আল্লাহ কাদেরকে জালিম বলেছে

377
জালিম শব্দটি আরবি। ‘আজ-জুল্মু’ মাসদার বা শব্দমূল থেকে উদ্গত। যার আভিধানিক অর্থ ‘অত্যাচার করা, উৎপীড়ন করা, নিপীড়ন করা, নির্যাতন করা, দুর্ব্যবহার করা।’ পরিভাষায় : যেসব মানুষ কারো প্রতি অত্যাচার, উৎপীড়ন, নিপীড়ন, নির্যাতন ও দুর্ব্যবহার করে তাদেরকে জালিম এবং যাদের প্রতি তা করা হয় তাদেরকে মাজলুম বলে ।
ইলমুছ-ছরফ বা আরবি শব্দ প্রকরণ অনুসারে ‘আজ-জুল্মু’ শব্দটি ক্রিয়াবাচক, জালিম শব্দটি কর্তৃবাচক এবং মাজলুম শব্দটি কর্মবাচক হিসেবে রূপান্তরিত হয়েছে। কারো কারো মতে, জুলুম শব্দের অর্থ আল-জাওরু (অত্যাচার করা) বা আদামুল ইনসাফ (অবিচার করা ।)
পরিভাষায় কোনো বস্তুকে তার উপযুক্ত স্থানে না রেখে বরং অন্য স্থানে রাখাকে জুলুম বলে। আর অত্যাচারীকে জালিম এবং অত্যাচারিতকে মাজলুম বলে ।

এক. জালিম হলো আত্ম-অবিচারকারী বা নিজের প্রতি জুলুমকারী। এ অর্থে কুরআন মাজিদের একটি উদাহরণ, সুলায়মান আ:-এর দরবারে উপস্থিত রানী বিলকিসকে বলা হলো,
এ প্রাসাদে প্রবেশ কর। যখন সে তাতে প্রবেশ করতে অগ্রসর হলো তখন সে দেখল, যেন এক গভীর জলাশয়ই এবং সে তার পদদ্বয় অনাবৃত করতে থাকল। এ সময় তাকে হজরত সুলায়মান আ: বললেন, এটা তো স্বচ্ছ স্ফটিকমণ্ডিত প্রাসাদ মাত্র। তখন সে নারী বলল, ‘হে আমার পালনকর্তা! আমি তো আত্ম-অবিচার বা নিজের প্রতি জুলুম করতে চলছিলাম। (অর্থাৎ প্রাসাদের মেঝে স্বচ্ছ কাচমণ্ডিত ছিল। দেখতে পানি বলে ভ্রম হতো। সে কারণে রানী বিলকিস কাপড় গুটিয়ে নিচ্ছিল।) আমি সুলায়মানের সাথে বিশ্ব জাহানের পালনকর্তা আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করলাম’ (সূরা নামল : ৪৪)। আলোচ্য আয়াতের দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, জালিম হলো আত্ম-অবিচারকারী ।অর্থাঃ=এটি ছিল রাণীর সামনে প্রকৃত সত্য উদঘাটনকারী সর্বশেষ উপকরণ৷ প্রথম উপকরণটি ছিল সুলাইমানের পত্র৷ সাধারণ বাদশাহী রীতি এড়িয়ে আল্লাহ রহমানুর রহীমের নামে তা শুরু করা হয়েছিল৷ দ্বিতীয় উপকরণটি ছিল মূল্যবান উপহার সামগ্রী প্রত্যাখ্যান৷ এ থেকে রাণী বুঝতে পারলেন যে, ইনি এক অসাধারণ রাজা৷ তৃতীয় উপকরণটি ছিল রাণীর দূতের বর্ণনা৷ এ থেকে সুলাইমানের তাকওয়া ভিত্তিক জীবন, তাঁর প্রজ্ঞা ও বুদ্ধিমত্তা এবং তাঁর সত্যের দাওয়াত সম্পর্কে অবহিত হন৷ এ জিনিসটিই তাঁকে অগ্রণী হয়ে তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করতে উদ্বুদ্ধ করে৷ নিজের একটি উক্তির মাধ্যমে তিনি এদিকেও ইংগিত করেন৷ এ উক্তিতে তিনি বলেন : আমরা তো আগেই জেনেছিলাম এবং আমরা মুসলিম হয়ে গিয়েছিলাম৷ চতুর্থ উপকরণটি ছিল এ মহান মুল্যবান সিংহাসনটির মুহূর্তকালের মধ্যে মায়ারীব থেকে বাইতুল মাকদিসে পৌঁছে যাওয়া৷ এর ফলে রাণী জানতে পারেন এ ব্যক্তির পেছনে সর্বশক্তিমান আলাহর শক্তি রয়েছে৷ আর এখন সর্বশেষ উপকরণটি ছিল এই যে, রাণী দেখলেন যে ব্যক্তি এহেন আরাম আয়েশ ও পার্থিব ভোগের সামগ্রীর অধিকারী এবং এমন নয়নাভিরাম ও জাঁকালো প্রাসাদে বাস করেন তিঁনি আত্মগরিমা ও আত্মম্ভরিতা থেকে কত দূরে অবস্থান করেন, তিনি কেমন আল্লাহকে ভয় করেন, কেমন সৎ হৃদয়বৃত্তির অধিকারী, কেমন কথায় কথায় কৃতজ্ঞতায় আল্লাহর সামনে মাথা নত করে দেন এবং পৃথিবী পূজারী লোকদের জীবন থেকে তাঁর জীবন কত ভিন্নতর৷ এ জিনিসই এমন সব কথা তাঁর মুখ থেকে উচ্চারণ করতে তাঁকে বাধ্য করেছিলেন, যা সামনের দিকে তাঁর মুখ থেকে উদ্ধৃত করা হয়েছে ।

