হজ ও উমরার ফজিলত এবং এ সম্পর্কৃত বিভিন্ন আমলের গুরুত্ব

imagesCAMNARG3

মুমিন বান্দার প্রতি আল্লাহ তায়ালার বিশেষ অনুগ্রহ এই যে, তাকে এমন কিছু ইবাদত তিনি দান করেছেন যা দ্বারা বান্দা তার রুহানি তারাক্কি, কলবের সুকুন ও প্রশান্তি এবং দুনিয়া-আখিরাতের খায়ের ও বরকত লাভ করে থাকে। এসবেরই একটি হলো হজ। আল্লাহ তাআলা বান্দাকে বাইতুল্লাহর হজ করার নির্দেশ দিয়েছেন যেন এর মাধ্যমে তারা গুনাহ থেকে পাকসাফ হয় এবং জান্নাতে উচ্চ মর্তবা ও মাকাম লাভ করে।
আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহর পথের মুজাহিদ এবং হজ ও উমরাহকারী হলো আল্লাহর প্রতিনিধি। তারা আল্লাহর ডাকে সাড়া দেন আর আল্লাহও তাদের প্রার্থনা কবুল করেন।—সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৮৯৩
অন্য বর্ণনায় আছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, হজ ও উমরাহকারীরা হলো আল্লাহর প্রতিনিধি। তারা আল্লাহর ডাকে সাড়া দেন আর আল্লাহও তাদের প্রার্থনা কবুল করেন।—মুসনাদে বাযযার/তারগীব হাদিস : ১৬৬১
নিম্নে হজ ও উমরাহর কিছু ফজিলত উল্লেখ করা হলো। যেন এর মাধ্যমে আমরা আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহ লাভে অনুপ্রাণিত ও উত্সাহী হতে পারি।
হজের ফজিলত
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি হজ করে এবং অশ্লীলতা ও কটূক্তি থেকে বিরত থাকে সে এমনভাবে প্রত্যাবর্তন করে যেমনটি তার মা তাকে প্রসব করেছিল।—সহীহ বুখারী, হাদিস : ১৫২১
অন্য এক বর্ণনায় তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হলো, সর্বোত্তম আমল কোনটি? তিনি বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন। জিজ্ঞাসা করা হলো, এরপর কী? বললেন, আল্লাহর পথে জিহাদ করা। বলা হলো, এরপর? তিনি বললেন, মাবরুর হজ।—সহীহ বুখারী, হাদিস : ১৫১৯
জাবির (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, মাবরুর হজের প্রতিদান কেবল জান্নাত। সাহাবীরা জিজ্ঞাসা করলেন, মাবরুর হজ কী? ইরশাদ করলেন, খাবার খাওয়ানো ও সালামের প্রসার ঘটানো।—মুসনাদে আহমদ ৩/৩২৫
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহ তাআলা তিন ব্যক্তির দায়িত্বভার গ্রহণ করেন : ১. যে ব্যক্তি আল্লাহর কোনো মসজিদের উদ্দেশে বের হয়; ২. যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে জিহাদ করতে বের হয়; ৩. যে ব্যক্তি হজের উদ্দেশে বের হয়।—হিলয়াতুল আওলিয়া ৯/২৬২
কষ্টসাধ্য অবস্থায় হজ করার ফজিলত
উম্মে সালামা (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, হজ হলো প্রত্যেক দুর্বলের জিহাদ।—সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৯০২
মহিলাদের হজ করার ফজিলত
উম্মুল মুমিনীন হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমরা জিহাদকে সর্বোত্তম আমল মনে করি। তাহলে আমরা (নারীরা) কি জিহাদ করব না? নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, না। তোমাদের জন্য উত্তম জিহাদ হলো মাবরুর হজ।—সহিহ বুখারী, হাদিস : ১৫০২
উমরাহর ফজিলত
