ড. মোহাঃ ছামিউল হক ফারুকী
বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ দার্শনিক ও বুদ্ধিজীবী জর্জ বার্ণাডশ এর একটি উক্তি দিয়েই আজকের লেখা শুরু করছি। তিনি বলেছেন,
I believe that if a man like prophet Muhammad was to assume the dictatorship of modern world, would success in solving it’s problem in a way that would being in men needed peace and happiness.
‘‘আমার বিশ্বাস নবী মুহাম্মদের মত কোন ব্যক্তি যদি বর্তমান বিশ্বের একনায়কের পদে আসীন হতেন, তাহলে তিনিই বর্তমান বিশ্বের সমস্যাবলীর এমন সমাধান দিতে পারতেন, যার ফলে সমস্ত বিশ্বে কাংক্ষিত শান্তি ও সুখ নেমে আসত।’’ জর্জ বার্ণাডশ একজন দার্শনিক হলেও উপরোক্ত উক্তি তার কোন তাত্ত্বিক কল্পনার ফসল নয়। বরং এটি বাস্তবতার এক নিখুঁত চিত্র।
মানবতার বন্ধু, সৃষ্টিকূলের করুণার প্রতিমূর্তি মুহাম্মদ (সা.) যে সময়ে আবির্ভূত হন, সে সময়কে ঐতিহাসিকগণ ‘আইয়্যামে জাহিলিয়্যাত’ তথা ‘মূর্খতার যুগ’, ‘বর্বরতার যুগ’, ‘অন্ধকার যুগ’ প্রভৃতি অভিধায় অবিহিত করেছেন। সে সময়ে মানবতা ছিল বিপর্যস্ত, নৈতিকতা ছিল বিধ্বস্ত, শান্তি-শৃঙ্খলা ছিল সম্পূর্ণ বিনষ্ট। জান-মালের কোন নিরাপত্তা ছিল না, ছিল না কোন স্থিতি, স্বস্তি বা সুখ। বিদগ্ধ পৃথিবী ছিল অশান্তির এক অগ্নিকুন্ড। মারামারি, হানাহানি, রক্তপাত, খুন-খারাবী, যুদ্ধ-বিগ্রহ প্রভৃতি ছিল নিত্য দিনের স্বাভাবিক চিত্র। জুলুম-নিপীড়ন-নির্যাতনে পৃথিবী ছিল একেবারেই অতিষ্ঠ। মহামানবদের প্রচারিত জ্ঞান এবং স্রষ্টার বাণীর যাবতীয় শিক্ষা মানুষের মন-মস্তিষ্ক হতে একেবারেই বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল। অজ্ঞানতার অন্ধকার, অধর্ম ও অনাচারের নানা পাপ ও গ্লানি মানব জাতির জ্ঞান ও বিবেকের এবং সুনীতি ও সদাচারের উপর পুরোপুরি আধিপত্য কায়িম করে বসেছিল।
এমনি এক পঙ্কিল ও পুঁতিগন্ধময় পরিবেশে শেষ নবী মুহাম্মদ (সা.) জন্মগ্রহণ করেন এবং লালিত-পালিত ও বড় হন। এমন পরিবেশে জন্মগ্রহণ করলেও এর পঙ্কিলতার কোন ছোঁয়াই তাঁকে স্পর্শ করতে পারেনি। এ প্রতিকূল পরিবেশেও তিনি উন্নত নৈতিক চরিত্র এবং মানবিক গুণাবলী ও মূল্যবোধ সম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে উঠেন।
