Originally posted 2013-03-26 06:27:40.
সকল প্রশংসা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের। আমরা আমাদের নফসের খারাপ দিক থেকে তাঁর সাহায্য প্রার্থণা করি এবং আমাদের খারাপ আমল থেকে আশ্রয় চাই। আল্লাহ যাকে হেদায়াত দান করেন কেউ তাকে পথভ্রষ্ট করতে পারে না। আর আল্লাহ্ যাকে বিভ্রান্ত করেন কেউ তাকে হেদায়াত করতে পারে না। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ্ তা‘আলা ব্যতীত কোন সত্য মা‘বুদ নেই; তিনি এক ও অদ্বিতীয়। তাঁর কোন শরীক নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল। আমরা নিজেদেরকে মুসলিম (এক আল্লাহর কাছে আত্মসর্পনকারী বান্দা) হিসেবে পরিচয় দেয়া যথেষ্ট মনে করি। আমরা ঈমানের দাবীতে বন্ধুত্বও শত্রুতা স্হাপন করি । কুরআন এবং সহীহ হাদীস আমাদের সংবিধান। তাওহীদ আমাদের আক্বিদা এবং জিহাদ আমাদের মানহাজ। শাহাদাত আমাদের কামনা। আল্লাহর সন্তুষ্টি আমাদের একমাত্র উদ্দেশ্য। জান্নাত আমাদের পরমভাসনা। আমাদের এই মনোবাসনা পূরণ করার জন্য চাই মনোবল ও দৃঢ় প্রতিজ্ঞা। কথায় কাজে মিল রেখে অগ্রসর হওয়া। শুধু মুখের দাবী মুসলমান হওয়ার জন্য যথেষ্ট নয়। তাই ঈমানের দাবীকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য ইসলাম প্রতিষ্ঠার কাজে ঝাপিয়ে পড়তে হবে।
ঈমানের দাবী হলো মানুষকে মানুষের দাসত্ব থেকে মুক্ত করে আল্লাহর প্রকৃত বান্দায পরিণত করা এবং রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর পদ্ধতিতে দাওয়া, হিজরতও জিহাদের মাধ্যমে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বকে তাগুত মুক্ত করে এক আল্লাহর সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করা অর্থাৎ আল্লাহর দ্বীনকে বিজযী করা।
আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস তথা ঈমানের আহ্বান হলো: যারা আল্লাহর দ্বীনকে ভালোবাসে এবং যারা দাবী করে যে তারা মুসলিম, তারা আল্লাহর দ্বীনের জন্য চিন্তা করবে এবং আল্লাহর দ্বীনকে বিজয়ী করার জন্য ছুটে আসবে।
কুরআনে কারীমে ইরশাদ হচ্ছে; আল্লাহ ছাড়া কারো বিধান দেয়ার অধিকার নাই। (সুরা ইউসুফ : ৪০) শুনে রাখুন তাঁরই কাজ সৃষ্টি করা এবং আদেশ দান করা। (সুরা আ‘রাফ- ৫৪)
রাসূল (সা.) বলেছেন: আল্লাহর আইনকে বাস্তবায়ন করার জন্য আমার উম্মতের মধ্যে একটি ঈছাবা (দল) সব সময় সশস্ত্র জিহাদ করে যাবে। তারা তাদের শত্রুদের প্রতি কঠোর হবে, যারা তাদের বিরোধিতা করবে তারা তাদের ক্ষতি করতে পারবে না। তারা কিয়ামত পর্যন্ত এ কাজ চালিয়ে যাবে। (সহীহ মুসলিম ৪৮০৪/৫ ইসলামিক ফাউণ্ডেশন)
