Originally posted 2013-05-26 16:27:44.
১নং যুক্তি : ধর্মের নামকরণ
যা খাঁটি ধর্ম তার নামটাও হবে একটা যুক্তিসংগত নাম। লক্ষ্য করলে দেখা যায় এই পৃথিবীতে মোট যত ধর্ম আছে তার প্রত্যেকটির নামই সেই ধর্মের প্রবর্তকের নামানুসারে হয়েছে। যেমন যীশু খ্রীষ্টের নামানুসারে খ্রীষ্ট ধর্ম, মহাবীর জৈনের নামানুসারে জৈন ধর্ম, গৌতম বুদ্ধের নামানুসারে বৌদ্ধ ধর্ম হেন্দের নামানুসারে হিন্দু ধর্ম; কিন্তু ইসলাম ধর্মের নাম কোন ব্যক্তির নামানুসারে নয়। যদি এ ধর্মের নাম মোহাম্মদী ধর্ম হতো তাহলে নামকরণের দিক থেকে অন্য ধর্ম ও ইসলামের মধ্যে অবশ্যই কোন পার্থক্য থাকতো না। কিন্তু এ (ইসলাম ধর্মের নাম এমনই একটি শব্দ দ্বারা রাখা হয়েছে; যা অত্যন্ত যুক্তিসংগত। কারণ মানব জীবনের মৌলিক আকাঙ্খাই হচ্ছে জীবনে শান্তি লাভ করা আর ইসলামের এক অর্থ শান্তি। তাহলে প্রমাণ হলো মানব জীবনে যে নিয়ম-নীতি মেনে চললে জীবনে শান্তি লাভ হতে পারে সেই নিয়ম নীতিই মানব ধর্ম হওয়া উচিত এবং তার নামটাও শান্তি হওয়া যুক্তিযুক্ত। তাই আল্লাহ পাক মানব জীবনের শান্তির জন্য যে সব নিয়ম নীতি নবী রাসূলগণের মাধ্যমে দান করেছেন সেই সব নিয়ম নীতির নাম আল্লাহ রেখে দিলেন ইসলাম বা শান্তি। এ আলোচনা থেকে স্পষ্ট প্রমাণিত হলো যে অন্ততঃপক্ষে নাকরণের দিক থেকে ইসলাম ধর্মের নামটা অত্যন্ত যুক্তিগ্রাহ্য নাম। কাজেই বহু ঐতিহাসিক ইসলাম ধর্মকে মানবধর্ম বলে আখ্যায়িত করেছেন। প্রকৃতপক্ষে ইসলাম কোন বিশেষ জাতির ধর্ম নয়- এটা গোটা মানব জাতির ধর্ম। আল্লাহর দেয়া সূর্যের কিরণ যেমন কোন বিশেষ গোষ্ঠীর জন্য নয় বরং তা দুনিয়ার প্রতিটি জিনিসের জন্যই; ঠিক তদ্রূপ আল্লাহর দেয়া ধর্মও কোন বিশেষ গোষ্ঠীর জন্য নয়, তা প্রতিটি মানুষের জন্যই। কাজেই এহেন ধর্মের নাম কোন ব্যক্তি বিশেষের নামানুসারে হতে পারে না। এর নামটা হতে হবে সার্বজনীন যেন তা সর্বজন স্বীকৃত হতে পারে। কাজেই ইসলাম বা শান্তি কথাটাও যেমন সার্বজনীন এ নামের ধর্মটাও তেমন সার্বজনীন।
২নং যুক্তি : ধর্মকে অবশ্যই স্বয়ং সম্পূর্ণ হতে হবে
যা আল্লাহর দেয়া ধর্ম তা অবশ্যই আংশিক জীবন ব্যবস্থা হওয়া উচিত নয়। কারণ একদিকে আল্লাহকে মানবো সব কিছুর সৃষ্টিকর্তা ও সর্বোচ্চ ক্ষমতার মালিক হিসেবে আর অন্য দিকে যদি অন্য কোন সত্ত্বাকে কোন বিশেষ বিষয়ের ব্যবস্থাপক বলে মানতে হয় তবে প্রকারান্তরে মানা হয় যে, আল্লাহর বিশেষ বিশেষ বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান থাকলেও কোন কোন বিষয়ে আল্লাহ অজ্ঞ (নাউজুবিল্লাহ)। এটা যেমন আল্লাহ সম্পর্কে অযৌক্তিক ধারণা তেমন আল্লাহর দেয়া ধর্মকে গ্রহণ করার পর জীবনের যে কেন ব্যাপারে আর কোন কারও নিকটেই কোন কাজের জন্য বিধান চাওয়া যেতে পারে না। এ কারণেই আল্লাহর দেয়া ধর্মকে অবশ্যই স্বয়ং সম্পূর্ণ হতে হবে এবং যত প্রকার সমস্যা মানব-জীবনে সৃষ্টি হতে পারে তার সব সমস্যার সমাধান আল্লাহর দেয়া ধর্মে থাকতে হবে-এটাই যুক্তি। দেখা যায় আজ পর্যন্ত যত প্রকার ধর্ম পৃথিবীতে সৃষ্টি হয়েছে তার মধ্যে একমাত্র ইসলামেরই দাবী যে, তা স্বয়ং সম্পূর্ণ। এ ছাড়া আর কোন ধর্মই একথা দাবী করতে পারেনি যে, তা সব সমস্যার সমাধান দিতে সক্ষম। অর্থাৎ জীবনের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক ইত্যাদি বিভিন্ন দিক সম্পর্কে ইসলামে পূর্ণাঙ্গ বিধান রয়েছে। যেমন রয়েছে শিক্ষা, সংস্কৃতি, ব্যবসা-বাণিজ্য, রাষ্ট্র পরিচালনা, যুদ্ধ-সন্ধি, চুক্তি ইত্যাদি যাবতীয় বিষয়ের আইন-কানুন যা অন্য কোন ধর্মে নেই।
আরো কিছু যুক্তি পরের কলামে পাবেন ইনশা আল্লাহ