দুই. জালিম সে তো নিজের খেয়ালখুশির অনুসরণকারী। এ অর্থে কুরআন মাজিদের একটি আয়াত,
‘যদি আপনি আহলে কিতাবদের কাছে সমুদয় নিদর্শন উপস্থাপন করেন, তবুও তারা আপনার কিবলা মেনে নেবে না এবং আপনিও তাদের কিবলা মানেন না। আপনার নিকট জ্ঞান আসার পরও যদি আপনি তাদের নিজেদের খেয়ালখুশির অনুসরণ করেন তাহলে নিশ্চয়ই আপনি সেসব জালিমের অন্তর্ভুক্ত হবেন’ (সূরা বাকারা : ১৪৫)। এখানে নিজেদের খেয়ালখুশির অনুসরণকারীদেরকে জালিম বলে অবিহিত করা হয়েছে ।
তিন. জালিম হলো আল্লাহ তায়ালার সাথে অংশীদার স্থাপনকারী। এ অর্থে আল্লাহ তায়ালার একটি বাণী, ‘স্মরণ করো, যখন লুকমান উপদেশচ্ছলে স্বীয় পুত্রকে বলেছিল, হে আমার ছেলে! আল্লাহর সাথে কোনো শরিক স্থাপন কোরো না। নিশ্চয়ই শিরক অতি বড় ধরনের জুলুমই বটে’ (সূরা লুকমান : ১৩)। এখানে শিরককে বড় ধরনের জুলুম এবং সে কারণেই শিরক সাবস্ত্যকারী মুশরিককে জালিম বলা হয়ে থাকে ।
চার. জালিম হলো আল্লাহ তায়ালার বিধানের বিপরীত বিচার-ফয়সালাকারী। এ অর্থে কুরআন মাজিদের একটি আয়াত, ‘আমি এ গ্রন্থে তাদের প্রতি লিখে দিয়েছি যে, প্রাণের বিনিময়ে প্রাণ, চক্ষুর বিনিময়ে চক্ষু, নাকের বিনিময়ে নাক, কানের বিনিময়ে কান, দাঁতের বিনিময়ে দাঁত এবং যখমসমূহের বিনিময়ে সমান যখম। অতঃপর যে ক্ষমা করে, সে গোনাহ থেকে পাক হয়ে যায়। আল্লাহ যা নাজিল করেছেন তদনুযায়ী যারা বিচার-ফয়সালা করে না তারাই জালিম’ (সূরা মায়িদা : ৪৫)। এখানে জালিম অর্থ আল্লাহ তায়ালার অবতীর্ণ কিতাবের বিপরীতে অন্য কোনো বিধিবিধান দ্বারা সমাজে বিচার ফয়সালাকারী বা তা রচনাকারী ।
পাঁচ. জালিম হলো, যারা স্যা গোপনকারী তথা প্রত্যক্ষ বা চাক্ষুস বিষয়কে উল্টিয়ে ফেলে মিথ্যার বেশাতি তৈরি করে। এ অর্থে আল্লাহ তায়ালার একটি বাণী, ‘অথবা তোমরা কি বলছ যে, নিশ্চয়ই ইবরাহিম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকুব আ: ও তাদের সন্তানগণ ইহুদি অথবা খ্রিষ্টান ছিল? আপনি বলে দিন, তোমরা বেশি জানো, না আল্লাহ বেশি জানেন? যে ব্যক্তি স্যা গোপন করে তার চেয়ে বড় জালিম আর কে হতে পারে?’ (সূরা বাকারা : ১৪০)। এ েেত্র কোনো মামলার বাদি, বিবাদি, সাী, তদন্তকারী কর্মকর্তা, বিচারক এবং সরকারপ্রধান যে কেউই বিচার-ফয়সালায় বা যেকোনো বিষয়ে প্রকৃত সত্য ও প্রত্য বিষয়ের বিপরীতে ইস্তিকামাত হবে তারাই মূলত স্যা গোপনকারী এবং কুরআন মাজিদে তাদেরকেই জালিম বলে অবিহিত করা হয়েছে ।
ছয়. জালিম হলো, আল্লাহ তায়ালার আদেশ অমান্যকারী। এ অর্থে কুরআন মাজিদের আয়াত, ‘এবং আমি আদমকে হুকুম করলাম যে, তুমি ও তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস করতে থাকো এবং ওখানে যা চাও, যেখান থেকে চাও, পরিতৃপ্তিসহ খেতে থাক, কিন্তু তোমরা কখনোই এ গাছের নিকটবর্তী হয়ো না। তাহলে তোমরা জালিমদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে’ (সূরা বাকারা : ৩৫)। হজরত আদম আ: শয়তানের কুমন্ত্রণায় ওই আদেশটি লঙ্ঘন করে জালিম সাব্যস্ত হয়েছিলেন। এ কথা তাঁর বক্তব্যের দ্বারাই তো প্রমাণ করে। যেমন এ েেত্র মহান আল্লাহর বাণী, ‘তারা বলল, হে আমাদের পালনকর্তা! আমরা তো আমাদের নিজেদের প্রতি জুলুম করে ফেলেছি। এখন তুমি যদি আমাদেরকে মা এবং অনুগ্রহ না করো তাহলে তো আমরা অবশ্যই তিগ্রস্তদের মধ্যে শামিল হয়ে যাবো’ (সূরা আ’রাফ : ২৩)। এ আয়াতে কারিমা দ্বারা জালিম বলে আল্লাহ তায়ালার আদেশ অমান্যকারীকে বুঝানো হয়েছে ।
সাত. জালিম হলো, উপহাসকারী, কাউকে অন্যায়ভাবে দোষারোপকারী এবং অন্যকে মন্দনামে আহ্বানকারী। এ অর্থে আল্লাহ তায়ালার বাণী, ‘হে মুমিনগণ! কোনো পুরুষের অপর কোনো পুরুষকে উপহাস করা উচিত নয়। কেননা যাকে উপহাস করা হলো সে তাদের থেকে উত্তমও হতে পারে এবং কোনো নারীর অপর কোনো নারীকেও উপহাস করা উচিত নয়। কেননা যাকে উপহাস করা হলো সে উপহাসকারিনী থেকে উত্তমও হতে পারে। তোমরা তোমাদের একে অপরের প্রতি দোষারোপ করবে না এবং তোমাদের কাউকে মন্দ নামে ডাকবে না। ঈমান গ্রহণের পর মন্দ নামে ডাকা বড় পাপের কাজ। যারা এর থেকে ফিরে থাকবে না তারাই তো জালিম’ (সূরা হুজরাত : ১১)। এ আয়াতে জালিম বলে উপহাসকারী, কাউকে অন্যায়ভাবে দোষারোপকারী এবং অন্যকে মন্দ নামে আহ্বানকারীকে বুঝানো হয়েছে ।

