সার্বজনীন জীবন আদর্শ হযরত মুহাম্মাদ (সা.)

সার্বজনীন জীবন আদর্শ হযরত মুহাম্মাদ (সা.)

সার্বজনীন জীবন আদর্শ হযরত মুহাম্মাদ (সা.)

আমরা আল্লাহ পাকের দরবারে লাখো কোটি শুকরিয়া আদায় করছি এজন্য যে তিনি আমাদেরকে সর্বশেষ নবী ও বিশ্বনবী তথা সকল মানুষের নবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)এর জীবন আলেখ্য আলোচনা করার ও শোনার জন্য আজকের এই সেমিনারে হাজির হওয়ার তৌফিক দিয়েছেন। তাই তার শুকরিয়া আদায়ার্থে পড়ছি ‘আলহামদুলিল্লাহ’।

সম্মানিত ভাই ও  বোনেরা! আজকের এই সেমিনারে আমার আলোচ্য বিষয় হচ্ছে “সার্বজনীন জীবন আদর্শ হযরত মুহাম্মাদ” (সা.) অর্থাৎ হযরত মুহাম্মাদ (সা.) তিনি সকল যুগের সকল মানুষের জীবন আদর্শ, ছোট বড় গরীব ধনী সাদা কালো কৃষক শ্রমিক রাজা বাদশাহ দাস দাসী চাকর চাকরানী মনিব ও ভৃত্য আরব এবং অনারব তথা সারা বিশ্বের নবী তিনি। তিনি কোন চিহ্নিত সীমানার নবী নন।

সম্মানিত ভাই ও বোনেরা! এই কথা গুলোর দলিল প্রমাণ পেশ করাই হচ্ছে আমার আলোচ্য বিষয়। কিন্তু এসব কথার দলিল তথা এ বিষয়ে তার জীবনের কার্যাবলী পেশ করতে হলে এ সংক্ষিপ্ত সময়ে তা সম্ভব নয়। তাই আমি বলবো ছহীহ হাদীস গ্রন্থ থেকে কোন একখানি গ্রন্থ আদ্যপান্ত অধ্যায়ন করুন, সেই সাথে শামায়েলে তিরমিযী এবং নির্ভর যোগ্য সীরাত গ্রন্থ যেমন বেদায়া ওয়ান নেহায়া, সীরাতে ইবনে হিসাম, আর রাহীকুল মাখতূম, আল্লামা শিবলি নুমানীর সীরাতুন্নবী, সাইয়্যেদ আবুল আলা মাওদূদি (রহ.) রচিত সীরাতে সারওয়ারে আলম ইত্যাদি অধ্যায়ন করতে পারেন।

সম্মানিত ভাই ও বোনেরা! মুহাম্মাদ (সা.) হচ্ছেন সার্বজনীন জীবন আদর্শ, অর্থাৎ সকল যুগে সকলের জন্যে গ্রহতীয় অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব হচ্ছেন হযরত মুহাম্মাদ (সা.)। তাঁকে এভাবে বিশ্বাস করে গ্রহণ করে নিলে দুনিয়া ও আখিরাতে মুক্তি ও সফলতা, পক্ষান্তরে তাঁকে ও তার আদর্শকে প্রত্যাখ্যান করলে দুনিয়া ও আখিরাতে ধ্বংস ও ব্যর্থতা অনিবার্য। তিনি সকল মানুষের নবী, আল্লাহ বলেছেন:

 “ قل يا أيها الناس إني رسول الله إليكم جميعا ”

 অর্থাৎ,  হ নবী! আপনি বলে দিন, হে মানব সকল আমি তোমাদের সকলের জন্য রাসূল হয়ে প্রেরিত হয়েছি। আর রাসূল (সা.) বলেছেন “ أنا خاتم النبين لا نبي بعدي ” অর্থাৎ, আমি সর্বশেষ নবী আমার পরে কোন নবী নেই। (তিরমিযী) তিনি আরো বলেছেন “ لا يؤمن أحدكم حتى يكون هواه تبعا لما جئت به ” অর্থাৎ, তোমাদের কেউ সে পর্যন্ত ঈমানদার হতে পারবে না যে পর্যন্ত তোমাদের কামনা বাসনা আমি রাসূলের উপস্থাপিত আদর্শের অনুসারী না হবে। (তিরমিযী)  আর তিনি অন্যত্র বলেছেন “لا تدخل الجنة حتى تؤمنوا ” অর্থাৎ, তোমরা যতক্ষত পর্যন্ত ঈমানদার না হবে ততক্ষত পর্যন্ত বেহেস্তে প্রবেশ করতে পারবে না। (মুসলিম)

