লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ এর সঠিক অর্থ কি

লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ" এর সঠিক অর্থ কি

লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” এর সঠিক অর্থ কি

প্রশ্ন: মুহতারাম সম্পাদক মাসিক আল-হুদা, আপনার স্বনামধন্য মাসিক আল-হুদা ম্যাগাজিনের আগামী সংখ্যায় আমার নিম্নে লিখিত প্রশ্নের উত্তরের দিয়ে উপকৃত করবেন। আল্লাহ আপনাকে তাওফীক দান করুন। আমীন
আমার প্রশ্ন: সূরা আশ শুয়ারা এর ২৯ নম্বর আয়াতের ব্যাখ্যা জানতে চাই। এই আয়াতে ইলাহ শব্দ দ্বারা মূসা (আ.)-কে ফেরাউন কি বুঝাতে চেয়েছে? আবার কালিমা তৈয়্যেবায় ইলাহ শব্দটি রয়েছে, এখানে ইলাহ শব্দের অর্থ কি? সুতরাং আমি কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে ইলাহ শব্দের বিস্তারিত ব্যাখ্যা জানতে চাই। (মুহাম্মাদ নাজমুল হক, সূক সালাহ, কুয়েত সিটি)
উত্তর: এ কথোপকথনটি বুঝতে হলে এ বিষয়টি সামনে থাকতে হবে যে, আজকের মতো প্রাচীন যুগেও “উপাস্য”-এর ধারণা  কেবলমাত্র ধর্মীয় অর্থের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। অর্থাৎ পূজা, আরাধনা, মানত ও নজরানা লাভের অধিকারী। তার অতি প্রাকৃতিক প্রাধান্য ও কর্তৃত্বের কারণে মানুষ নিজের ব্যবহারিক জীবনের বিভিন্ন বিষয়ে তার কাছে সাহায্য ও সহযোগিতা লাভের জন্য প্রার্থনা করবে, এ মর্যাদাও তার আছে। কিন্তু কোন উপাস্য আইনগত ও রাজনৈতিক দিক দিয়েও প্রাধান্য বিস্তার করার এবং পার্থিব বিষয়াদিতে তার ইচ্ছামত যে কোন হুকুম দেবে আর তার সামনে মানুষকে মাথা নত করতে হবে। এ কথা পৃথিবীর ভূয়া শাসনকর্তারা আগেও কখনো মেনে নেয়নি এবং আজও  মেনে নিতে প্রস্তুত নয়। তারা সব সময় একথা বলে এসেছে, দুনিয়ার বিভিন্ন ব্যাপারে আমরা পূর্ণ স্বাধীন।  কোন উপাস্যের আমাদের রাজনীতিতে ও আইনে হস্তক্ষেপ করার কোন অধিকার নেই। এটিই ছিল পার্থিব রাষ্ট্র ও সাম্রাজ্যসমূহের সাথে আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম ও তাঁদের অনুসারী সংস্কারকদের সংঘাতের আসল কারণ। তাঁরা এদের কাছ থেকে সমগ্র বিশ্ব-জাহানের মালিক আল্লাহর সার্বভৌম ক্ষমতা, কর্তৃত্ব ও শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি আদায় করার চেষ্টা করেছেন এবং এরা এর জবাবে যে কেবলমাত্র নিজেদের স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রভুত্ব ও কর্তৃত্বের দাবী পেশ করতে থেকেছে তাই নয় বরং এমন প্রত্যেক ব্যক্তিকে অপরাধী ও বিদ্রোহী গণ্য করেছে, যে তাদের ছাড়া অন্য কাউকে আইন ও রাজনীতির ময়দানে উপাস্য হিসেবে মেনে নিয়েছে। এ ব্যাখ্যা থেকে ফেরাউনের এ কথাবার্তার সঠিক মর্ম উপলব্ধি করা যেতে পারে। যদি কেবলমাত্র