মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহাবীগণের সম্পর্কে আলোচনার মধ্যে বিশেষ একটি স্বাদ রয়েছে। তাঁদের স্মরণে মজলিস পবিত্র হয়। তাদের আলোচনায় অন্তর আনন্দিত হয়, হৃদয় আন্দোলিত হয়, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দূর হয়, দুঃশ্চিন্তা মুছে যায়, চিন্তাগ্রস্ত ব্যক্তি প্রশান্তি পায়, উৎসুক ব্যক্তি আনন্দে বিহবল হয় ও প্রেমিক ব্যক্তি উৎফুল্ল হয়।
তাঁরা উত্তম আদর্শ ও অনুকরণীয়।
তাঁরা নেতৃত্ব ও নেতৃস্থানীয়।
তাঁরা আলিম ও ফকীহ্।
তাঁরা তাকওয়াবান ও ন্যায়পরায়ণ ।
তাঁরা ইমাম ও উম্মতের নেতা।
তাঁরা …………. তাঁরা…………….. তাঁরা…………….
তাঁদের সম্মান, মর্যাদা, গৌরব খ্যাতি ও উচ্চ অবস্থানের জন্য এটাই যথেষ্ট যে, তাঁরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের চেহারা মুবারক দেখেছেন, তাঁর কথা শুনেছেন, তাঁর সম্মুখে বসেছেন। আমার পিতা মাতা উৎসর্গ হোক নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্য।
ঐ সব সম্মানিত ব্যক্তি যাঁদের আলোচনা দিক-দিগন্তের সর্বত্র মুখরিত হয় তাঁদের অন্যতম………..
আমাদের সম্মানিত সাহাবী রাদি আল্লাহু আনহু ।
যিনি অগ্রগামী বিজয় নায়ক।
যিনি কৈশোরের সূচনা থেকে দুঃসাহসী জিহাদ পাগল।
যিনি মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনাকারী ও সংরক্ষণশারী।
যিনি বিদআতীদের শত্রু, যাদের প্রধান, সবচেয়ে নিকৃষ্ট ও সর্বাধিক গোমরাহ ছিল খারেজী হারুরীরা।
যিনি মুসলিম উম্মাহের বন্ধু ও স্নেহশীল।
যিনি ছিলেন সুরক্ষিত দূর্গ, প্রবৃত্তির অনুসারীদের দৃষ্টিতে সুদৃঢ়, অধিকতর সুরক্ষিত।
তিনি হলেন, আবু সাঈদ সামুরা ইব্ন জুনদুব রাদি আল্লাহু আনহু।
তাঁর নাম:
তিনি ছিলেন, সামুরা ইব্ন জুনদুব ইব্ন হিলাল ইব্ন হারীজ ইব্ন মুররাহ ইব্ন হাযন ইব্ন আমর ইব্ন জাবের ইব্ন জিররিয়াসাতইন আল-ফাযারী, তিনি আনসারী পরিবারে চুক্তিবদ্ধ ছিলেন।
তাঁর কুনিয়ত:
বলা হয় আব্দুর রহমান বলা হয় আবু সাঈদ বলা হয়েছে। আবু সোলাইমান (ইব্ন হাজর এ মতকে প্রাধান্য দিয়েছেন। এছাড়া বর্ণিত আছে আবু আব্দুল্লাহ আবু মুহাম্মদ।
তাঁর বেড়ে ওঠা:
আমাদের এ সম্মানিত সাহাবী আনসার গৃহে বেড়ে ওঠেন। আমরা সকলেই জানি আনসার কারা এবং মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে তাঁদের মর্যাদা কেমন ছিল। অতএব এটা আশ্চর্য কিছু নয় যে, তাঁদের ঘরে বেড়ে উঠা শিশুর বৈশিষ্ট্য তাদের পবিত্র চরিত্র, মহান আচরণ ও উচ্চ স্বভাবেরই হবে।
ইব্ন আব্দুল বার তাঁর সনদে বলেন, সামুরা ইব্ন জুনদুবের পিতা তার সন্তান সামুরাকে শিশু অবস্থায় তাঁর মায়ের কোলে রেখে মারা যান। তিনি ছিলেন সুন্দরী নারী, তিনি মদীনায় আগমন করলে অনেকেই তাঁকে বিবাহের প্রস্তাব দেন। তিনি তাদের উত্তরে বলতেন, তিনি এমন একজন পুরুষকে বিবাহ করবেন যিনি তার পুত্র সামুরা প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত তার ভরণপোষণের দায়িত্বগ্রহণ করবেন। তখন এক আনসারী ব্যক্তি ঐ শর্তের উপর তাকে বিবাহ করেন। ফলত তাঁরা আনসার গৃহে একত্রে বসবাস করেন।