আট. জালিম হলো, আল্লাহ তায়ালার প্রতি মিথ্যা আরোপকারী অথবা তার প থেকে অবতীর্ণ কুরআন মাজিদকে মিথ্যা প্রতিপন্নকারী। এ অর্থে মহাগ্রন্থ আল কুরআনের বাণী, ‘তার থেকেও বড় জালিম আর কে, যে আল্লাহর প্রতি মিথ্যাচার করে অথবা সত্য তার সামনে এসে যাওয়া সত্ত্বেও তা মিথ্যা প্রতিপন্ন করে? জাহান্নামই কি এ ধরনের কাফিরদের অবাসস্থল নয়?’ (সূরা আনকাবুত : ৬৮)। এ আয়াতে মহান আল্লাহর ওপর মিথ্যাচারকারীকে জালিম বলে অবিহিত করা হয়েছে ।
নয়. জালিম হলো, আল্লাহ তায়ালার ঘরে তারই নাম স্মরণে বাধা দানকারী এবং তা ধ্বংস সাধনে প্রচেষ্টাকারী। এ অর্থে মহান আল্লাহর বাণী, ‘তার থেকেও বড় জালিম আর কে, যে মানুষকে আল্লাহ তায়ালার মসজিদে আল্লাহর নাম উচ্চারণে বাধা প্রদান করে এবং তা ধ্বংস সাধনে প্রচেষ্টা করে বেড়ায়? এ ধরনের লোকদের ইবাদতের ওই সব স্থানে ঢোকাই উচিত নয়। আর যদি যায় তাহলে ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায়ই যেন যায়। তাদের জন্য পার্থিব জীবনে অপমান, লাঞ্ছনা এবং পরকালীন জীবনে ভয়াবহ শাস্তি রয়েছে’ (সূরা বাকারা : ১১৪)। এ আয়াতে আল্লাহর ঘর তথা মসজিদে যারা আল্লাহর ইবাদত, তিলাওয়াত এবং জিকির-আজকারে বাধা প্রদান করে তাদেরকে জালিম বলা হয়েছে ।

