New Muslims APP

ইসলামে জিহাদের সাথে জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসের কোন সম্পর্ক নেই

ইসলাম জঙ্গিবাদ ও সন্দ্রাস

ইসলাম জঙ্গিবাদ ও সন্দ্রাস

বর্তমান সময়ে সবচেয়ে আলোচিত শব্দ হলো জঙ্গিবাদ। ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া, প্রিন্ট মিডিয়া, ওয়েব মিডিয়া, তথা ফেসবুক, টুইটারসহ যত মাধ্যম রয়েছে সর্বত্র সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ শব্দটি শোনা ও দেখা যায়। ইসলামের এর সাথে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের কোন সম্পর্ক যে নাই, বিষয়টি সর্বজন স্বীকৃত হওয়ার পরও এই দুইটি ঘৃণীত শব্দকে ইসলাম ও মুসলমানদের দিকে সম্বোধন করা হচ্ছে। আর জিহাদের মত পবিত্র ও ফরয শব্দকে দূষিত করা হচ্ছে। এই সংখ্যার কলামে আমরা জিহাদ, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের উপর বিশ্লেষণ করবো ইনশা আল্লাহ।
‘জিহাদ’ এটি আরবী শব্দ। উৎপত্তি ‘জা-হাদা’ শব্দ থেকে, যার অর্থ ‘দুই পক্ষের মধ্যে পারস্পরিক ক্রিয়া’। আরবদের কাছে শাব্দিকভাবে ‘জিহাদ’- এর অর্থ হলো ‘কোনো কাজ বা মত প্রকাশ করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা বা কঠোর সাধনা করা’। আরবী ভাষায় জিহাদের আরো কয়েকটি প্রতি শব্দ রয়েছে।

১. اَلْجَدُّ প্রচেষ্টা ব্যয় করা, ২. الطَّاقَةُ কঠোর সাধনা করা, ৩. السَّعْىُ চেষ্টা করা, ৪. اَلْمُشَقَّةُ কষ্ট বহন করা, ৫. بَذْلُ القُوَّةِ শক্তি ব্যয় করা, ৬. النِهايَةُ والغايَةُ শেষ পর্যায়ে পৌঁছা, ৭. الارْضُ الصلبة শক্তভূমি, ৮. الكفاح সংগ্রাম করা
মোট কথা, শাব্দিক অর্থে ‘জিহাদ’-এর সংজ্ঞা হলো, অন্তত দুটি পক্ষের মধ্যে সর্বাত্মক চেষ্টা ও সক্ষমতার প্রকাশ ঘটানো।
শাব্দিক অর্থ অনুযায়ী, এই সর্বাত্মক প্রচেষ্টা সশস্ত্র কিংবা নিরস্ত্র উভয়ই হতে পারে; অর্থ ব্যয় করেও হতে পারে, ব্যয় না করেও হতে পারে। একইভাবে, দুটো পরস্পরবিরোধী প্রবৃত্তির মধ্যেও পরস্পরকে দমানোর জিহাদ (সর্বাত্মক প্রচেষ্টা) হতে পারে। এই জিহাদ (সর্বাত্মক প্রচেষ্টা) কেবল কথার মাধ্যমেও হতে পারে, অথবা কোনো একটি কাজ না করা বা কোনো একটি বিশেষ কথা না বলার মাধ্যমেও হতে পারে।
ইসলাম-জিহাদ-সন্ত্রাস
আল কুরআন ও প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম-এর বাণীতে ঘোষিত জিহাদের চারটি পর্যায় পাওয়া যায়-(১) নফসের বিরুদ্ধে জিহাদ (২) শয়তানের বিরুদ্ধে জিহাদ (৩) মুনাফিকের বিরুদ্ধে জিহাদ, (৪) কাফির মুশরিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ।
নফসের বিরুদ্ধে জিহাদ
আধ্যাত্মিকতার দৃষ্টিতে নফস Vital force বা প্রধান জীবনীশক্তি হিসেবে গণ্য। ব্যক্তির সর্বপ্রথম কাজ হচ্ছে এ নফসকে একান্তভাবে আল্লাহর অনুগত বানানো। কেননা এ শক্তিটি আল্লাহর অনুগত না হলে এবং আল্লাহর দ্বীন পালনে প্রস্তুত না হলে কারো পক্ষেই ঈমানদার মুসলিম হিসেবে জীবনযাপন করা সম্ভব নয়।  প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম প্রচণ্ড গরমের মৌসুমে তাবুকের ময়দানে ৩ লক্ষ রোমান সৈন্যের মোকাবেলায় ত্রিশ হাজার মুজাহিদ নিয়ে হাজির হলেন। হিরাক্লিয়াস মুসলিম বাহিনীর ঐক্য আধ্যাত্মিক ক্ষমতার রিপোর্ট নিয়ে প্রত্যক্ষ যুদ্ধে না এসে ফিরে গেল। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম ঘোষণা দিলেন রাজা’না মিন জিহাদিল আসগর ইলা জিহাদিল আকবার, আমরা ছোট জিহাদ থেকে সবচেয়ে বড় জিহাদ (নফসের বিরুদ্ধে জিহাদের) দিকে ফিরে এসেছি। নফসে আম্মারা, নফসে লাউয়ামার বিরুদ্ধে জিহাদ তথা প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা সাধনা চালিয়ে নফসে মুতমাইন্নায় উপনীত হয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টির মাকামে পৌঁছাই এ জিহাদের লক্ষ্য।
শয়তানের বিরুদ্ধে জিহাদ
শয়তানের বিরুদ্ধে জিহাদ খুবই কঠিন কাজ। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন :-

