Main Menu

রমজানের ঐতিহাসিক তিনটি প্রেক্ষাপট

তিনটি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের কারণে রমজান গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে এবং তাতে আমাদের জন্য রয়েছে শিক্ষা।

তিনটি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের কারণে রমজান গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে এবং তাতে আমাদের জন্য রয়েছে শিক্ষা।

তিনটি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের কারণে রমজান গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে এবং তাতে আমাদের জন্য রয়েছে শিক্ষা।

১. রমজান কুরআন নাজিলের মাস। মহাগ্রন্থ আল-কুরআন এ মাসেই নাজিল হয়েছে। আল্লাহ তা’আলা বলেন : রমজান এমন একটি মাস যে মাসে কুরআন নাজিল হয়েছে। (সূরা বাকারা-১৮৫) এ কুরআনের কারণেই মূলত রমজান মাস তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কুরআন নাজিল মানবতার প্রতি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সবচেয়ে বড় করুণা। এ করুণার ফলে উম্মাতে মুহাম্মাদী সবচেয়ে মর্যাদাবান জাতিতে অভিহিত। কুরআনের বদৌলতে মুসলমানরা পৃথিবীতে শ্রেষ্ঠত্বের আসনে সমাসীন হয়ে ছিলেন। আজ মুসলমনরা কুরআন থেকে দূরে-বহুদূরে। তাই তো আমরা পৃথিবীতে অপমানিত-নিপীড়িত, নির্জাতিত। আজ আমাদের অনুভূতি ভোঁতা হয়ে গেছে। অথচ মানবতার মুক্তির সনদ মহাগ্রন্থ আল-কুরআনকে আমরা মুসলমানরা আমাদের জীবনের মূলমন্ত্রে পরিণত করলে আমাদের গৌরব আবারো ফিরে আসবে। তাই কুরআন নাজিলের এ পবিত্র রমজান মাসে আমরা বেশি করে কুরআন তেলাওয়াতের পাশাপাশি কুরআনের আলোকে আমরা আমাদের নিজেদের জীবন গড়ে তুলব। আর সেটাই হবে পবিত্র মাহে রমজানের সবচেয়ে বড় শিক্ষা।

২. রমজান মাসেই সংঘটিত হয়েছিল ঐতিহাসিক বদরের যুদ্ধ। সত্য-মিথ্যার মধ্যে পার্থক্য নির্ণয়কারী এ যুদ্ধ এ মাসে সংঘটিত হওয়ার ফলে মাসটির গুরুত্ব আরো অনেক বেড়ে গেছে। তাই তো মাহে রমজানের আরেকটি শিক্ষা হচ্ছে : বদরের যুদ্ধে মুসলমানরা বাতিলের বিরুদ্ধে যেমনি ছিল আপোসহীন, তেমনি আমাদেরও আজ অন্যায়-অসত্যের বিরুদ্ধে থাকতে হবে বজ্রকঠোর। রমজান ধৈর্যধারণের মাস একথা সত্য। তবে ধৈর্যের দোহাই দিয়ে বসে থাকব আর অন্যায় মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে, সেটা ঠিক নয় তথা মাহে রমজানের শিক্ষাও নয়। অন্যায় আর অসত্যকে যাতে আমরা সমূলে ধ্বংস করে দিতে পারি, রমজান মাসে সংঘটিত বদরের যুদ্ধ আমাদের সে শিক্ষাই দিয়ে গেছে। বদরের যুদ্ধ ইসলামের প্রথম জিহাদ ও হক বাতিলের পার্থক্য নির্ণয়ের জিহাদ। বদরের যুদ্ধ প্রমাণ করেছে ইসলাম সত্য ধর্ম। বদরের যুদ্ধ থেকে মুসলমানদেরকে শিক্ষা নিতে হবে যে, তারা সত্যের পক্ষে। ন্যায়ের পক্ষে থেকে জিহাদ বা প্রতিরোধ গড়লে মুসলমানরা দূর্বল হলেও আল্লাহ তায়ালা এখনও তাদেরকে গায়েবী সাহায্যের জন্য প্রয়োজন আধ্যাত্মিকতা। মুসলমানদের এ আধ্যাত্মিক শক্তি ধ্বংস করতে সর্বদা চক্রান্ত করে যাচ্ছে। বদরের চেতনায় এদের প্রতিহত করা হকপন্থী মুসলমানদের ঈমানী দায়িত্ব। পৃথিবীর ইতিহাসে বদরের যুদ্ধ ও মক্কা বিজয় মুসলিম উম্মার অগ্রগতির এবং জয়যাত্রার এক নবতর অধ্যায়ের সূচনা করেছে। বদরের যুদ্ধ প্রমাণ করেছে যে কোন অস্ত্র এবং শক্তির বিরুদ্ধে ঈমানী শক্তি অপ্রতিরোধ্য।

৩. ঐতিহাসিক মক্কা বিজয়ের মাস এ রমজান। রমজানের ঐতিহাসিক স্মৃতি জাগ্রত রাখতে মক্কা বিজয় অনেকখানি ভূমিকা পালন করেছে। সেদিন সিয়াম সাধনায় মশগুল মুসলমানরা ঈমানের বলে বলীয়ান হয়ে মক্কা অভিযানে বের হয়েছিলেন আল্লাহর রাসুলের সফরসঙ্গী হয়ে। মুসলমান ঘরে বসে থাকার জাতি নয়। আল্লাহর দ্বীনকে তাঁর দেয়া ভূখণ্ডে বিজয়ী আদর্শ হিসেবে কায়েম করার দৃঢ়প্রত্যয় গ্রহণের অন্যতম শিক্ষা হচ্ছে মাহে রমজানের শিক্ষা। সুতরাং মুসলিম হিসেবে আল্লাহর রজ্জুকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরার প্রত্যয় আমাদের গ্রহণ করতে হবে এ রমজান মাসে। মনে রাখতে হবে, বাতিলের ওপর আল্লাহর দ্বীনকে বিজয়ী আদর্শ হিসেবে কায়েম করার জন্য আল্লাহর রাসুলের এ ধরাপৃষ্ঠে আগমন।

Related Post