তাওহীদ পরিপন্থী ও তা ভঙ্গকারী বিষয়সমূহ:

11111111111

১- আল্লাহ্‌ মানুষের উপর সর্ব প্রথম যে বিষয় ফরয করেছেন তা হলো, আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা এবং তাগুতকে অস্বীকার । যেমন আল্লাহ্‌ বলেন:

وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَسُولًا أَنِ اعْبُدُوا اللَّهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوتَ     النحل : 36

 অর্থ: আর আমি প্রত্যেক জাতির মধ্যে রাসূল পাঠিয়েছি যে, তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর এবং ত্বাগুত (আল্লাহ্‌ ব্যতীত যা কিছুর ইবাদাত করা হয়) থেকে দূরে থাক। সূরাহ্‌ আন্‌ নাহ্‌ল আয়াত ৩৬।

২- ত্বাগুতের অর্থ: আল্লাহ্‌ ছাড়া যা কিছুর ইবাদাত করা হয় এবং সে তাতে সন্তুষ্ট থাকে।

৩- ত্বাগুতকে অস্বীকার করার নিয়ম হল: আপনি এ বিশ্বাস রাখবেন যে, আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্য কারো ইবাদাত করা বাতিল, তা পরিত্যাগ করতঃ তার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করবেন। ত্বাগুতীদেরকে কাফির বলে জানবেন এবং তাদের সাথে শত্রুতা রাখবেন।

৪- শির্‌ক যা তাওহীদের বিপরীত, তাওহীদ হলো যাবতীয় ইবাদাত এক ও অদ্বিতীয় আল্লাহর জন্য করা। শিরক হলো, যে কোন একটি ইবাদাত আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্যের জন্য করা। যেমন: আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্যকে আহ্বান করা বা ডাকা অথবা গাইরুল্লাহকে সিজদাহ করা ইত্যাদী ।

৫- শির্‌ক সবচেয়ে বড় ও ক্ষতিকারক গুনাহ্‌। আল্লাহ্‌ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:

 إِنَّ اللَّهَ لَا يَغْفِرُ أَنْ يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَلِكَ لِمَنْ يَشَاءُ  النساء : 116

অর্থ: নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌ তাঁর সাথে শরীক করাকে ক্ষমা করেন না, এছাড়া যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন। সূরাহ্‌ আন্নিসা আয়াত ১১৬। ৬- শির্‌ক যাবতীয় সৎকর্মকে বাতিল বা ধ্বংস করতঃ চিরস্থায়ী জাহান্নামে যাওয়া আবশ্যক করে দেয় এবং জান্নাতে প্রবেশে বাধা দেয়। আল্লাহ্‌  বলেন:

ذَلِكَ هُدَى اللّهِ يَهْدِي بِهِ مَن يَشَاءُ مِنْ عِبَادِهِ وَلَوْ أَشْرَكُواْ لَحَبِطَ عَنْهُم مَّا كَانُواْ يَعْمَلُونَ الأنعام88-

অর্থ: এটাই হলো আল্লাহর হেদায়েত, তিনি তাঁর বান্দাহদের থেকে যাকে ইচ্ছা তাকে হেদায়াত করেন। তারা যদি শির্‌ক করতো তাহলে তারা যা করতো তা তাদের  থেকে সব ব্যর্থ হয়ে যেত। সূরাহ্‌ আল আন্‌ আ’ম আয়াত ৮৮। আল্লাহ্‌  অন্যত্রে বলেন:

إِنَّهُ مَنْ يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللَّهُ عَلَيْهِ الْجَنَّةَ وَمَأْوَاهُ النَّارُ ﴾ المائدة : 72

অর্থ: নিশ্চয়ই যে আল্লাহর সাথে শরীক করে, তার জন্য আল্লাহ্‌ তায়া’লা জান্নাত হারাম করেছেন এবং তার ঠিকানা হলো জাহান্নাম। সূরাহ্‌ আল মায়িদাহ্‌ – ৭২।

৭- কুফরী তাওহীদকে নষ্ট করে। কুফরী হলো এমন সকল কথা ও কাজ যা তাতে নিপতিত ব্যক্তিকে তাওহীদ ও ঈমান থেকে বের করে দেয়। কুফরীর উদাহরণ: আল্লাহ্‌ অথবা কুরআনের আয়াত বা রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা। আল্লাহ্‌ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:

قُلْ أَبِاللَّهِ وَآيَاتِهِ وَرَسُولِهِ كُنْتُمْ تَسْتَهْزِئُونَ (65) لَا تَعْتَذِرُوا قَدْ كَفَرْتُمْ بَعْدَ إِيمَانِكُمْ﴾ [التوبة : 65 –

 অর্থ: আপনি বলে দিন, তোমরা কি আল্লাহর সাথে, তাঁর আয়াত সমূহের সাথে ও তাঁর রাসূলের সাথে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করতে? তোমরা ওযর পেশ করো না, অবশ্য তোমরাই তো ঈমান আনার পর কুফরী করেছ। সূরাহ্‌ তাওবাহ্‌ – ৬৫-৬৬।

৮- মুনাফিক্বী (দ্বিমুখিতা) তাওহীদ পরিপন্থী বিষয়। নিফাক্ব হল: মানুষ বাহ্যিকভাবে তাওহীদ ও ঈমান প্রকাশ করবে কিন্তু তার অন্তরে শির্‌ক ও কুফরী গোপন রাখবে। নিফাক্ব বা মুনাফিক্বীর উদারণ হল: মুখে আল্লাহর প্রতি ঈমান প্রকাশ করা এবং অন্তরে কুফরী গোপন করে রাখা। যেমন আল্লাহ্‌  বলেন:

وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَقُولُ آمَنَّا بِاللَّهِ وَبِالْيَوْمِ الْآخِرِ وَمَا هُمْ بِمُؤْمِنِينَ﴾ البقرة : 8

অর্থ: আর মানুষদের মধ্যে এমন কিছু লোক রয়েছে যারা বলে আমরা আল্লাহ্‌ ও পরকালে বিশ্বাস স্থাপন করেছি, অথচ তারা মু’মিন নয়। সূরাহ্‌ আল্‌ বাক্বারাহ্‌ আয়াত ৮। অর্থাৎ তারা মুখে বলে আমরা আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছি কিন্তু বাস্তবে তারা অন্তর থেকে ঈমান আনেনি।

Related Post