম পানাহার নয়। (২) শরীরেমলম ব্যবহার করা, ব্যাণ্ডেজ বাঁধা; অপারেশন করা ইত্যাদির মাধ্যমে রোযা নষ্টহয় না। এমনকি হাঁপানী রোগীও রোযা অবস্থায় ইনহেলার ব্যবহার করতে পারে এবংঅক্সিজেন গ্রহণ করতে পারে; তাতে রোযা নষ্ট হবে না। তবে গ্লুকোজ জাতীয়ইনজেকশান গ্রহণ করলে তাতে রোযা নষ্ট হয়ে যাবে। কেননা তা খাবার ও পানীয়েরঅন্তর্ভুক্ত।
শাওয়ালের ৬ রোযা: শাওয়াল মাসের ৬টি রোযা রাখা মুস্তাহাব। রাসূল (সাঃ)বলেছেন, “যে ব্যক্তি রমযানের রোযা রাখে এবং শাওয়ালে আরো ৬ টি রোযা রাখে,সেযেন গোটা বছর রোযা রাখলো।” (মুসলিম, আবু আইয়ুব আনসারী রা.)কারণ, প্রতিটি সওয়াবের প্রতিফল আল্লাহতাআলা ১০ গুণ বাড়িয়ে দেন। সেইহিসেবে, রমযানের ৩০টি ও শাওয়ালের ৬টি এই ৩৬টির রোযার সওয়াব হবে ৩৬০টি রোযারসমান। (উল্লেখ্য, চন্দ্রমাস হিসেবে ১ বছর ৩৬০ দিনেরও কম)

৩০ নং শিক্ষা:
জাহান্নাম: চির দুঃখ-কষ্ট, পেরেশানী, লাঞ্ছনা-গঞ্জনা, অপমান, ক্ষুধা-পিপাসা, অশান্তি, শাস্তি ও অসন্তোষের স্থান হলো জাহান্নাম। সেখানেরকঠিন শাস্তির মধ্যে মানুষ মৃত্যু কামনা করবে, কিন্তু তা কবুল হবে না।নিরুপায় হয়ে জাহান্নাম থেকে বাইরে যেতে চাবে, কিন্তু বের হবার উপায় থাকবেনা।
জাহান্নামীদের আফসুস-আক্ষেপ: জাহান্নামীরা বলবে, হায়! আফসোস, আমি যদিরাসূলের পথ অবলম্বন করতাম। হায়! আমি যদি অমুককে বন্ধু না বানাতাম।..
জাহান্নামের আযাব স্থায়ী: কাঁদতে কাঁদতে জাহান্নামীদের চোখ থেকে অশ্রুর বদলে রক্ত বেরুবে।
শিকলে বেঁধে দাহ্য আলকাতরার জামা পরানো হবে: আল্লাহ বলেন ‘‘তুমি ঐ দিন পাপীদেরকে পরস্পরে শৃঙ্খলাবদ্ধ দেখবে।..’’ (সূরা ইবরাহীম-৪৯)
যাক্কুম বৃক্ষ হবে খাদ্য এবং ফুটন্ত পানি শরীরের উপর ঢেলে দেওয়া হবে:জাহান্নামে খাদ্যের বদলে যা দেয়া হবে তা আসলে অখাদ্য। ক্ষুধার যন্ত্রণায়জাহান্নামীরা যা পাবে তাই খেতে চাবে। আল্লাহ বলেন, ‘‘যাক্কুম বৃক্ষ পাপীরখাদ্য হবে। গলিত তামার মতো পেটে ফুটতে থাকবে।..(সূরা দুখানঃ৪৩-৪৫)
পুঁজ পান করানো হবে: জাহান্নামীদের পুঁজ ও রক্তমিশ্রিত পানি পান করতে দেয়া হবে।
আগুনের পোশাক, গরম পানি ও লোহার হাতুড়ি দিয়ে শাস্তি দিওয়া হবে: তাদের মাথারউপর ফুটন্ত পানি ঢেলে দেয়া হবে। ফলে তাদের পেটে যা আছে, তা এবং চামড়া গলেবের হয়ে যাবে। তাদেরকে বিষধর সাপ দংশন করতে থাকবে।
জাহান্নামের গভীরতা: জাহান্নামের উপর থেকে নিক্ষিপ্ত পাথর প্রায় ৭০ বছর পর তলদেশে গিয়ে পৌছায়। (সূত্রঃ মুসলিম)
উপরে ও নীচে আগুনের ছাতা: ‘তাদের জন্য উপর দিক এবং নীচের দিক থেকে আগুনের ছাতা থাকবে।’(সূরা যুমার-১৬)
আগুনে চামড়া পুড়ে গেলে নতুন চামড়া গজাবে: একবার চামড়া পুড়ে গেলে আবারো নতুন চামড়া গজাবে যেন বার বার আগুনের স্বাদ আস্বাদন করতে পারে।
দুনিয়ার আগুন থেকে জাহান্নামের আগুনের তেজ ৭০ গুণ বেশি: রাসূল (সাঃ) বলেন, তোমাদের দুনিয়ার আগুন, জাহান্নামের আগুনের ৭০ ভাগের ১ ভাগ।..(বুখারী ওমুসলিম)
নিম্নতম শাস্তিপ্রাপ্ত ব্যক্তি: সবচেয়ে কম সাজাপ্রাপ্ত জাহান্নামী ব্যক্তিহলো যার দু’টো জুতোর মধ্যে আগুনের দু’টো ফিতা থাকবে। তা মাথার মগজকেটগবগিয়ে সিদ্ধ করতে থাকবে। সে মনে করবে, তার আযাবই সবচেয়ে কঠিন।
জাহান্নামের অধিকাংশ অধিবাসী ধনী ও নারী: জাহান্নামীদের অধিকাংশই ধনী এবং নারী। পক্ষান্তরে জান্নাতের অধিকাংশ অধিবাসীই গরীব-মিসকীন।
জাহান্নামীদের দাঁত ওহোদ পাহাড়, চামড়ার ঘনত্ব এবং দুই ঘাড়ের ব্যবধান তিনদিনের পথের দূরত্বের: তাই জাহান্নামের ভয়াবহ শাস্তি থেকে বাঁচার চেষ্টা করাউচিত।
জাহান্নামীরা পরস্পর পরস্পরকে অভিশাপ দেবে: সেদিন অন্যকে দোষারোপ করে লাভহবে না। ভ্রান্ত নেতাদের অন্ধ অনুসরণের জন্যও সেদিন আফসোস করতে হবে।আল্লাহতাআলা বলেন, ‘‘তারা আরও বলবে, হে আমাদের প্রভু, আমরা আমাদের নেতা ওবড়দের কথা মেনে নিয়েছিলাম, তারপর তারা আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছিল, হে আমাদেররব! তাদেরকে দ্বিগুণ শাস্তি দিন এবং তাদেরকে অভিসম্পাত করুন।’’ (সূরাআহযাব-৬৭-৬৮)
শয়তান নিজেকে দায়িত্বমুক্ত ঘোষণা করবে: শয়তান বলবে, ‘‘আমি তোমাদেরকেডেকেছি, তারপর তোমরা আমার কথা মেনে নিয়েছো। সুতরাং তোমরা আমাকে ভর্ৎসনা করোনা, বরং নিজেদেরকেই ভর্ৎসনা করো।’’ (সূরা ইবরাহীম-২২)