পূজা-অর্চনা ও নজরানা-মানত পেশ করার ব্যাপার হতো, তাহলে হযরত মূসা অন্য দেবতাদের বাদ দিয়ে একমাত্র আল্লাহ রব্বুল আলামীনকে এর একমাত্র হকদার মনে করেন এটা তার কাছে কোন আলোচনার বিষয় হতো না। যদি কেবলমাত্র এ অর্থেই মূসা আলাইহিস সালাম তাকে ইবাদতের ক্ষেত্রে তাওহীদমুখী হবার দাওয়াত দিতেন তাহলে তার  ক্রোধান্মত্ত হবার কোন কারণই ছিল না। বড়জোর সে যদি কিছু করতো তাহলে নিজের পিতৃপুরুষের ধর্ম ত্যাগ করতে অস্বীকার করতো অথবা হযরত মূসাকে বলতো, আমার ধর্মের পণ্ডিতদের সাথে বিতর্ক করে নাও। কিন্তু যে জিনিসটি তাকে ক্রোধান্মত্ত করে দিয়েছে সেটি ছিল এই যে, হযরত মূসা আলাইহিস সালাম রব্বুল আলামীনের প্রতিনিধি হিসেবে নিজেকে পেশ করে তাকে এমনভাবে একটি রাজনৈতিক হুকুম পৌঁছিয়ে দিয়েছেন যেন সে একজন অধীনস্ত শাসক এবং একজন ঊর্ধ্বতন শাসনকর্তার দূত এসে তার কাছে এ হুকুমের প্রতি আনুগত্য করার দাবী করছেন। এ অর্থে সে নিজের ওপর কোন রাজনৈতিক ও আইনগত প্রাধান্য মেনে নিতে প্রস্তুত ছিল না। বরং তার কোন প্রজা তাকে ছাড়া অন্য কাউকে ঊর্ধ্বতন শাসনকর্তা হিসেবে মেনে নেবে, এটাও সে বরদাশত করতে পারতো না। তাই সে প্রথমে চ্যালেঞ্জ করলো “রব্বুল আলামীন”-এর পরিভাষাকে। কারণ, তাঁর পক্ষ থেকে যে বার্তা নিয়ে আসা হয়েছিল তার মধ্যে শুধুমাত্র ধর্মীয় উপসনার নয় বরং সার্বভৌম রাজনৈতিক কর্তৃত্বের ভাবধারা সুস্পষ্ট ছিল। তারপর হযরত মূসা যখন বারবার ব্যাখ্যা করে বললেন— তিনি যে রব্বুল আলামীনের বার্তা এনেছেন তিনি কে? তখন সে পরিষ্কার হুমকি দিল, মিসর দেশে তুমি যদি আমার ছাড়া অন্য কারো সার্বভৌম কর্তৃত্বের নাম উচ্চারণ করবে তাহলে তোমাকে জেলখানার ভাত খেতে হবে।
আমরা যারা অনারব তাদের অধিকাংশ মুসলিম ভালো করে কালেমায়ে-  “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” এর অর্থ কি, তা জানি না।
অনারব অধিকাংশ মুসলিম যারা সজ্ঞানে এ কথার সাক্ষ্য দেয়,  “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ”, তারা প্রকৃত পক্ষে এই বাক্যটির সত্যিকার অর্থ কি তা জানে না। বরং অনেক সময় দেখা যায়, তারা সম্পূর্ণ উল্টা ও বিপরীত অর্থই জানে।
যেমন কাউকে যদি জিজ্ঞাসা করা হয়- লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ-র অর্থ কি?
সে জবাব দেয়- “আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহা নেই”  অথবা   “আল্লাহ্ ছাড়া কোন মাবূদ নেই”।
কিন্তু “ইলাহা” এবং “মাবূদ” দুটোই আরবী শব্দ। আসলে “ইলাহ” শব্দটির মানেই তারা বোঝে না। এখানে তারা পুরো বাক্যটার অনুবাদ কিন্তু করেনি। তারা “ইলাহা” এবং “মাবূদ” দুটোই শব্দই আরবী শব্দ এবং এই শব্দটার-ই অনুবাদ করেনি। তাহলে এই “ইলাহ” শব্দটির আসল অর্থ কি?