মানবতার দরদী ও বন্ধু মুহাম্মদ (সা.) যুবক বয়সে উপনীত হয়ে সমাজ ও মানুষকে নিয়ে ভাবতে শুরু করেন। তদানিন্তন সমাজের করুণ চিত্র দর্শনে তাঁর মন ব্যথিত হয়ে উঠে। তিনি সে সমাজ পরিবর্তন করে শাস্তিপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠেন। তাঁর এ চিন্তা আরো শাণিত হয়, যখন তিনি পিতৃব্যের সাথে আরবে দীর্ঘকাল স্থায়ী ‘হারবুল ফিজার’ নামক অন্যায় যুদ্ধে গমন করেন। এ যুদ্ধে তিনি চাচার জন্য তীর সংগ্রহ করে দেয়ার পাশাপাশি যুদ্ধের বিবৎসতা গভীরভাবে অবলোকন করার সুযোগ পান। অন্যায় রক্তপাত ও অহেতুক জীবন হরণে তাঁর দুঃখ ও ব্যথায় ভারাক্রান্ত হয়ে পরে। সেখানেই তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে, এ অবস্থা থেকে মানুষকে মুক্ত করতে হবে। যুদ্ধ থেকে ফিরে তিনি সমবয়সী যুবকদেরকে একত্রিত করে অন্যায় যুদ্ধের ভয়াবহতা এবং প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থার যাতাকল থেকে মানুষকে মুক্ত করার জন্য কি করা যায় তার পরিকল্পনা তুলে ধরেন। আলোচনার পর গঠিত হয় ‘হিলফুল ফুজুল’ নামক একটি শান্তি সংঘ। এ সংঘের সদস্যগণ প্রতিজ্ঞা করলেন :
১. আমরা দেশের অশান্তি দূর করার জন্য সাধ্যমত চেষ্টা করব।
২. বিদেশী লোকদের ধন-প্রাণ ও মান-সম্ভ্রম রক্ষা করার জন্য আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব।
৩. দরিদ্র ও অসহায় লোকদের সাহায্য করতে আমরা কখনো কুণ্ঠিত হবো না।
৪. অত্যাচারী ও তার অত্যাচারকে দমিত করতে এবং দুর্বল দেশবাসীকে অত্যাচারীর হাত থেকে রক্ষা করতে প্রাণপণ চেষ্টা করব।
সমবেত লোকেরা আল্লাহর নামে শপথ করে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলেন যে,তারা উৎপীড়িত ও অত্যাচারিদের পক্ষ সমর্থন করবেন এবং অত্যাচারীর নিকট হতে মানুষের অধিকার আদায় না করে দিয়ে ক্ষান্ত হবেন না। যতদিন সমুদ্রে একটি লোম সিক্ত করার মত পানি অবশিষ্ট থাকবে, ততদিন এ প্রতিজ্ঞা বলবৎ থাকবে।
অন্যায়, জুলুম, অত্যাচার ও অনাচারের প্রতিরোধ করে ন্যায়, ইনসাফ ও শান্তি প্রতিষ্ঠার এটিই ছিল সে সময়ের প্রথম আনুষ্ঠানিক উদ্যোগ, যা গ্রহণ করেছিলেন মানবতার মুক্তির দূত, বিশ্ব শান্তির বার্তাবাহক, মানবতার মহান বন্ধু মুহাম্মাদ রাসূলুল্লাহ (সা.)