প্রিয় পাঠক পাঠিকা ভাই ও বোনেরা! আল্লাহ আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন পৃথিবীতে তাঁর প্রতিনিধি রূপে এবং শুধুই তাঁর ইবাদাতের জন্য যাতে থাকবে না কোন অংশীদার। আমাদের মাঝে শেষ নবী মুহাম্মদ (সঃ) কে প্রেরণ করেছেন এই শিক্ষা দেয়ার জন্য যে, আমরা কিভাবে আমাদের বিশ্বাস ও কাজে কর্মে তাগুতকে বর্জন করতে পারি। আল্লাহ তা‘আলা বলেন , “প্রত্যেক উম্মতের মধ্যেই আমি রাসূল পাঠিয়েছি এ দায়িত্ব দিয়ে যে, তোমরা একমাত্র আল্লাহর ইবাদাত কর এবং সকল প্রকার তাগুতকে বর্জন কর। ” (সূরা নাহলঃ ৩৬ )
তাগুতঃ মানুষ আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে ইলাহ বা উপাস্যর আসনে বসিয়ে তার ইবাদাত বা আনুগত্য করে এবং কোন ব্যাপারে তাকে আল্লাহর সাথে শরীক করে তবে সেই অংশীদার ইলাহকে বলা হয় “তাগুত”।
ক্ষমতাসীন তাগুতঃ আল্লাহর বিধান পরিবর্তনকারী জালিম শাসক, অর্থাৎ যে শাসক আইনের বলে হারাম কে হালাল করে। যেমনঃ-যিনা, সুদ, মদ্যপান বা অশ্লীলতার অনুমোদন দেয় , কিংবা হালালকে হারাম করে। যেমনঃ- সত্যদ্বীন প্রতিষ্ঠায় বাধা দেয়। অনুরূপভাবে যে ব্যক্তি আল্লাহর বিধান বাদ দিয়ে নিজেদের তৈরিকৃত অথবা কাফের-মুশরিকদের বিধান অনুযায়ী শাসন করে সে হলো “ক্ষমতাসীন তাগুত”।
কোন মুসলিম ভূখণ্ডে আল্লাহর বিধান ছাড়া অন্য কারো বিধান চলতে পারে না। কিন্তু বড়ই পরিতাপের বিষয়, শতকরা নব্বই ভাগ মুসলিম বাস করা সত্ত্বেও আমাদের দেশে আল্লাহর বিধান কার্যকর নেই। উপরন্তু দেশের জেলা থেকে রাজধানী পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে নিম্ন ও উচ্চ আদালত গঠন করে যে বিচারকার্য পরিচালনা করা হচ্ছে তার মূল ভিত্তি হচ্ছে মানুষ রচিত সংবিধান। যে সংবিধান প্রণয়ন করেছে কিছু মানুষ।
কথা ছিল মানুষ হিসেবে একজন মানুষের কাজ হবে আল্লাহর দাসত্ব করা ও আল্লাহর বিধানের আনুগত্য করা। কিন্তু সে মানুষ আজ নিজেই সংবিধান রচনা করে আল্লাহর বিধানের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে।
এদেশের মুসলিম জনতার আজ ভাবার সময় এসেছে। একজন প্রকৃত মুমিন মুসলিমের দায়িত্ব কি? কার আইন মানতে হবে? কি করে আপন দায়িত্ব পালন করে জান্নাতে যাওয়া যায়। আল্লাহ বলেন, “তারা কি জাহেলী বিধানের ফয়সালা কামনা করে? আল্লাহ অপেক্ষা ঈমানদারদের জন্য উত্তম ফয়সালাকারী কে? (সূরা মায়েদাঃ- ৫০)।
হে আল্লাহর খলিফা বা প্রতিনিধিগণ! যুগেযুগে নবী-রাসূলদের উপর যেমন অত্যাচার নির্যাতন হয়েছিল, ঠিক তেমনি বর্তমানেও ইসলামি আন্দোলনের নেতাকর্মীদের উপর জুলুম নির্যাতন চলছে। তাতে ভয়ের কিছু নেই। মুমিনের জন্য শাহাদতের মৃত্যুর চেয়ে বড় আর কিছু নেই। তাই সত্যের পথে অটল থেকে বাতিলের বিরুদ্ধে জিহাদ চালিয়ে যেতে হবে। বিজয় অবশ্যই ইসলামপন্হীদের। মহান আল্লাহ আমাদেরকে ব্যক্তি জীবন হতে আরম্ভ করে আন্তর্জাতিক পর্যায় পর্যন্ত ইসলামকে বাস্তবায়ন করার তাওফীক দান করুন। আমীন