অতএব, বিষয়টি দিবালোকের মত স্পষ্ট। যে সকল মানুষেরা পরকালে জান্নাত বা বেহেশত বা স্বর্গ কামনা করে তাদেরকে ঈমানদার হতে হবে আর ঈমানদার হতে হলে মুহাম্মাদ (সা.) এর আদর্শকে গ্রহণ করতে হবে।

সম্মানিত ভাই ও বোনেরা! এবার আসুন তার সার্বজনীন আদর্শের দুএকটা দৃষ্টান্ত জানার চেষ্টা করি। বদরের যুদ্ধে যাবার কালে বাহনের সল্পতার কারণে প্রতিটি উটে তিন জন করে আরোহী বণ্টন করা হলো। আবু লুবাবা, হযরত আলী এবং রাসূল (সা.) একটি বাহনে যাচ্ছেন। দুজন উটের পিঠে আর একজন উটের রশি ধরে হেটে চলেছেন। পালাক্রমে একের পর এক উটের রশি ধরে পায়ে হেটে চলছেন আর অপর দুজন উটের পিঠে বসা। যখন রাসূল (সা.) এর ভাগে উটের রশি ধরে হাটার পালা আসতো তখন উভয়ে বলতেন হে আল্লাহর রাসূল! আপনার পরিবর্তে আমি উটের রশি ধরে হেটে চলি। আপনি উটের পিঠে বসে থাকুন। রাসূল (সা.) জবাব দিতেন এটা যদি এজন্য হয় যে তোমাদের শরিরে শক্তি বেশী তাহলে শুনে রাখো তোমরা আমার চেয়ে শক্তিশালী নও। আর যদি নেকী বা পূণ্যের আশায় এটা করতে চাও তাহলে শুনে রাখো আমিও আল্লাহর নিকট এর পুরস্কার বা প্রতিদান প্রত্যাশা করি। সুতরাং আমার সময়ে আমাকে এভাবে যেতে দাও।

সম্মানিত ভাই ও বোনেরা! গভীরভাবে চিন্তা করুন, যে তিনি একদিকে রাসূল অপর দিকে মদীনার রাষ্ট্র প্রধান একটি ইসলামী দলের দলীয় প্রধান অন্যেরা তার কর্মী। নেতা ও অনুসারীর মধ্যে কি ধরনের নেতৃত্বের গুণ ও বৈশিষ্ট্য থাকা প্রয়োজন তা নিজে করে দেখিয়ে দিয়ে গেলেন। নেতা শুধু ওয়ার্ডার দিয়ে আরাম কেদারায় বসে থাকবে আর কর্মীরা কাজ করে মরবে এটি রাসূলের আদর্শ নয়। তিনি বলেছেন “ سيد القوم خادمهم ” অর্থাৎ, জাতির সেবকরাই তাদের নেতা হবে। খন্দকের যুদ্ধে পরিখা খনন করতে গিয়ে তিনি ধুলা মলিন হয়েছেন। খেতে না পেয়ে ক্ষুধার যন্ত্রতা কিছুটা লাঘব করার জন্য তিন তিনটি পাথরের টুকরা পেটে বেঁধে নিয়েছেন। একজন সাহাবী যখন তার ক্ষুধার অভিযোগ নিয়ে এসে তার পেটে পাথর বাধার দৃশ্য দেখালেন তখন রাসূল  (সা.) নিজের পেটে তিনটি পাথর বাধা সে দৃশ্য দেখালেন।