কেউ কেউ বলে- আল্লাহ্ ছাড়া কোন সৃষ্টিকর্তা নেই। এটাও লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ-র আসল অর্থ নয়। কেননা “সৃষ্টিকর্তা” এর আরবী “খালিক”। তাই এখানে সৃষ্টিকর্তা- “ইলাহ” শব্দটির সঠিক অনুবাদ নয়।
“ইলাহ” শব্দটির অনুবাদকে অনেকে সৃষ্টিকর্তা হিসেবে ধরে বলে যে- আমি তো আল্লাহ্-কেই সৃষ্টিকর্তা হিসেবে বিশ্বাস করেছি। তাহলে আমার তো ঈমান আছে, আমি তো ঈমানদার।
যদি আল্লাহ্-কে সৃষ্টিকর্তা হিসেবে বিশ্বাস করলেই ঈমানদার হওয়া যেত তাহলে নাবী (সাঃ) এর যুগের আরবের মুশরিকরা আপনার চাইতে বেশি ঈমানদার ছিল। কিন্তু তারপরে আল্লাহ্ তাদের জন্য জাহান্নাম ওয়াজিব করেছেন।
কি বিশ্বাস হচ্ছে না যে- আরবের মুশরিকরা আমাদের চাইতে বেশি ঈমানদার ছিল!
কুরআন নিজেই তার প্রমাণ-
“যদি আপনি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন, কে তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, তবে অবশ্যই তারা বলবে, আল্লাহ, অতঃপর তারা কোথায় ফিরে যাচ্ছে ? (সুরা যুখরুফঃ ৮৭)
“যদি আপনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন, কে নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডল সৃষ্টি করেছে, চন্দ্র ও সূর্যকে কর্মে নিয়োজিত করেছে? তবে তারা অবশ্যই বলবে আল্লাহ।  (সুরা আনকাবুতঃ ৬১)
এমন আরো বহু আয়াত প্রমাণ করে যে- সেই সময়ের মুশরিকরা আল্লাহ্কে শুধু “সৃষ্টিকর্তা” হিসেবেই মান্য করত না বরং আরো অনেক কিছুর মালিক হিসেবে-ই বিশ্বাস করত।
তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে ঐ মুশরিকরা আল্লাহ্কে  “সৃষ্টিকর্তা” এবং আরো অনেক কিছুর মালিক হিসেবে-ই বিশ্বাস করার পরও আল্লাহ্ কেন তাদেরকে ধ্বংস করলেন? আল্লাহ্ কেন তাদেরকে চিরকাল জাহান্নামে শাস্তি দিবেন? এর উত্তর হচ্ছে তারা আল্লাহ্কে “ইলাহ” হিসেবে মানত না। এবার আসুন  “ইলাহ” শব্দটির সঠিক অর্থটি বোঝার চেষ্টা করি।
“লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” অর্থ “আল্লাহ্ ছাড়া কোন মাবূদ নেই”। এখানে মাবূদ শব্দটিও আরবী, এই শব্দটি এসেছে “ইবাদাহ” শব্দ থেকে যার অর্থ হচ্ছে গোলামী করা।
অর্থাৎ আমাদেরকে একমাত্র আল্লাহ্র ইবাদাত করতে হবে। আল্লাহ্ ছাড়া আর কারো ইবাদাত করা যাবে না। আসলে ইবাদাত শব্দটি আমরা সচারচর ব্যবহার করলেও শব্দটিও কিন্তু আরবী। ইবাদাত শব্দের অর্থ হচ্ছে “গোলামী করা”। তাহলে  “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” এর অর্থ  দাঁড়াচ্ছে = আল্লাহ্ ছাড়া আর কারো গোলামী করা যাবে না।
অর্থাৎ আল্লাহ্ ছাড়া আর কারো হুকুম মানা যাবে না। আল্লাহ্ ছাড়া আর কারো কথা শোনা যাবে না। এমন কাজ করা যাবে না, যেই কাজে আল্লাহর পক্ষ থেকে অনুমতি নাই।
আল্লাহ্ ছাড়া আর কারো কথা মানা যাবে না, অর্থাৎ বাবা-মায়ের কথা মানা যাবে না, নেতার কথা  মানা যাবে না, শাসকের  কথা মানা যাবে না, কারো কথা মানা যাবে না। এমন কি নিজের কথাও মানা যাবে না। যা মানতে গেলে আল্লাহর নির্দেশের অমান্য হয়।

একমাত্র আল্লাহ যেটা বলবেন সেটা-ই মানতে হবে। আল্লাহ্ বলেছেন- বাবা-মা কে শ্রদ্ধা করতে তাই আমরা বাবা-মা কে শ্রদ্ধা করি, আল্লাহ্ বলেছেন- রাসূলের আনুগত্য করতে তাই আমরা রাসুলের আনুগত্য করি, আল্লাহ্ বলেছেন- সত্য কথা বলতে তাই আমরা সত্য কথা বলি। আল্লাহ্ বলছেন সালাত কায়েম করতে তাই আমরা সালাত কায়েম করি।
অথচ ইব্রাহীম (আঃ) তার পিতার সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করেছেন।
-কেন?
