তাওহিদের গুরুত্ব

MainImage_Thumbnail_640px
তাওহিদ শব্দটি আরবি ‘ওয়াহাদা’ ক্রিয়া মূল থেকে গৃহীত, যার অর্থ ‘এক হওয়া’ ‘একক হওয়া’ বা ‘অতুলনীয় হওয়া’, তাওহিদ অর্থ ‘এক করা’ ‘একত্বের ঘোষণা দেয়া’ বা ‘একত্বে বিশ্বাস করা’। পরিভাষিক অর্থে- পালনকারী হিসেবে, ইবাদত পাওয়ার উপযুক্ত হিসেবে এবং নাম ও গুণাবলির ক্ষেত্রে মহান আল্লাহকে একক ও অদ্বিতীয় হিসেবে মেনে নেয়ার নামই তাওহিদ।
তাওহিদের প্রকারভেদ : তাওহিদ তিন ভাগে বিভক্ত- তাওহিদুর রুবুবিয়্যাহ : সৃষ্টি, রাজত্ব এবং পরিকল্পনার দিক থেকে আল্লাহর একত্ব সাব্যস- করা। এর দলিল : ‘জেনে রেখ, সৃষ্টি একমাত্র তাঁর, নির্দেশ ও একমাত্র তাঁরই।’ (আল আরাফ : ৫৪) অথবা আল্লাহর কার্যাবলিতে তাঁর একাত্মবাদ সাব্যস- করা। যেমন- সৃষ্টি করা, রিজক দেয়া, জীবন-মৃত্যু দেয়া, বৃষ্টি বর্ষণ করা, বৃক্ষরাজি উৎপন্ন করা ইত্যাদি। দলিল- ‘(হে নবী) বলুন, কে তোমাদের আসমান ও জমিন থেকে জীবিকা দান করেন? কিংবা কে তোমাদের কর্ণ ও চক্ষুর অধিপতি? তা ছাড়া কে জীবিতকে মৃতের ভেতর থেকে বের করে আনেন? আর কেই বা জীবিতের ভেতর থেকে মৃতকে বের করেন? কে করেন কর্ম সম্পাদনের ব্যবস’াপনা? তখন তারা বলে উঠবে, আল্লাহ। আপনি বলুন তার পরও ভয় করছ না?’ (ইউনুস : ৩১)
তাওহিদুল উলুহিয়্যাহ : একে তাওহিদুল ইবাদাহও বলা হয়। বান্দার কার্যাবলিতে আল্লাহর একত্ব প্রতিষ্ঠা করা। যেমন- সালাত, সিয়াম, হজ, নির্ভরতা, মান্নত, ভয়, আশা, ভালোবাসা ইত্যদি। দলিল : ‘আমি জিন ও মানুষকে একমাত্র আমারই ইবাদত করার জন্য সৃষ্টি করেছি।’ (আজ-জারিয়াত : ৫৬) ‘(হে নবী) আমি আপনার আগে যত রাসূল পাঠিয়েছি তাদের সবার কাছে এ মর্মে ওহি প্রেরণ করেছি যে, আমি ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই। অতএব, তোমরা একমাত্র আমার দাসত্ব কর।’ (আল-আম্বিয়া : ২৫)। তাওহিদুল আসমায়ি ওয়াস সিফাত : আল্লাহ যেসব সুন্দর নাম ও উন্নত গুণাবলির দ্বারা নিজেকে গুণান্বিত করেছেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেভাবে আল্লাহর গুণাবলি উল্লেখ করেছেন, হুবহু সেভাবে এ গুণগুলো আল্লাহর জন্য এককভাবে সাব্যস- করাই হচ্ছে তাওহিদুল আসমায়ি ওয়াস সিফাত। এ ক্ষেত্রে কোনো রকমের বিকৃত অর্থ করা, অন্য কারো সাথে তুলনা করা, উপমা ও ধরন বর্ণনা করা ইত্যাদির ন্যূনতম সুযোগও নেই। দলিল : ‘তাঁর মতো কোনো কিছুই নেই, তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা’। (আশ-শুরা : ১১) ‘ভালো নাম সব আল্লাহরই। তাই তাঁকে ভালো নামেই ডাক। তাদের কথা বাদ দাও, যারা আল্লাহর নাম রাখার মধ্যে সত্য থেকে বিমুখ হয়।’ (আল-আরাফ : ১৮০)

Related Post