যুলুমের পরিণতি

যুলুমের পরিণতি

যুলুমের পরিণতি

সম্মানিত মুসাল্লিয়ানে কেরাম! আজকের খুতবার আলোচ্য বিষয় হলো: اَلظُّلْمُ ظُلُمَاتٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ তথা: কিয়ামতের দিন যুলুমের পরিণাম অন্ধকার হবে। এ বিষয়ে আলোচনার শুরুতেই আমি বলতে চাই যে, সারা বিশ্ব আজ যুলুমে ভরে গেছে। সর্বত্র জুলুম আর অবিচার বিস্তার করেছ। কিন্তু এর পরিণাম যে, কত ভয়াবহ কুরআনের পাতা খুললে হৃদয় শিহরিয়ে উঠে।

আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেছেন:

وَلاَ تَحْسَبَنَّ ٱللهَ غَـٰفِلاً عَمَّا يَعْمَلُ ٱلظَّـٰلِمُونَ إِنَّمَا يُؤَخِّرُهُمْ لِيَوْمٍ تَشْخَصُ فِيهِ ٱلأبْصَـٰرُ  ﴿٤٢  مُهْطِعِينَ مُقْنِعِي رُ‌ءُوسِهِمْ لَا يَرْ‌تَدُّ إِلَيْهِمْ طَرْ‌فُهُمْ ۖ وَأَفْئِدَتُهُمْ هَوَاءٌ ﴿٤٣﴾ وَأَنذِرِ‌ النَّاسَ يَوْمَ يَأْتِيهِمُ الْعَذَابُ فَيَقُولُ الَّذِينَ ظَلَمُوا رَ‌بَّنَا أَخِّرْ‌نَا إِلَىٰ أَجَلٍ قَرِ‌يبٍ نُّجِبْ دَعْوَتَكَ وَنَتَّبِعِ الرُّ‌سُلَ ۗ أَوَلَمْ تَكُونُوا أَقْسَمْتُم مِّن قَبْلُ مَا لَكُم مِّن زَوَالٍ ﴿٤٤﴾  سورة إبراهيم

যালেমরা যা করে, সে সম্পর্কে আল্লাহকে কখনও বেখবর মনে করো না তাদেরকে তো ঐ দিন পর্যন্ত অবকাশ দিয়ে রেখেছেন, যেদিন চক্ষুসমূহ বিস্ফোরিত হবে। তারা মস্তক উপরে তুলে ভীত-বিহবল চিত্তে দৌড়াতে থাকবে। তাদের দিকে তাদের দৃষ্টি ফিরে আসবে না এবং তাদের অন্তর উড়ে যাবে। মানুষকে ঐ দিনের ভয় প্রদর্শন করুন, যেদিন তাদের কাছে আযাব আসবে। তখন যালেমরা বলবেঃ হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদেরকে সামান্য মেয়াদ পর্যন্ত সময় দিন, যাতে আমরা আপনার আহবানে সাড়া দিতে এবং পয়গম্বরগণের অনুসরণ করতে পারি। তোমরা কি ইতোপূর্বে কসম খেতে না যে, তোমাদেরকে দুনিয়া থেকে যেতে হবে না? (সূরা ইবরাহীম: ৪২-৪৪)

সম্মানিত মুসাল্লিয়ানে কেরাম! যুলম আবরী শব্দ যা আমরা বাংলা ভাষায় ব্যবহার করে থাকি। আভিধানিক অর্থ হলো: হ্রাস করা যেমন আল্লাহ তায়ালা বলছেন:  كِلْتَا الْجَنَّتَيْنِ آتَتْ أُكُلَهَا وَلَمْ تَظْلِمْ مِنْهُ شَيْئاً দুটি বাগানই ভালো ফলদান করতো এবং ফল উৎপাদনের ক্ষেত্রে তারা সামান্যও ত্রুটি হ্রাস  করতো না৷  (সূরা কাহাফ :৩৩)

আবার এই হ্রাস করা হতে পারে দুঃসাহসের মাধ্যমে আবার বাড়াবাড়ি করার মাধ্যমেও হতে। প্রথমটা ইনসানের জন্য বৈধ নয়। আর দ্বিতীয়টা হতে বেঁচে থাকা ওয়াজিব। অর্থাৎ যুলম হলো কোন হারাম কাজ করা অথবা ওয়াজিব কাজ ছেড়ে দেওয়া।

وَضْعُ الشَّيْءِ فِيْ غَيْرِ مَوْضِعِهِ الْمُخْتَصِّ بِهِ؛ إِمَّا بِنُقْصَانٍ أَوْ بِزِيَادَةٍ؛

