এটি যেমন এর বিষয়বস্তুর দিক থেকে এককভাবে বিজয়ী, তেমনি এই মহাগ্রন্থের আছে অতুলনীয় উচ্চারণ। আল কুরআন তিলাওয়াত এর মোজেজার সাথে গুরুত্বপূর্ণভাবে জড়িত। এ ব্যাপারে বহু উপমা আছে। একটি নিদর্শন সূরা নাজমের প্রথম ঐতিহাসিক মুহূর্তটি। কাবাপ্রাঙ্গণে প্রথমবার আল্লাহর রাসূল সা: সূরাটি পড়া শেষ করার পর উপস্থিত সব কাফের অবচেতনভাবে নিজেদের অজান্তে সম্মিলিতভাবে রাসূল সা:-এর সাথে সেজদা করে, যদিও তারা ঈমান আনেনি। এটা শুধু কুরআনের তত্ত্বীয় প্রভাবে নয়, এর আবৃত্তিরও প্রচণ্ড প্রভাব ছিল। আমরা স্মরণ করতে পারি, আল্লাহর নবী হজরত দাউদ আ: মানবজাতির ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম কারি। এমনকি পাখি ও পর্বত তাঁর সালাতের সাথে তাঁকে অনুসরণ করত (সূরা আম্বিয়া : ৭৯; সূরা সাবা : ১০; সূরা সাদ : ১৮, ১৯)
আল্লাহর রাসূলের অনেক সাহাবিও অসাধারণ কালাম উপস্থাপক ছিলেন। একটি আকর্ষণীয় হাদিসে আল্লাহর রাসূল সা: বলেছেন, ‘তাঁর সাহাবি আবু মূসা আশয়ারি রা: আল্লাহর রাসূল দাউদ আ:-এর কণ্ঠের একটি অংশ পেয়েছেন’ [বুখারি : ৪৬৭৫; মুসলিম : ১৭২৮, ১৭২৯) আল কুরআনে তিলাওয়াত পরিভাষাটির ওপরে প্রধানত তিনটি সমার্থক শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। যেমনÑ ‘কিরাত’ থেকে ‘ইকরা’, ‘তিলাওয়াত’ থেকে ‘উতলু’ এবং ‘রাতালা’ থেকে ‘রাত্তিল’ ইত্যাদি। পরিভাষাগুলোর অর্থ ও তাৎপর্য প্রায় কাছাকাছি। যেমনÑ সামঞ্জস্যপূর্ণ পাঠ, যথাযথ উচ্চারণ, সুনিয়ন্ত্রিত ও উচ্চকিত আওয়াজ, গবেষণা, অনুসন্ধান, সুললিত পাঠ ইত্যাদি।
দিসে কুরআন আবৃত্তি সম্পর্কে নির্দেশনা : হাদিস গ্রন্থগুলোতে কুরআন আবৃত্তি সম্পর্কে আলাদা চ্যাপ্টার আছে। এ ছাড়া সালাত, রমজান ও তাফসির অধ্যায়গুলোতেও এ সংক্রান্ত মৌলিক দিকনির্দেশনা মজুদ আছে। হাদিসগুলো বেশ ব্যাপক, মনোমুগ্ধকর, অন্তরে আলোড়ন সৃষ্টিকারী, অসাধারণ জীবন্ত। রাসূল সা:-এর সময়ে কিরাত চর্চাই ছিল সবচেয়ে উপভোগ্য কালচার। সুতরাং এ বিষয়টিকে নিছক নফল ইবাদতের দৃষ্টিতে দেখা ঠিক হবে না, এটি ইসলামী সংস্কৃতির একটি মৌলিক বিভাগ। কয়েকটি উদাহরণ: কুরআন তিলাওয়াত এবং মাহে রমজান : ‘প্রতি রমজানে আল্লাহর বাণীবাহক ফেরেশতা জিব্রাইল আ: আল্লাহর রাসূল সা:কে একবার কুরআন আবৃত্তি করে শোনাতেন। আবার আল্লাহর রাসূল সা:ও জিব্রাইল আ:কে একবার আবৃত্তি করে শোনাতেন’ [বুখারি : ৪৬২৬, ৪৬২৭]। শেষোক্ত হাদিসে অতিরিক্ত বলা হয়েছে, ‘রাসূলুল্লাহ সা: ইন্তেকালের বছর জিব্রাইল আ: কাজটি দুইবার করেন।’ কুরআনের অব্যাহত চর্চার গুরুত্বের বিষয়ে এ ঘটনাটি মৌলিক নির্দেশনা প্রদান করে।
