Main Menu

আল্লাহর প্রতি ঈমানের দু’টি দিক

Originally posted 2013-07-12 11:14:59.

আল্লাহর প্রতি ঈমান

আল্লাহর প্রতি ঈমান

এক: আল্লাহ আছেন বলে জানা ও মানা।

দুই: আল্লাহর একত্ব বা তাওহীদ সম্পর্কে জানা ও মানা।

পয়লা বিষয়টি আমরা জানি ও মানি। অর্থাৎ আমরা আল্লাহ আছেন বলে জানি।

আমরা আল্লাহকে সমগ্র জাহানের স্রষ্টা,পরিচালক ও প্রতিপালক বলে মানি।

তাওহীদ কী?

দ্বিতীয় বিষয়টি হলো তাওহীদ। সকল ক্ষেত্রে আল্লাহকে এক বলে জানা ও মানার নামই হলো-তাওহীদ। চারটি ক্ষেত্রে আল্লাহকে এক জানতে ও মানতে হবে। সেগুলো হলো

এক. আল্লাহর জাত বা সত্তার একত্ব:

নিজ সত্তা বা অস্তিত্বকে জাত বলা হয়। আল্লাহর জাত-এর একত্ব মানে এই বিষয়গুলো জানা ও বিশ্বাস করা যে,মহান আল্লাহর তাঁর সত্তা ও অস্তিত্বের দিক থেকে-

সম্পূর্ণ এক ও একক।

– তিনি অদ্বিতীয় ও অবিভাজ্য।

– তাঁর কোনো স্ত্রী এবং সন্তান-সন্ততি নেই।

– তাঁর পিতা-মাতা নেই।

– তাঁর কোনো আত্মীয় স্বজন নেই।

– তাঁর সমকক্ষ কেউ নেই।

– কারো সাথে তাঁর কোনো বিশেষ সম্পর্ক নেই।

– তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন।

– তিনি কারো উপর নির্ভরশীল নন।

– তিনি স্বয়ং সম্পূর্ণ-সর্বশক্তিমান।

– তিনি ছাড়া বাকি সবই তাঁর সৃষ্টি এবং সৃষ্টিগতভাবে তাঁর দাস।

– সকলেই তাঁর মুখাপেক্ষী এবং তাঁর কাছে সম্পূর্ণ অসহায়।

 

দুই. আল্লাহর গুণাবলীর একত্ব :

আল্লাহর গুণাবলী ও সিফাতসমূহ এককভাবে আল্লাহর। তাঁর গুণাবলীতে কেউ তার অংশীদার নেই। তবে তিনি যে মানুষকে তাঁর গুণাবলীর কিছু অংশ দিয়ে গুণান্বিত করেন,তার দ্বারা মানুষ ঐসব গুণের মালিক হয় না,অধিকারী হয়।

আল্লাহর নিরানব্বইটি বা তার চাইতে বেশি সিফাত বা গুণাবলী রয়েছে। এই সব গুণাবলীর তিনিই একমাত্র মালিক বলে বিশ্বাস করতে হবে। যেমন- একমাত্র :

তিনিই স্রষ্টা।

তিনিই জীবনদাতা।

তিনিই মৃত্যুদাতা।

তিনিই সব দৃশ্য-অদৃশ্য জানেন।

তিনিই পরম দয়ালু।

তিনিই পবিত্র।

তিনিই নিখিল বিশ্বের সম্রাট।

তিনিই শান্তিদাতা।

তিনিই আশ্রয়দাতা।

তিনিই পরাক্রমশালী।

তিনিই ক্ষমতাধর।

তিনিই শ্রেষ্ঠ।

তিনিই জীবিকাদাতা।

এগুলো এবং এ রকম আরো অনেক গুণাবলী আল্লাহর রয়েছে। এসব গুণাবলীর একক মালিক তিনি। তিনি দয়া করে তাঁর কোনো কোনো গুণের কিছু অংশ কাউকেও দান করলে সে সেটুকুর অধিকারী হয়,মালিক হয় না। যেমন- মানুষের দয়া,শক্তি, সামর্থ, সাহস, বুদ্ধি, জ্ঞান,অর্থ, বিত্ত, সন্তান-সন্তুতি ইত্যাদি সবই আল্লাহর দান।

তিন. আল্লাহর ক্ষমতার একত্ব :

তাওহীদের গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো: আল্লাহর ক্ষমতার একত্ব। অর্থাৎ সমস্ত ক্ষমতার উৎস ও মালিক আল্লাহ।

তিনি সর্বশক্তিমান।

তিনি সকলের উপর ক্ষমতাধর।

তিনি যা ইচ্ছে তাই করতে পারেন।

তাঁর ক্ষমতার কাছে সবাই এবং সবকিছু সম্পূর্ণ অসহায়।

তিনিই ক্ষমতা দেন এবং ক্ষমতা কেড়ে নেন।

সকল ক্ষমতা এককভাবে তাঁর। তাঁর ক্ষমতায় কারো কোনো অংশ নেই।

 

চার. আল্লাহর অধিকারের একত্ব :

আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টি করেছেন,জীবন দিয়েছেন এবং বেঁচে থাকার জন্যে যা কিছু প্রয়োজন সবই তিনি তাকে দিয়েছেন। সেই সাথে তিনি মানুষকে জ্ঞান, বুদ্ধি ও বিবেক দিয়েছেন।

তাই তিনি তাঁর ইচ্ছা ও হুকুম অনুযায়ী জীবন-যাপন করাকে মানুষের কর্তব্য বানিয়ে দিয়েছেন। এটা মানুষের উপর তাঁর অধিকার।

 

মানুষের উপর আল্লাহর কয়েকটি অধিকার হলো:

মানুষ শুধুমাত্র আল্লাহরই আনুগত্য,ইবাদত বন্দেগি ও দাসত্ব করবে। কেবল তাঁরই প্রতি নত ও বিনয়ী থাকবে। তাঁর সাথে কাউকেও শরিক করবে না।

শুধুমাত্র আল্লাহর ইচ্ছা ও হুকুম মতো জীবন যাপন করবে।

শুধুমাত্র আল্লাহকেই সাজদা করবে।

শুধুমাত্র আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইবে।

শুধুমাত্র আল্লাহকে ভয় করে চলবে।

শুধুমাত্র আল্লাহর উপর ভরসা করবে।

আল্লাহকেই সবার চেয়ে বেশি ভালোবাসবে এবং শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি ও ভালোবাসা লাভের জন্যে কাজ করবে।

এগুলো মানুষের উপর আল্লাহর অধিকার। এসব অধিকার আল্লাহ ছাড়া আর কাউকেও প্রদান না করা এবং একমাত্র আল্লাহকে প্রদান করাই হলো আল্লাহর অধিকারের একত্ব।

 

Related Post