এ সংঘ তদানিন্তন সমাজের সামগ্রিক পরিবর্তন সাধন করে সার্বিক শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম না হলেও এটি যে এক নৈতিক প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়েছিল তা বলাই বাহুল্য। কুরাইশ দলপতিগণ কিছুদিন পর এ প্রতিজ্ঞার কথা ভুলে গেলেও মুহাম্মদ (সা.) তা এক মুহূর্তের জন্যও বিস্মৃত হননি। বরং সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য তাঁর ভাবনা বেড়েই যেতে লাগল। এক পর্যায়ে এ ভাবনা তাকে এতটাই তাড়িত করে যে, তিনি এ নিয়ে গভীর অভিনিবেশ সহকারে গবেষণার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন এবং এ জন্য হেরার গুহায় ধ্যানমগ্ন হয়ে পড়েন। ভাবুক মুহাম্মদ (সা.) এর ভাবনা অবশেষে আলোর মুখ দেখতে পেলেন। হেরার গুহায় ধ্যানমগ্ন অবস্থাতেই স্বর্গীয় দূত জিব্রাইল (আ.) আসলেন, কিসে মানুষের মুক্তি ও দুনিয়ার শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে আল্লাহর পক্ষ হতে তার দিকনির্দেশনা (হেদায়াত) নিয়ে।
ওহীর মাধ্যমে আল্লাহর পক্ষ হতে হেদায়াত লাভের পর তিনি হেরার গুহা থেকে বেড়িয়ে পরেন। এবার বিশ্বের শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি তাঁর কর্মসূচীর দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু করেন। প্রথমত : তিনি মানুষের কল্যাণ ও মুক্তি এবং বিশ্ব শান্তি কোন পথে তা মানুষকে বুঝাতে থাকেন। এরপর সে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বাস্তব কর্মসূচী গ্রহণ করেন। দীর্ঘ সময় বাদ-প্রতিবাদ, বাধা-প্রতিবন্ধকতা, দ্বন্দ্ব-সংঘাত ও যুদ্ধ-বিগ্রহ পেরিয়ে তিনি সমাজে কাংক্ষিত শান্তি ও স্বস্তি স্থাপনে সক্ষম হন। কয়েক শতাব্দীর পুঞ্জীভূত জঞ্জাল দূরিভূত করে মানুষের বাস উপযোগী সুন্দর একটি সমাজ প্রতিষ্ঠায় সফল হন। অসভ্যতা, বর্বরতা ও অন্ধকারের অতল গহবরে নিমজ্জিত মানব জাতিকে সভ্যতা, শালীনতা ও মানবতার শীর্ষ চূড়ায় আরোহন করাতে সক্ষম হন। তাঁর সফলতার অন্যতম দিকগুলো হলো,
তিনি বিচ্ছিন্ন গোত্রীয় শাসনের অবসান ঘটিয়ে কেন্দ্রীয় শাসন ব্যবস্থা, কেন্দ্রীয় সরকার ব্যবস্থা এবং একটি আদর্শ রাষ্ট্র ব্যবস্থার প্রবর্তন করেন। নৈতিক বলে বলীয়ান এবং শান্তিকামী একটি বৃহৎ জাতি (মুসলিম উম্মাহ) গঠন করেন।
জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন। মক্কী যুগে কাফিরদের দ্বারা নির্যাতিত হয়ে মুহাম্মদ (সা.) যে ভবিষ্যৎ বাণী করেছিলেন, ‘‘এমন একদিন আসবে, যখন সানা‘আ থেকে হাজরামাউত পর্যন্ত কোন রমনী একাকী পথ চলবে, কিন্তু একমাত্র আল্লাহর ভয় ব্যতিত তার মনে অন্য কোন ভয় থাকবে না’’ এর পূর্ণ বাস্তবায়ন করেছিলেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রে জান-মালের নিরাপত্তা এতটাই নিশ্চিত ছিল যে, খলিফা উমর (রা.) হারানো উট খুজার জন্য একাকী মরুভূমিতে চলে যান এবং গাছ তলায় ইট মাথায় দিয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পরেন, কিন্তু তাঁর নিরাপত্তার জন্য কোন সিকিউরিটির প্রয়োজন হয়নি।