ইসলামী পরিভাষায়: যুলম হলো, বস্তুকে তার আপন স্থানে স্থাপন না করা। অর্থাৎ মূলরূপে কম-বেশ করা।

যুলম দুই প্রকার: ১) মহান আল্লাহর সাথে সম্পর্ক  রাখে। ২) বান্দার সাথে সম্পর্ক রাখে। আর সবচেয়ে বড় যুলম হলো আল্লাহর সাথে যুলম করা। আর তা হলো শিরক।

রাসূল (সা.) কে জিজ্ঞেস করা হলো: সবচেয়ে বড়গুনাহ কোনটি? রাসূল (সা.) বললেন: আল্লাহর সঙ্গে শিরক করা যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন।

আর বান্দার সাথে যুলম করা এটি তিন প্রকার: রাসূল (সা.) বিদায় হজ্জে বলেছেন: তোমাদের রক্ত, এবং তোমাদের সম্পদ  এবং তোমাদের সম্মান তোমাদের উপর হারাম করা হলো। এই দিনে এই মাসে এই শহরে।

যালেমদেরকে আল্লাহ কখনই ভালোবাসেন না: আল্লাহ তায়ালা বলেন: وَاللهُ لَا يُحِبُّ الظَّالِمِينَ  আল্লাহ যালেমদের কখনোই ভালোবাসেন না৷ (আলে ইমরান: ৫৭ এবং ১৪০ আশ শূরা: ৪০ আয়াত)

যালেমদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই:

আল্লাহ অনত্র বলেন: وَمَا لِلظَّالِمِيْنَ مِنْ أَنْصَارٍ“. আর জালেমদের কোন সাহায্যকারী নেই।  (বাকারা ২৭০, আলে ইমরান ১৯২, মায়েদা ৭২)          الحج            وَمَا لِلظَّالِمِيْنَ مِنْ نَّصِيْرٍ

আল্লাহ অনত্র বলেন:

وَلَا تَرْ‌كَنُوا إِلَى الَّذِينَ ظَلَمُوا فَتَمَسَّكُمُ النَّارُ‌ وَمَا لَكُم مِّن دُونِ اللهِ مِنْ أَوْلِيَاءَ ثُمَّ لَا تُنصَرُ‌ونَ

এ যালেমদের দিকে মোটেই ঝুঁকবে না, নতুবা তোমাদেরকেও আগুনে ধরবে। আর আল্লাহ ব্যতীত তোমাদের কোন বন্ধু নাই। অতএব কোথাও সাহায্য পাবে না। (হূদ: ১১৩)

আল্লাহ আরো বলছেন: وَالظَّالِمُونَ مَا لَهُم مِّن وَلِيٍّ وَلَا نَصِيرٍ‌ ﴿٨ যালেমদের না আছে কোন অভিভাবক না আছে সাহায্যকারী৷ (শূরা: ৮)

যালেমদেরকে আল্লাহ হেদায়াত দেন না:

আল্লাহ আরো বলছেন: وَاللهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ   আল্লাহ এ রকম যালেমদের হিদায়াত দান করেন না৷ (বাকারা:২৫৮,আলে ইমরান:৮৬ তাওবা:১৯–১০৯ সাফ ৭ জুমুয়া ৫)

যালেমরা ব্যর্থ তারা সফলতা লাভ করতে পারবে না:

আল্লাহ আরো বলছেন: إِنَّهُ لَا يُفْلِحُ الظَّالِمُونَ  অবশ্যি এ ধরনের জালেমরা কখনই সফলকাম হতে পারে না৷(আনয়াম ২১-১৩৫, ইউসুফ ২৩, কাসাস, ৩৭)

যালেমদের পরিণাম:  আল্লাহ আরো বলছেন:

فَأَخَذْنَاهُ وَجُنُودَهُ فَنَبَذْنَاهُمْ فِي الْيَمِّ  فَانظُرْ‌ كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الظَّالِمِينَ ﴿٤٠﴾ وَجَعَلْنَاهُمْ أَئِمَّةً يَدْعُونَ إِلَى النَّارِ‌ ۖ وَيَوْمَ الْقِيَامَةِ لَا يُنصَرُ‌ونَ ﴿٤١﴾ وَأَتْبَعْنَاهُمْ فِي هَـٰذِهِ الدُّنْيَا لَعْنَةً ۖ وَيَوْمَ الْقِيَامَةِ هُم مِّنَ الْمَقْبُوحِينَ ﴿٤٢   القصص

