কোরআনের আলোকে ভূমিকম্পের কারণ
বিশ্ব আজ মহাবিপদের সম্মুখীন। মানব সভ্যতা এই হুমকির মুখোমুখি হয়েছে বিশ্বে উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে। সেই সঙ্গে আরো রয়েছে জলবায়ু পরিবর্তন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাওয়া, অস্বাভাবিকভাবে মেরু অঞ্চলের বরফ গলতে থাকার কারণগুলো
বৈজ্ঞানিকরা এখন এই সমস্যার কথা বললেও আজ থেকে সাড়ে চৌদ্দশ’ বছর পূর্বে আল্লাহ তায়ালা বিশ্ববাসীকে এসব বিষয়ে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন পৃথিবী বিপন্ন অবস্থার কথা।
এ প্রসঙ্গে ইরশাদ হয়েছে, ‘তারা কি দেখে না যে, ক্রমেই আমরা তাদের জমিনকে এর বহিঃপরিসরের দিক দিয়ে সঙ্কুচিত করছি।’ -সূরা রাদ: ৪১
স্থলভাগের পরিসর ক্রমান্বয়ে কমে আসছে সমুদ্রের বিস্তারের মাধ্যমে। বিপদ এখানেই শেষ নয়, সমুদ্রের তলদেশ বাইরের দিকে প্রসারিত হওয়ার পাশাপাশি বেড়ে গেছে ভূমিকম্প, আগ্নেয়গিরিতে অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা।
বর্তমান সময়ের এসব সমস্যা নিয়ে সপ্তম শতাব্দীতে কেউ স্বপ্নেও ভাবত না অথচ তখনই কোরাআনে এ ব্যাপারে বর্ণিত হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘যখন মহাসমুদ্রগুলো উত্তাল করে তোলা হবে’ (সূরা তাকবির: ৬)।
আরবিতে এটাকে ‘সুজ্জিরাত’ বলা হয়। ইবনে কাসির এর তাফসিরে বলেন, ‘যখন এটা রূপ নেবে প্রজ্বলিত অগ্নির।’ বিজ্ঞান-পূর্ব সেসব যুগে টগবগ করে ওঠা সাগরের পানির বিষয়টি কেউ বুঝে উঠতে পারেনি। কিন্তু এখন বিজ্ঞান কোরানের সত্যতাকেই তুলে ধরছে এবং সাগরতলে অগ্ন্যুৎপাতের সন্ধান পেয়েছে। বিজ্ঞানীদের ভয় পৃথিবী নামক গ্রহ উষ্ণতার কারণে খুব তাড়াতাড়ি ধ্বংস হয়ে যাবে।
অন্যদিকে গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণ পৃথিবীকে নাটকীয়ভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিপজ্জনক পরিস্থিতির সম্মুখীন করছে। এটা এক সময় চলে যেতে পারে নিয়ন্ত্রণের বাইরে। তখন মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর জন্য বিরাট বিপদ সৃষ্টি হবে। বস্তুত পৃথিবীর প্রতি আমাদের কৃত অবিচারের দরুন এসব হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে স্থলভাগে ও সমুদ্রে মানুষের কর্মকাণ্ডের পরিণামে। -সূরা আর রুম: ৪১
এখন প্রশ্ন হলো, মানুষের যেসব কর্মকাণ্ড মানবজাতিকে বিপদাপন্ন করছে, সেগুলো কি আমাদের বিজ্ঞানীরা নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হবেন? যদি না হন, তাহলে পৃথিবীর ধ্বংস অনিবার্য।
এ বিষয়েও কোরআনে বলা হয়েছে, ‘যেদিন এই পৃথিবী অন্য এক পৃথিবীতে রূপান্তরিত হবে এবং আসমানগুলোতে ঘটবে পরিবর্তন, সে দিন…’ (সূরা ইবরাহিম: ৪৮)। কোরআন কারিমের অনেক আয়াতে এভাবেই বিশ্বজগতের ধ্বংসের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। তবে যা অজানা, তা হলো কখন এটা ঘটবে । সমাপ্ত।