-কারন আল্লাহ্ বলেছেন। তাহলে বুঝা গেল, আল্লাহ্ বললে- বাবা-মা কে শ্রদ্ধা করতে হবে, আবার আল্লাহ্ বললে- পিতা মাতার সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করতে হবে। অর্থাৎ আল্লাহ্ কথাকেই প্রাধান্য দিতে হবে। আল্লাহ্র কথার উপরে কারো মায়া-মুহাব্বত চলে না। এটাই হচ্ছে “ইলাহ” এর বাস্তবতা।
তাহলে আল্লাহ্ ছাড়া আর কারো কথা মানা যাবে না, আল্লাহ্র আদেশের সামনে মাথা নত করে দেয়ার নাম-ই হচ্ছে মুলত আল্লাহ্-কে “ইলাহ” হিসেবে মেনে নেয়া।
অর্থাৎ আল্লাহ্ ছাড়া হুকুম-আহকাম দেয়ার ক্ষমতা কারো নেই।  কেউ হুকুম-আহকাম দিলেও আমি তা মানবো না। আমি তো শুধু একমাত্র আল্লাহ্র-ই গোলামী করি। আল্লাহ্ ছাড়া আর কারো গোলামী আমি  করতে পারি না, করলে সেটা শির্ক হবে।
এভাবে কোন একজন মানুষ আল্লাহ্-কে ইলাহ হিসেবে ভালভাবে বুঝে- সজ্ঞানে আল্লাহ্কে “ইলাহ” হিসেবে মনে প্রাণে মেনে নিয়ে অতঃপর মুখে সাক্ষ্য দিলে তবেই সে হবে ঈমানদার।
তাহলে এখনই মন থেকে কালেমায়ে  “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” এর সাক্ষ্য দিন ॥
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ শব্দের সঠিক অর্থ “আল্লাহ ছাড়া কোন সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক নাই”
আর সার্বভৌম ক্ষমতা চারটি ক্ষমতার সমন্বয়ে গঠিত হয়-
১-মহাবিশ্ব সহ সকল বস্তুর সৃষ্টি ক্ষমতা: আল্লাহ বলেন, “তিনি আল্লাহ, তোমাদের রব, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। তিনি প্রতিটি বস্তুর স্রষ্টা। (সূরা আনআম-১০২)
২-আইন বিধি-বিধান ও সংবিধান প্রণয়ন ক্ষমতা:আল্লাহ বলেন, “সাবধান সৃষ্টি করা ও সর্বোচ্চ আইন, কর্তৃত্ব ও সংবিধান তারই। (সূরা আ’রাফ ৫৪)
৩-বিচার বিভাগসহ শাসন ক্ষমতা: আল্লাহ বলেন. ” আল্লাহ বেতীত বিচার-ফয়সালা ও শাসন করার ক্ষমতা কারো নেই। ( সূরা আনআম ৫৭)
৪- নির্বাহী ক্ষমতা: আল্লাহ বলেন, তিনি যখন কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন তখন শুধু বলেন হও! ততক্ষনাত তা হয়ে যায়। (আল ইমরান ৪৭)

