ইসলামে গীবত কবিরা গুনাহ

imagesCA93OCBC

গীবত শব্দটির আভিধানিক অর্থ হচ্ছে দোষারোপ করা, পরচর্চা করা, পরনিন্দা করা, কুৎসা রটনা করা, পিছে সমালোচনা করা ইত্যাদি। পরিভাষায় গীবত বলা হয়, ‘তোমার কোনো ভাইয়ের পেছনে তার এমন দোষের কথা উল্লেখ করা যা সে গোপন রেখেছে অথবা যার উল্লেখ সে অপছন্দ করে।’ গিবতের সবচেয়ে উত্তম ও বাস্তবসম্মত ও চিত্তাকর্ষক সংজ্ঞা দিয়েছেন রাসুল (সা.)। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, গীবত কাকে বলে, তোমরা কি জান? সাহাবিগণ বললেন, আল্লাহ ও তার রাসুল (সা.)-ই ভালো জানেন। তিনি বললেন, তোমার কোনো ভাই (দীনি) সম্পর্কে এমন কথা বলা, যা সে অপছন্দ করে, তা-ই গীবত।

 সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল (সা.) আমি যে দোষের কথা বলি তা যদি আমার ভাইয়ের মধ্যে থাকে তাও কি গীবত হবে? উত্তরে রাসুল (সা.) বললেন, তুমি যে দোষের কথা বল, তা যদি তোমার ভাইয়ের থাকে তবে তুমি অবশ্যই তার গীবত করলে আর তুমি যা বলছ তা যদি তার মধ্যে না থাকে তবে তুমি তার ওপর মিথ্যা অপবাদ দিয়েছ। (মুসলিম)। সুতরাং এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায়, কোনো ভাইয়ের এমন দোষের কথা বলা গীবত যা সে অপছন্দ করবে। গীবত ইসলামি শরিয়তে হারাম তথা কবিরা গুনাহ। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, ‘ধ্বংস তাদের জন্য, যারা অগ্র-পশ্চাতে দোষ বলে বেড়ায়।’ (সুরা হুমাজাহ-১)
হাদিসে আছে,=

 হজরত মায়মুন (রা.) বলেন, ‘একদিন স্বপ্নে দেখলাম এক সঙ্গী ব্যক্তির মৃতদেহ পড়ে আছে এবং এক ব্যক্তি আমাকে তা ভক্ষণ করতে বলছে। আমি বললাম, আমি একে কেন ভক্ষণ করব? সে বলল, কারণ তুমি অমুক ব্যক্তির সঙ্গী গোলামের গীবত করেছ। আমি বললাম, আল্লাহর কসম আমি তো তার সম্পর্কে কখনো কোনো ভালোমন্দ কথা বলিনি। সে বলল, হ্যাঁ, এ কথা ঠিক। কিন্তু তুমি তার গীবত শুনেছ এবং সম্মত রয়েছ।’ রাসুল (সা.) বলেছেন, মিরাজের সময় আমাকে এমন এক সম্প্রদায়ের কাছে নিয়ে যাওয়া হলো যাদের নখ ছিল তামার। তারা তাদের মুখমণ্ডল ও দেহ আঁচড়াচ্ছিল। আমি জিব্রাইলকে (আ.) জিজ্ঞাসা করলাম, এরা কারা? তিনি বললেন, এরা তাদের ভাইদের গীবত করত ও ইজ্জতহানি করত। (মাজহারি)। আল্লাহ আমাদের সবাইকে গিবতের মতো নিন্দনীয় গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার তওফিক দান করুন। আমিন।

Related Post