পরিবার থেকে রাষ্ট্র পর্যন্ত সকল ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারলে মানুষ ইহকালীন জীবনে কল্যাণ ও পরকালীন জীবনে মুক্তি পাবে। মহান আল্লাহ বলেন, হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে সত্য সাক্ষ্য দানকারী হও, সুবিচারে প্রতিষ্ঠিত থাক যদিও এটা তোমাদের নিজের অথবা পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনের বিরুদ্ধে হয়, যদি সে সম্পদশালী বা দরিদ্র হয়, তবে আল্লাহই তাদের জন্যে যথেষ্ট। অতএব সুবিচারে স্বীয় প্রবৃত্তির অনুসরণ কর না। আর যদি তোমরা (বর্ণনায়) বক্রতা অবলম্বন কর বা পশ্চাৎপদ হও, তবে নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা তোমাদের সমস্ত কর্মের পূর্ণ সংবাদ রাখেন (নিসা ৪/১৩৫)। প্রত্যেককে স্বীয় সন্তান-সন্ততি তথা পরিবারে ন্যায়পরায়ণ হ’তে হবে। তেমনিভাবে সমাজের বিচার-সালিশে মিথ্যা সাক্ষ্য গ্রহণ না করে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। পবিত্র কুরআনে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে ন্যায় সাক্ষ্যদানে অবিচল থাকবে, কোন বিশেষ সম্প্রদায়ের বিদ্বেষ যেন তোমাদেরকে সুবিচার বর্জনে প্ররোচিত না করে। তোমরা ন্যায়বিচার কর, এটা তাক্বওয়ার অধিকতর নিকটবর্তী। আর আল্লাহকে ভয় কর, নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে পূর্ণ অবগত (মায়েদাহ ৫/৮)। সমাজে সঠিক বিচার না করলে পরকালে কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হ’তে হবে। মহান আল্লাহ দাঊদ (আঃ) সম্বন্ধে বলেন, হে দাঊদ! আমি তোমাকে পৃথিবীতে প্রতিনিধি করেছি। অতএব তুমি লোকদের মধ্যে সুবিচার কর এবং প্রবৃত্তির অনুসরণ কর না। কেননা এটা তোমাকে আল্লাহর পথ হতে বিচ্যুত করবে। যারা আল্লাহর পথ পরিত্যাগ করে তাদের জন্যে রয়েছে কঠিন শাস্তি। কারণ তারা বিচার দিবসকে ভুলে গেছে’ (ছোয়াদ ৩৮/২৬)।
সুবিচারকারী ব্যক্তি ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহর বিশেষ ছায়াতলে স্থান পাবে। আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, নবী করীম (ছাঃ) বলেন, ‘সাত প্রকার লোককে আল্লাহ তা‘আলা ক্বিয়ামতের দিন বিশেষ ছায়াতলে আশ্রয় দিবেন, যেদিন তাঁর ছায়া ব্যতীত অন্য কোন ছায়া থাকবে না। ১. ন্যায়পরায়ণ শাসক (যে হক্ব বিচার করে) ২. ঐ যুবক, যে তার যৌবনকাল আল্লাহর ইবাদতে কাটিয়েছে। ৩. এমন ব্যক্তি যে আল্লাহকে নির্জনে স্মরণ করে আর তার চোখ দু’টি অশ্রুসিক্ত হয় ৪. এমন ব্যক্তি যার অন্তর মসজিদের সঙ্গে লেগে থাকে ৫. এমন দু’ব্যক্তি যারা আল্লাহর উদ্দেশ্যে পরস্পরকে ভালবাসে ৬. এমন ব্যক্তি যাকে কোন সম্ভ্রান্ত রূপসী নারী নিজের দিকে ডাকে আর সে বলে, আমি আল্লাহকে ভয় করি, ৭. এমন ব্যক্তি যে ছাদাক্বা করে এমনভাবে যে, তার বাম হাত জানে না, তার ডান হাত কি দান করেছে’।[বুখারী হা/৬৮০৬।]