দশ. জালিম হলো, সুদভিত্তিক অর্থনীতি তথা ব্যবসাবাণিজ্য, লেন-দেন ইত্যাদি পরিচালনাকারী। এ অর্থে মহান আল্লাহর বাণী, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং লোকদের কাছে তোমাদের যে সুদ বাকি রয়ে গেছে তা ছেড়ে দাও। যদি প্রকৃত পে মুমিন হয়ে থাকো, আর যদি তা না করো তবে জেনে রেখো, এটা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প থেকে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা। এখনো যদি তাওবা কর এবং সুদ ছেড়ে দাও তাহলে তোমরা আসল মূলধনের অধিকারী হবে। তোমরা জুলুম করবে না তাহলে তোমাদের ওপরও জুলুম করা হবে না’ (সূরা বাকারা : ২৭৮-২৭৯)। ওই আয়াতে সুদখোর এবং সুদের সাথে কোনো না কোনো উপায়ে জড়িতদেরকে জালিম বলা হয়েছে ।

এগারো. জালিম হলো, সেসব নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি যারা মানুষকে ভয়াবহ ‘নারের’ পানে তথা জাহান্নামের দিকে আহ্বান করে। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহর বাণী, ‘অতঃপর আমি তাকে ও তার সৈন্যবাহিনীকে পাকড়াও করলাম এবং সমুদ্রে নিপে করলাম। দেখে নাও, জালিমদের পরিণতি কিরূপ হয়েছিল। আমি তাদেরকে নেতা বানিয়ে ছিলাম আর তারা মানুষকে ভয়াবহ ‘নারের’ পানে আহ্বান করত। কিয়ামতের দিন তারা সাহায্যপ্রাপ্ত হবে না’ (সূরা কাসাস : ৪০-৪১)। কাজেই যেসব নেতা-নেত্রী খোদাদ্রোহীর পথে মানুষকে আহ্বান করে ও পরিচালিত করে, তারাই জালিম। নার এর শাব্দিক অর্থ ‘আগুন’। কুরআন মাজিদে শব্দটি মোট ১২৬ বার ব্যবহৃত হয়েছে ।

বারো. জালিম হলো তারা যারা মানুষকে আল্লাহর পথে চলতে বাধা প্রদান করে, তাতে বক্রতা অনুসন্ধান করে এবং আখিরাতকে প্রত্যাখ্যান করে। এ বিষয়ে কুরআন মাজিদের ঘোষণা, ‘যারা আল্লাহর পথ থেকে মানুষকে বাধা দেয়, সে পথকে বাঁকা করে দিতে চায় এবং আখিরাত তথা আল্লাহর দরবারে প্রত্যাবর্তন অস্বীকার করে’ (সূরা হুদ : ১৯)। সুতরাং যারা আল্লাহর পথ থেকে মানুষকে বাধা দেয়, তাতে বক্রতা অনুসন্ধান করে এবং আখিরাতকে অস্বীকার করে তারাই জালিম ।

তেরো. জালিম হলো ভূমিদস্যু। অর্থাৎ যারা গায়ের জোরে অন্যের ভূমি দখল করে নেয়। এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালার প্রেরিত রাসূল সা:-এর বাণী, ‘যে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে জুলুমের পথ অবলম্বন করে কারোর এক বিঘাত পরিমাণ জমি আত্মসাৎ করে কিয়ামতের দিন তার গলায় সাত তবক জমিন ঝুলিয়ে দেয়া হবে’ (বুখারি- ২৯৫৯)। কাজেই ভূমি দখলকারীরা জালিম ।
চৌদ্দ. জালিম হলো, যারা ধর্মের ব্যাপারে মুমিনদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তাদের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপনকারী ব্যক্তি। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালার বাণী, ‘আল্লাহ তো তোমাদেরকে কেবল তাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করেন। যারা ধর্মের ব্যাপারে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে, তোমাদেরকে দেশ থেকে বহিষ্কৃত করেছে এবং তোমাদের বহিষ্কারকরণে সাহায্য করেছে। এ ধরনের লোকদের সাথে যারা বন্ধুত্ব করে তারাই জালিম’ (সূরা মুমতাহানা : ৯)। এ আয়াতে যারা দ্বীনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ, ফাসাদ এবং অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালায় এদের সাথে যারা সম্পর্ক, সমর্থন এবং সাহায্য-সহযোগিতা করে তারদেরকে জালিম বলা হয়েছে ।
সারকথায়, জুলুম ব্যাপক অর্থে একটি শব্দ। আল্লাহ তায়ালার নাফরমানি, অবাধ্যতা, সীমাতিক্রম কিংবা কারোর নিজের প্রতি অথবা অন্য কোনো মানুষের প্রতি অন্যায়-অবিচার, উৎপীড়ন, নিপীড়ন, দুর্ব্যবহার এবং যেকোনো মাখলুকাতের প্রতি প্রকৃত অধিকার হরণ বা তার যথোপযুক্ত স্থানে না রাখাকে জুলুম এবং যে ব্যক্তি তা সম্পাদনকারী তাকেই জালিম বলে ।
সমাপ্ত=

Related Post