Main Menu
أكاديمية سبيلي Sabeeli Academy

জাগতিক ভাবনায় ইসলাম

imagesCAUB0GAU

ইসলামের মতে, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করাই হচ্ছে জীবনের পরীক্ষায় সফলভাবে জীবনকে সুখী করার একমাত্র উপায়। এই ট্রেড মার্কের আওতায় থেকে সত্য ও মিথ্যাকে, সৎ এবং অসৎকে পার্থক্যকারী জ্ঞান ও মানদণ্ড ইসলামে একটিই এবং তার ভিত অত্যন্ত দৃঢ় এবং তা হচ্ছে আল্লাহর ওহি (আল কুরআন)। মানুষের পরীক্ষা নিরীক্ষা লব্ধ বা চিন্তাপ্রসূত জ্ঞানের মতো ওহির জ্ঞানে কোনো সীমা-পরিসীমা নেই। ইসলাম মুসলমানদের জীবনকে এইভাবে গাঁটছড়া বাঁধতে সাহায্য করে। এর পেছনে উদ্দেশ্যই থাকে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করা, অশুভ শক্তির উত্থান থেকে দূরে থেকে ধর্মীয় কমিটমেন্ট পালন করা। এভাবে চোখ-কান-বুদ্ধি-বিবেক খোলা রেখে সব লোভ-লালসা, ভয়-প্রলোভন, অভাব-অনটন, সঙ্কট সন্ধিক্ষণেও মুসলমানদের নৈতিকতার উত্তাপ জাগিয়ে রাখতে হয়।

আপ্তবাক্য এটাই, মানব প্রকৃতি এবং জগতের প্রকৃতি সম্পর্কে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির প্রভাব ঢালাওভাবে তার নৈতিক সত্তা ও ব্যবহারিক জীবনের ওপর পড়ে। জগৎ সম্পর্কে ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক এই যে, এ জীবন এবং এ পৃথিবীর সবকিছুই আল্লাহর পক্ষ থেকে মানুষের খেলাফতের দায়িত্ব পালনের সহায়ক উপাদান। ইসলামী আদর্শিক প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ধৈর্য ধারণ করতে পারে যে, তার জন্য পরকালে আছে আনন্দ ও প্রশান্তি। জগৎ ও জীবন সম্পর্কে ইসলামের এ ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি অন্যান্য নেতিবাচক মতবাদের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।যাতাকে পুলসিরাত পার করতে সাহায্য করবে।

কোনো কোনো মতবাদে জীবনের এই চাতুর্যপূর্ণ পার্শ্ববর্তী খেলাফত, জগৎকে মানুষের একচ্ছত্র আধিপত্য ও ভোগের জন্য কুক্ষিগত করতে বলা হয়েছে। আর কোনোটিতে জগৎ থেকে পুরোপুরি দৃষ্টি ফেরাতে বলা হয়েছে। জ্বলন্ত মোমের মতো নিজেকে নিঃশেষ করতে বলা হয়েছে। কিন্তু ইসলাম বলে, আল্লাহ পৃথিবীকে মানুষের অধীন করে দিয়েছেন অবকাশ এখানে নেই।
কুরআনে বহু আয়াতে এই শিক্ষাই দেয়া হয়েছে যে, ইহকাল ও পরকালের জোর উন্নয়নের ধারায় টিকে থাকতে হলে আমাদের জীবন কোন স্রোতে গা ভাসিয়ে দেয়ার নয়। এখানে এভারেস্টের চূড়ায় বসে থাকার কোনো অবকাশ নেই। বরং এর নেপথ্যে সৃষ্টিকর্তার সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য আছে। মানুষের মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠিত হয় তার মধ্যকার সীমাবদ্ধতা নামক অচলাবস্থার দরোজাটি অতিক্রমণের মাধ্যমেই। আল্লাহর মিশন পূরণে স্বীয় সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা নিয়োগ করাই মানুষের জীবনের পরীক্ষায় উত্তরণের একমাত্র গ্লোরিফাইং পথ। এটাই তার একমাত্র রক্ষাকবচ। এবং তার কল্যাণের জন্য নিবেদন করেছেন। তাই তার দায়বদ্ধতা অনেক। জেটগতিতে বলা মানুষের কর্মযজ্ঞ হবে বসংবদ হিসেবে এ জগতের সব সম্পদ ও শক্তিকে আল্লাহর মিশন সফল করতে তার নির্ধারিত পথে নিয়োজিত করা।এখানে বাইশগজি জমিনের মতো নীরব নিথর থাকা চলবে না। চলবে না চরিত্র বন্ধক রাখা।