অতঃপর আমি তাকে ও তার বাহিনীকে পাকড়াও করলাম, তৎপর আমি তাদেরকে সমুদ্রে নিক্ষেপ করলাম অতএব,দেখ যালেমদের পরিণাম কি হয়েছে। আমি তাদেরকে নেতা করেছিলাম। তারা জাহান্নামের দিকে আহবান করত। কেয়ামতের দিন তারা সাহায্য প্রাপ্ত হবে না। আমি এই পৃথিবীতে অভিশাপকে তাদের পশ্চাতে লাগিয়ে দিয়েছি এবং কেয়ামতের দিন তারা হবে দুর্দশাগ্রস্ত। (কাসাস: ৪০-৪২)

আল্লাহ আরো বলছেন:

وَمَكَرُ‌وا مَكْرً‌ا وَمَكَرْ‌نَا مَكْرً‌ا وَهُمْ لَا يَشْعُرُ‌ونَ ﴿٥٠﴾ فَانظُرْ‌ كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ مَكْرِ‌هِمْ أَنَّا دَمَّرْ‌نَاهُمْ وَقَوْمَهُمْ أَجْمَعِينَ ﴿٥١﴾ فَتِلْكَ بُيُوتُهُمْ خَاوِيَةً بِمَا ظَلَمُوا ۗ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَةً لِّقَوْمٍ يَعْلَمُونَ ﴿٥٢   النمل

এ চক্রান্ত তো তারা করলো এবং তারপর আমি একটি কৌশল অবলম্বন করলাম, যার কোন খবর তারা রাখতো না৷অবশেষে তাদের চক্রান্তের পরিণাম কি হলো দেখে নাও৷ আমি তাদেরকে এবং তাদের সমগ্র জাতিকে ধ্বংস করে দিলাম৷ ঐ যে তাদের গৃহ তাদের যুলুমের কারণে শূন্য পড়ে আছে, তার মধ্যে রয়েছে একটি শিক্ষণীয় নিদর্শন যারা জ্ঞানবান তাদের জন্য ৷(নামল: ৫০-৫২)

আল্লাহ আরো বলছেন:      الطور وَإِنَّ لِلَّذِينَ ظَلَمُوا عَذَابًا دُونَ ذَٰلِكَ وَلَـٰكِنَّ أَكْثَرَ‌هُمْ لَا يَعْلَمُونَ ﴿٤٧

আর সেদিনটি আসার আগেও যালেমদের জন্য একটা আযাব আছে৷ কিন্তু তাদের অধিকাংশই জানে না৷ (তূর: ৪৭)

আল্লাহ আরো বলছেন:     إِنَّمَا السَّبِيلُ عَلَى الَّذِينَ يَظْلِمُونَ النَّاسَ وَيَبْغُونَ فِي الْأَرْ‌ضِ بِغَيْرِ‌ الْحَقِّ ۚ أُولَـٰئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ ﴿٤٢  الشورى  অভিযোগ কেবল তাদের বিরুদ্ধে, যারা মানুষের উপর অত্যাচার চালায় এবং পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে বিদ্রোহ করে বেড়ায়। তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। (শূরা: ৪২)

আল্লাহ আরো বলছেন:

   وَقِيلَ لِلظَّالِمِينَ ذُوقُوا مَا كُنتُمْ تَكْسِبُونَ ﴿٢٤

এসব যালেমদের বলে দেয়া হবেঃ এখন সেসব উপার্জনের ফল ভোগ করা যা তোমরা উপার্জন করেছিলে৷(সূরা যুমার: ২৪)

আল্লাহ আরো বলছেন: أَلَا لَعْنَةُ اللهِ عَلَى الظَّالِمِينَ   শোনো,যালেমদের ওপর আল্লাহর লানত। (হূদ ১৮)

কবির ভাষায়-

لاَ تَظْلِمَنَّ إِذَا مَا كُنْتَ مُقْتَدِراً  * فَالظُّلْمُ تَرْجِعُ عُقْبَاُه إِلَى النَّدَمِ *  تَنَامُ عَيْنَاكَ وَالْمَظْلُوْمُ مُنْتَبِهٌ * يَدْعُوْ عَلَيْكَ، وَعَيْنُ اللهِ لَمْ تَنَمِ * لَا شَكَّ دَعْوَةُ مَظْلُومٍ تَحِلُّ بِهَا …… دارَ الهَوانِ ودارَ الذُّلِ والنِّقَـمِ