মহান আল্লাহ সামুরা ও তাঁর মা থেকে সব ধরণের কল্যাণই আশা করেছিলেন। বিধায় তিনি মদীনায় আগমন করেন এবং আনসারী ব্যক্তিকে বিবাহ করেন। তাঁর পুত্র তাঁর সাথেই বসবাস করেন এবং তাঁদের ছত্রছায়ায় বেড়ে ওঠেন। সামুরা রাদি আল্লাহু আনহুর মায়ের এ পছন্দের কারণে তিনি সম্মানিত ও নিআমতপ্রাপ্ত হয়েছিলেন।
সামুরা রাদি আল্লাহু আনহু শৈশব থেকেই ছিলেন জিহাদ পাগল :
জিহাদ ছাড়া দ্বীন প্রতিষ্ঠা অথবা যুদ্ধ ছাড়া সত্যের জয় কি সম্ভব? মহাবিশ্ব পরিচালনায় সত্য-মিথ্যার সংঘাত মহান আল্লাহর এক অমোঘ বিধান। সত্য এমন এক শক্তির মুখাপেক্ষী যা তাকে অন্য থেকে প্রতিরোধ, সাহায্য ও সহযোগিতা করবে। এ কারণেই জিহাদ ইসলামের সর্বোচ্চ চূড়া ও মুসলমানদের সম্মানের উৎস। তাই এ উদ্দেশ্যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছোট বড় সব সাহাবীকেই জিহাদের প্রেরণা ও তার জন্য প্রস্তুতির অনুরাগে উজ্জীবিত করতেন। ফলত সাহাবীগণ সেভাবেই গড়ে উঠেছিলেন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতিবছর আনসার বালকদেরকে পরীক্ষা করতেন তাঁরা জিহাদের উপযুক্ত হল কি না। তাঁর নিকট একটি বালক আগমন করলেন, তিনি তাঁকে যুদ্ধে প্রেরণের অর্থাৎ জিহাদের জন্য বের হওয়ার অনুমতি দিলেন। এরপর তাঁর সম্মুখে সামুরা নিজেকে উপস্থাপন করলেন কিন্তু তিনি তাঁকে ফিরায়ে দিলেন। তখন সামুর বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি ঐ বালককে অনুমতি দিলেন এবং আমাকে ফিরায়ে দিলেন, অথচ আমি তার সাথে কুস্তি করলে বিজয়ী হব। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তাঁর সাথে মল্লযুদ্ধে অবতীর্ণ হও। অতঃপর আমি মল্লযুদ্ধে অবতীর্ণ হই এবং তার উপর বিজয়ী হই। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে যুদ্ধে প্রেরণের অনুমতি দিলেন। বলা হয়, তিনি তাঁকে উহুদ যুদ্ধের সময় অনুমতি দেন ফলে তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে একাধিক যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
লক্ষ্য করুন শৈশব থেকেই সামুরার অন্তর কিভাবে জিহাদের প্রতি উদগ্রীব ছিল। কেন হবে না? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সরাসরি তাদেরকে লালনপালন করতেন ও নির্দেশনা প্রদান করতেন। সাথে সাথে তিনি সাহাবীগণের সন্তানদেরকে এভাবে জিহাদী অনুপ্রেরণায় বেড়ে তোলার জন্য উৎসাহ প্রদান করতেন। যাতে এমন এক প্রজন্ম গড়ে ওঠে যারা পৃথিবীর নেতৃত্ব প্রদান করবে, ইসলামের কল্যাণ গোটা মানবতার কাছে পৌঁছে দেবে, যারা অন্যদের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করবে কিন্তু অন্যের দ্বারা প্রভাবিত হবে না।
অতঃপর এ অবস্থাকে আমাদের বর্তমান সময়ের সাথে তুলনা করুন। এ সময়ের প্রজন্ম কিসের অনুপ্রেরণায় বেড়ে উঠেছে? তবেই আপনি সন্দেহাতীতভাবে শত্রুদের সামনে আমাদের পরাজয় ও দুর্বলতার কারণ জানতে পারবেন।
সামুরা দক্ষ হাফেজ:
মহান আল্লাহ সামুরাকে এক আশ্চর্য মুখস্তশক্তি ও অনন্য প্রতিভা দিয়ে সম্মানিত করেছিলেন। সামুরা সে মুখস্তশক্তি ও প্রতিভার উত্তম ব্যবহারও করেছিলেন। যেসব সাহাবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বেশি হাদীস বর্ণনা করেছেন তিনি তাদের অন্যতম।
ইব্ন আব্দুল বার বলেন, সামুরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বেশি হাদীস মুখস্তকারীদের অর্ন্তভুক্ত ছিলেন।
আব্দুল্লাহ ইব্ন বারীদাহ সুমারাহ ইব্ন জুনদুব রাদি আল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সময়কালে বালক ছিলাম, আমি তার থেকে হাদীস মুখস্ত করতাম। কিন্তু সেখানে পূর্ণবয়ষ্ক যারা বয়সে আমার বড় এমন সাহাবী উপস্থিত থাকতেন বিধায় আমি কথা বলতে ইতস্তত করতাম। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে এক মহিলার জানাযায় উপস্থিত ছিলাম যে মহিলা প্রসূতি অবস্থায় মারা গিয়েছিলেন। অতঃপর নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঐ মহিলার মাঝ বরাবর দাড়িয়ে জানাযা পড়ান।
হাসান বসরী বলেন, সামুরা ইব্ন জুনদুব ও ইমরান ইব্ন হুসাইন রাদি আল্লাহু আনহুমা পরস্পর আলোচনা করছিলেন। সামুরা ইব্ন জুনদুব রাদি আল্লাহু আনহু হাদীস বর্ণনা করে বললেন, তিনি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে দুটি সাকতাহ (বিরতি) মুখস্ত করেছেন। প্রথম সাকতাহ তাকবীরের সময় এবং দ্বিতীয় সাকতাহ (غير المغضوب عليهم و لا الضالين) থেকে আলাদা হওয়ার পর। অতএব সামুরা সেভাবেই মুখস্ত করেছেন। কিন্তু ইমরান ইব্ন হুসাইন তা অস্বীকার করলেন। অতঃপর তাঁরা বিষয়টি নিয়ে উবাই ইব্ন কাব রাদি আল্লাহু আনহুর কাছে পত্র লেখেন। তিনি উত্তরে তাদেরকে লেখেন, সামুরা ঠিক মতই মুখস্ত করেছেন।
হ্যাঁ এটাই ইলম যা অন্যের সাথে শিষ্টাচার বজায় রাখার, তাঁদের উপর অগ্রগামী না হওয়ার ও তাঁদের অগ্রাগামিতার স্বীকৃতি প্রদানের শিক্ষা দেয়।
তাঁর গুণাবলী ও বেদআতপন্থীদের ব্যাপারে তাঁর কঠোরতা ঃ
সামুরা ইব্ন জুনদুবের মদীনায় বেড়ে ওঠা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে সরাসরি দ্বীন গ্রহণ ও তাঁকে অনুসরণ ইত্যাদি বিষয় তাঁর ব্যক্তিত্ব ও গুণাবলীর বহিঃপ্রকাশে উজ্জ্বল প্রভাব ফেলেছিল।
এই মহান বৈশিষ্ট্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল সুন্নাতে রাসূল ও এর অধিকারীদের প্রতি তাঁর অকৃত্রিম ভালবাসা এবং বিদআত ও বিদআতপন্থীদের উপর তাঁর ঘৃণার মাধ্যমে। তিনি মুসলমানদের জন্য ছিলেন দয়ার্দ্র এবং বিদআতপন্থী, অপরাধী ও পথভ্রষ্টদের জন্য ছিলেন খুবই কঠোর। তিনি ছিলেন আল্লাহর বাণীর বাস্তব নমুনা: “তারা কাফিরদের উপর কঠোর ও নিজেদের মধ্যে সহানুভূতিশীল”। এ বিষয়ে আমরা আলিমগণের বিভিন্ন বাণী শ্রবণ করব:
ইব্ন আব্দুল বার বলেন, তিনি বসরায় বসবাস করতেন। যিয়াদ তাঁকে ৬ মাসের জন্য সেখানকার ও ৬ মাসের জন্য কুফার শাসক মনোনীত করেন। যিয়াদের ইন্তিকালের পর তাকে বসরার শাসক মনোনীত করা হয়। অতঃপর মুআবিয়া রাদি আল্লাহু আনহু তাঁকে এক বছর বা অনুরূপ সময় বহাল রাখেন এরপর অপসরণ করেন। তিনি হারুরীয়্যাহদের উপর খুবই কঠোর ছিলেন। তাদের কাউকে তার কাছে আনা হলেই তাকে হত্যা করতেন, কিন্তু তাকে কিছু বলা হয়নি। তিনি বলতেন, আমার এ হত্যা আকাশের নিচে সবচেয়ে নিকৃষ্ট ব্যক্তিকে হত্যা। তারা মুসলমানদেরকে কাফেরে পরিণত করেছে, রক্তপাত করেছে। অতএব হারুরী এবং তাদের মাযহাবের নিকটতমরা তাঁর উপর বিভিন্ন অপবাদ দিত ও তাকে নিন্দা করত।
ইব্ন সীরীন, হাসান বসরীসহ বাসরার সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ তাঁর প্রশংসা করতেন ও তাঁর দাওয়াত গ্রহণ করতেন।
ইব্ন সীরীন বলেন, সন্তানদের উদ্দেশ্যে সামুরার অসীয়াত (রিসালাহ সামুরা)-এর মধ্যে অনেক জ্ঞান লুকায়িত আছে।
তাঁর থেকে আরও বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি যতদূর জানি সামুরা মহান আমানতদার, হাদীস বর্ণনায় সত্যবাদি ছিলেন, ইসলাম ও তার অধিকারীদের ভালবাসতেন।
মুতরাফ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ইমরান ইব্ন হুসাইনকে বলা হল, অন্য বর্ণনায় আছে, এক ব্যক্তি ইমরান ইব্ন হুসাইনের নিকট বলল, সামুরা মৃত্যুবরণ করেছেন। তখন তিনি বললেন, মহান আল্লাহ তাঁর মাধ্যমে ইসলাম থেকে যা অপসরণ করিয়েছেন তা অনেক বড়। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, অবশ্যই তাঁর মাধ্যমে ইসলাম থেকে যা অপসারিত হয়েছে তা অনেক উত্তম।
তাঁর ইন্তিকাল ও এর কারণ:
৫৮ হিজরীতে বসরা নগরীতে মুআবিয়া রাদি আল্লাহু আনহুর খিলাফত আমলে তাঁর ইন্তিকাল হয়েছিল। তিনি গরম পানি ভর্তি ডেকের মধ্যে পড়ে যান। তিনি ধনুষ্টংকারে আক্রান্ত ছিলেন বিধায় উক্ত ডেকের উপর বসে ধনুষ্টংকারের চিকিৎসা গ্রহণ করতেন। তিনি ঐ ডেকের মধ্যে পড়ে যান এবং সেখানেই ইন্তিকাল করেন। তাঁর এ মৃত্যুতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ভবিষ্যৎবাণী সত্য হয়। তিনি আবু হুরায়রা ও অন্য একজন সাহাবী একত্রে ছিলেন, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তোমাদের মধ্যকার সর্বশেষ ব্যক্তি আগুনে পতিত হবে।
মুহাম্মদ ইব্ন সীরীন বলেন, তোমাদের উচিৎ সন্তানদের উদ্দেশ্যে সামুরার রিসালাহ পাঠ করা। কেননা সেখানে অনেক জ্ঞান রয়েছে। আমরা বললাম, হে আবু বকর! সামুরা, তাঁর কর্ম ও এর মধ্যে যা বলা হয়েছে, সে সম্পর্কে আমাদেরকে জানান। তিনি বললেন, সামুরা কঠিন ধনুষ্টংকারে আক্রান্ত ছিলেন। কোন ভাবেই তিনি তা প্রতিরোধ করতে পারছিলেন না। ফলে তিনি একটি বিরাট ডেক এনে তাতে পানি ভর্তি করে নিচে আগুন জ্বালানোর নির্দেশ দিলেন এবং তিনি ডেকের উপর বসার স্থান তৈরী করলেন। আগুনের ধোঁয়া তাঁর কাছে পৌঁছালে রোগের উপশম হত। এভাবে থাকা অবস্থায় তিনি নিচে পড়ে যান। এ কারণে ধারণা করা হয় ঐ হাদিসটি তাঁর সম্পর্কেই বলা হয়েছে।
বলা হয়, তিনি মুআবিয়া রাদি আল্লাহু আনহুর খিলাফাতের শেষ দিকে ৫৯ হিজরীতে অথবা ৬০ হিজরীর প্রথম দিকে কুফায়, অন্য বর্ণনা মতে বসরায় ইন্তিকাল করেন। এ বিষয়ে অসংখ্যক বর্ণনা এসেছে।