হাদিস দু’টিতে তিলাওয়াত বা কিরাত বোঝাতে ‘আরদ’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। ‘আরদ’ একটি ব্যাপক অর্থবোধক পরিভাষা। এর মানে অনুভূতির প্রকাশ, সাজানো, উপস্থাপন, প্রদর্শনী, দৃশ্যায়ন, ব্যাখ্যাকরণ ইত্যাদি। তার মানে আমাদেরকে সাধ্যানুযায়ী এমনভাবে তিলাওয়াতের চেষ্টা করতে হবে, যাতে কুরআনের বিভিন্ন চ্যাপ্টার ও আয়াত পড়ার সময় সংশ্লিষ্ট অংশের অর্থ, মর্ম ও চিত্র প্রকাশিত হয়। আর এই প্রশিক্ষণই রোজার সময় নবী সা:-কে দেয়া হতো।
জনৈক সাহাবির কিরাত শুনে ফেরেশতাদলের আগমন : একটি লম্বা হাদিসের সারাংশ- হজরত উসাইদ ইবনে হুদাইর রা: এক রাতে সূরা বাকারা পড়ছিলেন, তিনি আকাশে আলোকিত মেঘের মতো দেখতে পান, অতঃপর পড়া বন্ধ করেন। সকালে রাসূলুল্লাহ সা:কে অবহিত করলে তিনি উসাইদ রা:কে আশ্বস্ত করলেন যে, ‘আলোকিত মেঘপুঞ্জ ছিল মূলত ফেরেশতা। পড়া বন্ধ না করলে ফেরেশতারা সকাল পর্যন্ত থাকত এমনকি জনসাধারণও তাদেরকে দেখতে পেত।’ [মুসলিম : ১৭৩৬) একই রকম আরো চারটি হাদিস আছে, যেখানে নামছাড়া এক সাহাবি এবং সূরা কাহাফের কথা উল্লেখ করা হয়েছে [মুসলিম : ১৭৩৩-১৭৩৫, বুখারি : ৪৬৩৯)
কুরআন পড়ার প্রধান পদ্ধতি হতে পারে কোনটি : অঞ্চল ও ব্যক্তিভেদে কিতাব পাঠের ও শোনার ব্যাপারে পছন্দের পার্থক্য দেখা যায়। অতি ধীর (আমাদের দেশে কারিয়ানা স্টাইল বলে পরিচিত), অতি দ্রুত এবং মধ্যম গতিÑ প্রধানত এই তিন ধরনের পঠনরীতি আমরা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে দেখতে পাই।অতি ধীরের পদ্ধতিটি শৈল্পিক দৃষ্টিতে উন্নত, কিন্তু তা অধ্যয়ন, গবেষণা ও দাওয়াতি কাজে খুব বড় ধরনের ভূমিকা রাখে না। তবে ইসলাম শিল্প ও সৌন্দর্যকে সমর্থন ও উৎসাহিত করে, অতএব এটা গ্রহণীয়।
মধ্যম গতির কুরআন তিলাওয়াতের অনবদ্য বৈশিষ্ট্য : মধ্যম গতির উচ্চারণ খুব ধীরে নয়, দ্রুতও নয়। যেন সুবাসিত আলোয় ঝরনাপ্রবাহ, নদীর মতো বয়ে চলা, কখনো বা সাগরের ঢেউ, আবার ঝরঝর বৃষ্টি; কখনো মনে হয় দূর থেকে কোনো সুর ভেসে আসছে; কে যেন দূর থেকে ডাকছে; মৃদুমন্দ বাতাসের প্রবাহ, আবার ঝড়ের মতো; শব্দগুলো বুঝতে কোনো সমস্যা হয় না, আয়াত আর শব্দের প্রকৃতি অনুযায়ী ছন্দ ও গতির পরিবর্তন। এই ছন্দ একই সাথে তিনটি বিষয়কে সম্পন্ন করে শিল্প ও সৌন্দর্য, পড়া ও অধ্যয়ন এবং দাওয়াতি কাজ। তাই কুরআন তিলাওয়াতের মূল উপকারিতা পেতে এই পদ্ধতিকেই অগ্রাধিকার দেয়া উচিত।
