নবী (সা.) পরিবার ও উমর (রা) পরিবারের মধ্যকার বৈবাহিক সম্পর্ক

নবী (সা) পরিবার ও উমর (রা) পরিবারের মধ্যকার বৈবাহিক সম্পর্ক

নবী (সা) পরিবার ও উমর (রা) পরিবারের মধ্যকার বৈবাহিক সম্পর্ক

পূর্বে প্রকাশিতের পর

সপ্তম সারণি

কূলজিবিজ্ঞান ও রিজাল শাস্ত্রের পুস্তাকাদি মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পরিবার ও উমর ইব্ন খাত্তাব রাদি আল্লাহু আনহুর পরিবারের মধ্যকার ৩টি বৈবাহিক সম্পর্ক বর্ণনা করে। যার মধ্যে অধিকতর প্রসিদ্ধ ও মর্যাদাপূর্ণ বিবাহ হল, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে উম্মুল মুমিনীন হাফসা রাদি আল্লাহু আনহার বিবাহ এবং তাঁর স্ত্রী হিসেবে স্থায়িত্ব। বদর যুদ্ধে হাফসা রাদি আল্লাহু আনহার (পূর্ব) স্বামী শহীদ হওয়ার পর ৩য় হিজরীতে এই পবিত্র বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়।
দ্বিতীয় বৈবাহিক সম্পর্ক ছিল উমর ইব্ন খাত্তাব রাদি আল্লাহু আনহু কর্তৃক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নাতনী, আলী ও ফাতিমাতুয যাহরা রাদি আল্লাহু আনহুমার কন্যা উম্মে কুলসূমকে বিবাহ। উম্মে কুলসূম রাদি আল্লাহু আনহা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবদ্দশায় জন্মগ্রহণ করেন এবং উমর রাদি আল্লাহু আনহু ২০ হিজরীর পূর্বে তাঁকে বিবাহ করেন। (আমি দুই খলীফার সন্তান সারণি  দ্রষ্টব্য)
তাঁর পিতা আলী ইব্ন আবু তালিব শহীদ হওয়ার পর তিনি বলেন, আমার এবং প্রভাতের নামাযের কী হল?
এ দ্বারা তিনি বুঝাতে চেয়েছেন তাঁর স্বামী উমর ইব্ন খাত্তাব রাদি আল্লাহু আনহু অগ্নি উপাসক আবু লু’লুর হাতে প্রভাতের (ফজরের) নামাযের সময় নিহত হন। তাঁর পিতাও ফজরের নামাযের সময় পাপিষ্ট আব্দুর রহমান ইব্ন মুলজেম কর্তৃক নিহত হন। আর আল্লাহ ইচ্ছা করেন তাঁর ছেলে যায়িদ ইব্ন উমর ফজরের নামাযের সময় ইন্তিকাল করবেন। তাঁর ও তাঁর পুত্রের জীবনাবসান একই সময়ে ঘটে এমনকি তাঁরা জানতেও পারেননি তাঁদের কে কার উত্তরাধিকারী হবেন। (রিয়াদুল মাসাঈল: তাবে তাবাঈ ১২/৬৬৪; মসনদে আশ-শাইয়াহ: নারাকীহ: ১৯/৪৫২; তারিখ দামেশ্ক, আলী ইব্ন আবু তালিবের জীবনী অনুচ্ছেদ)
উমর ইব্ন খাত্তাব রাদি আল্লাহু আনহুর শাহাদাতের পর তাঁকে আউফ ইব্ন জা’ফর ইব্ন আবু তালিব রাদি আল্লাহু আনহুমা বিবাহ করেন। অতঃপর আউফ ইন্তিকাল করেন এবং তাঁর ভাই মুহাম্মদ তাঁকে বিবাহ করেন। অতঃপর তিনিও ইন্তিকাল করেন এবং তাঁর অপর ভাই আব্দুল্লাহ ইব্ন জাফর তাঁকে বিবাহ করেন। আর তাঁর কাছে থাকা অবস্থাতেই তাঁর ইন্তিকাল হয়। ইন্তিকালের পূর্বে উম্মে কুলসূম রাদি আল্লাহু আনহা বলতেন, “আমি উমাইস কন্যার নাম শুনলেও লজ্জাবোধ করি; তাঁর দুই পুত্র আমার কাছে ইন্তিকাল করেছেন এবং তৃতীয় পুত্রের ব্যাপারে আশংকা করছি।” তাঁদের তিন ভাইয়ের কারও থেকে তাঁর গর্ভে কোন সন্তান আসেনি। (ইব্ন হাজর: আল-ইসাবা, উম্মে কুলসূম রাদি আল্লাহু আনহার জীবনী অনুচ্ছেদ)
তৃতীয় বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপিত হয় পঞ্চম প্রজন্মে। অর্থাৎ নাতীদের নাতীদের মধ্যে হুসাইন ইব্ন আলী ইব্ন আলী ইব্ন হুসাইন ইব্ন আলী ইব্ন আবু তালিব ও উমর রাদি আল্লাহু আনহুর নাতীর নাতনী জুয়াইরিয়্যাহ বিন্ত খালিদ ইব্ন আবু বকর ইব্ন আব্দুল্লাহ ইব্ন উমর রাদি আল্লাহু আনহুর মধ্যে। এ বিবাহটি তাঁদের পূর্বপুরুষদের মধ্যকার ভ্রাতৃত্ব, প্রীতি ও হৃদ্যতার ধারাবাহিকতার প্রমাণ স্বরূপ।

Related Post