হজ্জের সফরের আদবসমূহ

হজ্জের সফরের আদবসমূহ

হজ্জের সফরের আদবসমূহ

একজন হাজী সাহেব হজ্জ সফরে নিম্নের আমলগুলো করার চেষ্ট করবেন।আল্লাহ সকলকে সেই তাওফীক দান করুন। আমীন…

০১- নিয়ত খালেছ করে নিবেন অর্থ্যাৎ একমাত্র আল্লাহকে রাজি খুশী করার জন্য নিয়ত রাখতে হবে। নাম শোহরত, দেশ ভ্রমন, আবহাওয়া পরিবর্তন, হাজী উপাধী অর্জন ইত্যাদি নিয়ত রাখবেন না।

০২-খাঁটি অন্তরে তওবা করতে হবে। অর্থ্যাৎ কৃত গোনাহের জন্য অনুতপ্ত হতে হবে, এখনই গোনাহ বর্জন করতে হবে এবং ভবিষ্যতে গোনাহ না করার পাকাপোক্ত নিয়ত করতে হবে। কারো টাকা পয়সা বা সম্পদের হক নষ্ট করে থাকলে তার ক্ষতিপূরণ দিয়ে দিতে হবে। পাওনাদার জীবিত না থাকলে তাদের উত্তরাধিকারীদের থেকে তার নিস্পত্তি করে নিতে হবে। সেরুপ কারও সন্ধ্যান না পেলে পাওনাদারের সওয়াবের নিয়তে পাওনা পরিমাণ অর্থ তার পক্ষ থেকে দান করে দিতে হবে। কাউকে কষ্ট দিয়ে থাকলে তার থেকে মাফ করিয়ে নিতে হবে।
০৩- মাতা-পিতা জীবিত থাকলে এবং তাদের খেদমতে থাকার প্রয়োজন থাকলে তাদের অনুমতি ব্যতিত নফল হজ্জে যাওয়া মারুহ। খেদমতের প্রয়োজন থাকলে ফরয হজ্জে অনুমতি ব্যতিত যাওয়া মাকরুহ নয়। যদি পথ ঘাটা নিরাপদ থাকে। মাতা-পিতারও উচিৎ অনুমতি দিয়ে দেওয়া।
০৪- সফর হতে ফিরে আসা পযর্ন্ত সময়ের জন্য পরিবার পরিজন ও অধীনস্তদের প্রয়োজনীয় খরচাদির ব্যবস্থা করে যেতে হবে।
০৫- কোন ঋন নগদ আদায় করার থাকলে পাওনাদারের অনুমতি গ্রহণ করবেন। তার অনুমিত ব্যতিত হজ্জে গমণ করা মাকরুহ। তবে যদি কাউকে ঋন আদায়ের দায়িত্ব অর্পন করে যাওয়া যায় এবং পাওনাদারগণ তাতে সম্মত হয় তাহলে অনুমতি ব্যতিতও যাওয়া মাকরুহ হবে না। আর ঋন যদি নগদ আদায় করার না হয় বরং মেয়াদ বাকী থাকে এবং মেয়াদের পুর্বেই হজ্জ থেকে ফিরে আসার হয় তাহলে সেই পাওনাদারের অনুমতি গ্রহণ ব্যতিতও হজ্জে গমণে কোন অসুবিধা নেই। তবে পাওনা দাওনা সম্পর্কিত একটি তালিকা তৈরী করে রেখে যাবেন।
০৬- নিজের কাছে কারো থেকে ধার করা জিনিস বা কারো আমানত থাকলে তা মালিককে বুঝিয়ে দিয়ে যাওয়া চাই।
০৭- সফরে গমণের পুর্বে কোন বিচক্ষন অভিজ্ঞ ব্যক্তির সাথে সফরের প্রয়োজনীয় বিষয়াদি সম্পর্কে পরামর্শ করে নিবেন।
০৮- উত্তম সফর সঙ্গী নির্বাচন করুন। পুর্ব অভিজ্ঞতা সম্পন্ন আলেম হলে উত্তম হয়, যার কাছে প্রয়োজনে হজ্জের মাসায়েল ইত্যাদি জেনে নেয়া যাবে। আলেম না পেলে অন্ততঃ একজন অভিজ্ঞ দ্বীনদার হাজীকে সফরসঙ্গী হিসেবে নির্বাচন করার চেষ্টা করবেন।
০৯- হজ্জের মাসায়েল শিক্ষা করে নিবেন। হজ্জের মাসায়েল শিক্ষা করাও ফরয দুআ কালামের ফযিলত আছে, তবে দোআ কালামের উপর জোর দিতে গিয়ে জরুরী মাসায়েল থেকে অমনোযোগী ও উদাসীন হওয়া চাইনা। হজ্জ ও উমরা সম্পর্কিত নির্ভরযোগ্য মাসায়েলের কিতাবও সাথে রাখা জরুরী। যাতে প্রয়োজনের সময় কিতাব দেখে নেয়া যায়। অনেকে তওয়াফ, সায়ী উত্যাদির দোআ মুখস্ত করতে পারেন না বলে হতাশ হন। হতাশ হওয়ার কিছু নেই,একান্ত মুখস্ত করতে না পারলে এসব দোআ ব্যতিতও হজ্জ হয়ে যাবে॥ তবে এসব দোআ সুন্নত বা মুস্তাহাব। তাই সম্ভব হলে হিম্মত করে আ’মল করার চেষ্টা করুন। সমাপ্ত.

Related Post