অতি দ্রুত কুরআন পাঠের সংস্কৃতি থেকে বিরত হওয়া উচিত : অতি দ্রুত পঠনপদ্ধতিতে কালামুল্লাহর শব্দগুলো বোঝা যায় না, অনেক সময় ভুল ও বিকৃত উচ্চারণও করা হয়। এটা কুরআন-সুন্নাহর দৃষ্টিতে কোনোভাবেই গ্রহণীয় নয়, বরং এভাবে কুরআনের প্রতি একপ্রকার অবমাননাই করা হয়। হাদিসে আরবদেরও তিন দিনের কমে কুরআন খতম করতে নিষেধ করা হয়েছে। সুতরাং বড় বড় ইমাম ও দরবেশগণ বছরের পর বছর প্রতি রাতে কুরআন খতম করতেন বলে যেসব কথা বলা হয়, তার কোনো শরয়ি কিংবা বাস্তব ভিত্তি নেই। যেমনÑ ইমাম আবু হানিফা সম্পর্কে বলা হয়, তিনি নাকি একটানা ৩৬ বছর এক অজুতে এশা ও ফজর পড়েছেন এবং প্রতি রাতে পুরো কুরআন পড়তেন। এটা মূলত ইমামের প্রতি মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছু নয়।আমরা হাদিসে দেখতে পাই, একজন সাহাবির কিরাত শুনতে ফেরেশতাদলের আগমন ঘটেছিল। এ ব্যাপারে সূরা বাকারা ও সূরা কাহাফের বর্ণনা পাওয়া যায়। তিনি কুরআন খতম করছিলেন, এমনটি আমরা দেখছি না। [মুসলিম : ১৭৩৬, ১৭৩৩-১৭৩৫, বুখারি : ৪৬৩৯) আল কুরআন ও তাফসির অধ্যয়নের ফলদায়ক পদ্ধতি প্রসঙ্গে : আল কুরআন অধ্যয়নের শুরুতেই পুরো গ্রন্থটি শুরু থেকে শেষ অবধি একবার পড়ে নেয়া জরুরি। প্রথমে শুধু তরজমা ও গুরুত্বপূর্ণ টীকা বা তাফসির পড়াই যথেষ্ট। দ্বিতীয় পর্যায়ে শব্দার্থসহ আবার পুরো কুরআনটি আগাগোড়া দেখতে হবে। এর পরই ব্যাপকভিত্তিতে তাফসির শুরু করা ভালো।প্রথম দুই পর্যায়ের অধ্যয়ন আকর্ষণীয় তিলাওয়াত শোনার সাথে সাথে সম্পন্ন করলে কুরআন আয়ত্ত হবে কয়েকগুণ, আপনি নিজেই চমকে যাবেন। প্রতিটি সূরা ৫-১০ বার শোনা এবং একইসাথে শব্দানুবাদসহ দেখা যেতে পারে। বেশি গুরুত্বপূর্ণ শব্দ ও আয়াত চিহ্নিত করা জরুরি। পদ্ধতিটিকে এক কথায় বলা যায় এভাবে, ‘তিলাওয়াত শ্রবণ এবং শব্দানুবাদ দর্শন’। এভাবে এক বছরের মধ্যে আমরা পুরো কিতাবের ওপর সাধারণ একটা দখল অর্জন করতে পারব। অতঃপর আমরা ব্যাপকভাবে তাফসির পড়া শুরু করতে পারি।
শব্দানুবাদকে মৌলিকভাবে গুরুত্ব দিতে হবে : শব্দানুবাদ ছাড়া কুরআনের পূর্ণ সৌন্দর্য অবলোকন করা সম্ভব নয়, এই মহাগ্রন্থের অলৌকিক সাহিত্যের সুগন্ধ অনুভবের জন্যও এটা প্রয়োজন। পৃথিবীতে এখন নানা ভাষায় ব্যাপকভাবে কুরআনের তরজমা উপস্থাপন করা হচ্ছে। শব্দানুবাদকেও মৌলিকভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। এটা অস্বাভাবিক ও জটিল কোনো বিষয় নয়। আর ‘লাইন বাই লাইন’ অর্থাৎ ‘আয়াত বাই আয়াত’ অনুবাদের সাথে সাথে একই সময়ে শব্দানুবাদের কাজটি করা সম্ভব।