বর্তমানে গনতান্ত্রিক ও রাজতন্ত্রের শাসকরা শুধুমাত্র ১ নম্বর ক্ষমতা তথা সৃষ্টি ক্ষমতাটি আল্লাহর জন্য স্বীকার করে বাকী তিন ক্ষমতা নিজেরা দখল করে নিয়েছে। কারণ সৃষ্টি ক্ষমতাটি তাদের নাগালের ভিতর নেই। যদি সম্ভব হতো তাহলে তারা আল্লাহর সৃষ্টি করার ক্ষমতাটিও নিজেরা দখল করে নিতো। তারা সৃষ্টি ক্ষমতাটি আল্লাহর জন্য রেখে বাকী তিন ক্ষমতা বলে তারা নিজেরা সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক হয়ে বসে আছে। ফলে তারা আল্লাহর অস্তিত্ব তথা সার্বভৌম ক্ষমতাকে বিভাজ্য ও বিভক্ত করে নিজেরা সেই ক্ষমতা সংসদে গিয়ে পরিচালনা করছে। ফলে বর্তমানে সংসদীয় রাষ্ট্রপতিরা নির্বাহী ক্ষমতার মালিক হয়ে নমরূদের মতো ফাঁসির আসামীকে দায়মূক্তি দিতে পারে আর রাস্তা থেকে একটি নিরিহ লোককে তুলে এনে তাকে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়ে দিতে পারে। তারা আল্লাহর সার্বভৌম ক্ষমতাকে বিভক্ত করে শাসন ক্ষমতার দায়িত্ব তুলে দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের হাতে। তারা আল্লাহর অস্তিত্বকে বিভক্ত করে নিজেরা বহু ইলাহ হয়ে সংসদে আমাদের জন্য সংবিধান তৈরী করেছে। তারা আল্লাহর অস্তিত্বকে বিভক্ত করে বিচার বিভাগে আল্লাহর কর্তৃত্বের পরিবর্তে নিজেদের সংবিধান দ্বারা নিজেদের কর্তৃত্ব পরিচালনা করছে। আর আমরা ইসলামের নামে তাদের অনেককে ভোট দিয়ে ইলাহর আসনে বসাচ্ছি যাতে তারা সংসদে গিয়ে আল্লাহর কর্তৃত্ব দখল করতে পারে!!!!!
ইসলামের মৌলিক স্তম্ভ হচ্ছে আল্লাহর কর্তৃত্ব। কেননা কর্তৃত্ব বিনা ক্ষমতা বাস্তবে প্রয়োগ করা অসম্ভব। ফলে আল্লাহ তা’লা কে ‘ওয়াজিবুল উজুদ’ বলা হয়। আর আল্লাহর অস্তিত্ব তথা সার্বভৌম ক্ষমতা বাস্তবে আসে তার কর্তৃত্বের মাধ্যমে। যাকে রব এর রুবুবিয়্যাত বলা হয়। আর এ কারণেই কুরআনে আল্লাহ তা’লা ইলাহ ও রব শব্দটি সবচেযে বেশি ব্যবহার করেছেন।
একমাত্র আল্লাহ তা’লাই একক ও নিরঙ্কুশ সার্বভৌম ক্ষমতার উপর কর্তৃত্বকারী। আর আল্লাহর এই কর্তৃত্বের সামনে আত্মসমর্পন করাকেই ইসলাম বলা হয়।
আল্লাহর কালিমা “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” তথা আল্লাহর কর্তৃত্ব (রুবুবিয়্যাত), সার্বভৌমত্ব (উলুহিয়্যাত) ও প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতে সমাজে আল্লাহর দ্বীন কায়েম করার লক্ষ্যে রাসূল সা নিম্নোক্ত তিনটি ধাপে দ্বীন কায়েম করেন-
রাসূল সা চারটি ধাপে দ্বীন কায়েম করেন-:
১- আল্লাহর কালিমা এক ইলাহর ইবাদতের দাওয়াত
২- ইমামের হাতে (বাইয়াতে আকাবায় সানিয়ার) ছয়টি শর্তের ভিত্তিতে বাইয়াত
৩- সকল প্রকার ত্বাগুত থেকে সকল প্রকার সম্পর্ক ত্যাগ তথা হিজরত।

Related Post