স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করেছিলেন। ফলে সমাজ থেকে জুলুম, নির্যাতন ও অবিচার সম্পূর্ণভাবে নির্মূল হয়ে গিয়েছিল। দুর্নীতি-দুরাচারের লেশমাত্রও অবশিষ্ট ছিল না। তাঁর বিচার ব্যবস্থা ছিল একেবারেই স্বধীন ও নিরপেক্ষ। একবার ক্ষেতে পানি সেচ দেয়াকে কেন্দ্র করে জনৈক ইহুদী ও মুসলমানের মধ্যে বিবাদ বাধে। মুসলমান ব্যক্তিটি এর বিচার দেন নবী কারীম (সা.)-এর নিকট। তার আশা ছিল নবী কারীম (সা.) তার পক্ষই রায় দেবেন, যেহেতু তিনি একজন মুসলমান। ন্যায়ের প্রতীক মুহাম্মদ (সা.) ঘটনা শ্রবণ করে ইহুদী সঠিকপথে থাকায় তার পক্ষে রায় দিলেন। মুসলমান ব্যক্তিটি এ রায়ে সন্তুষ্ট হতে না পেরে ছানী বিচারের জন্য উমর (রা.) এর নিকট চলে গেলেন। ইতিবৃত্ত শুনে উমর (রা.) তলোয়ার দ্বারা তার গর্দান উড়িয়ে দিয়ে বললেন, যে ব্যক্তি রাসূল (সা.)-এর ফায়সালা মানে না তার জন্য এটিই উত্তম ফায়সালা।
হযরত আলী (রা,) খলিফা থাকাকালীন তাঁর একটি বর্ম হারিয়ে গেল। একদিন বাজারে এক ইহুদির নিকট তাঁর বর্মটি দেখতে পেয়ে তা ফিরে পাওয়ার জন্য আদালতে মামলা দায়ের করলেন। বিচারক আলী (রা.)-এর উপস্থাপিত সাক্ষীর গ্রহণযোগ্যতা না থাকায় মামলা খারিজ করে দিলেন। কায়েস বংশের ফাতিমা নাম্নী জনৈকা মহিলা চুরি করলে তার হাত না কাটার জন্য সাহাবীগণ রাসূল কারীম (সা.)-এর নিকট সুপারিশ করলে তিনি রেগে গিয়ে বললেন,‘যদি আমার মেয়ে ফাতিমাও চুরি করত, তাহলে আমি তার হাত কেটে দিতাম’।
এ ধরনের স্বাধীন নিরপেক্ষ ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার কারণে মানুষের মধ্যে অপরাধ প্রবণতা এতটাই হ্রাস পেয়েছিল যে, হযরত আবু বকর (রা.) এর আড়াই বছর শাসনামলে আদালতে কোন মামলাই দায়ের হয়নি। মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা প্রদান। মুহাম্মদ (সা.) এমন এক রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিলেন, যেখানে মানুষের মৌলিক প্রয়োজন পূরণের গ্যারাণ্টি দেয়া হয়েছিল। যাকাত ভিত্তিক অর্থ ব্যবস্থা প্রবর্তনের ফলে মানুষের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা ফিরে আসে। অধিকন্তু যারা অভাবী, তাদেরকে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ভাতা দিয়ে ভরণ-পোষণের ব্যবস্থা করা হতো। এ অর্থ ব্যবস্থা চালুর ফলে অতি অল্প সময়ের মধ্যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এতটাই অর্জিত হয় যে, হযরত উমর (রা.)-এর শাসনামলের এক সময় যাকাত নেয়ার মত লোক খুঁজে পাওয়া যেত না।
