Originally posted 2013-06-20 18:38:37.
৬নং যুক্তি: ধর্মীয় গুরুব্যক্তিগণকে হতে হবে সবার জন্য আদর্শ
কলকাতা ইউনিভার্সিটি থেকে এম.এসসি পাশ একজন নও-মুসলিমকে জিজ্ঞেস করেছিলাম আপনি কি দেখে মুসলমান হলেন? তিন জবাবে বললেন,হিন্দুদের যারা পূজনীয় ব্যক্তি তাদের আদর্শ যদি আজ পৃথিবীর সর্বত্র কায়েম হতো তবে সারা পৃথিবীর অবস্থা কি হতো তা চিন্তা করে আমি মুসলমান হয়ে গেছি। তিনি বললেন,“আজ যদি দেশের যুবক ছেলো শ্রীকৃষ্ণের আদর্শ অনুসরণ করে যুবতি মেয়েদের কাপড় নিয়ে গাছে ওঠে বসে থাকে….. তা’হলে সমাজের অবস্থা কিরূপ দাঁড়ায়।” আরও বললেন, “যদি আজ দ্রৌপদির ন্যায় কেউ পাঁচটা স্বামী গ্রহণ করে তা হলেই বা সমাজের অবস্থাটা কি দাঁড়ায়।” এই ধরনের অনেকের কথাই তিনি বললেন যা তাঁর মুখে নও-মুসলিম হিসেবে শোভা পেলেও আমার কলমে লেখা আমি লজ্জাকর মনে করে যদিও লিখলাম না কিন্তু হিন্দু ভাইয়েরা প্রত্যেকেই মনে মনে তা বুঝবেন। বিশেষ করে এই বিংশ শতাব্দীতেও শিবের লিঙ্গ পূজার ন্যায় পূজার দৃষ্টান্ত রয়েছে। এসবও কি ধর্মীয় কাজ হতে পারে? এ ধরনের অনেক কিছুই তিনি বললেন, এবং বলেন যে, এই সব দেখে শুনে আমি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছি। তিনি বললেন আমি চিন্তা করেছি যে, কোথায় হিন্দুদের ভগবানের লীলা আর কোথায়ও মুসলমানদের নবী-রাসূলগণের আদর্শ চরিত্র। এসব চিন্তা ভাবনা করে আমি আর হিন্দু থাকতে পারলাম না।
৭নং যুক্তি : আল কুরআনই একমাত্র যুক্তিগ্রাহ্য ও বিজ্ঞানসম্মত ধর্মগ্রন্থ
এক দিকে যেমন ইসলাম ছাড়া আর কোনো ধর্মই একখানা পূর্ণ ধর্মগ্রন্থ দিতে পারে না। তেমন কুরআনে এমন সব বৈজ্ঞানিক তথ্য রয়েছে যা নাযিল হয়েছে ১৪ শত বৎসর পূর্বে আর তার সত্যতা প্রমাণ হচ্ছে আজ এই বিংশ শতাব্দীতে। এই কুরআনের এমন কতগুলি বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা আর কোনো ধর্মগ্রন্থেই নেই। যেমনঃ
১। কুরআনের ভাব-ভাষা এমনভবে সুবিন্যস্ত যার অনুরূপ একটি সূরা আজ পর্যন্ত কেউ তৈরী করতে পারেন।
২। যার উপস্থাপিত বৈজ্ঞানিক তথ্যগুলি বা কোনো কথাকেও আজ পর্যন্ত কেউ অবৈজ্ঞানিক বলে প্রমাণ করতে পারেনি।
৩। পৃথিবীর প্রত্যেক দেশে যত কুরআন আছে তার সবগুলিকে একত্রিত করলেও তার কোনো একটির মধ্যেও সামান্যতম একটু তারতম্য কেউ পাবে না।
৪। পৃথিবীর সব ধর্মের ধর্মগ্রন্থ যদি পুড়িয়ে দেয়া হয় তবে নতুন করে হাফেজদের মাধ্যমে কুরআন পুনরুদ্ধার করা সম্ভব। এছাড়া অন্য কোনো ধর্মগ্রন্থই পুনরুদ্ধার সম্ভব নয়।
৫। পৃথিবীর কোনো ধর্মগ্রন্থই আল-কুরআনের ন্যায় অবিকৃত অবস্থায় নেই। যেমন আছে আল কুরআন।
৬। সর্বশেষ মিশরের তরুণ বিজ্ঞানী ড. এরশাদ খলিফার দ্বারা এমন এক চাঞ্চল্যকর তথ্য আবিষ্কার হয়েছে যা সারা পৃথিবীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। তা হচ্ছে এই যে,আল কুরআনের শব্দ,অক্ষর,যের,যবর পেশ,নোক্তা ইত্যাদির প্রত্যেকটির মধ্যে এমন এক নিখুঁত হিসেব রয়েছে যা কম্পিউটারে ধরা পড়বে গণনায় মিল পড়বে যা রচনা করা কোনো আদম সন্তানেরর পক্ষেই সম্ভভ নয় যে,তেমন ধরনের হিসাব নিকাশ করে কোনো গ্রন্থ কেউ লিখতে পারে। যেমন তরুণ বিজ্ঞানী ড. এরশাদ খলিফা হিসাব করে দেখেছেন ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’ এর মধ্যে অক্ষর রয়েছে ১৯টি। তিনি দাবী করেন,গোটা কুরআনের মধ্যে এই ১৯ সংখ্যাটি বিশেষ গুরুত্ববহ। তিনি হিসাব করে দেখেছেন ‘ইসম’ শব্দটি কুরআনে ১৯ বার ব্যবহৃত হয়েছে। আর আল্লাহ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে ২৬৯৮ বার যার মধ্যে ১৯ রয়েছে ১৪২ বার অর্থাৎ সংখ্যাটি ১৯ দ্বারা বিভাজ্য। এছাড়াও তিনি হিসাব করে দেখেছেন যে সব সূরার পূর্বে কাটা কাটা অক্ষর রয়েছেন যেমন আলিম-লাম-মীম;ইয়া-সীন,আলিফ-লাম-রা,ত্বা-হা ইত্যাদি। এই ধরনের সূরা মোট ২১টি রয়েছে। এসব সূরার অক্ষর কম্পিউটারের সাহায্যে হিসাব করে দেখা গেছে যে সূরার পূর্বে যে পৃথক পৃথক অক্ষর দিয়ে সূরা আরম্ভ করা হয়েছে, ঐ অক্ষর গোটা সূরার মধ্যে যতবার আছে তা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য। যেমন সূরা ক্বাফ এর মধ্যে ক্বাফ’ অক্ষরটি আছে ৫৭ বার, এই ৫৭ সংখ্যাটি ১৯ দ্বারা বিভাজ্য। এইভাবে ইয়াসীনে ‘ইয়া’ যতবার আছে তা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য ‘সীন’ যতবার আছে তাও ১৯ দ্বারা বিভাজ্য। বলুন এইভাবে হিসাবে-নিকাশ করে কোনো বই লেখা মানুষের দ্বারা কি সম্ভব?
আল-কুরআনে ১৯ এর যে রহস্যময় গাণিত্যিক সংখ্যার একটা বন্ধন চালু রয়েছে তা কি কোনো কালে কোনো মানুষের দ্বারা সম্ভব? তবে সম্ভবপর একটা থিওরী আছে যে,সম্ভবতঃ হতেও পারে। আর তা যদি হয়ও তাহলেও এর জন্য প্রয়োজন বহু বহু সংখ্যক খসড়া তৈরীর। একবার বলা হবে আর তা লিখে যাওয়া হবে এতে এরূপ একটা গ্রন্থ রচনা হওয়া মানুষের জন্য কি সম্ভব? এই প্রশ্ন করা হয়েছিল কম্পিউটারকে। যে কম্পিউটার হচ্ছে আধুনিক বিজ্ঞানের সর্বাপেক্ষা বিস্ময়কর আবিষ্কার। আর যে কোনো ধরনের হিসাবের জন্য তার উপর নির্ভর করা যায়। সেই কম্পিউটার বলেছে “যদি কেউ সচেতনভাবে গণিতের নিয়ম নীতি মেনে চলে ৬২৬,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০০, চলে ৬২৬,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০০ বার (৬২৬ সেন্টিমিলিয়ন বার) চেষ্টা করে তাহলে দৈবাৎ কারো অজ্ঞাতে এই ১৯ এর দুর্ভেদ্য ফর্মূলা প্রয়োগ করে একটা বার একটা আল-কুরআন রচনা হয়েও যেতে পারে।” কিন্তু এটা কি মানুষের দ্বারা সম্ভব? একটা মানুষ যদি সৃষ্টির প্রথম দিন থেকে রাসূল (সাঃ) এর জীবন কাল পর্যন্ত হায়াত পেত তবুও এবং সে যদি এই কাজেই লিপ্ত থাকত তবুও কি ৬২৬ সেন্টিমিলিয়ন বার চেষ্টা করা সম্ভব? এ চিন্তাটাই অবাস্তব যে মানুষের দ্বারা এরূপ গ্রন্থ রচনা হতে পারে। এটা কারও দ্বারাই সম্ভব নয় বলে আল্লাহ আল-কুরআনের সুরা বনি ইসরাঈলের ৮৮নং আয়াতে রাসূলকে লক্ষ্য করে বলেছেন “আপনি বলে দিন তোমরা পৃথিবীর সমস্ত মানুষ এবং জ্বিন একত্রে মিলেও যদি চেষ্টা কর তবু এইরূপ একটি কুরআন তোমরা রচনা করে আনতে পারবে না। তারা পরস্পরের যত সাহায্যকারীই হোক না কেন।” কাজেই এটা নিপেক্ষ বিবেকেরই দাবী যে, এই কুরআন ও কুরআনের ধর্মকে মেনে নিয়ে কুরআনেরই আইন কানুন মোতাবিক জীবন যাপন করা যেন পরকালের জীবনটা সুখময় হতে পারে।