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, এক উমরাহ অন্য উমরাহ পর্যন্ত মধ্যবর্তী সবকিছুর কাফফারা। আর মাবরুর হজের একমাত্র প্রতিদান হলো জান্নাত।—সহিহ বুখারী, হাদিস : ১৭২৩; সহীহ মুসলিম, হাদিস : ১৩৪৯
হজে খরচ করার ফজিলত
ইবনে আওন ইবরাহীম ও আসওয়াদের সূত্রে বর্ণনা করেন যে, তাঁরা বলেছেন, হজরত আয়েশা (রা.) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! লোকেরা তো দুইটি ইবাদত নিয়ে ফিরে যাচ্ছে। আর আমি শুধু একটি নিয়ে ফিরব? তখন তাঁকে বলা হলো, অপেক্ষা কর। যখন তুমি পবিত্র হবে তখন তানঈমে যাবে এবং (উমরাহর) ইহরাম বাঁধবে। এরপর অমুক স্থানে যাও। অবশ্য এসবের প্রতিদান হবে তোমার ব্যয় ও কষ্ট অনুযায়ী।—সহিহ বুখারী, হাদিস : ১৭৮৭
অন্য বর্ণনায় তিনি আরও বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে উমরাহর সময় বললেন, তোমার ব্যয় অনুপাতে উমরাহর প্রতিদান দেয়া হবে।—মুসতাদরাকে হাকেম, হাদিস : ১৭৭৭; তারগীব, হাদিস : ১৬৮১ হ
হজ-সফরের ফজিলত
হজরত ইবনে ওমর (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, আল্লাহ তাআলা হজকারীকে তার উটনীর প্রতি কদমে একটি নেকী লেখেন কিংবা একটি গুনাহ মুছে দেন। অথবা একটি মর্তবা বুলন্দ করে।—সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদিস : ১৮৮৭; শুআবুল ঈমান, বায়হাকী, হাদিস : ৪১১৬
হজরত উবাদা ইবনে ছামিত (রা.) থেকেও অনুরূপ হাদিস বর্ণিত হয়েছে। (দেখুন : আলমু’জামুল আওসাত, হাদিস : ২৩৪১)
তালবিয়া পাঠের ফজিলত
সাহল ইবনে সা’দ আসসায়েদী (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, কোনো ব্যক্তি যখন তালবিয়া পাঠ করে তখন তার ডানে ও বামে পৃথিবীর শেষ প্রান্ত পর্যন্ত যা কিছু আছে যেমন, গাছপালা, মাটি, পাথর সবকিছু তালবিয়া পাঠ করতে থাকে।—জামে তিরমিযী, হাদিস : ৮২৮; ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৯২১
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, কোনো মুমিন যখন ইহরামের হালতে দিন কাটাবে তখন সূর্য তার সব গুনাহ নিয়ে অস্ত যাবে। আর কোনো মুসলিম যখন আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে হজের তালবিয়া পাঠ করবে তখন তার ডানে-বামে পৃথিবীর শেষ প্রান্ত পর্যন্ত সবকিছু তার পক্ষে সাক্ষ্য দেবে।—জমে তিরমিযী, হাদিস : ৮১০; তারগীব, হাদিস : ১৭০৩
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে কেউ তালবিয়া পাঠ করবে তাকে সুসংবাদ দেয়া হবে। এবং যে কেউ তাকবীর বলবে তাকে সুসংবাদ দেয়া হবে। জিজ্ঞাসা করা হলো, ইয়া রাসুলুল্লাহ! জান্নাতের সুসংবাদ? উত্তরে নবীজী বললেন, হ্যাঁ।—আলমু’জামুল আওসাত, তবারানী, হাদিস : ৭৭৭৫; তারগীব, হাদিস : ১৭০৭
মক্কা মুকাররমার ফজিলত
আবদুল্লাহ ইবনে আদী ইবনে হামরা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ‘হাযওয়ারা’ নামক স্থানে ছিলেন তখন তাকে উটের উপর সওয়ার অবস্থায় বলতে শুনেছি। তিনি বলেন, আল্লাহর কসম! নিশ্চয়ই তুমি আল্লাহর শ্রেষ্ঠ জমিন। আর আমার কাছে সবচেয়ে প্রিয়। আল্লাহর কসম! যদি আমাকে তোমার (বুক) থেকে চলে যেতে বাধ্য না করা হতো তাহলে আমি কখনও যেতাম না।—সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩১০৮
