Main Menu

এক নজরে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ৬৩ বছরের জিন্দেগী

এক নজরে রাসূলুল­াহ (সা.)-এর ৬৩ বছরের জিন্দেগী

এক নজরে রাসূলুল্ল­াহ (সা.)-এর ৬৩ বছরের জিন্দেগী

নবুওয়াত পূর্ব মক্কী জীবন
১. রাসূল (সা.)-এর শুভ জন্ম:
মহানবী (সা.) এর জন্মের বছর, মাস ও দিন তারিখ সম্পর্কে ঐতিহাসিকদের মধ্যে একাধিক মত রয়েছে। অধিকাংশ ঐতিহাসিকদের মতে আ’মুল ফীল বা হাতির বছর ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের ২০ শে এপ্রিল মাহে রবিউল আউয়ালের ৯/১২ তারিখ সোমবার সুবহে সাদেকের সময় তিনি জন্ম গ্রহণ করেন।

২. আম্মাজান ও দাদাজানের ইন্তেকাল এবং চাচাজান আবু তালেবের আশ্রয়:
নবীজী ভ‚মিষ্ট হওয়ার পূর্বেই তাঁর পিতা আব্দুল­াহ তাঁকে গর্ভাবস্থায় রেখে ইন্তেকাল করেন। শিশু মুহাম্মাদের বয়স যখন ছয় বছর তখন আম্মাজান আমিনা আযওয়া নামক স্থানে ইন্তেকাল করলেন। এভাবে মুহাম্মাদের বয়স যখন আট বছর, তখন দাদাজান আব্দুল মুত্তালিবও এ সংসারের মায়া কাটিয়ে পরপারে পাড়ি জমালেন। দাদাজান আব্দুল মুত্তালিবের পর বালক মুহাম্মাদ চাচাজান আবু তালিবের আশ্রয়ে চলে আসেন।

৩. দুগ্ধপান: নবীজী মাত্র সাতদিন আম্মাজান আমিনার দুগ্ধপান করেন। তারপর আবু লাহাবের দাসী সুমাইয়া আটদিন দুধ পান করান। এরপর খাওলা বিনতে মুনজির তাকে দুগ্ধ পান করান। এরপর হালিমায়ে সাদিয়া দীর্ঘদিন তাকে দুধ পান করান এবং তিনি ছাড়াও আতেকা নামী তিন মহিলা তাকে দুধ পান করান।

৪. নবীজীর সীনা চাক: বনূ সা’দ গোত্রে থাকা অবস্থায় একদা দু’জন ফিরিশতা শিশু মুহাম্মাদের কাছে এলেন। তারা তাঁর পেট চিরে তাঁর হৃদপিণ্ড থেকে কালো এক টকুরো রক্তপিণ্ড বের করে ফেলে দিলেন। এভাবে চার বার তাঁর সীনা চাক করা হয়। প্রথম বার চার বছর বয়সে ২য় বার ১০ বছর বয়সে, ৩য় বার চলি­শ বছর বয়সে, ৪র্থ বার ৫১ বছর বয়সে তাঁর সীনা চাক করা হয়।

৫. সর্ব প্রথম বিদেশ সফর:
কিশোর মুহাম্মাদ সর্বপ্রথম বার বছর বয়সে চাচা আবু তালেবের সঙ্গে সিরিয়ার উদ্দেশ্যে প্রথম ভ্রমণ করেন এবং তাঁর বয়স মোবারক যখন ২৪ বছর শেষ প্রায় তখন চাচা আবু তালেবের পরামর্শে মক্কার ধনাঢ্য মহিলা খাদিজার বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনার উদ্দেশ্যে সিরিয়ায় ২য় বার ভ্রমণ করেন।

৬. হিলফুল ফুযূল গঠন:
কিশোর মুহাম্মাদের বয়স যখন ১৫-১৬ কিংবা আরো কম তখন চাচা যুবাইর ও কয়েকজন যুবককে সঙ্গে নিয়ে অসহায় মজলুম মানুষের সাহায্যার্থে এবং ভ্রাতৃত্ববোধ প্রতিষ্ঠার দৃঢ় অঙ্গীকার নিয়ে ‘হিলফুল ফুযূল’ নামক একটি সমাজ সেবামূলক সংগঠন গড়ে তুলেন।