হে ক্ষমতাবান ব্যক্তি তুমি অত্যাচার করো না।কেননা যুলুমের পরিণাম লজ্জিত হতে হয়। তুমি যুলুম করে ঘুমিয়ে থাকলেও মাযলুম বা নির্যাতিত ব্যক্তি জেগে আছে। সে তোমার প্রতি বদদোয়া করছে, আর আল্লাহর চোখ কিন্তু ঘুমায় না। নিশ্চয়ই মাযলুমের দোয়ায় যালেমের জন্য খোলে দেয় লাঞ্ছনা ও অপমান এবং অভিশাপ দ্বার।

হাদীসের আলোকে অত্যাচারী যালেমের শাস্তি:

রাসূল (সা.) বলেছেন:

عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ رضي الله عنه أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه و سلم  قَالَ اتَّقُوا الظُّلْمَ فَإِنَّ الظُّلْمَ ظُلُمَاتٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ رواه مسلم

হযরত জাবের (রা.) সূত্রে বর্ণিত: রাসূল (সা.) বলেছেন: তোমরা যুলম করা হতে বিরত থাক, বা যুলমকে ভয় কর। কেননা যুলম কিয়ামতের দিন ভীষণ অন্ধকার রূপ ধারণ করবে। (মুসলিম)

عَنْ أَنَسٍ رضي الله عنه قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ [ انْصُرْ أَخَاكَ ظَالِمًا أَوْ مَظْلُومًا فَقَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللهِ أَنْصُرُهُ إِذَا كَانَ مَظْلُومًا أَفَرَأَيْتَ إِذَا كَانَ ظَالِمًا كَيْفَ أَنْصُرُهُ قَالَ تَحْجُزُهُ أَوْ تَمْنَعُهُ مِنْ الظُّلْمِ فَإِنَّ ذَلِكَ نَصْرُهُ  رواه البخاري

হযরত আনাস (রা.) সূত্রে বর্ণিত: রাসূল (সা.) বলেছেন: অত্যাচারী এবং নির্যাতিত উভয়কে সাহায্য কর। জনৈক ব্যক্তি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! নির্যাতিত ব্যক্তিকে সাহায্য করার কথা তো বুঝলাম. কিন্তু যালেমকে কিভাবে সাহায্য করবো? রাসূল (সা.) বললেন, যুলুমের গতি প্রতিরোধ কর অথবা তাকে বাঁধা প্রদান কর। এভাবেই তাকে সাহায্য করা হবে। (বুখারী)

আল্লাহ নিজেও নিজের উপর যুলমকে হারাম করেছেন:

عَنْ أَبِي ذَرٍّ رضي الله عنه عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه و سلم  فِيمَا رَوَى عَنْ اللهِ تَبَارَكَ وَتَعَالَى أَنَّهُ قَالَ: يَا عِبَادِي إِنِّي حَرَّمْتُ الظُّلْمَ عَلَى نَفْسِي وَجَعَلْتُهُ بَيْنَكُمْ مُحَرَّمًا فَلَا تَظَالَمُوا رواه مسلم

হযরত আবু যর (রা.) রাসূল (সা.) হতে বর্ণনা করেন: আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন। হে আমার বান্দাহ! আমি আমার উপর যুলমকে হারাম ঘোষণা করলাম, সুতরাং তোমাদের মাঝেও ‍যুলমকে হারাম করে দিলাম। সুতরাং তোমরা একে অন্যের উপর যুলম করো না। (মুসলিম)তিন প্রকারের দোয়া আল্লাহ অবশ্যই কবুল করেন:

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ  رضي الله عنه أَنَّ النَّبِيَّ [ قَالَ ثَلَاثُ دَعَوَاتٍ مُسْتَجَابَاتٌ لَا شَكَّ فِيهِنَّ دَعْوَةُ الْوَالِدِ وَدَعْوَةُ الْمُسَافِرِ وَدَعْوَةُ الْمَظْلُومِ رواه ابو داود

হযরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূল (সা.) এরশাদ করেন: নিঃসন্দেহে তিন প্রকারের দোয়া গৃহীত হয়। ১) পিতা-মাতার দোয়া ২) মুসাফিরের দোয়া, ৩) মাযলুম তথা নির্যাতিত ব্যক্তির দোয়া। (আবু দাউদ)

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه و سلم  ثَلَاثَةٌ لَا تُرَدُّ دَعْوَتُهُمْ الصَّائِمُ حَتَّى يُفْطِرَ وَالْإِمَامُ الْعَادِلُ وَدَعْوَةُ الْمَظْلُومِ يَرْفَعُهَا اللهُ فَوْقَ الْغَمَامِ وَيَفْتَحُ لَهَا أَبْوَابَ السَّمَاءِ وَيَقُولُ الرَّبُّ وَعِزَّتِي لَأَنْصُرَنَّكِ وَلَوْ بَعْدَ حِينٍ رواه الترمذي