সম্মানিত ভাই ও বোনেরা! মক্কা বিজয়ের দিন তিনি রাজার আসনে সমাসীন। এতকাল পর্যন্ত যারা রাসূল (সা.)-এর উপর জুলুম নির্যাতন চালিয়ে আসছিল তাঁকে হত্যার ষড়যন্ত্র করে শেষ পর্যন্ত তাঁকে আপন বাড়ী ঘর থেকে বিতাড়িত করলো মদিনায় চলে যেতে বাধ্য করলো আজকে তারা তার সামনে আসামীর ন্যায় বসে আছে তিনি বললেন “

لاتثريب عليكم اليوم   اذهبوا فانتم الطلقاء

  অর্থাৎ, আজকে তোমাদের কারো প্রতি কোন ক্ষোভ নেই তোমরা স্বাধীনভাবে নিরাপদে চলে যেতে পার।

মক্কা অভিযানের দিন আবু জাহেলের পুত্র ইকরামা মুসলিম বাহিনীকে প্রতিহত করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়। মুসলিম বাহিনীর হাতে মক্কা বিজয় হয়, ফলে ইকরামা প্রাণ ভয়ে মক্কা ছেড়ে আবিসিনিয়া (ইথিওপিয়া) পালিয়ে যাওয়ার জন্য জেদ্দার নৌঘাঁটিতে গিয়ে উপস্থিত হয়। এদিকে তার স্ত্রী উম্মে হাকিম ঈমান গ্রহণ করে স্বামীর জন্য প্রাণ ভিক্ষা চান, রাসূল (সা.) তাঁকে ক্ষমা করার প্রতিশ্রুতি দেন সুতরাং স্ত্রী গিয়ে জেদ্দার ঘাঁট থেকে স্বামীকে নিয়ে এসে রাসূল (সা.) এর নিকট হাজির হন, তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। অতঃপর ইকরামা (রা.) দ্বীন ইসলামের খেদমতে আত্মনিয়োগ করেন। ক্ষমার এমন আদর্শ পৃথিবীর কোন মানুষ দেখাতে পারেনি।

সম্মানিত ভাই ও বোনেরা! রাসূল (সা.) রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে যে ব্যাপারে সরাসরি আল্লাহর নির্দেশ পাননি সে বিষয়ে তিনি সর্বসাধারণের মতামত নিয়ে কাজ করেছেন। বুখারী শরীফে কিতাবুল আহকাম অধ্যায়ে বর্ণিত হয়েছে রাসূলকে (সা.) যখন হাওয়াযিন গোত্রের বন্দীদেরকে মুক্তি দেয়ার জন্য মুসলমানগণকে অনুমতি প্রদান করলেন তখন রাসূল  (সা.) বললেন আমি জানিনা তোমাদের মধ্যে কে অনুমতি দিয়েছে আর কে দেয়নি অতএব তোমরা সকলে ফিরে যাও যে পর্যন্ত না তোমাদের আরিফগণ অর্থাৎ তোমাদের সমস্যা ও প্রয়োজনসমূহ পর্যবেক্ষণে নিয়োজিত কর্মচারীগণ বিষয়টি আমার নিকট পেশ না করবে ততক্ষণ আমি এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত দিবনা সুতরাং তারা ফিরে গেলেন। এরপর ঐ আরিফগণ তাদের সাথে কথাবার্তা বললেন, তারপর রাসূল   (সা.) এর নিকট এসে রিপোর্ট দিলেন যে জনগণ এ বিষয়ে সন্তুষ্ট চিত্তে মতামত দিয়েছে অর্থাৎ বন্দীদের মুক্তি দেয়ার অনুমতি দিয়েছে। অতঃপর রাসূল (সা.) তাদেরকে মুক্তি দিলেন।

লক্ষ করুন রাসূল (সা.) যদি নিজে একক সিদ্ধান্তে একাজ করতেন তাহলে কেউ তার বিরোধীতা করতেননা, কারন তারা রাসূল (সা.) এর একান্ত অনুগত। কিন্তু তিনি দুনিয়ার শাসক এবং সংগঠনের বা দলীয় প্রধানদের জন্যে এ আদর্শ রেখে গেছেন যে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট জনগতের মতামতকে শ্রদ্ধা করো তবেই রাষ্ট্রীয় জীবনে বা সাংগঠনিক জীবনে তোমরা কল্যাত লাভ করতে পারবে।