৭. খাদিজার সঙ্গে বিবাহ:
যুবক মুহাম্মাদ খাদিজার পুঁজি নিয়ে যখন সিরিয়ায় ব্যবসায় যান তখন তাঁর সত্যবাদিতা ও চারিত্রিক গুণাবলী দেখে খাদিজা বিবাহের প্রস্তাব দেন। সে মতে মুহাম্মাদ তাঁর প্রস্তাবে সায় দিয়ে তাঁকে বিবাহ করেন। বিবাহের সময় খাদিজার বয়স ছিল ৪০ বছর। আর মুহাম্মাদের বয়স ছিল ২৫ বছর।

৮. কা’বা পূণনির্মাণে অংশ গ্রহণ:
যুবক মুহাম্মাদের বয়স যখন ৩৫ বছর তখন কুরায়েশরা কা’বা মেরামতের উদ্যোগ গ্রহণ করেন এবং এক পর্যায়ে কাজ শুরু করে দেয়। যুবক মুহাম্মাদ সামাজিক জীবনে মক্কার অন্যান্য অধিবাসীদের সাথে মিলেমিশে চলতেন সে মতে তিনি এ কাজেও অংশ নেন।
তখন কা’বা ঘরটি নানা কারণে দিন দিন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিলো। তাই ঘরটি সংস্কারের জন্য আরবরা সম্মিলিত ভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করে। কেউ যাতে বঞ্চিত না হয়, সেজন্যে আরবদের বিভিন্ন গোত্রের লোকেরা কা’বা-ঘরের বিভিন্ন অংশ ভাগ করে নিলো। কিন্তু কা’বা ঘরের দেয়ালে যখন ‘হাজরে আসওয়াদ’ (পবিত্র কালো পাথর) বসানোর সময় এলো, তখন বিভিন্ন গোত্রের মধ্যে তুমুল ঝগড়া বেঁধে গেলো। অবস্থা এতদূর পর্যন্ত গড়ালো যে, অনেকের তলোয়ার পর্যন্ত কোষমুক্ত হলো। চারদিন পর্যন্ত এ ঝগড়া চলতে থাকলো। পঞ্চম দিনে আবু উমাইয়া বিন মুগীরা প্রস্তাব করেন যে, আগামীকাল সকালে যে ব্যক্তি কা’বা-ঘরে সবার আগে হাজির হবে, এর মীমাংসার দায়িত্ব তাকেই দেয়া হবে। সে যা সিদ্ধান্ত দিবে, তা-ই পালন করা হবে। সবাই এ প্রস্তাব মেনে নিলো। পরদিন সকালে যার আগমন ঘটলো তিনি ছিলেন মুহাম্মাদ (সা.)। ফয়সালা অনুযায়ী তিনি ‘হাজরে আসওয়াদ’ স্থাপন করতে ইচ্ছুক প্রতিটি গোত্রের একজন করে প্রতিনিধি নিয়োগ করতে বললেন। অতঃপর একটি চাদর বিছিয়ে তিনি নিজ হাতে পাথরটিকে তার ওপর রাখলেন এবং বিভিন্ন গোত্রের প্রতিনিধিগণকে চাদরের প্রান্ত ধরে পাথরটিকে ওপরে তুলতে বললেন। চাদরটি তার নির্দিষ্ট স্থান বরাবর পৌঁছলে তিনি পাথরটিকে যথা স্থানে নিজ হাতে স্থাপন করলেন। এতে সবাই খুশী হলেন এবং আসন্ন যুদ্ধের মহা বিপর্যয় থেকে জাতীকে রক্ষা করলেন। এখানে সাম্য-মৈত্রীর যে দৃষ্টান্ত তিনি স্থাপন করলেন, কিয়ামতের আগ পর্যন্ত তা ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। আমাদের সমাজপতিদের এখান থেকে শিক্ষা নেয়ার অনেক কিছু রয়েছে, যদি আমরা সত্যিকারে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চাই, গড়তে চাই একটি আদর্শ সমাজ, যে সমাজে থাকবেনা জুলুম-নির্যাতন, বন্ধ হবে পরস্পর হিংসা বিদ্বেষ, মারামরি-হানাহানি, দূর হবে বর্ণ বৈষম্য। মনের ভিতর থাকবেনা কোন ভয়-ভীতি, আতঙ্ক, মানুষ হবে মানুষের জন্য। তাহলে কেবল রাসূল (সা.)-এর আদর্শ পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের মাধ্যমেই সম্ভব।

