স্বাগতম মাহে রমযান

স্বাগতম মাহে রমযান

স্বাগতম মাহে রমযান

সংযম ও শুদ্ধতার অনুশীলন হোক সকল পর্যায়ে
রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের অমিয় বার্তা নিয়ে আবারো ফিরে এসেছে সিয়াম সাধনার মাস রমযানুল মোবারক। সংযম ও শুদ্ধতার অনুশীলন, কল্যাণকর ও শুভকর্মের অভ্যাস গঠন এবং সহমর্মিতা ও সমবেদনার আহ্বান সাথে করে প্রতি বছর রমযানের আগমন হয়। বিশ্বের মুসলিম উম্মাহর মধ্যে শুরু হয় নতুন ভাব ও মনোবৃত্তির সাথে রাব্বুল আলামীনের প্রতি ঐকান্তিক বিশ্বাস ও আনুগত্যের প্রমাণ পেশ করার পালা। পু

রো একটি মাস বিধিবদ্ধ নিয়ম অনুসরণ ও ক্লেশ সহ্য করে মহান আল্লাহর নির্দেশ পালন করবে সক্ষম মুসলিম নর-নারীরা। মুসলিম বিশ্বে এই মাস বিশেষ গুরুত্বের অধিকারী হয় স্বাভাবিক কারণেই। অফিস-আদালত ও সকল কর্মক্ষেত্রের সময়সূচি যেমন নতুনভাবে বিন্যস্ত হয়, তেমনি কর্তৃপক্ষ সম্ভাব্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেয় নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে স্বাচ্ছন্দ ও অনায়াসের পরিবেশ তৈরি করতে। সেহরী, ইফতার, তারাবীহ প্রভৃতি নির্বিঘ্ন করার জন্য প্রশাসনেরও সক্রিয় ভূমিকা থাকে। অবশ্য পবিত্র মাস রমযানুল মোবারক উপলক্ষে ব্যক্তি, সমাজ ও প্রশাসন পর্যায়ে দায়িত্ব বেড়ে যায়। রমযান সংযমের মাস হলেও অনেকের আচরণ হয় ভিন্ন রকম। প্রতারণা, মিথ্যাচার, অশ্লীল কাজ, সবধরনের অপরাধ সব সময়ই নিন্দনীয়, পরিহার্য। পবিত্র রমযান মাসে এগুলো আরো গুরুতর অন্যায়। তেমনি ইফতারের সময় রোযাদারের দোয়া আল্লাহ তায়ালার কাছে কবুল হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে বলে হাদীসে উল্লেখিত আছে। কিন্তু এই সময়টাকে আনুষ্ঠানিকতায় পরিণত করা কাম্য নয়। রমযান হলো কুরআন নাযিলের মাস। তাই কুরআন তিলাওয়াত, কুরআনের চর্চা ও অধ্যয়ন, কুরআনি নির্দেশনা অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করার দৃঢ় মানসিকতা গঠনের উপযুক্ত সময় হলো এই মাস। মানুষের রিপুগুলোকে পরিশুদ্ধ করা ও শুভ গুণাবলী অর্জনের পক্ষে এ মাস অত্যন্ত সহায়ক। আল্লাহর রহমত, মাগফিরাত ও দোযখ হতে মুক্তি লাভ এবং নেক আমলের জন্য এ যেন বসন্ত ঋতু। এ সময়ের প্রধান দাবী হলো সিয়াম সাধনার প্রকৃত উদ্দেশ্য ও প্রাণশক্তি অর্থাৎ তাক্বওয়া ও আন্তরিক পরিশুদ্ধি অর্জনের প্রতি যত্নবান হওয়া। নিজেদের মধ্যে ইবাদতের চেতনা জোরদার করা ও ইসলামী বিধানগুলো মেনে চলার প্রতিজ্ঞা করা, ত্যাগ ও পরোপকারের প্রেরণায় উজ্জীবিত হওয়া এবং সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতি দায়িত্বশীল হওয়া রমযানের শিক্ষা। এসবের মাধ্যমেই আল্লাহর সান্নিধ্য ও সন্তুষ্টি লাভ হয়। মানসিকতার আবিলতাগুলো পরিষ্কার ও আচরণগুলো নির্মল করার প্রেরণা থাকলেই পানাহার ও কামাচার বর্জনের প্রকৃত উদ্দেশ্য সাধিত হবে। নতুবা নিছক ক্ষুধা ও পিপাসা নিবারণ থেকে বিরত থাকা অথচ অন্যায় ও অসত্য বর্জন না করা কিছুতেই প্রশংসনীয় নয়, আর আল্লাহ তায়ালার কাছে গ্রহনযোগ্যও নয়। আল্লাহর পক্ষথেকে সাধুতা, সজ্জনতা ও উন্নত আদর্শের বার্তা নিয়ে হিজরী বছরের নবম মাস আমাদের মাঝে উপস্থিত হয়। সব পর্যায়ে পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতা অনুশীলনই এ মাসের প্রধান আহ্বান। দায়িত্ব ও কর্মের আওতা অনুযায়ী কর্তৃত্ব ও ক্ষমতার পরিধি অনুসারে এবং সুযোগ ও সক্ষমতার ব্যাপ্তি হিসেবে মুখোমুখি হতে হবে জবাবদিহিতার। শেষ বিচারের দিনে সেই অমোঘ জিজ্ঞাসাবাদে পার পেতে হলে রমযানুল মোবারকের পরিবেশ ও উপলক্ষ্য কাজে লাগাতে হবে যত্নের সাথে। দেশ ও জাতির কল্যাণে পবিত্র মাসের নির্দেশনা যদি ব্যবহার করা যায়, তাহলে জাতি হিসেবেও আমাদের সমৃদ্ধি আসবে। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে রমযানের শিক্ষা অনুযায়ী জীবন গঠন করার তাওফীক দান করুন। আমীন

Related Post