إِنَّ الشَّيْطَانَ لَكُمْ عَدُوٌّ فَاتَّخِذُوهُ عَدُوًّا

নিশ্চয়ই শয়তান তোমাদের শত্রু। অতএব তোমরা তাকে শত্রুরূপেই গণ্য কর। (সূরা ফাতির -৩৫)
কাফের মুশরিকদের ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ: এই জিহাদের আদেশ দিয়ে ইরশাদ হচ্ছে :-

يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ جَاهِدِ الْكُفَّارَ وَالْمُنَافِقِينَ وَاغْلُظْ عَلَيْهِمْ ۚ وَمَأْوَاهُمْ جَهَنَّمُ ۖ وَبِئْسَ الْمَصِيرُ

 হে নবী! আপনি কাফের ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ করুন। (সূরা তাওবা- ৭৩)
আর মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদের অর্থ হলো: তাদের অনিষ্ট থেকে সতর্ক থাকা আর কাফেরদের বিরুদ্ধে জিহাদ বলতে কাফেররা যখন মুসলিমদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে, ক্ষতির অপচেষ্টা চালায় বা হত্যার পরিকল্পনা নেয় তখন নিজেদের প্রতিরক্ষার জন্য প্রচেষ্টা চালানো। ইসলাম কখনও উগ্রবাদী, আক্রমণাত্মক ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় নি। সব সময় প্রতিরক্ষার জন্যই প্রচেষ্টা চালিয়েছে।

জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস
জঙ্গ শব্দটি ফার্সী, এর অর্থ যুদ্ধ, আক্রমণ। উগ্রপন্থায় সংঘবদ্ধভাবে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করার নাম জঙ্গিবাদ। যারা এ সকল অপকর্ম ও হারাম কাজে লিপ্ত তাদেরকে বলা হয় জঙ্গিবাদী।
সন্ত্রাস শব্দটির উৎপত্তি “ত্রাস” শব্দ থেকে। ত্রাস হচ্ছে ভয়, ভীতি, আতঙ্ক ও ভীতিকর অবস্থা। সন্ত্রাসের ইংরেজী প্রতিশব্দ হচ্ছে Terror, আর সন্ত্রাসী কার্যক্রম যে পরিচালনা করে তাকে বলা হয় Terrorist, আরবীতে বলা হয় ইরহাব (إرهاب) আর যে কাজটি করে তাকে বলা হয় (إرهابي) ইরহাবী। কুরআনের পরিভাষায় বলা হয় মুফসিদ ফ্যাসাদ-বিপর্যয় সৃষ্টিকারী। আল কুরআনে এ বিপর্যয় সন্ত্রাসকে ফিতনা হিসেবেও আখ্যায়িত করা হয়েছে। এরশাদ হয়েছে :-