৯. নবুয়াত প্রাপ্তি, কুরআন অবতরণের সূচনা:
মুহাম্মাদের জীবনের একচলি­শতম বছর। তিনি হেরা গুহায় অবস্থানকালে জিবরাইল ফেরেশতা তার নিকট এসে উপস্থিত হয়ে বললেন: “ইকরা” পাঠ করুন! রাসূল (সা.) বললেন; আমি তো পড়তে জানিনা। আল­াহর অনুগ্রহে এক সময় তিনি পড়তে আরম্ভ করেন। এমনিভাবে সূরা আলাকের প্রথম পাঁচ আয়াত অবতীর্ণের মাধ্যমে তাঁকে নবুওয়াত দান করা হয় এবং কুরআন অবতীর্ণ হওয়ার সূচনা হয়।

নবুওয়াত পরবর্তী মক্কী জীবন:
নবুওয়াতের ১ম বছর:
১। কুরআন নাযিলের সূচনা হয়।
২। পবিত্রতা ও অযুর হুকুম অবতীর্ণ হয়।
৩। হযরত ফাতেমা (রা.)-এর জন্ম।

নবুওয়াতের ২য় বছর:
১। হযরত খাদিজা (রা.)-এর ইসলাম গ্রহণ।
২। ওয়ারাকা ইবনে নওফেল এর ভবিষ্যতবাণী।
৩। হযরত আবু বকর, হযরত আলী, ও হযরত যায়েদের (রা.) ইসলামে দীক্ষিত।
৪। আরো কতিপয় সম্ভ্রান্ত কুরায়েশদের ইসলাম গ্রহণ।

নবুওয়াতের ৩য় বছর:
১। প্রকাশ্যে ইসলাম প্রচারের নির্দেশ।
২। সাফা পাহাড়ের চূড়ায় প্রকাশ্য দাওয়াত।

নবুওয়াতে ৪র্থ বছর:
১। মুশরিকদের শত্র“তার ঝড়।
২। আবু তালেবের সাথে কুরায়েশদের বৈঠক।
৩। কুরায়েশদের প্রলোভন ও নবীজীর দৃঢ়তা।
৪। মজলুম মুসলমানদের উপর নির্যাতন।

নবুওয়াতের ৫ম বছর:
১। হাবশায় প্রথম হিজরত।
২। মুসলমানদের উপর কাফেরদের অত্যাচার বৃদ্ধি।

নবুওয়াতের ৬ষ্ঠ বছর:
১। মুসলমানদের পক্ষ থেকে কতিপয় শুভ লক্ষণ।
২। হযরত হামজা ও হযরত ওমরের ইসলাম গ্রহণ।

নবুওয়াতের ৭ম ৮ম ৯ম বছর:
১। হাবশায় ২য়বার হিজরত।
২। শি’আবে আবি তালেবে এ বয়কট সূচনা।
৩। চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হওয়ার মুজেযা।

নবুওয়াতের ১০ম বছর:
১। মক্কাবাসীদের বয়কট থেকে পরিত্রাণ।
২। রোকানা পালোয়ানের ইসলাম গ্রহণ।
৩। তোফয়েল দৌসীর ইসলাম গ্রহণ।
৪। আবু যর গেফারী ও গুনীনজেমাদের ইসলাম গ্রহণ।
৫। আবু তালেব ও খাদিজার ওফাত।
৬। তায়েফের পথে নবীজীর রক্ত বিসর্জন।
৭। হযরত সাওদা ও আয়েশা (রা.)-এর সাথে বিবাহ।

নবুওয়াতের ১১তম বছর:
১। মিরাজুন্নাবী (সা.)
২। বিভিন্ন গোত্রের নিকট দাওয়াত পেশ।
৩। মিনায় মদীনার ছয় ব্যক্তির ইসলাম গ্রহণ।
৪। মদীনায় ইসলামের শুরু।
নবুওয়াতের ১২তম বছর:
১। বাইয়াতে আকাবায়ে উলা (প্রথম)।
২। মদীনায় ১২ জন ব্যক্তির ইসলাম গ্রহণ।
৩। মুসআব বিন উমায়ের (রা.) কে তাবলীগের উদ্দেশ্যে মদীনায় প্রেরণ।

নবুওয়াতের ১৩তম বছর:
১। বাইয়াতে আকাবায়ে ছানিয়া (দ্বিতীয়)।
২। মদীনায় ৭৩ জন পুরুষ ও ২জন মহিলার ইসলাম গ্রহণ।