এই ুদ্র পরিসর জীবনে আজ্ঞাবহ দাস হিসেবে মানুষ নিজের প্রকৃত পরিচয় লাভ করে; ফলে সে তার অর্থপ্রতিপত্তি, শক্তি সামর্থ্য ও সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে সচেতন থাকে। যাতে বিবেকের স্বেচ্ছামৃত্যু না ঘটে। এই নেটওয়ার্কের আওতায় এক দিকে যেমন সে তার শক্তিমত্তার কারণে স্ফীত, উদ্ধত, গর্বিত বা নিষ্ঠুর হয় না। অন্য দিকে নিজেকে কারো পাদপ্রদীপের আলোয় আলোকিত করার জন্য ব্যাকুল হয় না। এ কারণে তার দুর্বলতা এবং কিঞ্চিতপ্রিয়পাত্র হওয়ার জন্য তার মধ্যে অতিমাত্রায় ভীতি বা হতাশা কাজ করে না। তার শক্তিও সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে সম্যক ধারণা থেকে তার মধ্যে এক সুপরিচিত আত্মবিশ্বাসের গন্ধ পাওয়া যায়। ফলে কালো জলে পড়লেও হীরার ভয় থাকে না যে কে তাকে হীরা না কয়লা ভাবল। ইসলাম মানুষের জীবনকে ধর্মীয় বা আধ্যাত্মিক এবং পার্থিব বা বস্তুবাদী এ দু’ভাগে ভাগ করেনি। জীবনের সব কাজই আল্লাহর ইবাদত। সর্বনাশা পথ থেকে টেনে তোলার জন্য জীবনের সব কাজের বিষয়েই ইসলামের মূল ধারার স্রোতে মিশে যাওয়ার জন্য সুনির্দিষ্ট বিধান আছে। কাজেই আশ্বাসের চোরাবালিতে দাঁড়িয়ে থেকে কারো পক্ষে এটা বলা সম্ভব নয় যে, নির্দিষ্ট কিছু ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি পালন করে অবশিষ্ট বিষয়ে নিজের ইচ্ছামতো চলা যাবে।
আল্লাহ পৃথিবীতে মানুষকে তার খলিফা (প্রতিনিধি) হিসেবে পাঠিয়েছেন এ বিশ্বাস থেকে মানুষের মধ্যে তার ওপর আরোপিত দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতনতা আসে। সে যেন তার জীবনকে আধিপত্যের দুর্ভেদ্য ঘাঁটি হিসেবে না ভেবে খোদার এক উপহার হিসেবে গ্রহণ করে। বুদ্ধিবিভ্রাট ঘটিয়ে তার অপব্যবহার বা ধ্বংস করার কোনো অধিকার তার নেই। সারা পৃথিবীর আল্লাহ প্রদত্ত স্বাভাবিক শৃঙ্খলা রক্ষায় সে যেন সচেতন হয়। এক চু হরিণ সদৃশ হওয়ার মানব প্রকৃতি সম্পর্কে ইসলামের এই দৃষ্টিভঙ্গির কারণে মানুষের তথা গোটা পৃথিবীর জীবন সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ হয়। এর সমান বরগাদার হয়ে সে ইহকাল ও পরকালে ভোগ করে। এ জন্যই ইসলাম মানুষের ভুল সংশোধন, সামাজিক সুবিচার-ইনসাফ ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় মানুষকে আ-র-ও আ-র-ও নৈতিকভাবে দায়বদ্ধ করে। ইসলামের ইবাদত বলতে কিছু আনুষ্ঠানিকতা পালন করা বুঝায় না। মুসলমানরাও ‘ইবাদত’ বলতে নিছক স্রষ্টার প্রতি আনুগত্যসূচক গতানুগতিক কিছু গৎবাঁধা নিয়ম পালন করা বোঝে না। মনে গভীর বিশ্বাস ও দরদ রেখে মুসলমানদের জীবনের সব কাজই ইবাদত যদি তা দু’টো শর্ত পূরণ করে। কাজের সূচনাপর্বে নেপথ্যের উদ্দেশ্য (নিয়ত) হতে হবে সৎ বিশুদ্ধ এবং তা করতে হবে আল্লাহর পূর্ণ আনুগত্য স্বীকার করে মানুষের ওপর পৃথিবীতে তার আরোপিত মিশন পূরণের অঙ্গীকার নিয়ে। নিয়তই এখানে বাঙময়।