   এমনিভাবে বিচারকের জন্য তিনি আদর্শ ছিলেন, তিনি বলতেন “لا يقضين حكم بين اثنين و هو غضبان ” অর্থাৎ, কোন বিচারক যেন রাগান্বিত অবস্থায় দুজনের মাঝে বিচার ফায়সালা না করে। (বুখারী: ৬৬৫৯) এতে বিচার ন্যায় ভ্রষ্ট হবে।

সামাজিক জীবনে মানুষের মাঝে বিচার ফায়সালা বা বিরোধ নিষ্পত্তি করা একটি গুরুত্বপূর্ত এবাদত, রাসূল (সা.) বলেছেন “تعدل بين اثنين صدقه ” অর্থাৎ, দুজন মানুষের মাঝে বিরোধ নিষ্পত্তি করা ছদকা করার পূণ্য বা নেকী। তিনি একাজের কেমন গুরুত্ব দিয়েছেন লক্ষ করুন। তিনি আল্লাহর রাসূল মসজীদে নববীর ইমাম, মদীনায় একদা আবু আমের গোত্রের মধ্যে ঝগড়া হলো প্রচণ্ড লড়াই বেঁধেছে রাসূল (সা.) এর কাছে এ খবর আসলো সুতরাং তিনি কাল বিলম্ব না করে তাদের মধ্যে সমঝোতা বা সন্ধি করার জন্য সেখানে গমন করলেন। জোহর নামাজ পড়িয়ে ছিলেন মসজীদে নববীতে। আসরের নামাজে আসতে পারবেন কিনা? নাকি তাদের এই শালিশ করতে গিয়ে আসর ওয়াক্ত চলে যাবে। তাই যাবার কালে হযরত বেলালকে দায়িত্ব দিয়ে বললেন:

 إن حضرت صلاة العصر ولم آتك فمر أبا بكر فليصل بالناس

 অর্থাৎ, হে বেলাল! যদি আসরের নামাজের সময় হয়ে যায় আর আমি এসে উপস্থিত হতে না পারি তাহলে আবু বকরকে বলবে লোকদেরকে নামাজ পড়িয়ে দিতে (সুনানে আবী দাউদ)। লক্ষ করুন আমাদের সমাজের ইমাম সাহেবরা নামাজ বাদ দিয়ে কারো দরবার বা শালিসী করার জন্য গেলে হয়তো পরদিন তার ইমামতির চাকরি শেষ হয়ে যেতো। অথচ আল্লাহর নবীর আদর্শ ছিল যে সর্বসাধারত মানুষের কল্যাণের জন্য আমি নবীকে কাজ করতে হবে এতে যদি মসজীদে নববীর কোন এক ওয়াক্তের ইমামতি করতে না পারি তাতে কোন আপত্তি নেই।

বুখারী শরীফে কিতাবুল জিহাদ অধ্যায়ে উল্লেখ হয়েছে হযরত আবু মূসা (রা.) থেকে বর্তিত। তিনি বলেছেন রাসূল (সা.) বলেছেন

“ فكوا العانى يعنى الاسير و اطعموا الجائع و عودوا المريض ”

অর্থাৎ, তোমরা যুদ্ধ বন্দীদের মুক্ত করে দাও, ক্ষুধার্তকে খাদ্য দান কর এবং রোগাক্রান্ত মানুষের সেবা কর (২৮২০ নং হাদীস)। এই হাদীস থেকে রাসূল (সা.) এর সার্বজনীন আদর্শের আরো কয়েকটি বিষয় জানা যায়। তাহলো যুদ্ধকালীন বন্দী বা অন্য কোন কারণে বন্দীদশায় আবদ্ধ মানুষকে শুধু শুধু বন্দী করে রাখা মহানবীর আদর্শ নয় বরং তাদেরকে যথাসম্ভব দ্রুত মুক্ত করে দিতে হবে। এমনিভাবে ক্ষুধাপীড়িত মানুষের জন্য খাদ্যের ব্যবস্থা করা এবং রোগ ব্যাধি আক্রান্ত মানুষের সেবা বা চিকিৎসার ব্যবস্থা করা তাঁর অন্যতম একটি আদর্শ, এক্ষেত্রে তিনি কোন বিশেষ ধর্মের লোকদের কথা বলেননি বরং বলেছেন যারাই ক্ষুধাপীড়িত তাদের ই খাদ্যের ব্যবস্থা করতে হবে এবং যারাই রোগাক্রান্ত তাদেরই সেবা বা চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।