হিজরতের পরবর্তী জীবন:
হিজরী ১ম বছর:
১। ৬ই রবিউল আউয়াল শুক্রবার মক্কা থেকে হিজরতের উদ্দেশ্যে রওয়ানা।
২। ৮ই রবিউল আউয়াল কুবায় প্রবেশ।
৩। মসজিদে কুবা নির্মাণ।
৪। ১২ই রবিউল আউয়াল মদীনায় প্রবেশ ও তাদের প্রাণঢালা সংবর্ধনা।
৫। মসজিদে নববী নির্মাণ ও রাসূলের বাসস্থান নির্মাণ।
৬। ইহুদীদের সাথে চুক্তি।
৭। আযানের সূচনা।
৮। আনসার ও মুহাজিরদের ভ্রাতৃত্ববন্ধন।

হিজরী ২য় বছর:
১। কেবলা পরিবর্তন।
২। রমযানের রোযা ফরজ হওয়া।
৩। শাওয়াল মাসে যাকাত হওয়া।
৪। ঈদের নামাযের আদেশ।
৫। জিহাদের অনুমতি।
৬। হযরম ফাতেমা (রাঃ) এর বিবাহ।
৭। ঐতিহাসিক বদর যুদ্ধ সংঘটিত।

হিজরী ৩য় বছর:
১। মীরাছের হুকুম অবতরণ।
২। মদ হারাম হওয়া।
৩। হযরত হাসানের জন্ম গ্রহণ।
৪। রাসূল (সা.)-এর হযরত হাফছা ও জয়নাব বিনতে খুজাইমার সাথে বিবাহ।
৫। ওহুদ যুদ্ধ সংঘটিত।
৬। হযরত আমীরে হামজা (রাঃ)-এর শাহাদাত।
৭। প্রখ্যাত ধনাঢ্য ইহুদী কবি কা’ব বিন আশরাফের নিধন।

হিজরী ৪র্থ বছর:
১। হযরত হুসাইনের জন্ম।
২। হযরত উম্মে সালামার (রাঃ) সাথে বিবাহ।
৩। বীরে মাউনা অভিমুখে সারিয়ায়ে মুনযিরের গমণ।

হিজরী ৫ম বছর:
১। কুরাইশ ও ইহুদীদের সম্মিলিত ষড়যন্ত্র এবং গাযওয়ায়ে আহযাব।
২। শাওয়ালের শেষ লগ্নে হযরত আয়েশা ছিদ্দিকা (রা.) এর জননীর ইন্তেকাল।
৩। হযরত যয়নাব বিনতে জাহাশ নবীজীর বিবাহ বন্ধনে আসেন।
৪। মদীনায় ভূমিকম্প ও ও চন্দ্র গ্রহণ হয়।
৫। হজ্জ ফরজ হয়।
৬। নবীজীর দৌহিত্র আবদ ইবনে উসমানের (হযরত রুকাইয়ার গর্ভজাত পুত্রের) ইন্তেকাল।
৭। পর্দা, অজু ও তায়াম্মুমের আয়াত নাযিল হয়।
৮। মা আয়েশা (রা.)-এর চরিত্রে মিথ্যা অপবাধ আরোপ।

হিজরী ৬ষ্ঠ বছর:
১। ঐতিহাসিক হুদায়বিয়ার সন্ধি।
২। নবীজীর ওমরা পালন করার জন্য মক্কায় রাওয়ানা।
৩। সূরা ফাতহ নাযিল হয়।
৪। দুনিয়ার বিভিন্ন বাদশাহদের নিকট ইসলামরে দাওয়াত।
৫। বায়আতে রেদওয়ান।
৬। হযরত খালেদ ইবনে ওয়ালিদ ও আমর ইবনে আস এর ইসলাম গ্রহণ।
৭। প্রখ্যাত ধনাঢ্য ইহুদী আবু রাফে’ এর নিধন।

হিজরী ৭ম বছর:
১। খাইবার বিজয়।
২। হিংস্র পশু-পাখি হারাম।
৩। ওমরাতুল কাযা আদায়।
৪। রমলের হুকুম। (প্রথম চার তাওয়াফের সময় সীনা ঝুলিয়ে দ্রæত হাঁটাকে রমল বলে)
৫। হযরত মায়মুনা ও সাফিয়ার সাথে বিবাহ।
৬। ফাছাক বিজয়।
৭। হাবশার বাদশা নাজাশীর ইসলাম গ্রহণ।