কাজটি হতে হবে আত্মরক্ষার সহজাত প্রবৃত্তি থেকে আল্লাহর নির্ধারিত পন্থায় বা আল্লাহ নির্ধারিত সীমার মধ্যে থেকে। এভাবে অগ্রিম দাওয়াই হিসেবে মুসলমানেরা কাজকর্মে, লেখাপড়ার সময়, বিশ্রামের সময়, উঠতে-বসতে, চলতে ফিরতে সব সময় ইবাদতের মধ্যেই থাকে। আল্লাহ নির্ধারিত পন্থায় চললে গোটা জীবনই মুসলমানদের ইবাদত। সেখানে পুরো জীবন ভুলের বালুচরে থাকার সম্ভাবনা থাকে না

আদতে ইসলাম মতে, ঈমানের সাথে জ্ঞানের কোনো বিরোধ নেই। বরং ইসলাম মতে, জ্ঞান হচ্ছে আল্লাহর পক্ষ থেকে আল্লাহর খলিফা মানুষকে পৃথিবীর পরিচালনার উপযোগী করার জন্য এক উত্তম নেয়ামত। কারণ জ্ঞান জীবনে পূর্ণতা লাভ করে যেমন ভরাবরষায় নদীর দু’তীর ভরে ওঠে। তাই এটা অর্জন করা হচ্ছে একটি উত্তম ইবাদত যদি তা সৎ উদ্দেশ্যে সঠিক জ্ঞান হয়। প্রত্যেক মুসলমানের জন্য জ্ঞান অর্জন ফরজ। মানুষের উদ্দেশ্যে আল্লাহর প্রথম ওহির অর্থ হচ্ছে ‘পড়ো’ (ইকরা)। একই ওহির চর্চিত পথে পরবর্তী বাক্যটি হচ্ছে ‘শিক্ষা’ এবং ‘কলম’ দু’টো শব্দ এসে কিভাবে সে জ্ঞান অর্জন করতে হবে তারও স্পষ্ট নির্দেশনা এসেছে।
ইত্যবসরে রাসূল সা: হাদিসে মুসলমানদের জ্ঞান অর্জন করার স্পষ্ট আদেশ দিয়েছেন। বস্তুত ুদ্র এই জীবনের মাহেন্দ্রক্ষণে জ্ঞান অর্জন মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিকে সুপ্রশস্ত করে। যারা যত ও সতর্কতার সাথে জ্ঞান অর্জন করে তারা আল্লাহর শক্তি ক্ষমতা এবং দয়া সম্পর্কে সম্যক অবহিত হয়ে তার অবাধ্যতা থেকে দূরে থাকে। এবং দয়া লাভে সচেষ্ট হয়। তাকে শূন্যতা বার বার আঁচড়ে দেয় না।

Related Post