                আর ঐ অধ্যায়ে বর্ণিত হয়েছে মৃত্যুর পূর্বে হযরত ওমর (রা.) বলেছিলেন আমার পরে যারা খলীফা নির্বাচিত হবেন তাদেরকে আমি অছিয়ত করছি

وَأُوصِيهِ بِذِمَّةِ اللَّهِ وَذِمَّةِ رَسُولِهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يُوَفِّيَ لَهُمْ بِعَهْدِهِمْ ، وَأَنْ يُقَاتِلَ مِنْ وَرَائِهِمْ ، وَلا يُكَلَّفُوا فَوْقَ طَاقَتِهِمْ “

অর্থাৎ, আমি তাদেরকে যিম্মিদের (অমুসলিম সংখ্যালঘু) ব্যাপারে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের যিম্মাদারী আদায়ের অছিয়ত করে যাচ্ছি যেন তাদের প্রতি প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি পালন করা হয় অমুসলিম সংখ্যালঘুদের জান-মান রক্ষার জন্য প্রয়োজন হলে যুদ্ধ করা হয় আর তাদের আর্থিক সামর্থের অতিরিক্ত জিযিয়া (টেক্স) যেন তাদের উপর ধার্য করা না হয়। (২৮২৪ নং হাদীস)

 উক্ত হাদীস থেকে আরো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সার্বজনীন আদর্শের নমুনা পাওয়া যায়, রাসূল (সা.) এর আদর্শে বিশ্বাসী রাষ্ট্র নায়কদের কর্তব্য হলো তারা তাদের অধীনস্ত অমুসলিম সংখ্যালঘুদের (জিম্মি) সাথে কৃত চুক্তি বা প্রতিশ্রুতি যথাযথভাবে পালন করবে। এবং তারা শুধু মুসলমানদের জান-মাল রক্ষার-ই চেষ্টা করবেনা বরং তাদের অধীনস্ত অমুসলিম সংখ্যালঘুদের (জিম্মি) জান-মাল রক্ষার জন্য চেষ্টা করবে। প্রয়োজন যদি হয় অর্থাৎ  কোন দুষ্কৃতিকারী যদি সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার চালায় তাহলে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার জন্য রাষ্ট্রীয় শক্তি নিয়ে অত্যাচারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে যাতে ইসলামী রাষ্ট্রে অমুসলিম সংখ্যালুঘুরা নিরাপদে নির্বিঘ্নে বসবাস করতে পারে। এবং অমুসলিম সংখ্যালঘুদের উপর তাদের আর্থিক সামর্থের অতিরিক্ত জিযিয়া (টেক্স)  কোন অবস্থাতেই যেন ধার্য করা না হয় সে ব্যাপারে রাষ্ট্র প্রধানকে বিশেষ দৃষ্টি প্রদান করতে হবে।

 সম্মানিত ভাই ও বোনেরা! রাসূল (সা.) এর সার্বজনীন জীবন আদর্শের সুবিশাল আদর্শসমূহ থেকে কতিপয় আদর্শের নমুনা বা দৃষ্টান্ত আমার এ সংক্ষিপ্ত আলোচনায় আপনাদের সামনে পেশ করার চেষ্টা করেছি। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের সবাইকে রাসূল (সা.) এর সার্বজনীন জীবন আদর্শকে আরো ব্যাপকভাবে জানার ও বুঝার এবং তদানুযায়ী আমল করার তাওফীক দান করুন। আমীন।

Related Post