New Muslims APP

প্রাচীন সভ্যতাসমূহে নারীর অবস্থান

1
নারীর মর্যাদা ও অধিকার প্রদানে তৎকালীন সকল সভ্যতার চেয়ে ইসলাম যে কত অগ্রগামী ছিল তা অনুধাবণ করার জন্যই বিভিন্ন প্রাচীন সভ্যতায় নারীর অধিকার ও মর্যাদা নিয়ে আলোচনা প্রয়োজন।
১. প্রাচীন প্রাচ্য দেশীয় সভ্যতা সমূহে নারীর অবস্থান:
নারীদের প্রতি প্রাচীন চীনাদের আচরণের উদ্ধৃতি পাওয়া যায় খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতকে। হু সুয়ান নামক কবির লেখায়-
“নারী হওয়া বড় দুঃখের, পৃথিবীতে কোনো কিছুই নারীর মত এত সস্তা নয়।”
কনফুসিয়াস বলেন-
“নারীর মূল কাজ আনুগত্য, শৈশব কৈশোরের পিতার, বিয়ের পর স্বামী, এবং বিধবা হওয়ার পর পুত্রের, এই আনুগত্য হবে প্রশ্নাতীত এবং একচ্ছত্র”।
বৌদ্ধ ধর্ম নারীকে নীচ এবং পাপে পূর্ণ হিসেবে দেখানো হয়েছে, বলা হয়েছে নারীর মত ভয়াবহ আর কিছুই নেই।
হিন্দুধর্মে বেদ বা অন্যান্য ধর্মগ্রন্থ পড়া বা কোনো ধর্মীয় কর্মকাণ্ডে নারীর কোনো ভুমিকা ছিল না। বিধবা হওয়ার পর পুনর্বিবাহ বা সম্পত্তির অধিকার তো দুরের কথা, স্বামীর সাথে এক চিতায় সহমরণই ছিল তার একমাত্র পরিণতি।
২. পাশ্চাত্য সভ্যতায় নারীর অবস্থান:
গ্রীক সভ্যতায় নারী ছিল পুরুষের অধীনা, বিয়ের সময় তার কোনো মতামত নেওয়া হতো না, স্বামী ছিল তার প্রভু।
রোমান সভ্যতায় নারী যে পৃথকভাবে কিছু করতে সক্ষম তাই বিশ্বাস করা হতো না। এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটেনিকা অনুসারে, কোনো মহিলা বিয়ে করলে স্বাভাবিকভাবেই তার সম্পদের মালিক হতো তার স্বামী। মহিলারা স্বামীর অনুমতি ব্যতীত নিজের সম্পত্তিও খরচ করতে পারতো না।
৩. প্রাচীন মধ্যপ্রাচ্যে নারীর অবস্থান :
প্রাচীনকালে আরবরা যখন শুনতো তার কন্যা সন্তান হয়েছে, তখন রাগে তাদের মুখ রক্তবর্ণ ধারণ করতো। এ সময় কন্যা শিশুদের জীবন্ত মাটিতে চাপা দিয়ে হত্যা করা হতো। পিতার মৃত্যুর পর পুত্ররা সম্পত্তির সাথে পিতার বিধবা স্ত্রীদেরও মালিক হতো।
৪. ব্যতিক্রম:
কোনো কোন সভ্যতায় ভদ্র ঘরের নারীদের বিশেষ মর্যাদা ছিল। প্রত্ন তাত্ত্বিক খননে আবিষ্কৃত বেশ কিছু সভ্যতায় দেখা যায়, প্রভুকে নারীর আকৃতিতে কল্পনা করা হয়েছে। মিশরে ওঝওঝ, ব্যবিলনে ঞরধসধঃ,  গ্রীসে উবসবঃৎব, রোমে গধষবহ নামে মহিলা দেবীর পুজা করা হতো। ভারতবর্ষে হিন্দু ধর্মে সরস্বতী, লক্ষী, দূর্গা, কালি, ইত্যাদি মহিলা দেবীর পূজা করা হয়। কিন্তু এসব সমাজেও বাস্তবে নারীর অধিকার ও মর্যাদা ছিল না।
ইসলামে নারীর অধিকার ও মর্যাদা:
ইসলাম নারীকে সন্মানিত করেছে এবং তার মর্যাদা ও অধিকার নিশ্চিত করেছে। যদিও কোন কোন মুসলিম সমাজ অজ্ঞতা ও কুসংস্কারে আচ্ছন্ন হয়ে নারীর ইসলাম প্রদত্ত অধিকার ও মর্যাদা দিচ্ছেনা। তথাপি কুরআন এবং হাদিস বিশ্লেষন করে দেখা যায় যে একমাত্র ইসলামই নারীকে যৌক্তিক অধিকার প্রদান করেছে। 

Leave a Reply


This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.