মুমিন বান্দার প্রতি আল্লাহ তায়ালার বিশেষ অনুগ্রহ এই যে, তাকে এমন কিছু ইবাদত তিনি দান করেছেন যা দ্বারা বান্দা তার রুহানি তারাক্কী, কলবের সুকুন ও প্রশান্তি এবং দুনিয়া-আখিরাতের খায়র ও বরকত লাভ করে থাকে। এসবেরই একটি হলো হজ। আল্লাহ তায়ালা বান্দাকে বাইতুল্লাহর হজ করার নির্দেশ দিয়েছেন যেন এর মাধ্যমে তারা গুনাহ থেকে পাকসাফ হয় এবং জান্নাতে উচ্চ মর্তবা ও মাকাম লাভ করে।
আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহর পথের মুজাহিদ এবং হজ ও উমরাহকারী হলো আল্লাহর প্রতিনিধি। তারা আল্লাহর ডাকে সাড়া দেন আর আল্লাহও তাদের প্রার্থনা কবুল করেন।—সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৮৯৩
অন্য বর্ণনায় আছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, হজ ও উমরাহকারীরা হলো আল্লাহর প্রতিনিধি। তারা আল্লাহর ডাকে সাড়া দেন আর আল্লাহও তাদের প্রার্থনা কবুল করেন।—মুসনাদে বাযযার/তারগীব হাদিস : ১৬৬১
নিম্নে হজ ও উমরাহর কিছু ফজিলত উল্লেখ করা হলো। যেন এর মাধ্যমে আমরা আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহ লাভে অনুপ্রাণিত ও উত্সাহী হতে পারি।
হজের ফজিলত
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি হজ করে এবং অশ্লীলতা ও কটূক্তি থেকে বিরত থাকে সে এমনভাবে প্রত্যাবর্তন করে যেমনটি তার মা তাকে প্রসব করেছিল।—সহিহ বুখারী, হাদিস : ১৫২১
অন্য এক বর্ণনায় তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হলো, সর্বোত্তম আমল কোনটি? তিনি বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন। জিজ্ঞাসা করা হলো, এরপর কী? বললেন, আল্লাহর পথে জিহাদ করা। বলা হলো, এরপর? তিনি বললেন, মাবরুর হজ।—সহিহ বুখারী, হাদিস : ১৫১৯
জাবির (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, মাবরুর হজের প্রতিদান কেবল জান্নাত। সাহাবীরা জিজ্ঞাসা করলেন, মাবরুর হজ কী? ইরশাদ করলেন, খাবার খাওয়ানো ও সালামের প্রসার ঘটানো।—মুসনাদে আহমদ ৩/৩২৫
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহ তাআলা তিন ব্যক্তির দায়িত্বভার গ্রহণ করেন : ১. যে ব্যক্তি আল্লাহর কোনো মসজিদের উদ্দেশে বের হয়; ২. যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে জিহাদ করতে বের হয়; ৩. যে ব্যক্তি হজের উদ্দেশে বের হয়।—হিলয়াতুল আওলিয়া ৯/২৬২
কষ্টসাধ্য অবস্থায় হজ করার ফজিলত
উম্মে সালামা (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, হজ হলো প্রত্যেক দুর্বলের জিহাদ।—সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৯০২
মহিলাদের হজ করার ফজিলত
উম্মুল মুমিনীন হজরত আয়েশা (রা.থেকে বর্ণিত। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমরা জিহাদকে সর্বোত্তম আমল মনে করি। তাহলে আমরা (নারীরা) কি জিহাদ করব না? নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, না। তোমাদের জন্য উত্তম জিহাদ হলো মাবরুর হজ।—সহিহ বুখারী, হাদিস : ১৫০২