Main Menu

জুমুআর দিনের করনীয় কাজ

জুমুআর দিনের করনীয় কাজ

জুমুআর দিনের করনীয় কাজ

জুমুআর দিনের জন্য বিশেষ কিছু আদব রয়েছে। প্রত্যেক মুমিনের জন্য তা পালন করা যরূরী। এসব আদবের মধ্যে কিছু নিম্নে উল্লেখ করা হল।-

ক. গোসল করা: নবী করীম (ছাঃ) বলেন, প্রত্যেক মুসলিমের উপর হক রয়েছে যে, প্রতি সাত দিনের একদিন সে গোসল করবে, তার মাথা ও শরীর ধৌত করবে।বুখারী হা/৮৯৭; মুসলিম হা/৮৪৯ রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমুআর ছালাতে আসবে সে যেন গোসল করে।মুসলিম হা/৪৪০ ১০১৩;মিশকাত হা/১০৯২। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন জুমআর দিনে প্রত্যেক সাবালকের জন্য গোসল করা ওয়াজিব।বুখারী হা/৮৭৯;মুসলিম হা/৮৪৬

খ. ওযূ করে মসজিদ অভিমুখে গমন করা: নবী করীম (ছাঃ) বলেন,যে ব্যক্তি ওযূ করবে এবং তা উত্তমরূপে করবে,অতঃপর জুমআর ছালাতে যাবে ও চুপচাপ খুৎবা শুনবে,তাহলে তার এ জুমআ হতে ঐ জুমআ পর্যন্ত সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করা হবে,অধিকন্তু আরো তিন দিনের। আর যে ব্যক্তি খুৎবার সময় কঙ্কর নাড়ল সে অনর্থক কাজ করল।মুসলিম হা/৮৫৭;

গ. নফল ছালাত আদায় করা ও চুপ করে বসে খুৎবা শ্রবণ করা: নবী করীম (ছাঃ) বলেন,যে ব্যক্তি গোসল করে জুমআর ছালাতে আসবে অতঃপর তার সাধ্যানুযায়ী ছালাত আদায় করবে,তারপর ইমাম খুৎবা শেষ করা পর্যন্ত চুপ করে থাকবে; অতঃপর ইমামের সাথে ছালাত আদায় করবে,তার এই জুমআ ও পরবর্তী জুমআর মাঝের পাপ সমূহ ক্ষমা করা হবে। এমনকি অতিরিক্ত আরো তিন দিনের পাপ ক্ষমা করা হবে।মুসলিম হা/৮৫৬ মিশকাত হা/১৩৮২

ঘ. সুন্দর কাপড় পরা ও সুগন্ধি মাখা: রাসূলুল্লাহ্ (ছাঃ) বলেন,যে ব্যক্তি জুমুআর দিন গোসল করে,তার কাছে সুগন্ধি থাকলে ব্যবহার করবে এবং উত্তম পোশাক পরিধান করবে অতঃপর সেখানে ধীরস্থিরভাবে গমন করবে,মহান আল্লাহর নির্ধারিত ছালাত আদায় করবে,কাউকে কষ্ট দিবে না এবং ইমামের খুৎবা থেকে ছালাত শেষ করা পর্যন্ত নীরবতা অবলম্বন করবে তাহলে এটা তার জন্য (দুই জুমআর মধ্যবর্তী গোনাহের) কাফফারা হবে।আহমাদ হা/২৩৬১৮;ছহীহ আত-তারগীব হা/৬৮৮

ঙ. মেসওয়াক করা: রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, জুমুআর দিন প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির গোসল ও মিসওয়াক করা কর্তব্য। সামর্থ্য থাকলে সে যেন সুগন্ধি ব্যবহার করে।মুসলিম হা/৮৪৬

চ. সকাল সকাল মসজিদে গমন করা: রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,যে ব্যক্তি জুমুআর দিন ভালভাবে গোসল করে। অতঃপর সকাল সকাল পায়ে হেঁটে মসজিদে যায়, বাহনে নয় এবং ইমামের কাছাকাছি বসে ও মনোযোগ দিয়ে খুৎবা শোনে, আর অনর্থক কিছু না করে,তার প্রতি পদক্ষেপে এক বছরের ছিয়াম ও ক্বিয়ামের অর্থাৎ দিনে ছিয়াম ও রাতের বেলায় নফল ছালাতের সমান নেকী হয়।তিরমিযী হা/৪৯৬; আবু দাউদ হা/৩৪৫ অন্যত্র তিনি বলেন,

যে ব্যক্তি জুমআর দিন জানাবাতের গোসলের ন্যায় গোসল করে এবং ছালাতের জন্য আগমন করে সে যেন একটি উট কুরবানী করল। যে ব্যক্তি দ্বিতীয় পর্যায়ে আগমন করে সে যেন একটি গাভী কুরবানী করল। তৃতীয় পর্যায়ে যে আগমন করে সে যেন একটি শিং বিশিষ্ট দুম্বা কুরবানী করল। চতুর্থ পর্যায়ে যে আগমন করল সে যেন একটি মুরগী কুরবানী করল। পঞ্চম পর্যায়ে যে আগমন করল সে যেন একটি ডিম কুরবানী করল। পরে ইমাম যখন খুৎবা দেয়ার জন্য বের হন তখন ফেরেশতাগণ যিকির শ্রবণের জন্য উপস্থিত হয়ে থাকে। মুসলিমের অন্য বর্ণনায় রয়েছে,ইমাম যখন বসে পড়েন তখন তারা এসব লেখা পুস্তিকা বন্ধ করে দেন এবং তাঁরা মসজিদে এসে যিকির শুনতে থাকেন।বুখারী হা/৮৮১,৩২১১;মুসলিম হা/৮৫০

ছ. কারো ঘাড় ডিঙিয়ে সামনে না যাওয়া: আবু যাহিরিয়্যাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা জুমুআর দিন এক ব্যক্তি লোকদের ঘাড় ডিঙ্গিয়ে সামনে অগ্রসর হচ্ছিল। নবী করীম (ছাঃ) তখন খুৎবা দিচ্ছিলেন। নবী করীম (ছাঃ) বললেন, তুমি বস, তুমি অন্যকে কষ্ট দিচ্ছ। আহমাদ, আবু দাউদ হা/১১১৮;নাসাঈ হা/১৩৯৯

অন্য বর্ণনায় রয়েছে, অনর্থক কাজ করছ। ইবনু মাজাহ হা/১১১৫,সনদ ছহীহ।অর্থাৎ তুমিবিলম্বিত করেছ ও শেষে এসেছ।

উপসংহার: পরিশেষে বলব, মসজিদে গমনের জন্য উপরোক্ত আদবগুলো পালন করা মুমিনের জন্য আবশ্যক।এর মাধ্যমে ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তি হাছিল হবে ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ আমাদের সকলকে উক্ত কাজগুলো পালন করার তাওফীক দান করুন-আমীন

Related Post