জান্নাত: চিরশান্তি, আরাম-আয়েশ, সুখ-শান্তি, আমোদ-প্রমোদ, চিত্ত-বিনোদন ওআনন্দ-আহলাদের চরম ও পরম ব্যবস্থা রয়েছে জান্নাতে। বেহেশতীরা যা কামনা করবেসকল কিছুই পাবে। সেখানে সবাই যুবক হয়ে বাস করবে। সেখানে অর্থ-সম্পদের কোনঅভাব হবে না। সেখানকার নিয়ামাত দুনিয়ার সকল আরাম-আয়েশকে হার মানাবে। সেখানেথাকবে এমন সব পুরস্কার যা কোন চোখ দেখেনি, কোন কান শোনেনি এমনকি কোন অন্তরকল্পনাও করতে পারেনি।
জান্নাতের প্রশস্ততা হবে আসমান-যমীনের সমান: যা মুত্তাকীদের জন্য তৈরি করা হয়েছে। (আল-ইমরানঃ১৩৩)
জান্নাতীদের চেহারা হবে উজ্জ্বল এবং তারা ৬০ হাত লম্বা হবে: এবং তাদের ঘাম হবে মেশকের মতো সুঘ্রাণযুক্ত।
নিম্নতম বেহেশতীর মর্যাদা: নিম্নতম জান্নাতীকে জিজ্ঞেস করা হবে, তুমি কিদুনিয়ার বাদশাহদের সমপরিমাণ রাজত্বে সন্তুষ্ট হবে? সে বলবে হাঁ হে রব! পরেআল্লাহ বলবেন, তোমাকে ঐরূপ ১০ গুন দেয়া হলো।
বেহেশতীতের উষ্ণ সম্বর্ধনা: (জান্নাত পাওয়ার জন্য) ‘‘মেহনতকারীদের পুরস্কার কতই না চমৎকার!’’ (সূরা যুমার-৭৪)
বহুতল ভবন ও নির্ঝরিনী থাকবে: ‘‘আল্লাহ নিজ ওয়াদা কখনও ভঙ্গ করেন না।’’ (সূরা যুমার-২০)
সকল প্রকার মজাদার খাবার, ডিশ ও ফল-ফলাদি থাকবে: আল্লাহ বলবেন, এটা তোমাদেরকর্মের ফল। সেখানে তোমাদের জন্য আছে প্রচুর ফল-মূল, তা থেকে তোমরা খাবে। (সূরা যুমার)
জান্নাতীরা সোনার খাঁটে মুখোমুখি হয়ে হেলান দিয়ে বসবে: এবং আলাপচারিতা করবে (সূরা ওয়াকিআঃ ১৫-১৬)
কচিকাঁচা ও ছোট শিশুদের আপ্যায়ন: পানপাত্র ও সূরাপূর্ণ পেয়ালা হাতেকচি-কোমল শিশুরা ঘোরাফেরা করবে ও তারাই জান্নাতীদের আপ্যায়ন করাবে। (সূরাওয়াকিআঃ ১৭-১৮)
বেহেশতী রমনীরা হবে কুমারী: আল্লাহ বলেন, ‘‘আমি জান্নাতী রমণীদেরকেবিশেষরূপে সৃষ্টি করেছি। তারপর তাদেরকে চিরকুমারী, কামিনী ও সমবয়স্কাবানিয়েছি।’’ (সূরা ওয়াকিয়াঃ ৩৫-৩৮)
হুরেরা হবে আবরণে রক্ষিত উজ্জ্বল মনি-মুক্তার মতো সুন্দরী: হুরেরা সতী হবে। জান্নাতের যুবক-যুবতীদেরকে প্রচুর শক্তি দেয়া হবে।
জান্নাতের তাঁবু ও মাটির বর্ণনা: হাদিস থেকে জানা যায়, জান্নাতে মুক্তারতৈরি তাঁবু রয়েছে। এগুলোর মাটি হচ্ছে মেশক। জান্নাতের কংকর হলো মুক্তা ওইয়াকুত, মাটি হলো জাফরান। যে প্রবেশ করবে সে সুখে থাকবে, দুঃখী হবে না।চিরস্থায়ী হবে, মৃত্যু বরণ করবে না। পোশাক পুরানো হবে না এবং যৌবন শেষ হবেনা।
