মসজিদে দুনিয়াবী কথা বলা প্রসঙ্গে

images

মাসয়ালা: যে সমস্ত কথা মসজিদের বাহিরে বলা জায়েয, সে সমস্ত কথা মসজিদে বলা নিষেধ এবং যে সমস্ত কথা মসজিদের বাহিরে বলা নিষেধ সে সমস্ত কথা মসজিদে বলা কঠোর নিষেধ। ফাতহুল ক্বদির নামক গ্রন্থে আছে যে, মসজিদের মধ্যে দুুনিয়াবী কথা বলা নেকী সমূহকে এমনভাবে ধ্বংস করে দেয় যেমন আগুন লাকড়ীকে জ্বালিয়ে ফেলে এবং মাদখাল লি-ইবনে হাজেব গ্রন্থের উদ্ধৃতি দিয়ে আল্লামা শফি (রহ.) আদাবুল মাসাজিদ নামক গ্রন্থে লিখেন, যখন কোন ব্যক্তি মসজিদের মধ্যে দুনিয়াবী কথা বলা শুরু করে তখন ফেরেশতারা তাকে প্রথমে বলে হে আল্লাহর বন্ধু চুপ থাক। তারপর যদি চুপ না হয় তাহলে বলে হে আল্লাহর শত্র“ চুপ থাক, তারপরও যদি কথা বলে তাহলে বলে হে আল্লাহর অভিশপ্ত ব্যক্তি চুপ থাক।
মাসয়ালা: মসজিদে উচ্চ আওয়াজে কোরআন তেলাওয়াত এবং উচ্চ আওয়াজে জিকির করা সব না জায়েয। তবে হ্যাঁ যদি মসজিদে কোন ব্যক্তি নামাজ অথবা তাসবীহে লিপ্ত না থাকে তাহলে কতেক উলামা জায়েয বলেছেন। আবার কিছু উলামা সর্ব অবস্থায় উচ্চ আওয়াজে জিকির ও তেলাওয়াত করা নাজায়েয বলেছেন।
সতর্কতা: আফসোস বর্তমান মানুষ মসজিদের আদব থেকে বড়ই অমনোযুগী, অধিকাংশ মানুষ মসজিদে এমনভাবে শোরগোল করে যেমন- মঞ্চে, বাজার ইত্যাদির মধ্যেও হয় না। অথচ শরীয়তে উচ্চ আওয়াজে তেলাওয়াত ও যিকিরকে পর্যন্ত নাজায়েজ বলেছেন। নবী করিম (সা.) বলেন বাজারের হট্টগোল থেকে বেঁচে থাক এবং মসজিদকে দুনিয়াবী কথাবার্তা দ্বারা বাজারের সাদৃশ্য করিও না সুতরাং উপরোল্লেখিত আলোচনা দ্বারা মসজিদে দুনিয়াবী কথা বলার পরিণাম সম্পর্কে জানা গেল। তাই আমাদের সকলের উচিৎ এর থেকে বেঁচে থাকা। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে এর থেকে বেঁচে থাকার তৌফিক দান করুন। (আমিন)
খুতবা সম্পর্কে

মাসয়ালা: যখন খুতবা শুরু হয়ে যায় তখন থেকে সমস্ত উপস্থিত ব্যক্তির খুতবা শুনা ওয়াজিব। চাই সে ইমামের নিকটবর্তী বসে, চাই দূরে এবং এমন কাজ যার দ্বারা খুতবা শুনার মধ্যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয় সে কাজ করা হারাম। যেমন- খাওয়া, পান করা , কথাবার্তা বলা, চলাফেরা করা, তাসবীহ পড়া, সালাম দেওয়া, সালামের উত্তর দেওয়া বা শরীয়তের কোন মাসায়েল বলা এ সমস্ত কাজ যেমন নামাজরত অবস্থায় নিষেধ তেমনি খুতবার সময়ও নিষেধ।
মাসায়ালা: যখন ইমাম খুতবার জন্য উঠে দাঁড়ায় সে সময় থেকে কোন নামাজ পড়া, পরস্পরে কথা বলা, এবং ইমাম খুতবা শেষ করা পর্যন্ত কোন কাজ করা ইত্যাদি সব নাজাযেজ।
সতর্কতা: অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, যখন খুতবা শুরু হয় তখন আমরা টাকার বাক্স চালাই বা কোন এক ব্যক্তি টাকা নেওয়া শুরু করি। আর সে কারণে খুতবা শুনার মধ্যে মানুষের মনোযোগ থাকেনা অথচ খুতবা শুনা ওয়াজিব। আর উপরোল্লিখিত মাসয়ালা মতে খুতবার সময় খাওয়া, পান করা নামাজ পড়া, সালাম দেওয়া সালামের উত্তর দেওয়া, তাসবিহ পড়া এ সমস্ত কাজ হারাম। কিন্তু আমরা কতজন এ মাসয়ালা জানার চেষ্টা করি বা জানলেও কয়জন আমল করি। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে এ মাসয়ালা সমূহ জানার এবং আমল করার তৌফিক দান করুন। (আমিন)

Related Post