রমযান কুরআনের মাস

Originally posted 2013-07-05 16:32:06.

 

রমযান মাস কুরআনের মাস

রমযান ও কুরআন

আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনকে লওহে মাহফুজ হতে দুনিয়ার আকাশে ক্বদরের রাত্রিতে একত্রে অবতীর্ণ করেছেন, অতঃপর তেইশ বছরে উপযুক্ত সময়ে আল্লাহর নির্দেশে জিব্রাইল ফেরেশতার মারফতে অল্প অল্প করে রাসূলের নিকট অবতীর্ণ হয়।  মহান আল্লাহর বাণী: আমি কুরআনকে নাযিল করেছি শবে ক্বদরে।” আল্লাহর বাণী: আমি কুরআনকে নাযিল করেছি বরকতময় রাত্রিতে।  বরকতময় রাত্রি বলে শবে ক্বদরকে বুঝানো হয়েছে, কেননা এই রাত্রিতে আল্লাহর পক্ষ হতে অসংখ্য কল্যাণ ও বরকত নাযিল হয়। কুরআন পাকের সুস্পষ্ট বর্ণনা দ্বারা পরিষ্কারভাবে প্রমাণিত হয় যে, শবে ক্বদর রমযান মাসে অতিবাহিত হয়।  আল্লাহর বাণী: রমযান মাসই হল সে মাস, যাতে নাযিল করা হয়েছে কুরআন।

কুরআনের আগমনে রমযান মাসের এতই মর্যাদা যে, যখন রমযান মাস আসে তখন আসামনের ও বেহেশতের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হয়।  দোযখের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়।  শয়তানদের বন্দী করা হয়।  রমযান মাসে একটি নফল ইবাদত অন্য মাসে একটি ফরজের সমান আর একটি ফরজ সত্তরটি ফরজের সমান।  ক্বদরের রাত্রিতে কুরআন অবতীর্ণ হওয়ার কারণে এই রাত্রিকে ক্বদর বা সম্মানিত রাত হিসেবে অবহিত করা হয়েছে। মহান আল্লাহ এ রাতের মর্যাদা দিয়েছেন সমস্ত রাতের উর্ধ্বে।  এই রাত্রিকে করেছেন হাজার মাসের চাইতে উত্তম। যে এই রাত্রিতে ইবাদত করবে আল্লাহ তায়ালা তাকে বড়ই সওয়াব দিবেন।  রাসূল (সাঃ) বলেছেন যে,ব্যক্তি ঈমানের সাথে সওয়াবের নিয়তে ক্বদরের রাতে দন্ডায়মান হয় তার পূর্ববর্তী সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করা হয়। এ রাতে জিব্রাইল ও ফেরেশতাগণ পৃথিবীতে অবতরণ করেন,ইবাদতরত নারী-পুরুষদের জন্য ক্ষমা ও রহমতের দোয়া করেন।

 যে জন্য এ মাসকে সম্মানিত করেছেন: মহান আল্লাহ তায়ালা এ মাসকে সম্মানিত করেছেন কারণ এ মাসেই কুরআন অবতীর্ণ করেছেন।  আর কুরআনই মানব জাতিকে শিরকের অন্ধকার হতে তাওহীদের আলোয় আলোকিত করে। মহান স্রষ্টার পরিচয় করিয়ে দেয়, মানব জাতির দায়িত্ব ও কর্তব্য বাতলিয়ে দেয়।  হক-বাতিল, ন্যায়-অন্যায়, বৈধ-অবৈধতার সীমারেখা বর্ণনা করে।  তাই এ মাসের গুরুত্ব কুরআনের সঙ্গে জড়িত।  তাই বেশী বেশী কুরআনের তিলওয়াত, হিফজ, ও গভীর ধ্যানের মাধ্যমে কুরআন তিলাওয়াত শ্রবণ করা, আর গভীরভাবে চিন্তা করা, কেননা এই কুরআন মানব জাতির জন্য স্রষ্টার পক্ষ হতে মহা বিধান, সকল অন্ধকারের জন্য আলো, যাবতীয় পাপাচার বিকৃতি হতে মানব জাতিকে হিফাজতের মহা কারিকুলাম, হৃদয়ের প্রশান্তি, জ্ঞানীদের উজ্জ্বলতা, চরিত্র গঠনের দিনপঞ্জী, ইহ জগতে সুখ-শান্তির চাবি, পরকালের মুক্তির দিশারী ও চিরস্হায়ী সফলতার গ্যারান্টি।  মহান আল্লাহর বাণী: এই কুরআন এমন পথ প্রদর্শন  করে যে, যা সর্বাধিক সরল এবং সৎকর্ম পরায়ণ মুমিনদেরকে সুসংবাদ দেয় যে, তাদের জন্য মহা পুরস্কার রয়েছে। (সূরা বনী ইসরাইল: ৯)

কুরআন পাঠের মর্যাদা ও ফযীলত:কুরআনের দক্ষ পাঠকগণ কিয়ামতের দিন সম্মানিত ফেরেশতাদের সাথে থাকবে।  আয়েশা রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী (সাঃ) বলেন,কুরআন পাঠে দক্ষ ব্যক্তি নেককার সম্মানিত ফেরেশতাদের সাথে থাকবে।  (বুখারী ও মুসলিম)

হযরত উসমান বিন আফ্‌ফান সূত্রে বর্ণিত: রাসূল (সা.) বলেন: তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ঐ ব্যক্তি যে নিজে কুরআন শিখে ও অন্যকে শিক্ষা দেয়।  (বুখারী মুসলিম)

ব্যাখ্যা : আল্লাহর কালাম সমস্ত গ্রন্হ থেকে উত্তম তাই তার শিক্ষার্থী ও শিক্ষকগণ হবে উত্তম মর্যাদা সম্পন্ন।

(কিয়ামতের দিন) ছাহেবে কুরআনকে বলা হবে কুরআন পাঠ করতে থাক এবং ( বেহেশতের তলায় তলায়) উঠতে থাক, আর দুনিয়াতে যেমন তুমি ধীরে ধীরে পড়তে (আজও) তেমন ধীরে ধীরে পড়, নিশ্চয় তোমার পঠিত আয়াতের শেষ স্হানই হবে তোমার বাসস্থান।  (আহমদ)

ব্যাখ্যা : মানুষের মর্যাদা ও স্হান কিয়ামতের দিন কুরআনের শিক্ষানুযায়ী হবে। ছাহেবে কুরআন ঐ ব্যক্তিকে বলা হয় যে,সর্বদা কুরআন তিলাওয়াত করে এবং এর উপর আমল করে।  আর যে কুরআন পড়ে এর উপর আমল করে না সে ছাহেবে কুরআন নয়। 

 

 

 

Related Post