সৌভ্রাতৃত্ব, সৌহার্দ ও মৈত্রী স্থাপন। দুধর্ষ আরব জাতি, যারা দীর্ঘদিন থেকে পরস্পর দ্বন্দ্ব-কলহে লিপ্ত ছিল। পরস্পর হানাহানিরত গোত্রগুলোকে ইসলামের সুমহান ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ করেন। ফলে হিংসা-বিদ্বেষ ও কলহ ভুলে তারা ভালবাসা ও মৈত্রী বন্ধনে আবদ্ধ হন। দীর্ঘকালের শত্রুতা ভুলে তারা একে অপরের বন্ধুতে পরিণত হয়। ‘নিশ্চয়ই মুমিনরা পরস্পর ভাই ভাই’ এ ভিত্তিতে তাদের সুসম্পর্ক গড়ে উঠে। নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা : জাহিলী যুগে নারীরা ছিল সবচেয়ে অবহেলিত, লাঞ্ছিত ও অধিকার বঞ্চিত। জনসংখ্যার অর্ধাংশকে অবহেলিত রেখে সমাজের উন্নয়ন ও অগ্রগতি সম্ভব নয়। এ জন্য মুহাম্মদ (সা.) নারীদের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেছেন। তিনি নারীদের যেমন সামাজিক মর্যাদা প্রদান করেছেন, তেমনি তাদের অধিকারও প্রদান করেছেন। আল কুরআনে ঘোষণা করা হয়েছে, ‘‘তাদের উপর তোমাদের যেমন অধিকার রয়েছে, তোমাদের উপরও তাদের তেমন অধিকার রয়েছে।’’ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নারীরা একেবারেই বঞ্চিত ছিল। ইসলাম তাদেরকে উত্তরাধিকারসহ অন্যান্য অর্থনৈতিক অধিকার প্রদান করেছে।
আল্লাহর আইনের পূর্ণাঙ্গ অনুসরণ। সমাজের সকল ক্ষেত্রে মুহাম্মদ (সা.) যে কাংক্ষিত পরিবর্তন সাধনে সক্ষম হয়েছিলেন তার মূল কারণ ছিল সকল ক্ষেত্রে আল্লাহর আইনের অনুসরণ। আল্লাহ স্রষ্টা হিসেবে মানুষের জন্য যে বিধান প্রদান করেছেন, তা ছিল পূর্ণাঙ্গ, নির্ভূল, মানব প্রকৃতি ও বিশ্ব প্রকৃতির অনুকূল এবং জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের জন্য কল্যাণকর। ফলে এমন একটি আইন অনুসরণই বিশ্বকে সুখ, সমৃদ্ধি শান্তিতে ভরে দিয়েছিল।
মুহাম্মদ (সা.) যে সমাজে আবির্ভূত হয়েছিলেন, আইয়ামে জাহিলিয়াতের সে সমাজের চিত্র শুরুতে যৎকিঞ্চিৎ বর্ণনা করা হয়েছে। সে সমাজকে পরিবর্তন করে শান্তির সমাজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন যে সকল নিয়ামকের দ্বারা তারও সংক্ষিপ্ত বর্ণনা উপরে তুলে ধরা হয়েছে। বর্তমান বিশ্বেও অশান্তি, অস্থিরতা, জুলুম, নির্যাতন, খুন, রাহাজানি, নারী নির্যাতন এবং অসহায় ও অধিকার বঞ্চিত মানুষের হাহাকার সর্বত্র বিরাজিত।
মানুষের নানামুখী প্রচেষ্ট সত্বেও অশান্তি ও অস্থিরতা বেড়েই চলেছে। ক্রমেই মানুষের জান-মাল ও ইজ্জত-আবরু অনিরাপদ হয়ে উঠছে। এ অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য দার্শনিক জর্জ বার্ণাডশ যে সত্য ও বাস্তবতা উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়েছিলেন, তা যদি বর্তমান বিশ্বের অন্যান্য বুদ্ধিজীবী উপলব্ধি করতে সক্ষম হতেন, তাহলে মানব জাতির জন্য এক মহাকল্যাণ সাধিত হতো। এজন্য আমি সকলকে আহবান জানাতে চাই, আসুন, জর্জ বার্ণাডশ এর মত আমরাও সত্যকে উপলব্ধি করি এবং মুহাম্মদ (সা.)-এর আদর্শকে জীবনের সকল ক্ষেত্রে গ্রহণ করে বিশ্ব মানবতার মুক্তির মহান পথকে সুপ্রশস্ত করি। আল্লাহ তা’আলা আমাদের সবাইকে তাওফীক দান করুন। আমীন.