তিন প্রকারের দোয়া আল্লাহ প্রত্যাখ্যান করেন না:

হযরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূল (সা.) এরশাদ করেছেন: তিন শ্রেণীর লোকের দোয়া আল্লাহ ফিরিয়ে দেন না। ১) রোযাদারের দোয়া যতক্ষণ না তিনি ইফতার করেন, ২) ন্যায় পরায়ণ নেতা বা বাদশার দোয়া ৩) মাযলুম বা নির্যাতিত ব্যক্তির দোয়া। আল্লাহ এই ব্যক্তির দোয়া মেঘমালার উপরে নিয়ে যান, এবং তার জন্য আকাশের দরজা খুলে দেন। আল্লাহ তার ইজ্জতের শপথ করে বলেন: বিলম্বে হলেও আমি তোমাকে অবশ্যই সাহায্য করবো। (তিরমিযী)

মাযলুম ব্যক্তি গুনাহগার হলেও তার দোয়া কবুল করা হয়

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه و سلم دَعْوَةُ الْمَظْلُومِ مُسْتَجَابَةٌ وَإِنْ كَانَ فَاجِرًا فَفُجُورُهُ عَلَى نَفْسِهِ * احمد

হযরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূল (সা.) এরশাদ করেছেন: মাযলুম ব্যক্তির দোয়া গৃহীত হয়, যদিও সে গুনাহগার। তার গুনাহ তার উপরই বরতাবে। (আহমদ)

عَنْ أَنَس بْنَ مَالِكٍ رضي الله عنه قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه و سلم اتَّقُوا دَعْوَةَ الْمَظْلُومِ وَإِنْ كَانَ كَافِرًا فَإِنَّهُ لَيْسَ دُونَهَا حِجَابٌ * احمد

হযরত আনাস (রা.) সূত্রে বর্ণিত: রাসূল (সা.) বলেছেন: মাযলুমের বদদোয়াকে ভয় কর। যদিও সে কাফের হয়, কেননা মাযলুম ও আল্লাহর মাঝে কোন পর্দা থাকে না। (আহমদ)

তোমরা কি জান গরীব কে?

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه و سلم قَالَ: “أَتَدْرُونَ مَا الْمُفْلِسُ؟  قَالُوا الْمُفْلِسُ فِينَا مَنْ لَا دِرْهَمَ لَهُ وَلَا مَتَاعَ، فَقَالَ: “إِنَّ الْمُفْلِسَ مِنْ أُمَّتِي يَأْتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِصَلَاةٍ وَصِيَامٍ وَزَكَاةٍ وَيَأْتِي قَدْ شَتَمَ هَذَا وَقَذَفَ هَذَا وَأَكَلَ مَالَ هَذَا وَسَفَكَ دَمَ هَذَا وَضَرَبَ هَذَا فَيُعْطَى هَذَا مِنْ حَسَنَاتِهِ وَهَذَا مِنْ حَسَنَاتِهِ فَإِنْ فَنِيَتْ حَسَنَاتُهُ قَبْلَ أَنْ يُقْضَى مَا عَلَيْهِ أُخِذَ مِنْ خَطَايَاهُمْ فَطُرِحَتْ عَلَيْهِ ثُمَّ طُرِحَ فِي النَّارِ“. أخرجه أحمد (2/334 ، رقم 8395) ، ومسلم (4/1997، رقم 2581) ، والترمذي (4/613،

আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন, তোমরা কি জান গরীব কে? সাহাবীগণ বললেন, আমাদের মধ্যে যার সম্পদ নাই সে হলো গরীব লোক। তখন তিনি বললেন, আমার উম্মতের মধ্যে সে হলো গরীব যে, কিয়ামতের দিন নামায, রোযা ও যাকাত নিয়ে আসবে অথচ সে অমুককে গালি দিয়েছে, অমুককে অপবাদ দিয়েছে, অন্যায়ভাবে লোকের মাল খেয়েছে, সে লোকের রক্ত প্রবাহিত করেছে এবং কাউকে প্রহার করেছে। কাজেই এসব নির্যাতিত ব্যক্তিদেরকে সেদিন তার নেক আমল নামা দিয়ে দেয়া হবে। আর যখন নেক আমল শেষ হয়ে যাবে পাওনাদারদের হিসাব চুকানোর পূর্বে, তখন পাওনাদারদের গুনাহ তার আমল নামায় যোগ করা হবে।  এবং তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। (মুসলিম, আহমদ, তিরমিযী)

Related Post