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ফতহে মক্কার দিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘোষণা করেন, নিশ্চয়ই আসমান-জমিন সৃষ্টির দিনই আল্লাহ এই জমিনকে হারাম/সম্মানিত করেছেন। সুতরাং কিয়ামত পর্যন্ত তা হারাম ও সম্মানিত। …।— সহীহ মুসলিম, হাদিস : ১৩৫৩
মসজিদে হারামে নামাজ আদায়ের ফজিলত
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, শুধু তিনটি মসজিদের উদ্দেশে সফর করা যাবে : আমার এই মসজিদ (মসজিদে নববী), মসজিদে হারাম ও মসজিদে আকসা।—সহীহ মুসলিম, হাদিস : ১৩৯৭
জাবির (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আমার এই মসজিদে একটি নামাজ অন্য মসজিদে হাজার নামাজ থেকেও উত্তম। তবে মসজিদে হারাম ছাড়া। কেননা, মসজিদে হারামে একটি নামাজ অন্য মসজিদের এক লাখ নামাজের চেয়ে উত্তম।—মুসনাদে আহমদ : ৩/৩৯৭
বাইতুল্লাহর তাওয়াফের ফজিলত
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি বাইতুল্লাহর তাওয়াফ করে এবং দুই রাকাত নামাজ আদায় করে সে একটি গোলাম আজাদ করার ছওয়াব পাবে।—ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৯৫৬
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, বাইতুল্লাহর তাওয়াফ হচ্ছে নামাজের মতো। তবে এতে তোমরা কথা বলতে পার। সুতরাং এ সময় যে কথা বলবে সে যেন শুধু উত্তম কথাই বলে।—জামে তিরমিযী, হাদিস : ৯৬০
হাজরে আসওয়াদে চুমু খাওয়ার ফজিলত
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘এই দুটি রোকন (হাজরে আসওয়াদ ও রোকনে ইয়ামানী) স্পর্শ করা গুনাহগুলোকে মুছে দেয়।’—জামে তিরমিযী, হাদিস : ৯৫৯
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, এই পাথর কিয়ামতের দিন এমন অবস্থায় উপস্থিত হবে যে, তার দুটি চোখ থাকবে, যা দ্বারা সে দেখবে এবং জিহ্বা থাকবে, যা দ্বারা সে কথা বলবে। সে ওই ব্যক্তির পক্ষে সাক্ষ্য দেবে যে তাকে সঠিক পন্থায় ইসতিলাম করে।—ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৯৪৪
সাফা-মারওয়ার মাঝে সাঈর ফজিলত
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, নিশ্চয়ই সাফা-মারওয়া আল্লাহর দুটি নিদর্শন।… —সূরা বাকারা : ১২৮
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, …। আর সাফা-মারওয়ায় তোমার সাঈ করা। তা তো ৭০ জন দাস মুক্ত করার সমতুল্য।—বাযযার/কাশফুল আসতার, হাদিস : ১০৮২; ইবনে হিব্বান, হাদিস : ১৮৮৭
আরাফায় উকূফের ফজিলত
হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, কোনোদিনই এমন নেই, যেদিন আল্লাহ তাআলা আরাফার দিনের চেয়েও অধিক সংখ্যক বান্দাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তিদান করেন। আর তিনি তাদের নিকটবর্তী হন। এরপর ফেরেশতাদের সঙ্গে তাদের নিয়ে গর্ব করে বলেন, কী চায় এরা?—সহীহ মুসলিম, হাদিস : ১৩৪৮
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহ তাআলা ফেরেশতাদের সঙ্গে আহলে আরাফাকে নিয়ে গর্ব করেন এবং বলেন, আমার এইসব বান্দাকে দেখ, কেমন উস্কোখুস্কো চুলে, ধূলিমলিন হয়ে আমার নিকট এসেছে।—মুসনাদে আহমদ ২/২২৪; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৩৮৫২