হিজরী ৮ম বছর:
১। ঐতিহাসকি মক্কা বিজয়।
২। সুদ হারাম হয়।
৩। আবু সুফিয়ানের ইসলাম গ্রহণ।
৪। গাযওয়ায়ে হুনাইন।
৫। গাযওয়ায়ে তায়েফ।
৬। গাযওয়ায়ে জিইররানা।
৭। নবীজীর পুত্র ইবরাহীম এর জন্ম হয়।
৮। নবী কন্না হযরত যয়নাব (রা.) -এর ইন্তোকাল।

হিজরী ৯ম বছর:
১। দলেদলে বিভিন্ন গোত্রের ইসলাম গ্রহণ।
২। কন্যা উম্মে কুলসুমের (রা.) ইন্তেকাল।
৩। মসজিদে জেরার ধ্বংসকরণ।
৪। বিশ্ব নবীর নেতৃত্বে পরিচালিত সর্বশেষ গাযওয়া সংঘটিত।
৫। হযরত আবু বকর (রা.) এর নেতৃত্বে ইসলামে সর্ব প্রথম হজ্জ পালিত।
৬। ঈলা ও লিয়ানের হুকুম।

হিজরী ১০ম বছর:
১। হজ্জাতুল বিদা’ বা বিদায় হজ্জ অনুষ্ঠিত।
২। পুত্র ইবরাহীমের ইন্তেকাল।
৩। বিদায় হজ্জের ভাষণ প্রদান।
৪। হযরত আমর ইবনে আসকে ইয়ামনে প্রেরণ।

হিজরী ১১ম বছর:
১। ২৯ শে সফর মোতাবেক ২৭ শে মে ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে নবীজীর (সা.) অসুস্থতার সূচনা।
২। হযরত উসামা (রা.)-এর সৈন্যদলের প্রস্তুতি।
৩। সিদ্দীকে আকবরের ইমামতি।
৪। নবীজী (সা.)-এর বাকী-এ গারকাদ নামক স্থানে গমন করেন এবং সেখান থেকে অসুস্থ অবস্থায় ফিরে আসেন। এরপর ১৩ দিন পর্যন্ত জ্বরাক্রান্ত থাকেন।
৫। নবীজীর সর্বশেষ ইমামতি: ৮ই রবিউল আউয়াল বৃহস্পতিবার সূরা মুরসালাত দ্বারা মাগরিবের নামাযে ইমামতি করেন। আর এটিই ছিলো তাঁর জীবনের সর্বশেষ ইমামতি। অবশ্য শনিবার বা রবিবার জোহরের নামাযে আংশিক ইমামতি তিনি করেছেন। (কাশফুল বারী কিতাবুল মাগাজী)
৬। শেষ নবীর শেষ ভাষণ:
*  নামাযের প্রতি লক্ষ্য রাখবে
*  যাকাতের প্রতি যত্নবান থাকবে
*  তোমার অধিনস্থ দাস-দাসীদের প্রতি লক্ষ্য রাখবে
*  বহিঃবিশ্ব থেকে আগত প্রতিনিধি দলের সাথে সৌজন্যমূলক আচরণ করবে এবং তাদের উপঢৌকন দিবে।
৭। নবীজীর মাওলার ডাকে সাড়া দান:
এ ব্যাপারে ঐতিহাসিকগণ একমত যে, নবীজীর ওফাত রবিউল আউয়াল মাসের সোমবার হয়েছে তবে কোন তারিখে হয়েছে তা নিয়ে তিনটি মত পাওয়া যায়-
১। ১২ই রবিউল আউয়াল
২। ২রা রবিউল আউয়াল
৩। ১লা রবিউল আউয়াল। তবে ২রা রবিউল আউয়াল এর মতটিই অধিক গ্রহণযোগ্য।
৮। যে কথা বলে নবীজী শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। তা ছিলো-
اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي وَارْحَمْنِي وَأَلْحِقْنِي بِالرَّفِيقِ الأعلى
আল্লাহুম্মাগফিরলী, ওয়ারহামনী, ওয়া আলহিনী বিররফীকিল আ‘লা (সুনানে তিরমিযী: ৩৪১৮)

Related Post