দু’আ কবূল হওয়ার সময়সমূহ

সময়গুলো হচ্ছে, সিজদারত অবস্থায়, আযান ও ইকামতের মাঝে, শত্রুদের সঙ্গে সাক্ষাতের সময়, শেষ রাতে, জুমুআর দিনে, ইত্যাদি।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ أَقْرَبُ مَا يَكُونُ الْعَبْدُ مِنْ رَبِّهِ وَهُوَ سَاجِدٌ فَأَكْثِرُوا الدُّعَاءَ ‏

আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ বান্দার সিজদারত অবস্থায়ই তার প্রতিপালকের অনুগ্রহ লাভের সর্বোত্তম অবস্থা (বা মুহূর্ত)। অতএব তোমরা অধিক পরিমাণে দু’আ পড়ো। (মুসলিম: ৪৮২, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৯৬৫, ইসলামিক সেন্টারঃ ৯৭৬, আবু দাঊদ: ৮৭৫, নাসাঈ: ১১৩৭)

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رضي الله عنه قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ الدُّعَاءُ لاَ يُرَدُّ بَيْنَ الأَذَانِ وَالإِقَامَةِ ‏”

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আযান ও ইকামাতের মধ্যবর্তী সময়ের দু’আ ফেরত দেয়া হয় না। (তিরমিযী: ২১২, আবু দাঊদ: ৫২১, সহীহ আল জামে: ৩৪০৮)

 

عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ رضي الله عنه  قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ثِنْتَانِ لَا تُرَدَّانِ، أَوْ قَلَّمَا تُرَدَّانِ الدُّعَاءُ عِنْدَ النِّدَاءِ، وَعِنْدَ الْبَأْسِ حِينَ يُلْحِمُ بَعْضُهُمْ بَعْضًا

সাহল ইবনু সা‘দ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দু’ সময়ের দু’আ প্রত্যাখ্যাত হয় না অথবা খুব কমই প্রত্যাখ্যাত হয়। আযানের সময়ের দু‘আ এবং যখন একে অপরের সাথে যুদ্ধ লিপ্ত থাকে।  আবু দাঊদ: ২৫৪০, সহীহ আল জামে: ৩০৭৯)

 

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ يَنْزِلُ رَبُّنَا تَبَارَكَ وَتَعَالَى كُلَّ لَيْلَةٍ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا حِينَ يَبْقَى ثُلُثُ اللَّيْلِ الآخِرُ فَيَقُولُ مَنْ يَدْعُونِي فَأَسْتَجِيبَ لَهُ وَمَنْ يَسْأَلُنِي فَأُعْطِيَهُ وَمَنْ يَسْتَغْفِرُنِي فَأَغْفِرَ لَهُ ‏”‏ ‏

আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ প্রত্যেক রাতে যখন রাতের শেষ তৃতীয়াংশ থাকে তখন আমাদের প্রতিপালক মহান ও কল্যাণময় আল্লাহ দুনিয়ার আসমানে অবতরণ করে বলতে থাকেনঃ কে এমন আছ, যে এখন আমাকে ডাকবে, আমি তার ডাকে সাড়া দিব। এখন কে এমন আছ যে আমার কাছে প্রার্থনা করবে, আমি তাকে দান করব। আর কে এমন আছ, যে আমার কাছে ক্ষমা চাইবে আমি তাকে ক্ষমা করে দিব। (মুসলিম: ৭৫৮, ইসলামী ফাউন্ডেশন ১৬৪২, ইসলামীক সেন্টার ১৬৪৯)

عَنْ جَابِرٍ رضي الله عنه قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ “‏ إِنَّ فِي اللَّيْلِ لَسَاعَةً لاَ يُوَافِقُهَا رَجُلٌ مُسْلِمٌ يَسْأَلُ اللَّهَ خَيْرًا مِنْ أَمْرِ الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ إِلاَّ أَعْطَاهُ إِيَّاهُ وَذَلِكَ كُلَّ لَيْلَةٍ ‏

জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ সারা রাতের মধ্যে এমন একটি বিশেষ সময় আছে যে সময়ে কোন মুসলিম আল্লাহর কাছে দুনিয়া ও আখিরাতের কোন কল্যাণ প্রার্থনা করলে তিনি তাকে তা দান করেন। আর ঐ বিশেষ সময়টি প্রত্যেক রাতেই থাকে। (মুসলিম: ৭৫৭, ইসলামী ফাউন্ডেশন ১৬৪০, ইসলামীক সেন্টার ১৬৪৭)

عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ رضي الله عنه عَنْ رَسُولِ اللهِ صلي الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ ‏”‏ يَوْمُ الْجُمُعَةِ ثِنْتَا عَشْرَةَ ‏”‏ ‏.‏ يُرِيدُ سَاعَةً ‏”‏ لَا يُوجَدُ مُسْلِمٌ يَسْأَلُ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ شَيْئًا إِلَا آتَاهُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ فَالْتَمِسُوهَا آخِرَ سَاعَةٍ بَعْدَ الْعَصْرِ ‏”‏ ‏.‏

১০৪৮। জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জুমু‘আহর দিনের বার ঘন্টার মধ্যে এমন একটি মুহুর্ত রয়েছে যদি কোন মুসলিম এ সময় আল্লাহর কাছে কিছু প্রার্থনা করে তাহলে মহান ও সর্বশক্তিমান আল্লাহ তাকে তা দান করেন। এ মুহুর্তটি তোমরা ‘আসরের শেষ সময়ে অনুসন্ধান করো। (আবু দাঊদ: ১০৪৮)

ব্যাখ্যা:

দু‘আ কবূল হওয়ার অনেক সময় রয়েছে, আশা করা যায়, সেই মুহূর্তগুলোতে দু‘আ করা হলে কবূল হবে। প্রত্যেক মুসলমানের উচিত, সেই সময় বাছাই করে বেশি বেশি দু‘আ করা। তন্মধ্যে…

– সিজদার সময় দু‘আ করা। কেননা এ সময় বান্দা একেবারে আল্লাহর নিকটে চলে যায়।

– আযান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময় দু‘আ করা। কেননা বান্দা তখন নামাযের অপেক্ষায় থাকে। আর সে সময় দু‘আ কবূল করা হয়।

– শত্রুদের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার সময়ও দু‘আ কবূল করা হয়।

– শেষ রাতেও দু‘আ কবূল করা হয়। সে সময় মহান আল্লাহ দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করেন। এটি প্রতি রাতেই হয়।

– জুমুআর দিন দু‘আ কবূল করা হয়। আসরের পরে, খুতবার সময়, দুই খুতবার মাঝ খানে।

ফাওয়ায়েদ বা শিক্ষাসমূহ

১। দু‘আ কবূল হওয়ার অনেক সময় রয়েছে, সে সময়গুলোতে দু‘আ করলে আশা করা যায় কবূল হবে।

২। সেই সময়গুলো দু‘আ করতে উদ্বুদ্ধ হওয়া এবং বেশি বেশি দু‘আ করা।

৩। সময়গুলো হচ্ছে, সিজদারত অবস্থায়, আযান ও ইকামতের মাঝে, শত্রুদের সঙ্গে সাক্ষাতের সময়, শেষ রাতে, জুমুআর দিনে, ইত্যাদি।

 

Related Post