আরাফার দিনে দোয়ার ফজিলত
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আরাফা দিবসের শ্রেষ্ঠ দোয়া এবং আমি ও পূর্ববর্তী নবীরা যা বলেছিল তার সর্বশ্রেষ্ঠ দোয়া হলো, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়্যিং কাদীর।—জামে তিরমিযী, হাদিস : ৩৫৮৫
জামরায় রমীর ফজিলত
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তুমি জামরায় রমী করলে তা তোমার জন্য কিয়ামতের দিন নূর হবে।—বাযযার; কাশফুল আসতার, হাদিস : ১১৪০
হাদী নিয়ে যাওয়া ও কোরবানি করার ফজিলত
হজরত আবু বকর সিদ্দীক (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হলো, উত্তম হজ কী? তিনি বললেন, উচ্চস্বরে তালবিয়া পাঠ করা ও পশু কোরবানি করা।—জামে তিরমিযী, হাদিস : ৮২৭
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,…আর তুমি কোরবানি করলে তা তোমার প্রতিপালকের নিকট সঞ্চিত থাকবে।—বাযযার; কাশফুল আসতার, হাদিস : ১০৮২
হজ থেকে হালাল হওয়ার জন্য হলক ও চুল কাটার ফজিলত
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, হে আল্লাহ! আপনি হলককারীকে ক্ষমা করুন। সাহাবায়ে কেরাম আরজ করলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! যারা চুল কাটবে তাদের? তিনি বললেন, হে আল্লাহ! আপনি হলককারীকে ক্ষমা করুন। সাহাবায়ে কেরাম আবার আরজ করলেন, যারা চুল কাটবে তাদের? তিনি বললেন, হে আল্লাহ! আপনি হলককারীকে ক্ষমা করুন। সাহাবায়ে কেরাম তৃতীয়বার আরজ করলে তিনি বললেন, আর যারা চুল কাটবে তাদেরকেও।—সহীহ বুখারী, হাদিস : ১৭২৮
হজে যাওয়ার পথে মৃত্যুবরণকারীর ফজিলত
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। জনৈক মুহরিম ব্যক্তিকে তার সওয়ারী ভূপাতিত করলে তার মৃত্যু হয়। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমরা তাকে বরই পাতার পানি দ্বারা গোসল দাও এবং তার দুটি কাপড়েই তাকে কাফন পরাও। তবে তার মাথা ও চেহারা ঢেকো না। কেননা, কিয়ামত দিবসে সে তালবিয়া পাঠ করা অবস্থায় উত্থিত হবে।—সহীহ মুসলিম, হাদিস : ১২০৬
হাজীদের পানি পান করানো ও তাদের খিদমতের ফজিলত
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পান করার স্থানে এসে পান করাতে বললেন। তখন আব্বাস (রা.) বললেন, হে ফযল! তোমার মায়ের নিকট গিয়ে তার কাছ থেকে পানীয় নিয়ে এসো। এরপর তিনি বললেন, আমাকে পান করাও। তিনি বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! লোকেরা এর ভেতরে হাত প্রবেশ করিয়ে থাকে। তিনি বললেন, আমাকে পান করাও। এরপর তিনি তা থেকে পান করলেন। অতঃপর তিনি যমযমের নিকট এলেন। লোকেরা সেখানে পান করাচ্ছিল ও কাজ করছিল। তিনি বললেন, তোমরা কাজ করতে থাক। কেননা, তোমরা নেক কাজই করছ। এরপর তিনি ইরশাদ করলেন, যদি তোমরা বিজয় লাভ না করতে তবে আমি নেমে আসতাম। আর রশির উপর রাখতাম। অর্থাত্ কাঁধের উপর। তিনি হাত দ্বারা কাঁধের দিকে ইশারা করলেন।—সহীহ বুখারী, হাদিস : ১৬৩৪
আল্লাহ তাআলা আমাদের হজের পরিপূর্ণ ফজিলত, বরকত ও রহমত দান করুন। আমীন।

Related Post