وَالْفِتْنَةُ أَشَدُّ مِنَ الْقَتْلِ     ١٩١

ফিতনা হত্যার চেয়েও জঘন্য। (সূরা বাকারা- ১৯১)
জঙ্গীবাদ আর জিহাদ এক নয়: কুরআনের সবগুলো জিহাদ সংশ্লিষ্ট আয়াতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানোর কথা বলা হয়েছে। এসব আয়াতের বক্তব্য মতে জোর-যবরদস্তি, জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাসের কোন স্থান ইসলামে নেই। দু’পক্ষের সশস্ত্র সংগ্রামকে জিহাদ বলা হয়নি। বরং শত্রু পক্ষের আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য সশস্ত্র যুদ্ধকে কিতাল পরিভাষায় ব্যবহার করা হয়েছে। এ কথা দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট যে, ইসলামের আবির্ভাব থেকে বিগত ১৪শত বছরের ইতিহাসে জিহাদ কুরআন ও হাদীস মোতাবেক আল্লাহকে পাওয়া, আল্লাহর আদেশ-নিষেধ পালন, শয়তান থেকে নিজেকে রক্ষা করা, শত্রুর আক্রমণ প্রতিহত করা, ভালো কাজের উদ্যোগ নেয়া ইত্যাদি অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত ইতিবাচক অর্থেই ব্যবহৃত হবে। দুর্ভাগ্যের বিষয় ইসলামের অপব্যাখ্যাকারী, কুরআন ও হাদীসের ভুল ব্যাখ্যাদানকারী তথাকথিত একদল পথভ্রষ্ট, বিপদগামী গোষ্ঠী- ইসলামের, কুরআন ও হাদীসের এই পবিত্র পরিভাষা ও কাজকে ম্লান করার উদ্দেশ্যে, সত্যিকারের আলেম, ওলামা, মাশায়েখ ও তাদের শান্তিপ্রিয় ধর্মীয় কার্যক্রমকে প্রশ্নের সম্মুখীন করার হীন উদ্দেশ্যে ইসলামের নামে বোমাবাজী, ধর্মের নামে জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাস, বিনা বিচারে মানুষ হত্যা, জনগণের প্রাণ ও সম্পদ বিনষ্ট করার অপচেষ্টা চালিয়েছে এবং বর্তমানেও চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের এই অপকর্মের সাথে পবিত্র কুরআন হাদীস বা গোটা ইসলামী জীবন ব্যবস্থার কোন সম্পর্ক নেই। তাই এই জঙ্গী তৎপরতা, বোমাবাজী, সন্ত্রাসকে আল কুরআন ফ্যাসাদ বা বিপর্যয় বলে উল্লেখ করেছে। আল কুরআনে ৫০টি আয়াতে ফ্যাসাদকে অত্যন্ত ঘৃণিত, প্রত্যাখ্যাত বিপর্যয় হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন এরশাদ হয়েছে-

وَالَّذِينَ يَنْقُضُونَ عَهْدَ اللَّهِ مِنْ بَعْدِ مِيثاقِهِ وَيَقْطَعُونَ ما أَمَرَ اللَّهُ بِهِ أَنْ يُوصَلَ وَيُفْسِدُونَ فِي الْأَرْضِ أُولئِكَ لَهُمُ اللَّعْنَةُ وَلَهُمْ سُوءُ الدَّار

যারা আল্লাহর অঙ্গীকারকে দৃঢ় ও পাকা পোক্ত করার পর তা ভঙ্গ করে। আল্লাহ যে সম্পর্ক বজায় রাখতে আদেশ করেছেন তা ছিন্ন করে এবং পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করে। ওরা ঐ সমস্ত লোক যাদের জন্য রয়েছে লা’নত বা অভিসম্পাত এবং ওদের জন্যে রয়েছে কঠিন আযাব।” (সূরা রাআদ-২৫)

আল্লাহ ফ্যাসাদকারীকে (সন্ত্রাসীকে) পছন্দ করেন না: যেমন এরশাদ হয়েছে-

وَلَا تَبْغِ الْفَسَادَ فِي الْأَرْضِ ۖ إِنَّ اللَّهَ لَا يُحِبُّ الْمُفْسِدِينَ -٧٧

“পৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করতে প্রয়াসী হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ অনর্থ সৃষ্টিকারীকে পছন্দ করেন না।” (সূরা আল-ক্বসাস-৭৭)
দ্বীনের জন্য প্রচেষ্টা চালানো, হালাল রুজী অর্জনের জন্য, অন্যের উপকার করার জন্য, দেশ ও জাতীর কল্যাণের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করাই জেহাদ। এ জেহাদ কিভাবে হবে সে সম্পর্কে ইমাম রাগেব লিখেন- “প্রচেষ্টা হবে হাত, শক্তি এবং জবান দ্বারা।” (মুফরাদাত-পৃঃ ১০৮)
তাই বলতে চাই কুরআন সুন্নাহ ও ইসলামী ফিকহ বা ইসলামী আইন শাস্ত্রে বর্ণিত জিহাদ হলো একটি ইবাদত। জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাস, বিনাবিচারে মানুষ হত্যা, গুম করা এসব কিছু হারাম। “তবে ইসলামের নামে, ধর্মের নামে সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ, বোমাবাজী, মানুষ হত্যা, জানমাল সম্পদের ক্ষতি করা ,ভাংচুর করা এসবই হারাম, গুণাহের কাজ যা সম্পূর্ণভাবে পরিহার করতে হবে। জিহাদ আর জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাস এক নয়। জিহাদ ইবাদত কিন্তু জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাস হারাম । যা কোন মুসলমান করতে পারে না ।”
বিধিবদ্ধ আইন অমান্য করে ভীতি প্রদর্শন, ক্ষতিসাধন, হুমকি প্রদর্শন, নিরাপত্তা হরণ,পরিবেশে বিপর্যয় সৃষ্টি, ব্যক্তিগত ও জাতীয় সম্পদ ধ্বংস এসবই সন্ত্রাসের অন্তর্ভুক্ত। যারা গ্রহণযোগ্য আদালতের বিচার ছাড়া সশস্ত্র হয়ে পথে-ঘাটে, ঘর-বাড়িতে, নদ-নদী, মরুভূমিতে, হাটে-বাজারে, মসজিদ, মন্দির, উপাসনালয়ে নিরস্ত্র মানুষের উপর হামলা চালায় ও প্রকাশ্যে জনগণের জান-মাল হরণ করে তারাই মুফসিদ বা সন্ত্রাসী।
এ সন্ত্রাসী ও জঙ্গীবাদীদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে সমাজ ও রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল ও আতঙ্কগ্রস্ত করে রেখে পার্থিব সম্পদ অর্জন, ক্ষমতা দখল ও আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে দেশ-বিদেশে পণ্যের বাজার সৃষ্টি করা। এ জঙ্গীবাদের সৃষ্টি হয় বিভিন্ন কারণে।
জঙ্গিবাদ সৃষ্টির কারণসমূহ
 (১) দ্বীন সম্পর্কে অজ্ঞতা:
কুরআন ও হাদীসের সঠিক আকিদা, সঠিক চিন্তা দর্শন ও পূর্ণাঙ্গ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত এবং কুরআন হাদীসের ভুল ব্যাখ্যা-দানকারীরাই সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদকে ধর্মীয় শ্লোগানে বৈধতা দানের অপপ্রয়াস চালাচ্ছে।
(২) দুর্বল ঈমান ও তাকওয়ার অভাব:
ঈমানের দুর্বলতা, জ্ঞানের দৈন্য ও তাকওয়ার অভাবে সহজ পন্থায় পরকালে নাজাত ও জান্নাত লাভের প্রত্যাশায় বহুলোক সন্ত্রাসে জড়িয়ে পড়ছে। তাদের মনমগজে এ ভ্রান্ত বিশ্বাস ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে যে, সমাজে ধর্ম প্রতিষ্ঠা করতে হলে জীবন উৎসর্গ করতে হবে। কাজেই তারা জীবনকে তুচ্ছ মনে করে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ঝাঁপিয়ে পড়া এবং প্রয়োজনে আত্মহত্যা করাকে জিহাদ মনে করে, যার সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই।
(৩) নেতৃত্ব ও ক্ষমতার লোভ:
নেতৃত্বের অযোগ্যতা, সমাজের মানুষের প্রতি কর্তব্যবোধের জ্ঞান না থাকা সত্ত্বেও নেতৃত্বের আসনে অধিষ্ঠিত হওয়ার লোভ, মেজাজের ভারসাম্য হীনতা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতে প্ররোচিত করে।
(৪) আর্থিক অসচ্ছলতা:
দরিদ্রতা, বেকারত্বের অভিশাপে জর্জরিত জনগোষ্ঠি অর্থ উপার্জনের নেশায় সন্ত্রাসী ও জঙ্গীবাদী কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত হয়। কুচক্রী মহল মোটা অংকের টাকা দিয়ে দারিদ্র্য ও বেকার যুবক, কিশোরদেরকে সন্ত্রাসী কাজে ব্যবহার করছে।
(৫) চারিত্রিক ত্রুটি:
ভোগবিলাসে মত্ত হয়ে চারিত্রিক ত্রুটির কারণে অনেকেই মাদকাসক্তিতে জড়িয়ে পড়ে এবং মাদকের অর্থ যোগানের জন্য তারা কোন নীতি-নৈতিকতার তোয়াক্কা না করে সন্ত্রাসের ক্রীড়নকে পরিণত হয়।
(৬) দেশ ও জাতির ইতিহাস ঐতিহ্য ধ্বংস করার বিজাতীয় ইন্ধন :
সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের অপতৎপরতার একটি ক্ষেত্র হল দেশ ও জাতির ঐতিহ্যের ধারক ঐতিহাসিক স্থাপনাসমূহ বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়া। যার পেছনে ইন্ধন যোগায় ভিনদেশীয় কুচক্রী মহল। এ সকল ইতিহাস ঐতিহ্যের মূল্য সম্পর্কে জঙ্গিবাদী ও সন্ত্রাসীদের সম্যক ধারণা না থাকায় তারা নিমিষেই এ সকল স্থাপনা ধ্বংস করতে কুন্ঠা বোধ করে না।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে জিহাদকে, জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাস হতে পার্থক্য বুঝার তাওফীক দান করুন। এবং জিহাদের তাৎপর্য অনুধাবন করে আমল করার তাওফীক দান করুন। আমীন

Leave a Reply


This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.