হারামাইন ওয়েবসাইট ভিজিটের বিশেষ বেনিফিট : একটা দিক হলো সালাত কিরাতের একটা বিশেষ স্টাইল আছে, সেটা আয়ত্ত করতে সহায়ক। আরেকটি দিক হলো, পুরো কুরআন সর্বদা স্মৃতিতে ধরে রাখা সহজ নয়, এতটা উঁচু পর্যায়ের স্মৃতিশক্তি কম লোকেরই রয়েছে। হারামাইন ইমামগণ আল্লাহর কালামের সব চ্যাপ্টার থেকেই সালাত কিরাত পেশ করেন। অনেক সময় দুই রাকাতের জন্য দু’টি ভিন্ন সূরা থেকে সমধর্মী বা পরিপূরক কিছু আয়াত বাছাই করা হয়। এটা কুরআন বুঝতে খুবই সহায়ক।
আল কুরআন হিফজ করা সম্পর্কে কিছু কথা : যেকোনো আমলে সালেহের ব্যাপারে কুরআন-সুন্নাহর নীতিমালাকে অনুসরণ করা ঈমানদারদের জন্য বাধ্যতামূলক, সেটা নফল ইবাদত হোক অথবা ফরজ ইবাদত। আল্লাহর কালাম হিফজের ব্যাপারে আমরা ইসলামে দুই ধরনের দিকনির্দেশনা পাই। একটি সতর্কতামূলক, অন্যটি উৎসাহব্যঞ্জক।নবুওয়তের প্রথম কয়েক বছর, আল্লাহর রাসূল সা: কালাম মুখস্থ করার জন্য অনেক সময় খুব ব্যস্ত হয়ে পড়তেন, এমনকি ওহি নাজিলের মুহূর্তেও এটা পরিলক্ষিত হতো। ‘আল্লাহ পাক তাঁকে কিতাব হিফজের ব্যাপারে অতি ব্যস্ত হতে নিষেধ করেন এবং একই সাথে আশ্বস্ত করেন যে, তিনি তাঁকে সহজেই মুখস্থ করিয়ে দেবেন’ (সূরা তহা : ১১৪, কিয়ামাহ : ১৬-২০, আলা : ৬-৭) সাদ ইবনে উবাদা রা: থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সা: বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কুরআন মুখস্থ করার পর তা ভুলে যায়, সে কিয়ামতের দিন আল্লাহর সাথে খালি হাতে সাক্ষাৎ করবে’ (আবু দাউদ : ১৪৭৪)
আসলে বিষয়টি খুবই বিজ্ঞানসম্মত। কারণ সব মানুষের যোগ্যতা সমান নয়। কেউ কোনো বিষয়ে অস্বাভাবিকভাবে উৎসাহী হয়ে পড়লে তার সামগ্রিক জীবনের ভারসাম্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর ইসলাম তো ভারসাম্যপূর্ণ জীবনব্যবস্থা, তাই এই সতর্কতামূলক নির্দেশনা। ইসলাম চায় মানুষ যে কাজটিই করুক, সুন্দরভাবে করুক। ভারসাম্যহীন অনেক আমলের চেয়ে যথাযথ অল্প আমল তাই আল্লাহর কাছে বেশি প্রিয়) আবু সাঈদ খুদরি রা: থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘কুরআনের সাথীকে জান্নাতে প্রবেশকালে বলা হবে, পড় এবং উঠতে থাক। অতঃপর সে প্রতিটি আয়াত পড়ার সাথে সাথে এক একটি স্তর অতিক্রম করতে থাকবে যতক্ষণ না তার জানা সর্বশেষ আয়াতটি পড়বে’ (ইবনে মাজা : ৩৭৮০)
আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা: থেকে বর্ণিত, নবী সা: বলেছেন, ‘কুরআনের সাথীকে বলা হবে, পড়, আরোহণ কর ও তারতিলের সাথে পড়, যেভাবে তুমি দুনিয়াতে পড়তে। অতএব যে আয়াত তোমার পড়া শেষ হবে সেটিই হবে তোমার স্থান (জান্নাতে), (তিরমিজি : ২৯১৪, আবু দাউদ : ১৪৬৪, মিশকাতুল মাসাবিহ : ২০৩১, তারগিব-তারহিব; কুরআন পাঠ অধ্যায়, ১ম অনুচ্ছেদ : ১৬) উল্লেখ্য, মিশকাত ও তারগিব-তারহিব গ্রন্থদ্বয়ে হাদিসটির আরো কয়েকটি তথ্যসূত্রের কথা বলা হয়েছে। যথা- নাসায়ি, আহমদ ও ইবনে হিব্বান) আবু হুরায়রা রা: কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সা: বলেছেন, ‘কিয়ামতের দিন যখন কুরআনের বাহক আসবে, তখন কুরআন আবেদন করবে, হে আমার রব! একে অলঙ্কৃত করুন। তখন তাকে সম্মানের মুকুট পরানো হবে। সে আবার বলবে, হে আমার রব! তাকে আরো বাড়িয়ে দিন। তখন তাকে সম্মানের পোশাক পরানো হবে। সে আবার আবেদন করবে, হে আমার পরওয়ারদিগার তার ওপর সন্তুষ্ট হয়ে যান। তখন আল্লাহ তার ওপর সন্তুষ্ট হয়ে যাবেন। তখন তাকে বলা হবে, পড় ও ওপরে উঠতে থাক। অতঃপর প্রতিটি আয়াতের বিনিময়ে তার জন্য প্রতিদান বাড়তে থাকবে’ (তিরমিজি : ২৯১৫, তারগিব-তারহিব, কুরআন পাঠ অধ্যায়, ১ম অনুচ্ছেদ : ১৫)। তারগিব-তারহিব গ্রন্থে বলা হয়েছে, হাদিসটি ইবনে খুজায়মা ও হাকিমেও বর্ণিত হয়েছে।
কুরআন মুখস্থ করার একটি দারুণ প্রক্রিয়া : এটা বুঝতে কোনো অসুবিধা হওয়ার কথা নয়, আরবদের জন্য কালাম হিফজ করা বেশি সহজ, যেহেতু এটা তাদের মাতৃভাষা। তবে বর্তমান ডিজিটাল গ্লোবাল ভিলেজে এটা গোটা বিশ্ববাসীর জন্যই নরমাল বিষয়ে পরিণত হয়েছে। কম্পিউটার ও মোবাইল ব্যবহার করে বারবার শোনার মাধ্যমে দ্রুত মুখস্থ করা সম্ভব, আর শব্দানুবাদ ফলো করলে কাজটা আরো ত্বরান্বিত হয়ে যাবে।আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, এই প্রক্রিয়ায় বছরে ৪০০-৫০০ আয়াত মুখস্থ করা সবার পক্ষেই সম্ভব, যদি টার্গেট নেয়া হয়। এভাবে ১০-১২ বছরের মধ্যে পুরো কুরআন মুখস্থ করা সম্ভব হবে ইনশাআল্লাহ। হ্যাঁ, এটা ফরজ দায়িত্ব নয়; তবে আমাদের স্মরণ করা উচিত, কুরআন তিলাওয়াত ছিল রাসূল সা:-এর যুগে সর্বাধিক প্রভাবশালী আনন্দদায়ক কালচার।শেষ কথা : মহাগ্রন্থ আল কুরআনের অলৌকিকত্বের যথার্থ অবলোকন এবং আমাদের পবিত্র মুখ দিয়ে তার যথার্থ উচ্চারণের জন্য শব্দানুবাদসহ কুরআন অধ্যয়ন ও তিলাওয়াত চর্চা করা খুবই জরুরি। আর বর্তমান ডিজিটাল যুগে এ কাজটি অত্যন্ত সহজ বিষয়ে পরিণত হয়েছে।= সমাপ্ত=