সোনা-রূপার বেহেশত: বেহেশতের ইটগুলো হবে সোনা ও রূপার।
বাজারের বর্ণনা: রাসূল (সাঃ) বলেন,‘‘জান্নাতে বাজার আছে। লোকেরা প্রত্যেকশুক্রবার ঐ বাজারে আসবে। উত্তরের স্নিগ্ধ বাতাস তাদের কাপড় ও চেহারার উপরদিয়ে প্রবাহিত হবে। এতে তাদের রূপ-সৌন্দর্য অনেক বেড়েযাবে।..’’(মুসলিম,আনাস বিন মালেক রা.)
নদীর বর্ণনা: জান্নাতে থাকবে নির্মল ও স্বচ্ছ দুধের নহর, সুস্বাদু শরাবের নহর এবং পরিশোধিত মধুর নহর। (সূরা মুহাম্মাদ-১৫)
অলংকার: “..সেখানে তারা সোনার চুড়ি ও মুক্তাখচিত কংকন পরবে।..”(সূরা ফাতির-৩৩)
জান্নাতের নিয়ামাত স্থায়ী: জান্নাতীরা হবেন চিরসুস্থ, চিরজীবিত ও চিরযুবক।
জান্নাতের সর্বাধিক বড় নিয়ামত: বেহেশতের মধ্যে সর্বাধিক বড় নিয়ামাত হবে আল্লাহর সাক্ষাৎ।
গান: জান্নাতের মধ্যে হুরদের একটি সমষ্টি থাকবে, যারা এমন মধুর সুরে গানগাবে, আল্লাহর কোন সৃষ্টি এত সুন্দর কন্ঠের গান আর কোনদিন শুনেনি। সে সকলগান হবে আল্লাহর হামদ ও গুণ-কীর্তন, প্রশংসা ও স্তুতি।
বেড়ানো: বেহেশতীরা বেহেশতে প্রবেশের পর একে অপরের সাথে সাক্ষাতে আগ্রহীহবে। তারা রেশমী পোশাক পরে সিংহাসনে হেলান দিয়ে বসবে। পান করবে স্ফটিকেরমতো পানপাত্রে। তাদের কাছে আনা-গোনা করবে চির-কিশোরগণ।
জান্নাত সর্বাধিক মূল্যবান জিনিস। তাই তা সংগ্রহের আপ্রাণ ও জোরদার চেষ্টাচালানো উচিত। জান্নাত যত বড় তা পাওয়াও তত কঠিন। রমযান মূলত: জান্নাত লাভেরউপায় এবং তা অর্জনের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা ও কঠোর পরিশ্রমের বাস্তবপ্রশিক্ষণ।

শেষকথা: (১) রমযান হচ্ছে শপথ ও আনুগত্যের নবায়ন এবং প্রশিক্ষণ ও সংশোধনেরউত্তম সুযোগ। (২) রমযান মুসলমানের ঐক্যের সূত্র। এ মাসে মুসলমানরা একইপদ্ধতি ও জীবনধারা অনুসরণ করে। (৩) রমযান হচ্ছে আত্মার উন্নতির উপায়। যাতেকরে তারা দৃঢ় সংকল্প ও ইচ্ছাশক্তির অধিকারী হতে পারে।

তথ্যসূত্র: মূল: এ এন এম সিরাজুল ইসলাম, সংক্ষিপ্তকরণ ও সম্পাদনা: ইঞ্জিনিয়ার আবু রামিন।

ওয়ামা তাওফীকি ইল্লা বিল্লাহ

Leave a Reply


This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.